Madhyamik Geography Question Paper 2018 With Answer

আজকে আমরা এই আর্টিকেলে মাধ্যমিক পরীক্ষার পুরাতন বছরের প্রশ্ন ও তাদের উত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই আর্টিকেলের সাহায্যে শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিক পরীক্ষায় আগের বছর কি প্রশ্ন এসেছিলো তা সম্পর্কে একটি ক্লিয়ার ধারণা পাবে। এই আর্টিকেলে আমরা Madhyamik Geography Question Paper 2018 With Answer নিয়ে আলোচনা করবো মাধ্যমিক ২০১৮ এর প্রশ্ন গুলি শিক্ষার্তীর পরের বছরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আশাকরি তোমরা মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে Madhyamik Geography Question Paper 2018 With Answer টি দেখে পরীক্ষা দিতে যান।

Table of Contents

Madhyamik Geography Question Paper 2018 With Answer

বিভাগ – ‘ক’

১. বিকল্পগুলির থেকে সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে লেখ : ১×১৪=১৪

১.১ শুষ্ক অঞ্চলে গিরিখাত কে বলা হয় —

(ক) ক্যানিয়ন

(খ) ‘V’ আকৃতির উপত্যকা

(গ) মন্থকূপ

(ঘ) ধান্দ

উত্তর: (ক) ক্যানিয়ন

১.২ পাখির পায়ের মতো আকৃতির বদ্বীপ এর গঠিত হয়েছে—

(ক) নীলনদের মোহনায়

(খ) হোয়াংহোর মোহনায়

(গ) সিন্ধু নদের মোহনায়

(ঘ) মিসিসিপি মৌসৌরীর মোহনায়

উত্তর: (ঘ) মিসিসিপি মৌসৌরীর মোহনায়

১.৩ উল্কাপিন্ড পুড়ে ছাই হয়ে যায় নিম্নলিখিত স্তরে —

(ক) আয়োনোস্ফিয়ার

(খ) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার

(গ) মেসোস্ফিয়ার

(ঘ) এক্সোস্ফিয়ার

উত্তর: (গ) মেসোস্ফিয়ার

১.৪ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পৃথিবীর সর্বাধিক বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় টর্নেডোকে এই নামেও ডাকা হয় —

(ক) সাইক্লোন

(খ) টুইস্টার

(গ) টাইফুন

(ঘ) হ্যারিকেন

উত্তর: (খ) টুইস্টার

১.৫ শীতল ল্যাব্রাডর স্রোত ও উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোত মিলিত হয়ে ঘন কুয়াশা ও ঝড় ঝঞ্জার সৃষ্টি করে যে উপকূল অঞ্চলে তা হল —

(ক) নিউফাউন্ডল্যান্ড উপকূল

(খ) গিনি উপকূল

(গ) ফ্লোরিডা উপকূল

(ঘ) পেরু উপকূল

উত্তর: (ক) নিউফাউন্ডল্যান্ড উপকূল

১.৬ মরা কোটালের সময় চন্দ্র ও সূর্য পৃথিবীর সাপেক্ষে নিম্নলিখিত কোণে অবস্থান করে —

ক) ১৮০°

খ) ৩৬০°

গ) ৯০°

ঘ) ১২০°

উত্তর: গ) ৯০°

১.৭ নিম্নলিখিত বর্জ্য পদ্ধটি জৈব অভঙ্গ বর্জ্য —

(ক) প্লাস্টিক বর্জ্য

(খ) কৃত্রিম রবার বর্জ্য

(গ) অ্যালুমিনিয়াম পাত

(ঘ) সবকটিই প্রযোজ্য

উত্তর: (ঘ) সবকটিই প্রযোজ্য

১.৮ নিম্নলিখিত রাজ্য ভেঙে তেলেঙ্গানা রাজ্যের সৃষ্টি হয় —

(ক) মধ্যপ্রদেশ

(খ) অন্ধ্রপ্রদেশ

(গ) বিহার

(ঘ) উত্তরপ্রদেশ

উত্তর: খ) অন্ধ্রপ্রদেশ

১.৯ শিবালিক হিমালয়ের পাদদেশীয় অঞ্চলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিলাখণ্ড সঞ্চিত হয়ে যে সমভূমি গঠিত হয়েছে, তাকে বলে —

(ক) খাদার

(খ) ভাঙ্গর

(গ) ভাবর

(ঘ) বেট

উত্তর: (গ) ভাবর

১.১০ ভারতে একটি লবণাত্মক হ্রদের উদাহরণ হল —

(ক) প্যাংগং হ্রদ

(খ) ভীমতাল

(গ) ডাল হ্রদ

(ঘ) লোকটাক হ্রদ

উত্তর: (ক) প্যাংগং হ্রদ

১.১১ ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা দেখা যায় নিম্নলিখিত অঞ্চলে —

(ক) গাঙ্গেয় সমভূমি

(খ) পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিম ঢালে

(গ) সুন্দরবন

(ঘ) মরু অঞ্চল

উত্তর: (খ) পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিম ঢালে

১.১২ গম হলো একটি —

(ক) রবি শস্য

(খ) খারিফ শস্য

(গ) জায়িদ শস্য

(ঘ) পানীয় ফসল

উত্তর: (ক) রবি শস্য

১.১৩ উত্তরের শ্রীনগর থেকে দক্ষিনে কন্যাকুমারীকে যুক্ত করার জন্য দ্রুতগামী সড়ক যোগাযোগ পরিকল্পনার নাম দেয়া হয়েছে —

(ক) পূর্ব-পশ্চিম করিডর

(খ) সোনালী চতুর্ভুজ

(গ) উত্তর দক্ষিণ করিডর

(ঘ) উত্তর মধ্য করিডর

উত্তর: (গ) উত্তর দক্ষিণ করিডর

১.১৪ ভারত থেকে প্রেরিত কৃত্রিম উপগ্রহ হল —

(ক) IRS

(খ) LANDSAT

(গ) SPOT

(ঘ) Station

উত্তর: (ক) IRS

বিভাগ – ‘খ’

২. ২.১ নিম্নলিখিত বাক্য গুলি শুদ্ধ হলে পাশে ‘শু’ এবং অশুদ্ধ হলে পাশে ‘অ’ লেখ। (যে কোনো ছয়টি প্রশ্নের উত্তর দাও) : ১×৬=৬ 

২.১.১ জলপ্রপাতের পাদদেশে মন্থকূপের সৃষ্টি হয়।

উত্তর: ‘অ

২.১.২ বায়ুর চাপ ফর্টিন ব্যারোমিটারের সাহায্যে পরিমাপ করা হয়।

উত্তর: ‘শু’

২.১.৩ নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলে ঋতু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।

উত্তর: ‘অ’

২.১.৪ প্রশান্ত মহাসাগরের সৃষ্ট এল নিনোর প্রভাবে দক্ষিণ আমেরিকার পশ্চিম উপকূলে খরার সৃষ্টি হয়।

উত্তর: ‘অ’

২.১.৫ বিহার ও ছত্রিশগড় রাজ্যে ক্রান্তীয় চিরহরিৎ বনভূমি দেখা যায়।

উত্তর: ‘অ’

২.১.৬ পেট্রোর রসায়ন শিল্পকে ‘আধুনিক শিল্পদানব’ আখ্যা দেওয়া হয়।

উত্তর: ‘শু’

২.১.৭ মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ যেখান থেকে চালু হয় তা হলো ‘প্ল্যাটফর্ম’।

উত্তর: ‘শু’

২.২ উপযুক্ত শব্দ বসিয়ে শূন্যস্থান পূরণ কর (যে-কোনো ছয়টি উত্তর দাও) : ১×৬=৬

২.২.১ _______নদীর নাম অনুসারে নদীতে সৃষ্ট বাঁক ‘মিয়েন্ডার’ নামে পরিচিত। 

উত্তর: Meanderes নদীর নাম অনুসারে নদীতে সৃষ্ট বাঁক মিয়েন্ডার নামে পরিচিত।

২.২.২ হিমবাহ পৃষ্ঠে আড়াআড়ি ও সমান্তরাল ফাটল গুলিকে _______ বলে।

উত্তর: হিমবাহ পৃষ্ঠে আড়াআড়ি ও সমান্তরাল ফাটল গুলিকে ক্রেভাস বলে।

২.২.৩ বায়ুমন্ডলে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়াকে _______ বলে।

উত্তর: বায়ুমন্ডলে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়া কে বৈপরিত্য উত্তাপ বলে।

২.২.৪ ভরা কোটালের সময় সমুদ্রের জল প্রবল বেগে মোহনা দিয়ে নদীতে প্রবেশ করে, একে বলা _______ হয়।

উত্তর: ভরা কোটালের সময় সমুদ্রের জল প্রবল বেজে মোহনা দিয়ে নদীতে প্রবেশ করে, একে বানডাকা বলা হয়।

২.২.৫ যে সকল বর্জ্য নিয়োজিত হয়ে জল, মাটি ও বাতাসের সঙ্গে মিশে যায় তাকে _______ বলে।

উত্তর: যে সকল বর্জ্য নিয়োজিত হয়ে জল, মাটি ও বাতাসের সঙ্গে মিশে যায় তাকে জৈব ভঙ্গুর বজ্র বা পচনশীল বজ্র বলে।

২.২.৬ _______ মেঘালয় মালভূমির সর্বোচ্চ অংশ। 

উত্তর: শিলং মেঘালয় মালভূমির সর্বোচ্চ অংশ।

২.২.৭ ২০১১ খ্রিস্টাব্দের আদমশুমারি অনুসারে ভারতের সাক্ষরতার হার _______ শতাংশ।

উত্তর: ২০১১ খ্রিস্টাব্দের আদমশুমারি অনুসারে ভারতের সাক্ষরতার হার 74.4 শতাংশ।

২.৩ একটি বা দুটি শব্দে উত্তর দাও (যে কোনো ছয়টি) : ১×৬=৬

২.৩.১ সাহারায় বালুকাময় মরুভূমি কি নামে পরিচিত? 

উত্তর: সাহারায় বালুকাময় মরুভূমি আর্গ নামে পরিচিত।

২.৩.২ বায়ুমন্ডলের কোন স্তরে জেট বিমান যাতায়াত করে?

উত্তর: বায়ুমন্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরে জেট বিমান যাতায়াত করে।

২.৩.৩ সামুদ্রিক মাছের প্রধান খাদ্য কি?

উত্তর: সামুদ্রিক মাছের প্রধান খাদ্য হল – প্ল্যাঙ্কটন

২.৩.৪ একটি তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের উদাহরণ দাও?

উত্তর: একটি তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের উদাহরণ হল – ইউরেনিয়াম

২.৩.৫ দক্ষিণ ভারতের দীর্ঘতম নদীর নাম কি?

উত্তর: দক্ষিণ ভারতের দীর্ঘতম নদীর নাম হল – গোদাবরী

২.৩.৬ ভারতের কোন অরণ্যের সিংহ পাওয়া যায়?

