এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন।। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

Class 10 – Life Science – জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় – উদ্ভিদের সাড়া প্রদান ও রাসায়নিক সমন্বয় হরমোন – উদ্ভিদদেহে অক্সিন ও চলন – রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

জীবনবিজ্ঞান বিষয়ে জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় এবং উদ্ভিদের সাড়া প্রদান ও রাসায়নিক সমন্বয় হরমোন বিষয়টি বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। উদ্ভিদদেহে অক্সিন ও চলনের ক্ষেত্রে একটি বিস্তারিত বিশ্লেষণ করা হয়। রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর উপশিরোন করা হয় যাতে ছাত্রদের উত্তর দিতে সহায়তা করা যায়।

অক্সিনের সংজ্ঞা লেখো। অক্সিনের বৈশিষ্ট্যগুলি কী?

অক্সিন

উদ্ভিদের অগ্রস্থ ভাজক কলা থেকে উৎপন্ন নাইট্রোজেনযুক্ত (ইনডোল বর্ণযুক্ত) অম্লধর্মী বৃদ্ধি সহায়ক যে উদ্ভিদ হরমোন, মূলত নিম্নাভিমুখে পরিবাহিত হয় এবং উদ্ভিদের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে, তাকে অক্সিন বলে।

অক্সিনের বৈশিষ্ট্য

  1. অক্সিন হরমোনের বৈশিষ্ট্যগুলি নীচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল।
  2. এটি প্রধানত কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন এবং নাইট্রোজেন নিয়ে গঠিত একপ্রকার জৈব অ্যাসিড।
  3. ট্রিপটোফ্যান নামক অ্যামিনো অ্যাসিড থেকে অক্সিন সংশ্লেষিত হয়। 
  4. এটি উদ্ভিদের বর্ধনশীল অংশ, প্রধানত ভুণমুকুলাবরণী, কাণ্ড ও মূলের অগ্রস্থ ভাজক কলা থেকে উৎপন্ন হয়ে ফ্লোয়েম কলার মাধ্যমে সাধারণত নিম্নাভিমুখে পরিবাহিত হয়। তবে মূলের অগ্রভাগে উৎপন্ন অক্সিন নীচ থেকে কিছুটা ওপরের দিকে পরিবাহিত হয়। 
  5. এই হরমোনের সংশ্লেষ সাধারণত আলোক উৎসের বিপরীতে হয়।
  6. এর ক্রিয়া প্রধানত মেরুবর্তী এবং এটি ক্রিয়ার পর ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। 
  7. এটি জলে দ্রবণীয় হওয়ার ফলে ব্যাপন ক্রিয়ার মাধ্যমে সহজেই পরিবাহিত হয়। 
  8. আলোকের উৎসের বিপরীতে অর্থাৎ অন্ধকারে অক্সিনের ক্রিয়া সর্বাধিক।
  9. মূলের ক্ষেত্রে স্বল্প ঘনত্বে এবং কান্ডের ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে অধিক ঘনত্বে অক্সিন কাজ করে।

