আজকের আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের তৃতীয় অধ্যায় “বারিমণ্ডল” এর কিছু পার্থক্যভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষায় প্রায়ই এই ধরনের পার্থক্যভিত্তিক প্রশ্ন দেখা যায়। তাই এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি বা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই প্রশ্নগুলি মাধ্যমিক পরীক্ষা কিংবা চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই আসে। আশা করি, এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হবে।
মাধ্যমিক ভূগোল বিষয়ের দ্বিতীয় অধ্যায় হলো বারিমন্ডল, ছাত্র/ছাত্রী যারা মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছ তাদের জন্য নিচে এই অধ্যায় সংক্রান্ত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর দেওয়া হলো। প্রতিটি প্রশ্নের মান 3.
সমুদ্রস্রোত এবং সমুদ্রতরঙ্গ – এর মধ্যে পার্থক্য আলোচনা করো।
সমুদ্রস্রোত এবং সমুদ্রতরঙ্গের পার্থক্যগুলি হল —
বিষয় | সমুদ্রস্রোত | সমুদ্রতরঙ্গ |
---|---|---|
চলন | সমুদ্রস্রোত সমুদ্রজলের পৃষ্ঠদেশ বরাবর একমুখী চলন। | সমুদ্রতরঙ্গ সমুদ্রপৃষ্ঠের জলরাশির পর্যায়ক্রমিক ওঠানামা। |
স্থায়িত্ব | সমুদ্রস্রোত স্থায়ী এবং নিয়মিতভাবে প্রবাহিত হয়। | এটি সাময়িক এবং অনিয়মিত। কেবল বায়ুপ্রবাহের ওপর নির্ভরশীল। |
তাপমাত্রা | তাপমাত্রা অনুযায়ী সমুদ্রস্রোত দুই রকমের হয় — যথা উষ্ণ এবং শীতল স্রোত। | তাপমাত্রার ভিত্তিতে সমুদ্রতরঙ্গের আলাদা কোনো বিভাজন নেই। |
নিয়ন্ত্রণ | সমুদ্রস্রোত যে অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হয় সেই অঞ্চলের ভূমিরূপকে নিয়ন্ত্রণ করে। | সমুদ্রতরঙ্গ উপকূলের জলবায়ুকে নিয়ন্ত্রণ করে। |
ভরা কোটাল ও মরা কোটালের মধ্যে পার্থক্য লিখ।
ভরা কোটাল ও মরা কোটালের পার্থক্যগুলি হল —
বিষয় | ভরা কোটাল | মরা কোটাল |
---|---|---|
ধারণা | অমাবস্যা ও পূর্ণিমার দিনে পৃথিবী, চাঁদ ও সূর্যের মধ্যবিন্দু একই সরলরেখায় অবস্থান করে বলে চাঁদ ও সূর্যের সম্মিলিত প্রভাবে জোয়ারের জল অনেক বেশি ফুলে ওঠে। একে ভরা কোটাল বলে। | শুক্ল ও কৃষ্ণপক্ষের সপ্তমী/অষ্টমী তিথিতে চাঁদ ও সূর্য পরস্পর সমকোণে থেকে পৃথিবীকে আকর্ষণ করে। অর্থাৎ পরস্পর পরস্পরের আকর্ষণের বিরোধিতা করে। তাই এসময় জোয়ারের জলস্ফীতি তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম হয়। একে মরা কোটাল বলা হয়। |
অবস্থানগত | সূর্য, পৃথিবী ও চাঁদ একই সরলরেখা বরাবর অবস্থান করলে ভরা কোটাল হয়। | সূর্য ও চাঁদ পরস্পর পরস্পরের সমকোণে থেকে পৃথিবীকে আকর্ষণ করলে মরা কোটাল হয়। |
সময়গত | পূর্ণিমা ও অমাবস্যা তিথিতে এই জোয়ার হয়। | কৃষ্ণ ও শুক্লপক্ষের সপ্তমী অষ্টমী তিথিতে এই জোয়ার হয়। |
সমুদ্রস্রোত ও জোয়ারভাটার মধ্যে পার্থক্য আলোচনা করো।
সমুদ্রস্রোত ও জোয়ারভাটার পার্থক্যগুলি হল —
বিষয় | সমুদ্রস্রোত | জোয়ারভাটা |
---|---|---|
ধারণা | বিভিন্ন কারণে সমুদ্রজলরাশির একমুখী প্রবাহকে সমুদ্রস্রোত বলে। | বিভিন্ন কারণে সমুদ্রজল উত্তাল হলে তাকে জোয়ার এবং নেমে গেলে তাকে ভাটা বলে। |
নিয়ন্ত্রক | বায়ুপ্রবাহ, পৃথিবীর আবর্তন, সমুদ্রজলের উষ্ণতা, লবণতা প্রভৃতি সমুদ্রস্রোতকে নিয়ন্ত্রণ করে। | চাঁদ এবং সূর্যের আকর্ষণ জোয়ারভাটাকে নিয়ন্ত্রণ করে। |
অবস্থান | মহাসমুদ্রের বিস্তীর্ণ অংশে সমুদ্রস্রোতের প্রভাব রয়েছে। | কেবল উপকূলভাগে জোয়ারভাটা দেখা যায়। |
প্রভাব | কোনো অঞ্চলের মগ্নচড়া, জলবায়ু, মাছ সংগ্রহ সমুদ্রস্রোতের দ্বারা প্রভাবিত হয়। | নদীতে জাহাজ চলাচল, নদীর নাব্যতা, নদীর জলের বরফমুক্ততা, উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষিজমির বৈশিষ্ট্য জোয়ারভাটা দ্বারা প্রভাবিত হয়। |
আরও পড়ুন – মাধ্যমিক ভূগোল – বারিমন্ডল – একটি বা দুটি শব্দে উত্তর দাও
আজকের আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের তৃতীয় অধ্যায় “বারিমণ্ডল” এর কিছু পার্থক্যভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি বা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই প্রশ্নগুলি প্রায়ই মাধ্যমিক পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় আসে। আশা করি, এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে, টেলিগ্রামে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন, আমি উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাছাড়া, আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জন বা যাদের প্রয়োজন হবে তাদের সাথে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।