উত্তর: ভারতের গির অরণ্যে সিংহ পাওয়া যায়।

২.৩.৭ ঝাড়খন্ড ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের যৌথ বহুমুখী নদী পরিকল্পনার নাম লেখো 

উত্তর: ঝাড়খন্ড ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের যৌথ বহুমুখী নদী পরিকল্পনার নাম হল – দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন বা DVC

২.৩.৮ কোন মানচিত্রে সমোন্নতি রেখার সাহায্যে ভূপ্রকৃতি বোঝানো হয়

উত্তর: টপোগ্রাফিক্যাল মানচিত্রে সমোন্নতি রেখার সাহায্যে ভূপ্রকৃতি বোঝানো হয়।

২.৪ বামদিকের সাথে ডানদিকের গুলি মিলিয়ে লেখো : ১×৪=৪

বামদিকডানদিক
২.৪.১ তাল১. কফি গবেষণা কেন্দ্র
২.৪.২ ঝুম চাষ২. ডিজেল রেল ইঞ্জিন
২.৪.৩ চিকমাগালুর৩. পশ্চিম হিমালয়ের হ্রদ
২.৪.৪ বারাণসী৪. মৃত্তিকা ক্ষয়

উত্তর:

বামদিকডানদিক
২.৪.১ তাল৩. পশ্চিম হিমালয়ের হ্রদ
২.৪.২ ঝুম চাষ৪. মৃত্তিকা ক্ষয়
২.৪.৩ চিকমাগালুর১. কফি গবেষণা কেন্দ্র
২.৪.৪ বারাণসী২. ডিজেল রেল ইঞ্জিন

৩. নিচের অংশগুলির সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও (বিকল্প প্রশ্নগুলি লক্ষণীয়) : ২×৬=১২

৩.১ ‘অপসারণ গর্ত’ কিভাবে সৃষ্টি হয়?

উত্তর: মরুভূমিতে অপসারণ প্রক্রিয়ায় বালি উড়ে গিয়ে একপ্রকার গর্ত সৃষ্টি হয়, যাকে বলা হয় অপসারণ গর্ত।

অথবা

হিমশৈল কি?

উত্তর: সমুদ্র বা হ্রদে ভাসমান বরফের স্তূপকে বলে হিমশৈল। মহাদেশীয় হিমবায় সমুদ্রের ধারে এসে পড়লে সমুদ্রের তরঙ্গের আঘাতে ভেঙ্গে গিয়ে বা মহাদেশীয় হিমবাহের অংশ সমুদ্রের ভাসতে থাকলে হিমবাহের কিছু অংশ ভেঙ্গে গিয়ে ক্রমশ ভেসে দূরে সরে যায় এবং হিমশৈলের উৎপত্তি ঘটে।

৩.২ চিনুক কি?

ত্তর: উত্তর আমেরিকার পশ্চিমের রকি পর্বত থেকে তুষারযুক্ত বায়ুপ্রবাহ প্রেইরী অঞ্চলের দিকে ছুটে আসে এবং তুষারগুলি গলে যায় এই উষ্ণ স্থানীয় বায়ুকে বলে চিনুক।

অথবা

অ্যাপোজি জোয়ার কাকে বলে?

উত্তর: পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব যখন সর্বাধিক হয় (৪.০৭ লক্ষ কিমি), তখন যে জোয়ার সৃষ্টি হয় তাকে বলে অ্যাপোজি জোয়ার।

৩.৩ বর্জ্য পৃথকীকরণ কিভাবে করা হয়?

উত্তর: কোনো স্থানে যখন বর্জ্য পদার্থ জমা হয়, তখন সেখানে বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য পদার্থ (শুষ্ক বর্জ্য ও আদ্র বর্জ্য) একত্রিত হয়ে থাকে। সেগুলিকে পৃথক না করলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব হয় না। এই পদ্ধতিকেই বলা হয় বর্জ্য পৃথকীকরণ।

অথবা

বর্জ্যের পুনর্নবীকরণ বলতে কী বোঝো?

উত্তর: যে পদ্ধতিতে বর্জ্য পদার্থগুলি পুনরায় উৎপাদন পদ্ধতিতে একই দ্রব্য উৎপাদন করে, সেক্ষেত্রে তার গুণমান হ্রাস পায়, তাকে বর্জ্যের পুনর্নবীকরণ বলে। যেমন – প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে পলিস্টিরিন পাওয়া যায়।

৩.৪ কর্ণাটক মালভূমির দুটি ভূপ্রাকৃতিক অংশের নাম লেখ।

উত্তর: কর্ণাটক মালভূমির দুটি ভূপ্রাকৃতিক অংশের নাম হল – 1. মালনাদ 2. ময়দান

অথবা

বৃষ্টির জল সংরক্ষণে দুটি উদ্দেশ্য কি কি?

উত্তর: বৃষ্টির জল সংরক্ষণের দুটি উদ্দেশ্য হল –

  • বৃষ্টির জল ধরে রেখে তা শুদ্ধকরণের মাধ্যমে ব্যবহার করা।
  • ভূগর্ভের জলস্তর বৃদ্ধি করা।

৩.৫ ধাপ চাষের গুরুত্ব কি?

উত্তর: ভারতের পাহাড়ি অঞ্চলে বিভিন্ন উচ্চতায় সিঁড়ির মতো ধাপ ধাপ অর্ধচন্দ্রাকার সমতল জমি তৈরি করে সেখানে চাষ করা হয়, যা ধাপ চাষ নামে পরিচত। এর ফলে মৃত্তিকাক্ষয় হ্রাস পায়।

অথবা

ধারণযোগ্য উন্নয়ন বলতে কী বোঝো?

উত্তর: ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রয়োজন মোটানোর প্রচেষ্টায় কোনো বাধা সৃষ্টি না করে, বর্তমান প্রজন্মের চাহিদা মেটানোর জন্য গৃহীত পরিকল্পনাকে ধারণযোগ্য উন্নয়ন বলে।

৩.৬ উপগ্রহ চিত্র বলতে কী বোঝো?

উত্তর: মহাকাশে যেসকল কৃত্রিম উপগ্রহ প্রেরণ করা হয় তাতে যে সেন্সর বা ক্যামেরা থাকে, তার মাধ্যমে এগুলি ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন স্থানকে সংবেদন করে এবং Magnetic type – এ পাঠ গ্রহণ করে। এইভাবে যে চিত্র প্রস্তুত করা হয় তাকে উপগ্রহ চিত্র বলে।

অথবা

ভূবৈচিত্রসূচক মানচিত্রে সংজ্ঞা দাও।

উত্তর: ভূমিরূপের কোনো একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক উপাদানগুলির মধ্যে সমন্বয়সাধন করে, যে প্রকার মানচিত্র প্রকাশ করা হয় তাকে ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র বলে।

বিভাগ – ‘ঘ’

৪. সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক উত্তর দাও (বিকল্প প্রশ্নগুলি লক্ষণীয়) : ৩×৪=১২

৪.১ নদীর মোহনায় বদ্বীপ কেন গড়ে ওঠে ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ

নদীর মোহনায় বদ্বীপ সৃষ্টির কারণ গুলি হল –

  1. পলিরাশির পরিমাণ – নদী অববাহিকা বৃহৎ, নদীর দীর্ঘ প্রবাহপথ, এবং নদী অববাহিকায় শিলা নরম প্রকৃতির হলে ও প্রচুর উপনদী কোনো নদীতে মিশলে ওইসব নদীতে পলির পরিমাণ বাড়ে। নদীর জল অতিরিক্ত পলিসমৃদ্ধ হলে বদ্বীপ সৃষ্টি সম্ভব।
  2. সমুদ্রের ঢেউ ও জোয়ারভাটা – নদী মোহানায় জোয়ারভাটার প্রকোপ এবং ঢেউ – এর পরিমাণ কম হলে দ্রুত বদ্বীপ গড়ে উঠতে পারে।
  3. আবহাওয়া ও জলবায়ু – যেসব নদীর মোহানায় নদীর স্রোতের বিপরীতে বায়ুপ্রবাহ হয় সেখানে দ্রুত পলির অধঃক্ষেপণ ঘটে। তাই দ্রুত বদ্বীপ গড়ে ওঠে। আবার উষ্ণ-আর্দ্র জলবায়ুতে নদনদীর সংখ্যা বেশি থাকে বলে বদ্বীপের সংখ্যাও বেশি।
  4. অগভীর উপকূলভাগ – উপকূলভাগ যত অগভীর হয় তত দ্রুত পলি ভরাট হয়ে বদ্বীপ তৈরি করে। ভারতের পূর্ব উপকূল অগভীর বলে বদ্বীপের সংখ্যা বেশি।
  5. জলের ঘনত্ব – নদী মোহানায় সমুদ্রজলের ঘনত্ব যত বেশি হয় সেখানে অতিদ্রুত পলি থিতিয়ে পড়ে। তাই দ্রুত বদ্বীপ গড়ে ওঠে।
  6. সমুদ্রের উন্মুক্ততা – স্থলবেষ্টিত সমুদ্রে বদ্বীপ গঠন প্রক্রিয়া দ্রুত হয়। কারণ এখানে সমুদ্রস্রোতের প্রভাব কম থাকে।
  7. সমুদ্রজলের লবণতা – সমুদ্রজলের লবণতা বাড়লে মোহানায় নদীজলের পলিরাশি দ্রুত অধঃক্ষিপ্ত হবে। এতে বদ্বীপ গঠনের হার বাড়বে।
  8. অন্যান্য – এ ছাড়া নদী ধীরে ধীরে সমুদ্রে পড়লে, মোহানা অঞ্চলটি স্থিতিশীল হলে, নদীর মুখে চর সৃষ্টি হলে দ্রুত বদ্বীপ গড়ে উঠতে পারে।

অথবা

ট্রপোস্ফিয়ারে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে উষ্ণতা হ্রাস পায় কেন?

উত্তরঃ

ট্রপোস্ফিয়ার, বায়ুমণ্ডলের সর্বনিম্ন স্তরে, উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বায়ুর তাপমাত্রা ক্রমশ কমে যায়। এই ঘটনাকে আমরা তাপমাত্রার স্বাভাবিক হ্রাসহার বলি। সাধারণত, প্রতি ১০০০ মিটার উচ্চতায় তাপমাত্রা প্রায় ৬.৪° সেলসিয়াস হ্রাস পায়।

এই দ্রুত তাপমাত্রা হ্রাসের পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে:

  • সূর্যালোকের প্রভাব – সূর্যের আলো সরাসরি বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে না। বরং, সূর্যালোক ভূপৃষ্ঠে পৌঁছে তাকে উত্তপ্ত করে। উত্তপ্ত ভূপৃষ্ঠ তার তাপ বিকিরণের মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে। যেহেতু ভূপৃষ্ঠ থেকে দূরে যাওয়া হয়, সূর্যালোক থেকে উত্তাপের পরিমাণ কমে যায় এবং তাপমাত্রাও কমে যায়।
  • বায়ুর ঘনত্ব – ভূপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতায় যাওয়া যায় বায়ুর ঘনত্ব কমে যায়। কম ঘনত্বের বায়ু কম তাপ ধারণ করতে পারে, যার ফলে তাপমাত্রা কমে যায়।
  • বিকিরণ তাপের অভাব – ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকিরিত তাপের একটি অংশই ট্রপোস্ফিয়ারের উপরের স্তরে পৌঁছাতে পারে। বাকি তাপ মহাকাশে বিকিরিত হয়ে যায়, যার ফলে উপরের স্তরগুলি ঠান্ডা থাকে।
  • তাপ শোষণকারী উপাদানের অভাব – ধূলিকণা এবং জলীয় বাষ্প বায়ুমণ্ডলে তাপ শোষণ করে। ট্রপোস্ফিয়ারের উপরের স্তরে এই উপাদানগুলির পরিমাণ কম থাকে, তাই তাপ শোষণ এবং ধরে রাখার ক্ষমতাও কম থাকে।
  • বায়ুস্তরের পাতলাতা – ট্রপোস্ফিয়ারের উপরের দিকে যাওয়া যায় বায়ুস্তর ক্রমশ পাতলা হয়ে যায়। পাতলা বায়ু দ্রুত প্রসারিত হয় এবং এই প্রসারণের সময় তাপ হারিয়ে ঠান্ডা হয়ে যায়।

এই সমস্ত কারণগুলি একসাথে কাজ করে ট্রপোস্ফিয়ারে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে তাপমাত্রা হ্রাসের জন্য দায়ী।

৪.২ গ্যাসীয় বর্জ্য নিয়ন্ত্রণের উপায় গুলি কি কি?

