রেক্টিফায়েড স্পিরিট ও ডিনেচার্ড স্পিরিট কী? রেক্টিফায়েড স্পিরিট ও ডিনেচার্ড স্পিরিটের মধ্যে পার্থক্য কী?

Souvick

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “রেক্টিফায়েড স্পিরিট ও ডিনেচার্ড স্পিরিট কী? রেক্টিফায়েড স্পিরিট ও ডিনেচার্ড স্পিরিটের মধ্যে পার্থক্য কী?” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “জৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

রেক্টিফায়েড স্পিরিট ও ডিনেচার্ড স্পিরিট কী? রেক্টিফায়েড স্পিরিট ও ডিনেচার্ড স্পিরিটের মধ্যে পার্থক্য কী?

রেক্টিফায়েড স্পিরিট ও ডিনেচার্ড স্পিরিট কী?

রেক্টিফায়েড স্পিরিট –

95.6% ইথাইল অ্যালকোহল এবং 4.4% জলের মিশ্রণকে রেক্টিফায়েড স্পিরিট বলে।

রেক্টিফায়েড স্পিরিটের ব্যবহার –

  • জীবাণুনাশক হিসেবে চিকিৎসাক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
  • সুগন্ধি দ্রব্য, মদ জাতীয় উত্তেজক পানীয় প্রভৃতিতে ব্যবহৃত হয়।

ডিনেচার্ড স্পিরিট –

রেক্টিফায়েড স্পিরিটের সঙ্গে মিথানল, ন্যাপথা, পিরিডিন ইত্যাদি পদার্থ মিশিয়ে যে বিষাক্ত মিশ্রণ পাওয়া যায় সেটি হল ডিনেচার্ড স্পিরিট।

রেক্টিফায়েড স্পিরিট ও ডিনেচার্ড স্পিরিটের মধ্যে পার্থক্য কী?

রেক্টিফায়েড স্পিরিট ও ডিনেচার্ড স্পিরিটের মধ্যে পার্থক্য –

রেক্টিফায়েড স্পিরিটডিনেচার্ড স্পিরিট
95.6% ইথাইল অ্যালকোহল এবং 4.4% জলের মিশ্রণকে রেক্টিফায়েড স্পিরিট বলে।রেক্টিফায়েড স্পিরিটের সঙ্গে মিথানল, ন্যাপথা, পিরিডিন ইত্যাদি পদার্থ মিশিয়ে যে বিষাক্ত মিশ্রণ পাওয়া যায় সেটি হল ডিনেচার্ড স্পিরিট।
মিষ্টি গন্ধযুক্ত তরল এবং এটি বিষাক্ত নয় তাই বিভিন্ন পানীয় প্রস্তুত করতে ব্যবহৃত হয়।দুর্গন্ধযুক্ত বিষাক্ত তরল, তাই পানের অযোগ্য।
জলে দ্রবীভূত হয়ে স্বচ্ছ দ্রবণ উৎপন্ন করে।জলে দ্রবীভূত হয়ে ঘোলাটে দ্রবণ উৎপন্ন করে।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

রেক্টিফায়েড স্পিরিট কাকে বলে?

রেক্টিফায়েড স্পিরিট হল একটি উচ্চ শুদ্ধতা সম্পন্ন ইথাইল অ্যালকোহল ও জলের মিশ্রণ। এতে সাধারণত 95.6% ইথাইল অ্যালকোহল এবং 4.4% জল থাকে।

ডিনেচার্ড স্পিরিট বলতে কী বোঝায়?

ডিনেচার্ড স্পিরিট হল রেক্টিফায়েড স্পিরিটের সাথে মিথানল, ন্যাপথা, পিরিডিন ইত্যাদি বিষাক্ত ও দুর্গন্ধযুক্ত পদার্থ মিশিয়ে তৈরি একটি বিষাক্ত মিশ্রণ। এই মিশ্রণ এটিকে পান করার অযোগ্য করে তোলে।

রেক্টিফায়েড স্পিরিটের প্রধান ব্যবহারগুলো কী কী?

