অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – মাসিপিসি – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

Sourav Das

আজকের এই আর্টিকেলে অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের পঞ্চত্রিংশ অধ্যায়মাসিপিসি’ নিয়ে আলোচনা করবো, যেখানে ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর উপস্থাপন করা হবে। এই প্রশ্নগুলো অষ্টম শ্রেণির বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো প্রায়ই পরীক্ষায় আসে।

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – মাসিপিসি – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – মাসিপিসি – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
Contents Show

শুকতারাটি ছাদের ধারে, চাঁদ থামে তালগাছে – এই পঙ্ক্তিটির মাধ্যমে দিনের কোন সময়ের কথা বলা হয়েছে? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।

প্রশ্নোক্ত অংশটি কবি জয় গোস্বামীর ‘মাসিপিসি’ নামক কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। প্রশ্নোক্ত উক্তিটির মাধ্যমে কবি মাঝ রাত ও প্রভাতের মাঝামাঝি সময়কে বুঝিয়েছেন। অন্যভাবে বলা যায় শেষ রাতের কথা বলা হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা যায় পূর্ব আকাশে শুকতারা দেখা যায় সূর্যোদয়ের আগে। অর্থাৎ ‘শুক তারাটি ছাদের ধারে’ -এর দ্বারা বোঝা যায় সূর্যের উদয় তখনও হয়নি। আবার ‘চাঁদ থামে তালগাছে’ – অর্থাৎ আকাশে তখনও চাঁদের অস্তিত্ব আছে। আকাশে চাঁদ দেখা যাচ্ছে মানে রাত শেষ হয়নি-তবে প্রহর গোনা চলছে প্রভাতের আগমনের।

দু এক ফোঁটা শিশির তাকায় ঘাসের থেকে ঘাসে – এই পঙ্ক্তিটিতে যে ছবিটি ফুটে উঠেছে তা নিজের ভাষায় লেখো।

প্রশ্নোক্ত উদ্ধৃতিটি কবি জয় গোস্বামীর ‘মাসিপিসি’ নামক কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।

গ্রামবাংলার প্রভাতি সৌন্দর্যের অনুপম চিত্রের প্রকাশ ঘটেছে উদ্ধৃতাংশের মাধ্যমে। প্রভাতে ঘাসের আগায় শিশিরকণা জমতে থাকে, আর সূর্যের প্রথম কিরণ তার উপরে যখন পতিত হয় তখন তা অপূর্ব শোভা নিয়ে উপস্থিত হয় দর্শকের চোখে। ঘাসের মাথায় জমে ওঠা শিশিরবিন্দুরা যেন একে অপরের দিকে তাকিয়ে থাকে। এই দৃশ্য এতটাই মনোরম যে না দেখলে তা অনুভব করা যায় না। প্রশ্নোক্ত উদ্ধৃতির মাধ্যমে কবি সেই দৃষ্টিনন্দন ছবিই উপস্থাপিত করতে চেয়েছেন।

সাল মাহিনার হিসেব তো নেই – সাল মাহিনার হিসাব নেই কেন?

প্রশ্নোক্ত অংশটি কবি জয় গোস্বামীর ‘মাসিপিসি’ নামক কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।

সাল অর্থাৎ বছর আর ‘মাহিনা’ অর্থাৎ মাস-এর কথা আলোচ্য অংশে বোঝানো হয়েছে। আমাদের সমাজে অত্যন্ত দরিদ্র, খেটে-খাওয়া মানুষ হলেন ‘মাসিপিসি’রা। বলা ভালো যে তারা দিন-আনা, দিন-খাওয়া শ্রেণির মানুষ। সারাবছরই তাদের একই জীবনাচরণ। প্রতিদিনই রাত থাকতে থাকতে শুরু হয় তাদের জীবনসংগ্রাম, তাই সাল-মাস হিসাব করে তাদের দিন কাটে না। বছর বা মাসের প্রতিটি দিনই তাদের কাছে সমানরূপে দেখা দেয়। এই কারণেই কবি বলেছেন যে, মাসিপিসিরা সাল মাহিনার হিসাব করে না।

মাসিপিসি কবিতায় উল্লিখিত ‘ঘুমপাড়ানি মাসিপিসি’র কথা এর আগে শুনেছ কী? শুনে থাকলে তা উল্লেখ করো।

