শেরারডাইজেশন (Sherardisation) কাকে বলে?

Souvick

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “শেরারডাইজেশন (Sherardisation) কাকে বলে??” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “ধাতুবিদ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

শেরারডাইজেশন (Sherardisation) কাকে বলে?

শেরারডাইজেশন (Sherardisation) কাকে বলে?

লোহার তৈরি ছোটো দ্রব্যকে মরিচা পড়ার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ওই দ্রব্যগুলিকে জিঙ্ক ধূলির (Zn + ZnO -এর মিশ্র) মধ্যে রেখে বা লোহার দ্রব্যের উপর ভালো করে জিঙ্ক ধূলি ছড়িয়ে আবদ্ধ চুল্লির মধ্যে উচ্চ উষ্ণতায় (প্রায় 300°C-500°C) উত্তপ্ত করলে লোহার দ্রব্যের উপর জিঙ্কের একটি পাতলা আস্তরণ পড়ে। এই পদ্ধতিটিকে শেরারডাইজেশন বলে।

এই পদ্ধতিতে দস্তালিপ্ত কবজা, নাট-বণ্টু, স্প্রিং, ওয়াসার প্রভৃতি তৈরি করা হয়।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

শেরারডাইজেশন কী?

শেরারডাইজেশন হলো লোহার দ্রব্য মরিচা পড়া থেকে রক্ষা করার একটি প্রক্রিয়া, যেখানে লোহার দ্রব্যগুলিকে জিঙ্ক ধূলি (Zn + ZnO মিশ্রণ) দিয়ে আবদ্ধ চুল্লিতে 300°C থেকে 500°C তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করা হয়। এতে লোহার দ্রব্যের উপর জিঙ্কের একটি পাতলা প্রতিরক্ষামূলক আস্তরণ তৈরি হয়।

শেরারডাইজেশন পদ্ধতিতে কী ধরনের দ্রব্য লেপা হয়?

সাধারণত ছোটো লোহার দ্রব্য যেমন – দস্তালিপ্ত কবজা, নাট-বল্টু, স্প্রিং, ওয়াশার ইত্যাদি শেরারডাইজেশন পদ্ধতিতে লেপা হয়।

শেরারডাইজেশন পদ্ধতির সুবিধা কী?

শেরারডাইজেশন পদ্ধতির সুবিধা –
1. মরিচা প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
2. জিঙ্কের আস্তরণ সমান ও মসৃণ হয়।
3. জটিল আকারের দ্রব্যও সহজে লেপা সম্ভব।
4. পরিবেশের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করে জিঙ্ক কার্বনেটের স্থায়ী স্তর তৈরি হয়, যা দীর্ঘস্থায়ী সুরক্ষা দেয়।

শেরারডাইজেশন ও গ্যালভানাইজেশনের মধ্যে পার্থক্য কী?

শেরারডাইজেশন ও গ্যালভানাইজেশনের মধ্যে পার্থক্য –
1. শেরারডাইজেশন – শুষ্ক পদ্ধতি; জিঙ্ক গুঁড়া ব্যবহার করে তাপ প্রয়োগে আস্তরণ দেওয়া হয়।
2. গ্যালভানাইজেশন – ভেজা পদ্ধতি; গলিত জিঙ্কে ডুবিয়ে আস্তরণ দেওয়া হয়।
শেরারডাইজেশন সাধারণত ছোট ও জটিল আকৃতির জিনিসের জন্য, গ্যালভানাইজেশন বড় কাঠামোর (যেমন – পাইপ, গেট) জন্য ব্যবহৃত হয়।

শেরারডাইজেশন প্রক্রিয়ায় জিঙ্ক আস্তরণ কীভাবে মরিচা প্রতিরোধ করে?

জিঙ্ক লোহার তুলনায় বেশি সক্রিয় ধাতু হওয়ায় এটি বায়ুমণ্ডলের অক্সিজেন ও জলীয়বাষ্পের সাথে প্রথমে বিক্রিয়া করে এবং লোহাকে জারণের হাত থেকে রক্ষা করে। একে “ক্যাথোডিক প্রোটেকশন” বলে।

শেরারডাইজেশন কোন কোন শিল্পে বেশি ব্যবহৃত হয়?

অটোমোটিভ, নির্মাণ, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, সামরিক সরঞ্জাম ও সাধারণ হার্ডওয়্যার শিল্পে এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

শেরারডাইজেশন প্রক্রিয়ার তাপমাত্রা সীমা কত?

সাধারণত 300°C থেকে 500°C পর্যন্ত তাপমাত্রা ব্যবহৃত হয়।

শেরারডাইজেশন করা দ্রব্যের রং কেমন হয়?

সাধারণত ধূসর বা মেটে রংয়ের হয়ে থাকে, তবে পরে রং বা কোটিং প্রয়োগ করা যেতে পারে।

শেরারডাইজেশন কি শুধু লোহার জন্যই প্রযোজ্য?

প্রাথমিকভাবে লোহা ও ইস্পাতের জন্য ব্যবহৃত হলেও তামা ও পিতলের দ্রব্যও কিছু ক্ষেত্রে শেরারডাইজ করা যায়।

শেরারডাইজেশন প্রক্রিয়ায় কী ধরনের চুল্লি ব্যবহার করা হয়?

সাধারণত আবদ্ধ (সীলড) ঘূর্ণায়মান চুল্লি বা রটারি ফার্নেস ব্যবহার করা হয় যাতে জিঙ্ক গুঁড়া সমানভাবে লাগানো যায়।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “শেরারডাইজেশন (Sherardisation) কাকে বলে?” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “ধাতুবিদ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।

ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।

কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল গ্রুপ কাকে বলে? কার্যকরী মূলক ও জৈব মূলকের পার্থক্য বুঝিয়ে দাও।

কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল গ্রুপ কাকে বলে? কার্যকরী মূলক ও জৈব মূলকের পার্থক্য বুঝিয়ে দাও।

একটি জৈব যৌগের আণবিক সংকেত C₂H₄O₂। যৌগটি জলে দ্রাব্য এবং যৌগটির জলীয় দ্রবণে NaHCO₃ যোগ করলে CO₂ নির্গত হয়। জৈব যৌগটিকে শনাক্ত করো। জৈব যৌগটির সঙ্গে ইথানলের বিক্রিয়া শর্ত ও সমিত রাসায়নিক সমীকরণসহ লেখো।

C₂H₄O₂ সংকেতের একটি জৈব যৌগ NaHCO₃-এর সাথে CO₂ গ্যাস দেয়। যৌগটি শনাক্ত করো ও ইথানলের সাথে এর বিক্রিয়ার শর্তসহ সমীকরণ দাও।

About The Author

Souvick

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

Madhyamik Physical Science Suggestion 2026

Madhyamik Life Science Suggestion 2026

Madhyamik Physical Science Suggestion 2026 – রচনাধর্মী প্রশ্ন

Madhyamik Physical Science Suggestion 2026 – সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

Madhyamik Physical Science Suggestion 2026 – সত্য মিথ্যা