এর প্রধান ব্যবহারগুলোর মধ্যে রয়েছে –
1. চিকিৎসাক্ষেত্রে জীবাণুনাশক হিসেবে।
2. সুগন্ধি দ্রব্য তৈরি করতে।
3. বিভিন্ন প্রকার মদ ও উত্তেজক পানীয় প্রস্তুতিতে।

ডিনেচার্ড স্পিরিটকে বিষাক্ত করে তোলার পেছনে কারণ কী?

ডিনেচার্ড স্পিরিটকে বিষাক্ত করার প্রধান কারণ হল এটিকে শুল্ক ও কর ফাঁকি দিয়ে পানীয় হিসেবে ব্যবহার রোধ করা। যেহেতু এতে বিষাক্ত পদার্থ মিশানো থাকে, তাই এটি কোনোভাবেই পান করার জন্য নিরাপদ নয়, যা সরকারি রাজস্ব রক্ষা করতে সাহায্য করে।

ডিনেচার্ড স্পিরিট যদি পান করতে না পারা যায়, তাহলে এর ব্যবহারই বা কী?

ডিনেচার্ড স্পিরিট শিল্পক্ষেত্রে বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়, যেমন –
1. দ্রাবক হিসেবে বার্নিশ, পলিশ ইত্যাদিতে।
2. রং ও রজন তৈরিতে।
3. বিজ্ঞানাগারে জ্বালানি হিসেবে।

ডিনেচার্ড স্পিরিট কি স্পর্শে বা শুঁকলে ক্ষতিকর?

হ্যাঁ, ডিনেচার্ড স্পিরিটের বাষ্প শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করলে বা ত্বকের সংস্পর্শে এলে তা ক্ষতিকর হতে পারে। এটি ত্বকে জ্বালা বা পোড়া অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে এবং বাষ্প মাথাব্যথা ও মাথাঘোরার কারণ হতে পারে। তাই এটি ব্যবহারের সময় ভালো বায়ুচলাচল থাকা উচিত এবং সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম (যেমন – গ্লাভস) ব্যবহার করা প্রয়োজন।

রেক্টিফায়েড স্পিরিট কি সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ?

না, এটি সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ নয়। যদিও রেক্টিফায়েড স্পিরিট পানীয় হিসেবে ব্যবহারযোগ্য, এটি একটি অত্যন্ত শক্তিশালী অ্যালকোহল। এটি অবাধে পান করলে অ্যালকোহল বিষক্রিয়া হতে পারে। চিকিৎসায় জীবাণুনাশক হিসেবে ব্যবহার করার সময়ও যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “রেক্টিফায়েড স্পিরিট ও ডিনেচার্ড স্পিরিট কী? রেক্টিফায়েড স্পিরিট ও ডিনেচার্ড স্পিরিটের মধ্যে পার্থক্য কী?” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “জৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।

ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।

কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল গ্রুপ কাকে বলে? কার্যকরী মূলক ও জৈব মূলকের পার্থক্য বুঝিয়ে দাও।

কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল গ্রুপ কাকে বলে? কার্যকরী মূলক ও জৈব মূলকের পার্থক্য বুঝিয়ে দাও।

একটি জৈব যৌগের আণবিক সংকেত C₂H₄O₂। যৌগটি জলে দ্রাব্য এবং যৌগটির জলীয় দ্রবণে NaHCO₃ যোগ করলে CO₂ নির্গত হয়। জৈব যৌগটিকে শনাক্ত করো। জৈব যৌগটির সঙ্গে ইথানলের বিক্রিয়া শর্ত ও সমিত রাসায়নিক সমীকরণসহ লেখো।

C₂H₄O₂ সংকেতের একটি জৈব যৌগ NaHCO₃-এর সাথে CO₂ গ্যাস দেয়। যৌগটি শনাক্ত করো ও ইথানলের সাথে এর বিক্রিয়ার শর্তসহ সমীকরণ দাও।

About The Author

Souvick

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

Madhyamik Physical Science Suggestion 2026

Madhyamik Life Science Suggestion 2026

Madhyamik Physical Science Suggestion 2026 – রচনাধর্মী প্রশ্ন

Madhyamik Physical Science Suggestion 2026 – সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

Madhyamik Physical Science Suggestion 2026 – সত্য মিথ্যা