উত্তরঃ

গ্যাসীয় বর্জ্য নিয়ন্ত্রণের উপায় – গ্যাসীয় বর্জ্য নিয়ন্ত্রণের একটি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র হল স্ক্রাবার। এই স্ক্রাবার যন্ত্রে সাধারণত দু’ভাবে গ্যাসীয় বর্জ্য নিয়ন্ত্রণ বা নিষ্কাশন করা হয়। যথা —

  1. আর্দ্র স্ক্রাবিং – এক্ষেত্রে কলকারখানা থেকে নির্গত বিষাক্ত গ্যাস ও ধূলিকণা প্রভৃতি বায়ুদূষককে কোনো জলীয় দ্রবণের মধ্যে চালনা করে বিশুদ্ধ বাতাস নির্গত করা হয়।
  2. শুষ্ক স্ক্রাবিং – এই পদ্ধতিতে জলীয় দ্রবণ ছাড়াই বস্তুকণা ও দূষিত বাতাস স্ক্রাবারের মাধ্যমে পরিশুদ্ধ হয়ে বিশুদ্ধ বাতাস নির্গত হয়। সাধারণত শুষ্ক স্ক্রাবিং পদ্ধতিতে অম্লধর্মী গ্যাস অপসারণ করা হয়।

অথবা

বর্জ্যের পরিমাণগত হ্রাস কিভাবে করা যায়?

উত্তরঃ

বর্জ্যের পরিমাণগত হ্রাসের পদ্ধতি

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হল বর্জ্য পদার্থের পরিমাণ হ্রাস করা। এতে কিছু উপায় অবলম্বন করা প্রয়োজন, যেমন—

  • জিনিসপত্রের উৎপাদন ও ব্যবহার তথা ভোগের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা।
  • জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন করে চাহিদাকে সীমিত রাখা।
  • জিনিসপত্রের অপচয় বন্ধ করা।
  • কলকারখানায় প্রযুক্তির উন্নতি ঘটিয়ে বর্জ্য পদার্থের নির্গমন হ্রাস করা।
  • ব্যবহৃত জিনিস সরাসরি ফেলে না দিয়ে সেগুলি অন্য কাজে ব্যবহার করা।
  • একই দ্রব্য যাতে বারবার বা দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায়, তাই মজবুত ও টেকসই দ্রব্য উৎপাদন ও ব্যবহার করা।
  • জৈব ভঙ্গুর তথা পরিবেশবান্ধব জিনিসপত্রের ব্যবহার বাড়ানো।
  • প্রয়োজনের অতিরিক্ত দ্রব্যের ব্যবহার বন্ধ করা।
  • গৃহস্থালি, বিদ্যালয়, কলকারখানা, অফিস-আদালতসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যাতে বেশি বর্জ্য পদার্থ তৈরি না হয়, সেদিকে নজর রাখা ও সকলকে সচেতন করা।
  • জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা প্রভৃতি।

৪.৩ ভারতের অরণ্য সংরক্ষণের তিনটি প্রধান উপায় সংক্ষেপে আলোচনা করো।

উত্তরঃ

র্তমানে ভারতের ক্ষেত্রফলের বিচারে বনাবৃত ভূমির পরিমাণ প্রায় 24.39 শতাংশ (সূত্র: India State of Forest Report’17)। অথচ সমগ্র দেশের মোট আয়তনের 33 শতাংশ বনভূমি থাকা বাঞ্ছনীয়। তাই নানা পদ্ধতিতে অরণ্য সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। যেমন:

  1. অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃক্ষচ্ছেদন রোধ: অপ্রয়োজনীয় বৃক্ষচ্ছেদন রোধ করতে হবে। বনভূমি ও যে-কোনো স্থান থেকে অনিয়ন্ত্রিতভাবে গাছ কাটা নিষিদ্ধ করতে হবে।
  2. অপরিণত বৃক্ষচ্ছেদন হ্রাস: গাছ কাটার খুব প্রয়োজন হলে কেবল পরিণত বৃক্ষই যেন ছেদন করা হয়। অপরিণত এবং চারাগাছের রক্ষণাবেক্ষণের প্রতি সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে এবং তাদের যাতে ক্ষতি না হয়, সেই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
  3. জ্বালানি কাঠের পরিবর্তে বিকল্প জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি: গ্রাম এবং শহরে জ্বালানি হিসেবে কাঠের পরিবর্তে প্রাকৃতিক গ্যাস, জৈবগ্যাস, সৌর শক্তি ইত্যাদি বিকল্প জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে। এতে জ্বালানি কাঠের ব্যবহার কমবে এবং অরণ্যের সংরক্ষণ হবে।
  4. দাবানল প্রতিরোধ: বনভূমিতে দাবানল যাতে না লাগে তার দিকে দৃষ্টি রাখতে হবে এবং দাবানল লাগলে যাতে দ্রুত তা নিবারণ করা যায় তার ব্যবস্থা করতে হবে।
  5. পশুচারণ নিয়ন্ত্রণ: অরণ্যকে রক্ষা করার জন্য পশুচারণ ক্ষেত্র নির্দিষ্ট করে দিতে হবে। অরণ্যভূমিতে পশুর দল চারাগাছ খেয়ে ফেলে এবং গাছকে নষ্ট করে দেয়। তাই পশুচারণ নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।
  6. বনসৃজন ও পুনর্বনসৃজন: যেসব স্থান উদ্ভিদহীন সেখানে নতুন করে বনসৃজন করা যেতে পারে এবং বনভূমিতে যেখানে পশুচারণের ফলে বা মানুষের নিজের প্রয়োজনে অরণ্যচ্ছেদনের ফলে গাছের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়েছে সেখানে পুনর্বনসৃজন ঘটিয়ে অরণ্য পুনরুদ্ধার করতে হবে।
  7. অরণ্য ব্যবস্থাপনার কর্মসূচি গ্রহণ: রাস্তা নির্মাণ, খাল খনন প্রভৃতি উন্নয়নমূলক কাজের সময় কেবল পরিণত ও নির্বাচিত বৃক্ষই কাটতে হবে। এজন্য অরণ্য ব্যবস্থাপনার যথাযথ কর্মসূচি গ্রহণ করা প্রয়োজন।
  8. মানুষের অংশগ্রহণ: বর্তমানে উদ্ভিদের স্বল্পতার জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মানুষই দায়ী। তাই সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে বনসংরক্ষণ কর্মসূচিকে এগিয়ে নিতে হবে। সেজন্য যৌথ বন পরিচালনা (Joint Forest Management) ব্যবস্থা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করতে পারে।

অথবা

আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা বলতে কী বোঝো?

উত্তরঃ

সংবাদ বা তথ্য ও ভাবের আদানপ্রদানকে এককথায় যোগাযোগ বলে। চিঠিপত্র, টেলিফোন, টেলিগ্রাম, ইন্টারনেট প্রভৃতির সাহায্যে যে আদানপ্রদান হয়, সেগুলিকে বলে যোগাযোগের মাধ্যম। এই ধরনের একটি সম্পূর্ণ ও সংগঠিত আদানপ্রদান ব্যবস্থাকে বলে যোগাযোগ ব্যবস্থা। আগেকার দিনে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে স্থলপথ, জলপথ ও আকাশপথে লিখিত বার্তা আদানপ্রদান করা হত। কিন্তু বর্তমানে ব্যস্ত জীবনের গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে এবং উন্নত পরিসেবা প্রদানের লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকার আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে চালু হয়েছে।

বিভিন্ন রকম আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা:

বিভিন্ন রকম আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্হাগুলি হল – ইন্টারনেট, ই-মেল, সেলফোন ইত্যাদি।

  1. ইন্টারনেট: সমগ্র বিশ্বজুড়ে একাধিক কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মধ্যে পারস্পরিক সংযোগ ব্যবস্থাই হল ইন্টারনেট ব্যবস্থা। বর্তমানে বিশ্বের অধিকাংশ দেশই এই ইন্টারনেট ব্যবস্থার সাহায্যে পরস্পর যুক্ত থেকে নিমেষের মধ্যে তথ্য, খবরাখবর এবং মতামত বিনিময় করে চলেছে। দ্রুত, সহজে এবং স্বল্প ব্যয়ে যোগাযোগ সাধনের এটি অন্যতম মাধ্যম। বর্তমানে ইন্টারনেটে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটার প্রভৃতি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলির মাধ্যমে পারস্পরিক যোগাযোগ খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
  2. ই-মেল: ই-মেলের মাধ্যমে অতি অল্প খরচে দ্রুত পৃথিবীর যে কোনাে স্থানে সংবাদ পাঠানাে যায়।
  3. সেলফোন: শুধু দুজন মানুষের মধ্যে কথা বলার সুবিধাই নয়, মোবাইল বা সেলুলার ফোনের সাহায্যে SMS, MMS, মোবাইল ব্যাংকিং প্রভৃতি বিচিত্র ধরনের পরিসেবা একে একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ও অপরিহার্য যোগাযোগের মাধ্যমে পরিণত করেছে।

৪.৪ ভূবৈচিত্রসূচক মানচিত্র ও উপগ্রহ চিত্রের পার্থক্য কি কি?

