জোয়ারভাটা সৃষ্টি হয় কীভাবে?

আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে দেখবো যে জোয়ারভাটা সৃষ্টি হয় কীভাবে? এই প্রশ্ন দশম শ্রেণীর পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের তৃতীয় অধ্যায় বারিমণ্ডলের প্রশ্ন। জোয়ারভাটা সৃষ্টি হয় কীভাবে? – আপনি পরীক্ষার জন্য তৈরী করে গেলে আপনি লিখে আস্তে পারবেন।

জোয়ারভাটা ধারণা – 

সাগর-মহাসাগরের জলরাশি নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট সময় অন্তর এক জায়গায় ফুলে ওঠে এবং অন্য জায়গায় নেমে যায়। জলরাশির এই স্ফীতিকে বলা হয় জোয়ার এবং অবনমনকে বলা হয় ভাটা।

জোয়ারভাটা সৃষ্টির কারণ –

প্রধানত 1. চাঁদ ও সূর্যের আকর্ষণ এবং 2. পৃথিবীর আবর্তনজনিত কেন্দ্রাতিগ বল —এই দুয়ের প্রভাবে জোয়ারভাটা সৃষ্টি হয়। তবে সূর্যের তুলনায় চাঁদ পৃথিবীর অনেক কাছে থাকায় জোয়ারভাটা সৃষ্টির ক্ষেত্রে চাঁদের আকর্ষণই মুখ্য।

পৃথিবীর আবর্তন এবং পৃথিবীর ওপর চাঁদের আকর্ষণের জন্য সৃষ্ট জোয়ারভাটা।


আবর্তনকালীন পৃথিবীর যে জায়গা যখন চাঁদের সামনে আসে, তখন সেই জায়গার জল চাঁদের আকর্ষণে খুব বেশি ফুলে ওঠে, অর্থাৎ সেখানে তখন হয় জোয়ার। ঠিক এই সময় চাঁদের আকর্ষণস্থলের বিপরীত দিকে বা প্রতিপাদ স্থানের জলরাশি পৃথিবীর আবর্তনজনিত কেন্দ্রাতিগ বলের প্রভাবে কিছুটা স্ফীত হয় (চিত্রে ‘জ” বিন্দু)। সুতরাং, সেখানেও তখন জোয়ার (গৌণ জোয়ার) সৃষ্টি হয়। [অবশ্য অনেকে বলেন যে, এই জোয়ার প্রকৃতপক্ষে ভূপৃষ্ঠে চাঁদের আকর্ষণস্থলের বিপরীত প্রান্তে জলভাগ ও স্থলভাগের সরণের পার্থক্যের জন্য হয়।] আর যে দুটি স্থানে জোয়ার হয়, ঠিক তার সমকোণে অবস্থিত স্থান দুটির জলরাশি সরে যায় বলে ওখানে তখন হয় ভাটা। যেমন — চিত্রে ভ-ভ´ স্থানের জলরাশি সরে এসে জ-জ স্থানের জলরাশিকে স্ফীত করে বলে জ-জ’ স্থানে যখন জোয়ার হয় তখন ভ-ভ´ স্থানে হয় ভাটা।

মুখ্য জোয়ার কাকে বলে?

চাঁদ ও সূর্যের আকর্ষণ এবং পৃথিবীর আবর্তনজনিত কেন্দ্রাতিগ বলের প্রভাবে ভূপৃষ্ঠে জোয়ার-ভাটা সৃষ্টি হয়। তবে, প্রকৃতপক্ষে, চাঁদের আকর্ষণই জোয়ার-ভাটার প্রধান কারণ।
পৃথিবী আবর্তনের সময় যে জায়গাটি চাঁদের মুখোমুখি হয়, সেই জায়গার জল চাঁদের আকর্ষণে সবচেয়ে বেশি টান পায়। ফলে, সেখানে জোয়ার দেখা দেয়। এই জোয়ারকেই মুখ্য জোয়ার বলা হয়।

গৌণ জোয়ার কাকে বলে?

মুখ্য জোয়ারের সময়, চাঁদ পৃথিবীর একদিকে জোরালোভাবে আকর্ষণ করে। এর ফলে, পানি ফুলে উঠে এবং জোয়ার সৃষ্টি হয়। কিন্তু, চাঁদের বিপরীত দিকে কী ঘটে? চাঁদের আকর্ষণ স্থলের বিপরীত দিকে, পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির তুলনায় কেন্দ্রাতিগ বল অধিক প্রবল থাকে। কেন্দ্রাতিগ বল পানিকে বাইরের দিকে ঠেলে দেয়, ফলে বিপরীত দিকেও জোয়ারের সৃষ্টি হয়। একেই বলা হয় গৌণ জোয়ার। অনেকে মনে করেন, গৌণ জোয়ার প্রকৃতপক্ষে চাঁদের আকর্ষণের ফলেই ঘটে। চাঁদ পৃথিবীর যে দিকে থাকে, সেদিকে জলরাশি টান পায়। ফলে, বিপরীত দিকে জলের পরিমাণ কমে যায় এবং জোয়ারের সৃষ্টি হয়।

এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করেছি জোয়ারভাটা কীভাবে সৃষ্টি হয়। জোয়ারভাটা হলো সমুদ্রপৃষ্ঠের পর্যায়ক্রমিক উত্থান ও পতন। এটি সূর্য ও চাঁদের মহাকর্ষীয় আকর্ষণের ফলে ঘটে।

জোয়ারভাটা সমুদ্রপৃষ্ঠের নিয়মিত উত্থান ও পতনের ঘটনা। এটি সূর্য ও চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে ঘটে। জোয়ারভাটা ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা, বিশেষ করে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য।

Share via:

মন্তব্য করুন