উদ্ভিদদেহে অক্সিনের ভূমিকা লেখো।

অক্সিনের ভূমিকা

উদ্ভিদদেহে অক্সিন নিম্নলিখিত ভূমিকাগুলি পালন করে।

উদ্ভিদদেহে অক্সিনের ভূমিকা লেখো।
  • অগ্রস্থ প্রকটতা ও পার্শ্বীয় মুকুলের বৃদ্ধি হ্রাস অক্সিনের প্রভাবে উদ্ভিদের কাণ্ডের অগ্রমুকুল বৃদ্ধি পায় ও পার্শ্বীয় বা কাক্ষিক মুকুলগুলির বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। পার্শ্বীয় মুকুলের ওপর অগ্রমুকুলের এই প্রাধান্যকে অগ্রস্থ প্রকটতা বলে। এর ফলে কাণ্ড দৈর্ঘ্যে বৃদ্ধি পায়। কিন্তু, যদি অগ্রমুকুল কেটে ফেলা হয় সেক্ষেত্রে কাক্ষিক মুকুল দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে গাছটিকে ঝোপের আকৃতি দেয়।
  • কোশ বিভাজন ও কোশের আকার বৃদ্ধি অক্সিন কোশে DNA-র পরিমাণবৃদ্ধি করে কোশের বিভাজনে সাহায্য করে এবং কোশ বিভাজনের দ্বারা কোশের সংখ্যা বৃদ্ধি করে। এ ছাড়া অক্সিন কোশপ্রাচীরকে নমনীয় করে কোশের আকার ও আয়তন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এই হরমোনের প্রভাবে পরিণত কোশে কোশ গহ্বরের সৃষ্টি হয়। যার ফলে কোশ আয়তনে বৃদ্ধি পায়।
  • ফলের বৃদ্ধি নিষেকের পর ডিম্বাশয়ে অক্সিনের পরিমাণ বাড়ে। এর প্রভাবে ডিম্বক বীজে এবং ডিম্বাশয় ফলে পরিণত হয়। অনেকসময় নিষেকের পূর্বেই ডিম্বাশয়ে অক্সিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তখন ডিম্বাশয় নিষেক ছাড়াই ফলে পরিণত হয়। কিন্তু নিষেক না হওয়ায় ডিম্বক বীজে পরিণত হয় না, ফলে বীজবিহীন ফল উৎপন্ন হয়। এইভাবে নিষেক ছাড়া ফল উৎপাদনকে পার্থেনোকার্ণি বলা হয়। পার্থেনোকার্ণিক ফল উৎপাদনে অক্সিনের ভূমিকা আছে।
  • মূলের বৃদ্ধি অক্সিন উদ্ভিদের মূলের সৃষ্টি ও বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। উদ্ভিদের মূল স্বল্প পরিমাণ অক্সিনে অধিক সংবেদনশীল, অর্থাৎ অক্সিনের স্বপ্ন ঘনত্বে মূলের বৃদ্ধি অধিক হয়। বেশি ঘনত্বে অক্সিন মুলের বৃদ্ধি ব্যাহত করে। যে ঘনত্বের অক্সিনে মূলের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, সেই ঘনত্বের অক্সিনে কাণ্ডের পর্ব ও গোড়া থেকে অস্থানিক মূল সৃষ্টি হয়।
  • ট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণ উদ্ভিদের ট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণে অক্সিন গুরুত্বপূর্ণ চলন এবং জিওট্রপিক চলন অক্সিনের অসম বণ্টনের ফলে সম্পন্ন হয়।

উদ্ভিদের ফোটোট্রপিক চলন এবং জিওট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণে অক্সিনের ভূমিকা চিত্রসহ আলোচনা করো।

ফোটোট্রপিক ও জিওট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণে অক্সিনের ভূমিকা

উদ্ভিদের ফোটোট্রপিক চলন এবং জিওট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণে অক্সিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রধানত আলোক ও অভিকর্ষের প্রভাবে অক্সিনের অসম বণ্টনের দ্বারাই ট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রিত হয়। বিজ্ঞানী ওয়েন্ট (Went) ও কোলোডনি (Cholodny) পরীক্ষা দ্বারা প্রমাণ করেছেন, আলোর প্রভাবে অক্সিনের কার্যকারিতা হ্রাস পায়। অর্থাৎ অক্সিন আলোক সংবেদনশীল। এই কারণে সর্বদা আলোর উৎসের বিপরীতে বা অন্ধকারের দিকে অক্সিনের ঘনত্ব বেশি হয়। কাণ্ডের ক্ষেত্রে বেশি ঘনত্বের অক্সিনে, আলোর বিপরীত দিকে বৃদ্ধি অর্থাৎ অন্ধকারের দিকে কোশের বিভাজন বেশি হয়। ফলে কাণ্ড আলোর দিকে এবং অভিকর্ষের বিপরীতে বেঁকে যায়। অর্থাৎ
কাণ্ডে আলোক-অনুকূলবর্তী ও অভিকর্ষ প্রতিকূলবর্তী চলন ঘটে। মূল অক্সিনের স্বল্প ঘনত্বে অধিক সংবেদনশীল। ফলে মূলের ক্ষেত্রে অক্সিনের কম ঘনত্বের দিকে, অর্থাৎ আলোর দিকে কোশ বিভাজন হার বেশি হয়। তাই মূল আলোর বিপরীত দিকে তথা অভিকর্ষের দিকে বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ মূলে আলোক-প্রতিকূলবর্তী ও অভিকর্ষ-অনুকূলবর্তী চলন দেখা যায়। এইভাবে অক্সিনের অসম বণ্টনের দ্বারা উদ্ভিদের ফোটোট্রপিক বা আলোকবৃত্তি চলন এবং জিওট্রপিক বা অভিকর্ষবৃত্তি চলন নিয়ন্ত্রিত হয়।

 উদ্ভিদের ফোটোট্রপিক চলন এবং জিওট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণে অক্সিনের ভূমিকা চিত্রসহ আলোচনা করো।

এই বিষয়বস্তুতে জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় নির্দেশ করা হয়েছে। উদ্ভিদের সাড়া প্রদান এবং রাসায়নিক সমন্বয় হরমোন এই বিষয়গুলি পরিচয় করে। উদ্ভিদদেহে অক্সিন ও চলন এবং রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর এই বিষয়গুলি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। পাঠ্যবইয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উদ্ভিদদের জীবন পদ্ধতি সম্পর্কে রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর মাধ্যমে জানা উচিত।

Share via:

মন্তব্য করুন