উত্তরঃ

ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র ও উপগ্রহচিত্রের মধ্যে পার্থক্য:

উপগ্রহচিত্রভিত্তিভূ-বৈচিত্রসূচক মানচিত্র
কৃত্রিম উপগ্রহে রাখা সেন্সরে পাওয়া ডিজিটাল তথ্য কম্পিউটারে বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রস্তুত মানচিত্র।প্রকৃতিনির্দিষ্ট অঞ্চলের জরিপ কার্যের মাধ্যমে পাওয়া তথ্যকে উপযুক্ত প্রতীক ও রং দ্বারা প্রস্তুত মানচিত্র।
উপগ্রহ চিত্র একটি মাত্র স্কেলে আঁকা হয়।স্কেলভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র ভিন্ন স্কেলে আঁকা হয়। 
উপগ্রহচিত্রে তথ্য ডিজিটাল হওয়ায় নিখুঁত হয়।তথ্যের মানজরিপ কার্যের ত্রুটি থাকলে পাওয়া তথ্য ত্রুটিপূর্ণ হয়।
যান্ত্রিকভাবে তথ্য সংগৃহীত হওয়ায় তথ্য বর্তমান সময়ের।তথ্যের বয়সজরিপ কার্যের মাধ্যমে তথ্য সংগৃহীত হওয়ায় তথ্য পুরোনো।
উপগ্রহ ছিল বিশ্লেষণে বিশেষ প্রশিক্ষন ও আধনিক প্রযুক্তির প্রয়োজন হয়।ব্যাখ্যা বিশ্লেষনএই মানচিত্র ব্যাখ্যায় উন্নত প্রযুক্তি বা প্রশিক্ষণের তেমন প্রয়োজন হয় না।
ছদ্ম রং (FCC) ব্যবহার করে ভূ-পৃষ্ঠের বিভিন্ন বস্তুকে পৃথকভাবে চিহ্নিত করা হয়।রঙের ব্যবহারবিভিন্ন উপাদানগুলিকে বিভিন্ন রং এবং বিভিন্ন রঙের প্রতীক চিহ্ন দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
সর্বদা বিস্তীর্ণ এলাকার তথ্য সংগ্রহ করা যায়।এলাকাএতে একটি সংকীর্ণ এলাকার তথ্য সংগ্রহ করা যায়।
এই চিহ্নের সাহায্যে অতি দুর্গম অঞ্চলের তথ্য পাওয়া যায়।দুর্গম অঞ্চলদুর্গম অঞ্চলের এই মানচিত্র তৈরির কাজ অত্যন্ত জটিল ও কষ্টকর।
 বর্তমানে এই চিত্রের ব্যবহার ও গুরুত্ব বহুল পরিমানে বৃদ্ধি পাচ্ছে।ব্যবহারএই মানচিরে ব্যবহার ধীরে ধীরে কমে আসছে।
উপগ্রহ চিত্র প্রস্তুত ও বিশ্লেষত খুব কম সময় ও কম লোক প্রয়োজন হয়।সময় ও লোকবলএই মানচিত্র প্রস্তুত অত্যান্ত সময় সাপেক্ষ এবং বহু লোকের প্রয়োজন।
এই চিত্র সংগ্রহের প্রাথমিক ব্যয় খুব বেশি বলে পৃথিবীর সকল দেশে এর প্রচলন হয়।প্রচলনপৃথিবীর প্রায় সকল দেশেই এই মানচিত্রের প্রচলন দেখা যায়।

অথবা

ভূবৈচিত্রসূচক মানচিত্রের তিনটি ব্যবহার উল্লেখ কর।

উত্তরঃ

ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের ব্যবহার : ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের তিনটি ব্যবহার হল —

  • সামরিক প্রয়োজন: ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় সামরিক প্রয়োজনে।
  • ভূমি ব্যবহারের পরিবর্তন বা নদীর গতিপথের পরিবর্তন বোঝার জন্য: কোনো অঞ্চলের ভূমি ব্যবহারের পরিবর্তন বা নদীর গতিপথের পরিবর্তন বোঝার জন্য বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র ব্যবহার করা হয়।
  • আঞ্চলিক উন্নয়ন পরিকল্পনা রচনা করার জন্য: যেহেতু ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে কোনো অঞ্চলের ভৌগোলিক, প্রাকৃতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থা অত্যন্ত স্পষ্টভাবে বোঝা যায় তাই সেই অঞ্চলের উন্নয়ন পরিকল্পনা রচনা করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র ব্যবহৃত হয়।

বিভাগ – ‘ঙ’

৫. ৫.১ যেকোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৫×২=১০

৫.১.১ হিমবাহ ও জলধারার মিলিত সঞ্চয় কার্যের ফলে সৃষ্ট প্রধান ভূমিরূপগুলি চিত্রসহ বিবরণ দাও।

উত্তরঃ

হিমবাহের নীচে বরফ গলে ছোট ছোট অস্থায়ী জলধারার সৃষ্টি হয়। এই জলধারাগুলো হিমবাহ থেকে আনীত নুড়ি, বালি, মাটি, পাথর ইত্যাদি বহন করে দূরবর্তী স্থানে জমা করে। এই প্রক্রিয়াকে হিমবাহ জলধারা সঞ্চয় বা নদী হিমবাহিক সঞ্চয় (Glacio-fluvial Deposition) বলে।

হিমবাহ জলধারা সঞ্চয়ের ফলে তৈরি উল্লেখযোগ্য ভূমিরূপগুলি হল –

হিমবাহ ও জলধারার মিলিত সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট প্রধান ভূমিরূপ

বহিঃবিধৌত সমভূমি (Outwash Plain)

পর্বতের পাদদেশে হিমবাহবাহিত নুড়ি, পাথর, কাদা, বালি ইত্যাদি জমা হয়ে অনেক সময় বিশাল সমতল ভূমির সৃষ্টি করে। এই ধরণের সমভূমিকে বহিঃবিধৌত সমভূমি বা (Outwash Plain) বলে। অনেক সময় এই সমভূমির কোনো গর্তে হিমবাহ গলিত জল জমে হ্রদের সৃষ্টি হয়।

উদাহরণ: উত্তর আমেরিকার কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ জাতীয় সমভূমি দেখতে পাওয়া যায়।

এসকার (Esker)

হিমবাহ, প্রকৃতির এই বিশাল বরফের নদী, কেবল বরফ বহন করে না, বরং এর সাথে সাথে বহন করে নিয়ে যায় অগণিত sediments (যেমন নুড়ি, বালি, পলি এবং কাঁকর)। এই sediments গুলো হিমবাহের তলদেশে জমা হয়ে তৈরি করে এক অসাধারণ ভূমিরূপ যা আমরা চিনি এসকার নামে।

হিমবাহ গলিত জল স্রোতের আকারে হিমবাহের তলদেশ দিয়ে বয়ে যায়। এই দীর্ঘস্থায়ী প্রবাহের ফলে হিমবাহের তলদেশে সুড়ঙ্গের মতো পথ তৈরি হয়। হিমবাহ বহন করে আনা sediments গুলো এই সুড়ঙ্গে জমা হতে থাকে। কালক্রমে, এই sediments গুলো দিয়ে পূর্ণ হয়ে যায় সুড়ঙ্গ এবং তৈরি হয় দীর্ঘ, অনুচ্চ, আঁকাবাঁকা শৈলশিরার মতো আকৃতিবিশিষ্ট ভূমিরূপ। স্ক্যান্ডিনেভিয়ায় একে এসকার বলা হয়।

হিমবাহ যতক্ষণ কোনো অঞ্চলে থাকে ততক্ষণ এসকার লুকিয়ে থাকে বরফের নীচে। হিমবাহ গলে গেলেই এসকার উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। এসকার কয়েক কিলোমিটার থেকে কয়েকশো কিলোমিটার লম্বা হতে পারে। এগুলি 5 থেকে 50 মিটার উঁচু হয়। এসকার সাধারণত উপত্যকার ঢাল বরাবর প্রসারিত হয়।

উদাহরণ: ফিনল্যান্ডের ‘পুনকাহারয়ু’: এটি বিশ্বের দীর্ঘতম এসকার, যার দৈর্ঘ্য প্রায় 270 কিলোমিটার।

বোল্ডার-ক্লে ও টিল (Boulder Clay and Till)

হিমবাহ, তুষারের বিশাল স্রোত, তাদের সাথে প্রচুর পরিমাণে পাথর ও সূক্ষ্ম শিলাচূর্ণ বহন করে। যখন হিমবাহ গলে যায়, তখন এই বহনকৃত উপাদানগুলি স্থানে স্থানে সঞ্চিত হয়ে বিশেষ ধরণের অবক্ষেপ তৈরি করে, যা বোল্ডার-ক্লে ও টিল নামে পরিচিত।

বোল্ডার-ক্লে ও টিল অবক্ষেপে বিভিন্ন আকারের পাথর, বড় পাথর (বোল্ডার) থেকে শুরু করে ছোট ছোট কাঁকর (pebbles) পর্যন্ত, এলোমেলোভাবে ছড়িয়ে থাকে। এই পাথরগুলি একটি মসৃণ, শক্ত কাদামাটির ম্যাট্রিক্সে আবদ্ধ থাকে। বোল্ডার-ক্লে ও টিল অবক্ষেপ স্তরে স্তরে সাজানো থাকে না বরং অস্তরহীনভাবে পাতলা স্তরে বিস্তৃত হয়। বোল্ডার-ক্লে ও টিল হিমবাহের অস্তিত্বের স্পষ্ট প্রমাণ বহন করে।

উদাহরণ: উত্তর ইউরোপের বহু দেশ, যেমন সুইডেন, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, এবং জার্মানির উত্তরাংশে ব্যাপকভাবে বোল্ডার-ক্লে ও টিল অবক্ষেপ দেখা যায়। এই অঞ্চলগুলিতে একসময় বিশাল হিমবাহ বিদ্যমান ছিল, যা গলে যাওয়ার সময় এই অবক্ষেপগুলি তৈরি করেছিল।

কেম ও কেমমঞ্চ (Kame & Kame Terrace)

কেম বলতে বোঝায় নিশ্চল হিমবাহ গলে গিয়ে উৎপন্ন নদী দ্বারা গঠিত পিণ্ডাকৃতি ঢিবিকে। যখন হিমবাহ গলে যায়, তখন তা পানি, নুড়ি, পাথর, বালি, ও কাদা বহন করে। এই পদার্থগুলো হিমবাহের সামনে জমা হয়ে পিণ্ডাকৃতি ঢিবি তৈরি করে।

পর্বতের পাদদেশে হিমবাহ গলা জল জমে অনেক সময় হ্রদের সৃষ্টি হয়। এই হ্রদে হিমবাহ ও হিমবাহ গলা জলধারা বাহিত নুড়ি, পাথর, বালি, কাদা প্রভৃতি জমা হয়ে বদ্বীপের মতো ত্রিকোণাকার ভূমিরূপ সৃষ্টি করে। একেই কেম বলা হয়।

যখন হিমবাহ উপত্যকার দুই পাশে কেম সৃষ্টি হয়, তখন তাকে কেমমঞ্চ বলে।

উদাহরণ: ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের নরফেকের গ্লাভেন উপত্যকায় কেম ও কেমমঞ্চ দেখতে পাওয়া যায়।

নব (Knob)

হিমবাহ গলার জলপ্রবাহের দ্বারা প্রান্ত গ্রাবরেখার মধ্যে নুড়ি, বালি, পাথর, কাদা, কাঁকর ইত্যাদির জমা হয়ে তৈরি ছোটো ছোটো ঢিবির মতো ভূমিরূপকেই নব বলা হয়। ইউরোপের উত্তরাংশে প্রায়শই ‘নব’ এবং ‘কেটল’ একসাথে দেখা যায়।

নব সাধারণত কয়েক মিটার থেকে কয়েক ডজন মিটার পর্যন্ত লম্বা এবং প্রশস্ত হয়। নবের আকৃতি সাধারণত বৃত্তাকার বা উপবৃত্তাকার হয়। নব বিভিন্ন আকারের নুড়ি, বালি, পাথর, কাদা, কাঁকর ইত্যাদি দিয়ে তৈরি। নব তৈরি হয় যখন হিমবাহ গলার জলপ্রবাহ প্রান্ত গ্রাবরেখার কাছে পৌঁছায় এবং তার বহনকারী পদার্থ জমা করে। নব বিশ্বের অনেক অংশে পাওয়া যায়, বিশেষ করে প্রাক্তন হিমবাহী এলাকায়।

উদাহরণ: ইউরোপের আল্পস পর্বতমালার পাদদেশে অবস্থিত নব। কানাডার আলবার্টার বানফ ন্যাশনাল পার্কের মোরেন লেকের নব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানার গ্লেসিয়ার ন্যাশনাল পার্কের নব।

কেটল ও কেটল হ্রদ (Kettle or Kettle Lake)

বহিঃবিধৌত সমভূমির উপর বরফের চাঁই (ice block) যখন ফাটলের মধ্যে আটকে পড়ে এবং পরে গলে যায়, তখন ভূপৃষ্ঠে যে গর্তের সৃষ্টি হয় তাকে কেটল (kettle) বলে। এই কেটলে যখন জল জমে থাকে, তখন তাকে কেটল হ্রদ (kettle lake) বলা হয়।

হিমবাহ যখন পিছিয়ে যায়, তখন বরফের বড় বড় চাঁই ভূপৃষ্ঠে আটকে পড়ে। এই বরফের চাঁই যখন বহিঃবিধৌত সমভূমির ফাটলের মধ্যে আটকে পড়ে, তখন সেগুলো সেখানে আবদ্ধ হয়ে যায়। সময়ের সাথে সাথে, এই বরফের চাঁই গলে যায়। বরফ গলে যাওয়ার পর, ভূপৃষ্ঠে একটি গর্তের সৃষ্টি হয়। বৃষ্টিপাত ও ভূগর্ভস্থ জলের মাধ্যমে এই গর্তে জল জমে। জলের পরিমাণ যখন পর্যাপ্ত হয়, তখন গর্তটি একটি হ্রদে পরিণত হয়।

উদাহরণ – স্কটল্যান্ডের অর্কন দ্বীপ, এই দ্বীপে প্রায় 100 টিরও বেশি কেটল হ্রদ রয়েছে।

ড্রামলিন (Drumlin)

ড্রামলিন শব্দটি আইরিশ শব্দ “ড্রোইমিন” থেকে এসেছে, যার অর্থ “ছোট পাহাড়”। এগুলো হিমবাহ অধ্যুষিত অঞ্চলে দেখা যায় এবং পাহাড়ের পাদদেশে বোল্ডার-ক্লে (বড় পাথরের টুকরো সমৃদ্ধ মাটি) দ্বারা গঠিত। ড্রামলিনগুলো দীর্ঘায়িত, ডিমের মতো বা উল্টানো নৌকার আকারের হয়ে থাকে। ড্রামলিন সাধারণত 250 থেকে 1,000 মিটার (820 থেকে 3,280 ফুট) লম্বা এবং 120 থেকে 300 মিটার (390 থেকে 980 ফুট) চওড়া হয়। ড্রামলিনের দীর্ঘ অক্ষ হিমবাহের প্রবাহের দিকের সাথে সমান্তরাল থাকে। ড্রামলিনের উপরের অংশ (যে দিকে হিমবাহ এসেছিল) সাধারণত নিচের অংশের তুলনায় খাড়া থাকে। ড্রামলিন সাধারণত গুচ্ছ বা ঝাঁকে দেখা যায়। আকাশ থেকে দেখলে, ড্রামলিনগুলো “ঝুড়ি ভর্তি ডিম”-এর মতো দেখায়।

ড্রামলিন হিমবাহের গতিবিধির ফলে তৈরি হয়। হিমবাহ যখন প্রবাহিত হয়, তখন এটি তার নিচের পৃষ্ঠের উপর থাকা বরফ, পাথর এবং মাটি ক্ষয় করে। এই ক্ষয়কৃত উপাদানগুলো হিমবাহের সামনে জমা হয়ে ড্রামলিন তৈরি করে।

উদাহরণ – উত্তর আমেরিকার অন্টারিও হ্রদের দক্ষিণে মধ্য নিউইয়র্ক প্রদেশে 15,000 বর্গ কিলোমিটার এলাকায় প্রায় 10,000টি ড্রামলিন অবস্থিত। ইউরোপের আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ইংল্যান্ড এবং জার্মানিতেও ড্রামলিন পাওয়া যায়। এশিয়ায়, হিমালয় এবং আলতাই পর্বতমালার পাদদেশে ড্রামলিন দেখা যায়।

৫.১.২ পৃথিবীর নিয়ত বায়ুপ্রবাহগুলির উৎপত্তি ও গতিপথ চিত্রসহ ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ

পৃথিবীতে তাপমাত্রার পার্থক্যের কারণে তৈরি হয় বায়ুচাপের ভারসাম্যহীনতা। এই ভারসাম্যহীনতা দূর করতেই সারা বছর ধরে নির্দিষ্ট পথে উচ্চচাপ বলয় থেকে নিম্নচাপ বলয়ের দিকে বায়ুপ্রবাহিত হয়। এই নিয়মিত বায়ুপ্রবাহকেই আমরা নিয়ত বায়ুপ্রবাহ বলি।

পৃথিবীতে মোট তিনটি প্রধান নিয়ত বায়ুপ্রবাহ রয়েছে। যথা – আয়ন বায়ু, পশ্চিমা বায়ু, মেরু বায়ু

নিয়ত বায়ুপ্রবাহ

আয়ন বায়ু

আয়ন বায়ু হল দুটি স্থায়ী বায়ুপ্রবাহ যা নিরক্ষীয় অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়। উত্তর গোলার্ধে, বায়ু উত্তর-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয় এবং এটিকে উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু বলা হয়। দক্ষিণ গোলার্ধে, বায়ু দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয় এবং এটিকে দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু বলা হয়।

আয়ন বায়ু উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে উৎপন্ন হয়। এই বলয়গুলি পৃথিবীর উপক্রান্তীয় অঞ্চলে অবস্থিত, যেখানে বায়ু উষ্ণ হয় এবং উপরে উঠে। উঠতি বায়ু বাইরের দিকে প্রসারিত হয় এবং নিম্নচাপ সৃষ্টি করে। এই নিম্নচাপের দিকে পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে বায়ু প্রবাহিত হয়, যার ফলে আয়ন বায়ুর সৃষ্টি হয়।

আয়ন বায়ুর বৈশিষ্ট্য –

  • উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ুর গতিবেগ ঘণ্টায় 15-25 কিলোমিটার, যখন দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ুর গতিবেগ ঘণ্টায় 25-35 কিলোমিটার।
  • আয়ন বায়ু সাধারণত নিরক্ষরেখার দু’পাশে 5° থেকে 25° অক্ষাংশের মধ্যে প্রবাহিত হয়।
  • আয়ন বায়ু মহাদেশগুলির পশ্চিম দিকে বৃষ্টিপাত না হওয়ার জন্য দায়ী, যার ফলে বিশ্বের বৃহত্তম মরুভূমিগুলি (যেমন সাহারা, থর, কালাহারি, আটাকামা) তৈরি হয়েছে।

আয়ন বায়ুর শ্রেণিবিভাগ –

  • উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু – উত্তর গোলার্ধের উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হয়।
  • দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু – দক্ষিণ গোলার্ধের উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হয়।

পশ্চিমা বায়ু

উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধের উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে যে বায়ু দুটি মেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয় (সুমেরুবৃত্তপ্রদেশীয় ও কুমেরুবৃত্তপ্রদেশীয়)-এর দিকে সারাবছর নির্দিষ্ট পথে নিয়মিতভাবে প্রবাহিত হয়, তাদের বলা হয় পশ্চিমা বায়ু।

পশ্চিমা বায়ুর বৈশিষ্ট্য:

  • নামকরণ – পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয় বলে এই বায়ু পশ্চিমা বায়ু নামে পরিচিত।
  • নিম্নচাপ বলয় অভিমুখী প্রবাহ – উত্তর ও দক্ষিণ উভয় গোলার্ধে 35-60° অক্ষাংশের মধ্যে উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে মেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয় অভিমুখে পশ্চিমা বায়ু প্রবাহিত হয়।
  • বৃষ্টিপাতের আধিক্য – পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে মহাদেশগুলির পশ্চিম অংশে বৃষ্টিপাত তুলনামূলকভাবে বেশি হয়।
  • নাতিশীতোয় তৃণভূমির অবস্থান – পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে মহাদেশগুলির পূর্বাংশে বৃষ্টির পরিমাণ ক্রমশ কমে যাওয়ায় বিস্তীর্ণ নাতিশীতোয় তৃণভূমির সৃষ্টি হয়েছে।
  • গতিবেগ – এই বায়ুর গতিবেগ উত্তর গোলার্ধের থেকে দক্ষিণ গোলার্ধে (জলভাগের বণ্টন বেশি থাকার কারণে) বেশি।

পশ্চিমা বায়ুর শ্রেণিবিভাগ –

পশ্চিমা বায়ু দুই প্রকার –

  • দক্ষিণ-পশ্চিম বায়ু – উত্তর গোলার্ধের উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে পশ্চিমা বায়ু সুমেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হওয়ার সময় ফেরেলের সূত্রানুসারে ডান দিকে বেঁকে দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয়। তাই এই বায়ুকে বলা হয় দক্ষিণ-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু।
  • উত্তর-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু – দক্ষিণ গোলার্ধের উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে পশ্চিমা বায়ু ফেরেলের সূত্রানুসারে বাম দিকে বেঁকে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে কুমেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হয়।
    তাই এই বায়ুকে বলা হয় উত্তর-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু।

মেরু বায়ু

মেরু বায়ু হল সুমেরু ও কুমেরু উচ্চচাপ বলয় থেকে মেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত শীতল ও শুষ্ক বায়ুপ্রবাহ।

মেরু বায়ুর বৈশিষ্ট্য

  • শুষ্ক প্রকৃতি – মেরু বায়ু অত্যন্ত শীতল ও শুষ্ক প্রকৃতির বায়ুপ্রবাহ।
  • শীতকালীন প্রাধান্য – এই বায়ুর প্রভাব বছরের অন্য সময়ের তুলনায় শীতকালে বেশি লক্ষ্য করা যায়।
  • তুষারপাত ও বৃষ্টিপাত – মেরু বায়ুর প্রভাবে মহাদেশগুলির পূর্ব অংশে তুষারপাত ও হালকা বৃষ্টিপাত হয় এবং দুই মেরুবৃত্তে ভয়াবহ তুষারঝড়ের সৃষ্টি হয়।
  • মেরু বায়ু সাধারণত দ্রুত গতিতে প্রবাহিত হয় এবং এর সাথে প্রায়শই ঝড়ো হাওয়া থাকে।
  • মেরু বায়ুর প্রভাবে তাপমাত্রা দ্রুত হ্রাস পায় এবং আকাশ পরিষ্কার থাকে।
  • মেরু বায়ু মহাসাগরীয় তরঙ্গ তৈরিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

মেরু বায়ুর শ্রেণিবিভাগ

মেরু বায়ু দুই প্রকার –

  • উত্তর-পূর্ব মেরু বায়ু – উত্তর গোলার্ধের সুমেরু উচ্চচাপ বলয় থেকে ফেরেলের সূত্র অনুযায়ী ডানদিকে বেঁকে উত্তর-পূর্ব দিক থেকে মেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হয়।
  • দক্ষিণ-পূর্ব মেরু বায়ু – দক্ষিণ গোলার্ধের কুমেরু উচ্চচাপ বলয় থেকে কুমেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে ধাবিত হওয়ার সময় ফেরেলের সূত্র অনুযায়ী বামদিকে বেঁকে দক্ষিণ-পূর্ব মেরু বায়ু নামে প্রবাহিত হয়।

মেরু বায়ুর উদাহরণ –

  • উত্তর-পূর্ব মেরু বায়ু চীনের উত্তর-পূর্ব অংশে শীতকালীন শুষ্কতা এবং তুষারপাতের জন্য দায়ী।
  • দক্ষিণ-পূর্ব মেরু বায়ু আর্জেন্টিনার পাম্পাস অঞ্চলে ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তুষারপাতের জন্য দায়ী।

৫.১.৩ ক্রান্তীয় মৌসুমী জলবায়ু অঞ্চলের প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো।

উত্তরঃ

পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে জলবায়ুর বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায়। এই বৈচিত্র্যের জন্য দায়ী বিভিন্ন বিষয়, যার মধ্যে রয়েছে অক্ষাংশ, উচ্চতা, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে দূরত্ব, প্রবাহমান সমুদ্রস্রোত ইত্যাদি। মৌসুমী জলবায়ু অঞ্চল পৃথিবীর একটি বিরাট অংশ জুড়ে বিস্তৃত, এবং এর নিজস্ব কিছু অনন্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

মৌসুমী জলবায়ু অঞ্চলের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল

১) বিভিন্ন ঋতু: এই জলবায়ুতে প্রধানত চারটি ঋতু পর্যায়ক্রমে আবর্তিত হয়: গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ এবং শীত।

  • গ্রীষ্মকাল: এই সময় তাপমাত্রা সর্বোচ্চে থাকে, গড়ে ২৭° সেলসিয়াস থেকে ৩২° সেলসিয়াস পর্যন্ত।
  • বর্ষাকাল: এই সময় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়, কারণ দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয়।
  • শরৎকাল: এই সময় তাপমাত্রা ক্রমশ হ্রাস পায় এবং আকাশ পরিষ্কার থাকে।
  • শীতকাল: এই সময় তাপমাত্রা সর্বনিম্ন থাকে।

২) উষ্ণতা: মৌসুমী জলবায়ু অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা বেশি থাকে, কারণ সূর্যের রশ্মি সরাসরি পৃথিবীর উপর পড়ে। শীতকালে তাপমাত্রা তুলনামূলকভাবে কম থাকে। বার্ষিক গড় তাপমাত্রা প্রায় ২৫° সেলসিয়াস।

৩) বৃষ্টিপাত: এই জলবায়ু অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি, গড়ে ১৫০০ থেকে ২০০০ মিমি। বৃষ্টিপাতের বেশিরভাগই বর্ষাকালে হয়।

৪) আর্দ্রতা: মৌসুমী জলবায়ু অঞ্চলে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকে, বিশেষ করে বর্ষাকালে।

৫) বায়ুপ্রবাহ: এই জলবায়ু অঞ্চলে বায়ুপ্রবাহ মৌসুম অনুসারে পরিবর্তিত হয়। গ্রীষ্মকালে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয়, যা প্রচুর বৃষ্টি নিয়ে আসে। শীতকালে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয়, যা শুষ্ক আবহাওয়া নিয়ে আসে।

৫.১.৪ সমুদ্র স্রোত সৃষ্টির কারণ গুলি ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ

সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির কারণ :

প্রধানত ছয়টি কারণে সমুদ্রস্রোত সৃষ্টি হয় —

বায়ুপ্রবাহ – নিয়ত বায়ুপ্রবাহগুলি সমুদ্রের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় সমুদ্রের ওপরের জলরাশিকে নিজের প্রবাহের দিকে চালিত করে। এইভাবে বায়ুপ্রবাহ সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি করে। যেমন — যেসব স্থানে আয়ন বায়ু প্রবাহিত হয়, সেখানে পূর্ব থেকে পশ্চিমদিকে সমুদ্রস্রোত প্রবাহিত হয়। আবার যেসব স্থানে পশ্চিমা বায়ু প্রবাহিত হয়, সেখানে সমুদ্রস্রোত পশ্চিমদিক থেকে পূর্বদিকে অগ্রসর হয়।

সমুদ্র স্রোত সৃষ্টির কারণ গুলি ব্যাখ্যা কর।

সমুদ্রজলে উষ্ণতার তারতম্য – নিরক্ষীয় ও ক্রান্তীয় অঞ্চলে বেশি উষ্ণতার জন্য সমুদ্রজল বেশি উষ্ণ হয় এবং বাষ্পায়ন বেশি হয়। এ ছাড়া, এই উষ্ণ জল হালকা বলে সমুদ্রের ওপরের অংশ দিয়ে পৃষ্ঠস্রোত বা বহিঃস্রোতরূপে শীতল মেরু অঞ্চলের দিকে বয়ে যায়। জলের এই শূন্যতা পূরণের জন্য তখন মেরু অঞ্চলের শীতল ও ভারী জল সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে নিরক্ষীয় ও ক্রান্তীয় অঞ্চলের দিকে অন্তঃস্রোতরূপে বয়ে যায়। এভাবে সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি হয়।

সমুদ্রজলে লবণতার তারতম্য – সমুদ্রজলে লবণতার পরিমাণ কোথাও বেশি, কোথাও কম। কম লবণাক্ত জল হালকা বলে সমুদ্রের ওপরের অংশ দিয়ে পৃষ্ঠস্রোত বা বহিঃস্রোতরূপে বেশি লবণাক্ত ভারী জলের দিকে বয়ে যায়। জলের এই শূন্যতা পূরণের জন্য তখন বেশি লবণাক্ত ভারী জল সমুদ্রের নিম্নাংশ দিয়ে অন্তঃস্রোতরূপে ওই কম লবণাক্ত হালকা জলের দিকে বয়ে যায়। এইভাবে সমুদ্রস্রোতের উৎপত্তি হয়।

পৃথিবীর আবর্তন গতি – পৃথিবীর আবর্তন গতির জন্য সমুদ্রস্রোত সোজাপথে প্রবাহিত হতে পারে না। ফেরেলের সূত্রানুসারে, উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বামদিকে বেঁকে যায়। এভাবে নতুন সমুদ্রস্রোতের উৎপত্তি হয়। উদাহরণ — উপসাগরীয় স্রোত আবর্তন গতির প্রভাবে ডানদিকে বেঁকে উত্তর আটলান্টিক স্রোতের উৎপত্তি ঘটায়।

মহাদেশসমূহের অবস্থান ও আকৃতি – প্রবহমান সমুদ্রস্রোত মহাদেশের যে প্রান্তে বা দ্বীপপুঞ্জে বাধা পায়, সেখানকার গঠন বা আকৃতি অনুসারে সমুদ্রস্রোতের গতিপথ পরিবর্তিত হয় বা বিভিন্ন শাখায় বিভক্ত হয়। এভাবেও নতুন নতুন সমুদ্রস্রোতের উৎপত্তি ঘটে। উদাহরণ — আটলান্টিক মহাসাগরে দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোত ব্রাজিলের কেপ ডি সাও রোক-এ বাধা পেয়ে ব্রাজিল স্রোত নামে একটি নতুন স্রোতের উৎপত্তি ঘটায়।

বরফের গলন – সমুদ্রে বরফ যেখানে গলে যায়, সেখানে জলরাশির পরিমাণ কিছুটা বৃদ্ধি পায় এবং ওই জলরাশি স্বল্প জলরাশি সমন্বিত অঞ্চলের দিকে ধাবিত হয়, ফলে সমুদ্রস্রোতের উৎপত্তি ঘটে।

৫.২ যে-কোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৫×২=১০

৫.২.১ ভারতের পশ্চিম হিমালয়ের ভূপ্রকৃতির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

উত্তরঃ

পশ্চিম হিমালয়ের ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য –

অবস্থান – জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তের নাঙ্গা পর্বত থেকে নেপালের পশ্চিম সীমায় অবস্থিত কালী নদী পর্যন্ত বিস্তৃত অংশকে বলা হয় পশ্চিম হিমালয়। এর তিনটি ভাগ —

  • কাশ্মীর হিমালয়,
  • হিমাচল হিমালয় বা পাঞ্জাব হিমালয় এবং
  • কুমায়ুন হিমালয়।
ভারতের পশ্চিম হিমালয়ের ভূপ্রকৃতির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

কাশ্মীর হিমালয় –

  • এই অংশটি জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যে অবস্থিত।
  • কাশ্মীর হিমালয়ের দক্ষিণে পরপর পিরপাঞ্জাল, জম্মু ও পুঞ্জ পাহাড় অবস্থিত। এই পাহাড় প্রধানত বেলেপাথর ও শেল দিয়ে গঠিত।
  • এই হিমালয়ের উত্তর অংশটিতে অনেক উপত্যকা ও দুন দেখা যায়। যেমন — কাশ্মীর উপত্যকা ও উধমপুর দুন প্রভৃতি।
  • পিরপাঞ্জাল পর্বতশ্রেণি কাশ্মীর উপত্যকাকে ভারতের অন্যান্য অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে। কেবলমাত্র বানিহাল ও পিরপাঞ্জাল গিরিপথ দুটি দিয়ে কাশ্মীর উপত্যকায় প্রবেশ করা যায়।
  • হিমবাহ সৃষ্ট ডাল, উলার, আনছার, নাগিন প্রভৃতি হ্রদ এই উপত্যকায় দেখা যায়।
  • কাশ্মীর উপত্যকার পূর্ব থেকে দক্ষিণ দিকে বিস্তৃত হয়েছে হারামোশ ও জাস্কর পর্বতশ্রেণি।
  • কাশ্মীরের সিন্ধু উপত্যকার উত্তরভাগে ভারতের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কারাকোরাম পর্বতশ্রেণির গডউইন অস্টিন বা K2 (8611 মি) অবস্থিত। এই পর্বতের অন্যান্য শৃঙ্গ হল গাশারব্রুম বা হিডনপিক, ব্রডপিক, গাশারব্রুম-II প্রভৃতি। এই পর্বতে অবস্থিত সিয়াচেন (76 কিমি) হল ভারতের দীর্ঘতম ও বৃহত্তম হিমবাহ।
  • কারাকোরামের দক্ষিণে লাদাখ পর্বতশ্রেণি অবস্থিত। এর পূর্বদিকে ভারতের সর্বোচ্চ লাদাখ মালভূমি অবস্থিত। এর গড় উচ্চতা প্রায় 3500 মি।
  • জোজিলা ও বানিহাল হল কাশ্মীর হিমালয়ের প্রধান গিরিপথ।

হিমাচল হিমালয় বা পাঞ্জাব হিমালয় –

  • হিমালয়ের যে অংশ হিমাচল প্রদেশে অবস্থিত তাকে হিমাচল হিমালয় বলা হয়।
  • এই অঞ্চলের উত্তরে 5000 থেকে 6000 মিটার উঁচু হিমাদ্রি বা উচ্চ হিমালয় পর্বতশ্রেণি অবস্থিত।
  • হিমাদ্রির দক্ষিণে মধ্য হিমালয়ের চারটি পর্বতশ্রেণি — ধওলাধর, পিরপাঞ্জাল, জাস্কর, নাগটিব্বা ও মুসৌরি অবস্থিত। এদের মধ্যে পিরপাঞ্জাল পর্বতশ্রেণির শৃঙ্গগুলি প্রায়ই তুষারাবৃত থাকে। এই পর্বতশ্রেণিগুলির গড় উচ্চতা 1500 4500 মিটারের মধ্যে।
  • সবচেয়ে দক্ষিণে আছে শিবালিক পর্বতশ্রেণি। এর গড় উচ্চতা 600-1500 মি।
  • এই অংশেও অনেক পার্বত্য উপত্যকা দেখা যায়, যেমন — লাহুল, স্পিতি, কুলু, কাংড়া প্রভৃতি।

কুমায়ুন হিমালয় –

  • উত্তরাখণ্ড রাজ্যে হিমালয়ের যে অংশটি বিস্তৃত, তার নাম কুমায়ুন হিমালয়।
  • মধ্য হিমালয় পর্বতশ্রেণির উত্তরে কতকগুলি বিখ্যাত তুষারাবৃত শৃঙ্গ আছে, যেমন — নন্দাদেবী (7816 মি), গঙ্গোত্রী (6614 মি), কেদারনাথ (7188 মি), কামেট (7756 মি), ত্রিশূল (7120 মি) প্রভৃতি।
  • এই অঞ্চলের দক্ষিণ ভাগে শিবালিক পর্বতশ্রেণির মধ্যে কতকগুলি বিখ্যাত উপত্যকা বা দুন আছে, যেমন — দেরাদুন, চৌখাম্বা, কোটা পাতিয়া প্রভৃতি।
  • এই অংশে বিস্তৃত নাগটিব্বা ও মুসৌরি পর্বতের পূর্বাংশে অনেকগুলি হ্রদ দেখা যায়। যেমন — নৈনিতাল, ভীমতাল, সাততাল প্রভৃতি।
  • এখানে গঙ্গোত্রী ও যমুনোত্রী হিমবাহ থেকে যথাক্রমে গঙ্গা ও যমুনা নদীর উৎপত্তি হয়েছে।

৫.২.২ ভারতে কার্পাস উৎপাদনের অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশের বর্ণনা দাও।

উত্তরঃ

তুলো চালের উপযোগী ভৌগোলিক পরিবেশ

তুলো ভারতের প্রধান তন্ধু ফসল। তুলো চাষের জন্য নিম্নলিখিত ভৌগোলিক অবস্থা বিশেষভাবে প্রয়োজন –

প্রাকৃতিক পরিবেশ

জলবায়ু – তুলো ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলের ফসল। তাই মাঝারি ধরনের উষ্ণতা ও বৃষ্টিপাতযুক্ত অঞ্চলে তুলো চাষ করা হয়।

  • উষ্ণতা – তুলো চাষের জন্য গড়ে 20-26 °সে উষ্ণতা প্রয়োজন।
  • বৃষ্টিপাত – বার্ষিক 60 থেকে 100 সেমি বৃষ্টিপাতে তুলো চাষ ভালো হয়। অবশ্য উত্তর-পশ্চিম ভারত ও দক্ষিণ ভারতের উপকূলীয় অঞ্চলে জলসেচের সাহায্যে 60 সেমি-র কম বৃষ্টিপাতযুক্ত এলাকায়ও তুলো চাষ করা হচ্ছে।
  • সামুদ্রিক বাতাস – সামুদ্রিক লোনা বাতাসে তুলো চাষ ভালো হয়।

মৃত্তিকা – চুন-মেশানো উর্বর দোআঁশ মাটি তুলো চাষের পক্ষে আদর্শ। এ ছাড়া, চারনোজেম মাটি এবং লাভা থেকে গঠিত দাক্ষিণাত্যের কালো রেগুর মাটিতে প্রচুর পরিমাণে তুলো উৎপাদিত হয়।

ভূমির প্রকৃতি – তুলো গাছের গোড়াতে যাতে জল জমতে না পারে সেজন্য উত্তম জলনিকাশি সুবিধাযুক্ত সমতল জমি বা সামান্য চালু জমি চাষের পক্ষে আদর্শ তুলো চাষ করা হয়।

অর্থনৈতিক পরিবেশ

  • শ্রমিক – গাছ লাগানো, গাছের পরিচর্যা করা, গুটি তোলা, গুটি থেকে আঁশ ছাড়ানো প্রভৃতি কাজের জন্য প্রচুর দক্ষ শ্রমিকের দরকার হয়।
  • সার – তুলো চাষে জমির উর্বরতা খুব দ্রুত কমে যায়। তাই জমিতে পরিমিত জৈব ও রাসায়নিক সার দিতে হয়।
  • কীটনাশক – তুলো গাছে প্রায়ই পোকা লাগে। যেমন – বল উইভিল নামে এক ধরনের পোকা তুলো চাষের খুব ক্ষতি করে। এজন্য তুলো চাষে কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়।
  • অন্যান্য – সার, কীটনাশক, উচ্চফলনশীল বীজ, আধুনিক কৃষি-যন্ত্রপাতি, জলসেচ প্রভৃতির সাহায্যে তুলো চাষ করার জন্য প্রচুর মূলধনের প্রয়োজন হয়। এ ছাড়া, বাজারে তুলোর চাহিদা, তুলো পরিবহণের ভালো ব্যবস্থা প্রভৃতিও তুলোর উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে।

৫.২.৩ পূর্ব ও মধ্য ভারতের লৌহ ইস্পাত শিল্প গড়ে ওঠার কারণ গুলি ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ

পূর্ব ও মধ্য ভারতে লোহা ও ইস্পাত শিল্পের কেন্দ্রীভবনের কারণ

ভারতের লোহা ও ইস্পাত কারখানা অধিকাংশ গড়ে উঠেছে পূর্ব ও মধ্য ভারতে, যেমন – পূর্ব ভারতের দুর্গাপুর, কুলটি-বার্নপুর, জামশেদপুর, রৌরকেলা, বোকারো ও মধ্য ভারতের ভিলাই প্রভৃতি স্থানে। এ ছাড়াও এই অঞ্চলে আরও কয়েকটি লোহা ও ইস্পাত কেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্প গৃহীত হয়েছে। এই অঞ্চলে লোহা ও ইস্পাত কারখানার কেন্দ্রীভবনের কারণগুলি হল –

পূর্ব ও মধ্য ভারতের লৌহ ইস্পাত শিল্প গড়ে ওঠার কারণ গুলি ব্যাখ্যা কর।

কাঁচামালের সহজলভ্যতা – নীচের সারণিতে পূর্ব ও মধ্য ভারতের লোহা ও ইস্পাত কারখানাগুলির জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালগুলির প্রাপ্তিস্থান উল্লেখ করা হল –

কাঁচামালপ্রাপ্তিস্থান
কয়লাপূর্ব ভারত : রানিগঞ্জ (পশ্চিমবঙ্গ); ঝরিয়া, বোকারো, গিরিডি, করণপুরা (ঝাড়খণ্ড); তালচের (ওডিশা)
মধ্য ভারত : কোরবা, সোনহাট (ছত্তিশগড়), সিংগ্রাউলি, উমারিয়া (মধ্যপ্রদেশ)
আকরিক লোহাপূর্ব ভারত : গুয়া, নোয়ামুন্ডি, চিরিয়া (ঝাড়খণ্ড); গোরুমহিষানি, বাদামপাহাড়, সুলাইপাত, কিরিবুরু, বোনাই, বোলানি (ওডিশা)
মধ্য ভারত : বায়লাডিলা, দাল্লি-রাজহারা (ছত্তিশগড়)
চুনাপাথরপূর্ব ভারত : বীরমিত্রপুর (ওডিশা); ভবনাথপুর ও ডালটনগঞ্জ (ঝাড়খণ্ড); পূর্ণপাণি (ছত্তিশগড়)
মধ্য ভারত : সাতনা, কুটেশ্বর, কাটনি (মধ্যপ্রদেশ)
ডলোমাইটপূর্ব ভারত : সম্বলপুর, গাংপুর ও সুন্দরগড় (ওডিশা); হিররি (ছত্তিশগড়)
মধ্য ভারত : কাটনি (মধ্যপ্রদেশ)
ম্যাঙ্গানিজগাংপুর ও বোনাই (ওডিশা)

জলের সহজলভ্যতা : এই শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় জল দামোদর, বরাকর, সুবর্ণরেখা, খরকাই, শঙ্খ, ব্রাহ্মণী প্রভৃতি নদনদী থেকে সহজেই পাওয়া যায়। এ ছাড়া তেন্ডুলা জলাধার থেকেও জল পাওয়া যায়।

পর্যাপ্ত বিদ্যুৎশক্তি : পূর্ব ও মধ্য ভারতে প্রচুর কয়লানির্ভর বৃহদায়তন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। যেমন – পূর্ব ভারতের দুর্গাপুর, মেজিয়া, দিশেরগড়, ওয়ারিয়া (পশ্চিমবঙ্গ), পাত্রাতু, বোকারো (ঝাড়খণ্ড), তালচের (ওডিশা) প্রভৃতি এবং মধ্য ভারতের কোরবা (ছত্তিশগড়), বিন্ধ্যাচল (মধ্যপ্রদেশ) প্রভৃতি। এ ছাড়া হিরাকুঁদ ও সিলেবুর জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জলবিদ্যুৎ প্রাপ্তির সুবিধা পূর্ব ও মধ্য ভারতে লোহা ও ইস্পাত শিল্পের কেন্দ্রীভবনের সহায়ক হয়েছে।

পূর্ব ও মধ্য ভারতের লৌহ ইস্পাত শিল্প গড়ে ওঠার কারণ গুলি ব্যাখ্যা কর।

উন্নত পরিবহণ ব্যবস্থা : ভারতীয় রেলপথের বিভিন্ন শাখা (পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলপথ) এবং NH-2, 6, 23, 31, 33 প্রভৃতি জাতীয় সড়ক এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রসারিত হওয়ায় দেশের যে-কোনো অঞ্চলের সঙ্গে সহজেই যোগাযোগ ও পণ্যদ্রব্যের আদানপ্রদান করা যায়।

সুলভ শ্রমিকের প্রাচুর্য : পূর্ব ভারতের বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওডিশা ও পশ্চিমবঙ্গ এবং মধ্য ভারতের ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ প্রভৃতি রাজ্য যথেষ্ট জনবহুল হওয়ায় এখানে যথেষ্ট সংখ্যক সুলভ ও দক্ষ শ্রমিক পাওয়া যায়।

উন্নত বাজার ও চাহিদা : পূর্ব ও মধ্য ভারত ভারী ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পে খুবই সমৃদ্ধ। তাই এই অঞ্চলে লোহা ও ইস্পাতের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে।

৫.২.৪ ভারতে নগর গড়ে ওঠার প্রধান কারণ গুলি আলোচনা করো।

উত্তরঃ

জীবনধারণের উপযোগী নানা ধরনের অনুকূল পরিবেশে বিভিন্ন সময়ে জনসমাবেশের ফলে শহর-নগর গড়ে ওঠে —

  • প্রশাসনিক কেন্দ্র – কোনো স্থান প্রশাসনের কেন্দ্র হলে সেখানে বিভিন্ন সেবামূলক ও শিল্প-বাণিজ্য- শিক্ষা প্রভৃতি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। বড়ো বড়ো সড়ক, পাকা বাড়ি প্রভৃতি নির্মিত হয়। এইভাবে স্থানটি ধীরে ধীরে শহরে বা নগরে পরিণত হয়। যেমন — চণ্ডীগড়, ভোপাল, গান্ধিনগর প্রভৃতি ভারতের শহরগুলি প্রশাসনিক কারণেই বিকাশলাভ করেছে।
  • খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ অঞ্চল – বিভিন্ন শিল্পে খনিজ সম্পদের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। তাই বহু খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ স্থান ধীরে ধীরে শহরে পরিণত হয়েছে। যেমন — আসানসোল, ধানবাদ প্রভৃতি।
  • শিল্পকেন্দ্র – যেসব স্থানে শিল্প গড়ে উঠেছে, সেইসব স্থানে জীবিকার সুযোগ থাকায় জীবিকার উদ্দেশ্যে জনসমাগম ঘটেছে। এর ফলে স্থানগুলি ক্রমেই শহর হিসেবে বিকাশ লাভ করেছে। যেমন — জামশেদপুর, ভিলাই প্রভৃতি।
  • বাণিজ্যকেন্দ্র – যেসব স্থানে পণ্যসামগ্রীর সমাবেশ হয় এবং ওই পণ্যের ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম ঘটে, সেইসব স্থানে শহর গড়ে উঠেছে। যেমন — হরিয়ানার হিসার, উত্তরপ্রদেশের হাপুর প্রভৃতি।
  • যোগাযোগ কেন্দ্র – ভারতের যেসব স্থান যোগাযোগের কেন্দ্র অর্থাৎ বিভিন্ন দিক থেকে রেলপথ, সড়কপথ, জলপথ এসে মিলিত হয়েছে, সেইসব স্থানে শহর গড়ে উঠেছে। যেমন — শিলিগুড়ি, খড়গপুর প্রভৃতি।
  • তীর্থস্থান – বড়ো বড়ো তীর্থস্থানে প্রচুর জনসমাগম ঘটেছে এবং এগুলি কালক্রমে শহরে পরিণত হয়েছে। যেমন — হরিদ্বার, বারাণসী, গয়া, মথুরা, বৃন্দাবন প্রভৃতি।
  • শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র – শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত স্থান ক্রমে শহর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। যেমন — শান্তিনিকেতন।
  • ইতিহাস প্রসিদ্ধ স্থান – ইতিহাস প্রসিদ্ধ স্থান জনসমাগমের কারণে শহর হিসেবে গড়ে উঠেছে। যেমন — আগ্রা, মুর্শিদাবাদ প্রভৃতি।
  • পর্যটন স্থান – অনেক স্থানে মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটায়, জনবসতি তথা শহর গড়ে উঠেছে। যেমন — দার্জিলিং, দিঘা প্রভৃতি।
  • সামরিক কেন্দ্র – কিছু সামরিক কেন্দ্র কালক্রমে শহরে পরিণত হয়েছে। যেমন—মিরাট, ব্যারাকপুর প্রভৃতি।
  • বন্দর: বড়ো বড়ো বন্দরকে কেন্দ্র করে শহর গড়ে উঠেছে। যেমন — পারাদীপ, হলদিয়া প্রভৃতি।
  • পর্বত ও সমভূমির সংযোগস্থল – পর্বত ও সমভূমির সংযোগস্থলে শহর গড়ে উঠেছে। যেমন — হরিদ্বার।

সবশেষে বলা যায়, শহর গড়ে ওঠার সময় উল্লিখিত কারণগুলির মধ্যে কোনো একটি প্রাধান্য বিস্তার করলেও, পরবর্তী সময়ে অনেকগুলি কারণ সম্মিলিতভাবে ওই শহরের উন্নতিতে সাহায্য করে।

বিভাগ – ‘চ’

৬. প্রশ্নপত্রের সাথে প্রদত্ত ভারতের রেখা মানচিত্রে নিম্নলিখিত গুলি উপযুক্ত প্রতীক ও নাম সহ চিহ্নিত করে মানচিত্রটি উত্তরপত্রের সঙ্গে জুড়ে দাও : ১×১০=১০

৬.১ শিবালিক পর্বত।

৬.২ কৃষ্ণা নদী।

৬.৩ ভারতের শুষ্কতম অঞ্চল।

৬.৪ ভারতের একটি লৌহ মৃত্তিকা যুক্ত অঞ্চল।

৬.৫ ভারতের কেন্দ্রীয় অরণ্য গবেষণাগার।

৬.৬ উত্তর ভারতের একটি গম উৎপাদক অঞ্চল।

৬.৭ দক্ষিণ ভারতের ম্যাঞ্চেস্টার।

৬.৮ পূর্ব উপকূলের একটি স্বাভাবিক বন্দর।

৬.৯ ভারতের প্রধান প্রশাসনিক কেন্দ্র।

৬.১০ ভারতের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

ভারতের রেখা মানচিত্র

অথবা

[শুধুমাত্র দৃষ্টিহীন পরীক্ষার্থীদের জন্য]

৬। নিম্নলিখিত যেকোনো দশটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ১×১০=১০

৬.১ পিরপাঞ্জাল পর্বত ও উচ্চ হিমালয়ের মধ্যে কোন উপত্যকা অবস্থিত?

উত্তরঃ কাশ্মীর উপত্যকা 

৬.২ বিন্ধ ও সাতপুরা পর্বতের মাঝে অবস্থিত গ্রস্থ উপত্যকার নাম লেখ।

উত্তরঃ নর্মদা উপত্যকা

৬.৩ ব্রহ্মপুত্র নদী অরুণাচল প্রদেশে কোন নামে পরিচিত?

উত্তরঃ ব্রহ্মপুত্র নদী অরুণাচল প্রদেশে সিয়াং নামে পরিচিত।

৬.৪ ভারতের বৃহত্তম উপগ্রহের নাম কি?

উত্তরঃ

ওজন অনুযায়ী: জিস্যাট-১১ (বিগ বার্ড): এটি ৫,৮৫৪ কেজি ওজনের একটি যোগাযোগ উপগ্রহ, যা ২০২৩ সালে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। এটি ভারতের কক্ষপথে পাঠানো সবচেয়ে ভারী উপগ্রহ।


আকার অনুযায়ী: INSAT-3A: এটি ৮.৬ মিটার (২৮.২ ফুট) লম্বা একটি আবহাওয়া উপগ্রহ, যা ২০০৫ সালে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। এটি ভারতের কক্ষপথে পাঠানো সবচেয়ে বড় উপগ্রহ।

ক্ষমতা অনুযায়ী: GSAT-19: এটি একটি যোগাযোগ উপগ্রহ যার 120 Ku-band transponders রয়েছে, যা ২০২০ সালে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। এটি ভারতের কক্ষপথে পাঠানো সবচেয়ে শক্তিশালী উপগ্রহ।

৬.৫ ভারতের একটি কৃষ্ণ মৃত্তিকা সমৃদ্ধ রাজ্যের নাম লেখ।

উত্তরঃ ভারতের একটি কৃষ্ণ মৃত্তিকা সমৃদ্ধ রাজ্যের নাম – অন্ধ্রপ্রদেশ।

৬.৬ ম্যানগ্রোভ অরণ্যের একটি উদ্ভিদের নাম লেখ।

উত্তরঃ ম্যানগ্রোভ অরণ্যের একটি উদ্ভিদের নাম – সুন্দরী

৬.৭ পশ্চিমবঙ্গের কোন জেলা ‘ধানের ভান্ডার’ নামে পরিচিত?

উত্তরঃ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলা ‘ধানের ভান্ডার’ নামে পরিচিত।

৬.৮ ইক্ষু উৎপাদনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করে?

উত্তরঃ ইক্ষু উৎপাদনে ভারতের উত্তরপ্রদেশ প্রথম স্থান অধিকার করে।

৬.৯ ভারতের একটি প্রাণিজ ভিত্তিক শিল্পীর নাম লেখ।

উত্তরঃ ভারতের একটি প্রাণিজ ভিত্তিক শিল্পীর নাম – রেশম শিল্প

৬.১০ দক্ষিণ ভারতের একটি মোটরগাড়ি নির্মাণ কেন্দ্রের নাম লেখ।

উত্তরঃ দক্ষিণ ভারতের একটি মোটরগাড়ি নির্মাণ কেন্দ্রের নাম – তামিলনাড়ুর চেন্নাই (ফোর্ড ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড)।

৬.১১ পূর্ব-ভারতের একটি ভারী ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প কেন্দ্রের নাম লেখ।

উত্তরঃ ধানবাদ, ঝাড়খণ্ড: এটি ভারতের অন্যতম প্রাচীনতম এবং বৃহত্তম ভারী ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প কেন্দ্র। এখানে হিন্দুস্থান হেভি ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (এইচএইচইএল), ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালস লিমিটেড (বিএইচইএল) এবং বোকারো স্টিল প্ল্যান্ট (বিএসপি) সহ বেশ কয়েকটি বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

জামশেদপুর, ঝাড়খণ্ড: এটি টাটা স্টিল-এর সদর দপ্তর এবং ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্পাত উৎপাদন কেন্দ্র। এছাড়াও এখানে টাটা মোটরস, টিভিএস মোটরস এবং আইএসএমসি-এর মতো অন্যান্য প্রধান শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ: ঐতিহাসিকভাবে, কলকাতা ভারতের ভারী ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল। এখানে বেশ কিছু পুরোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেমন বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ফাউন্ড্রি কোম্পানি (বিইএফও) এবং গুইনিস ম্যাকিন টুলস। যদিও সময়ের সাথে সাথে শিল্পের গুরুত্ব কিছুটা কমেছে, তবুও এখনও এখানে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

৬.১২ ভারতের করমুক্ত বন্দর কোনটি?

উত্তরঃ ভারতের করমুক্ত বন্দরটি হল – মুম্বাই বন্দর।

৬.১৩ ভারতের কোন রাজ্যের জনঘনত্ব সবচেয়ে বেশি?

উত্তরঃ ভারতের বিহার রাজ্যের জনঘনত্ব সবচেয়ে বেশি।

৬.১৪ ভারতের কোন রাজ্যের চা জগদ্বিখ্যাত?

উত্তরঃ ভারতের আসাম রাজ্যের চা জগদ্বিখ্যাত।

Share via:

মন্তব্য করুন