মাসিপিসি কবিতায় উল্লিখিত ‘ঘুমপাড়ানি মাসিপিসি’র কথা ছেলেবেলায় ঘুমপাড়ানি ছড়ায় শুনেছি।

ঘুমপাড়ানি ছড়াটি হল –

“ঘুমপাড়ানি মাসিপিসি
মোদের বাড়ি এসো,
খাট নেই, পালঙ্ক নেই
খোকার চক্ষু পেতে বোসো।
এই গালে দিনু চুমো দে রে ঐ গাল,
ঘুমে ঘোর খোকা মোর চুমোর মাতাল॥”

ঘুমপাড়ানি ছড়ার ঘুমপাড়ানি মাসিপিসিদের সাথে জয় গোস্বামীর কবিতায় মাসিপিসিদের কোনো পার্থক্য খুঁজে পাও কি? বিশ্লেষণ করো।

ঘুমপাড়ানি ছড়ার ঘুমপাড়ানি মাসিপিসিদের জগৎ স্বপ্নময়, রোমান্টিক। তারা খোকার চোখে ঘুমের আবেশ এনে দেয়। কিন্তু জয় গোস্বামীর কবিতায় উল্লিখিত মাসিপিসিদের জগৎ কঠোর বাস্তবতাপূর্ণ, দুঃখদারিদ্র্যময়। তারা নিজের চোখের ঘুমকে দূরে সরিয়ে রেখে শহরে ছুটে আসে কিছু পয়সা রোজগারের আশায়। স্বপ্নময়তা বা রোমান্টিকতা তাদের ভাগ্যে জোটে না।

মাসিপিসি বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে? তাদের এভাবে ডাকার কারণ কী?

মাসিপিসি কবিতায় কবি জয় গোস্বামী গ্রাম থেকে শহরে আসা চালবিক্রেতা মহিলাদের ‘মাসিপিসি’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে ব্যাপক অর্থে শুধু চাল বিক্রেতাই নয়, দরিদ্র, নিম্নবিত্ত যে শ্রমজীবী মহিলারা গ্রাম থেকে শহর অভিমুখে যাত্রা করেন ভোর হতে না হতেই, তাদেরও মাসিপিসি বলে বোঝানো হয়েছে।

শহরের বাজারে বাজারে প্রতিদিন এমন অনেক শ্রমজীবী মহিলা উপার্জনের আশা নিয়ে এসে থাকেন। এই শ্রমজীবীদের সঙ্গে শহরবাসীদের কোনো আত্মিক বা ব্যক্তিগত সম্পর্ক কখনোই গড়ে ওঠে না। এরা ব্যক্তিনামেও আমাদের সঙ্গে পরিচিত হয় না, তাদের নাম আমাদের কাছে অজানাই থেকে যায়। তাদের কাউকে আমরা ‘মাসি’ আবার কাউকে ‘পিসি’ বলে সম্বোধন করে থাকি। এই কারণেই তাদের ‘মাসিপিসি’ বলে ডাকা হয়ে থাকে।

অনেকগুলো পেট বাড়িতে, একমুঠো রোজগার – তাৎপর্য আলোচনা করো।

প্রশ্নোক্ত অংশটি কবি জয় গোস্বামী রচিত ‘মাসিপিসি’ কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। ‘অনেকগুলো পেট’ অর্থে পরিবারের সভ্যসংখ্যা অনেক আর ‘একমুঠো রোজগার’ অর্থে সামান্য উপার্জনকে বোঝানো হয়েছে।

মাসিপিসিরা রাতের অন্ধকারেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে ট্রেন ধরতে ছোটে শহরে আসার জন্য। কারণ তাদের সংসার চালানোর জন্য উপার্জন করতেই হবে। বছরের প্রতিদিনই কঠোর জীবন-সংগ্রামে তারা লিপ্ত থাকেন। বাড়িতে অর্থাৎ পরিবারে অনেক সদস্য কিন্তু উপার্জন করার মতো সদস্য কেউ নেই—তাই বাধ্য হয়েই শ্রমজীবী মহিলারা সামান্য রোজগারের জন্যই গ্রাম থেকে শহরে আসেন; কারণ উদরের জ্বালা তো মেটাতেই হবে।

চাল তোলো গো মাসিপিসি লালগোলা বনগাঁয় — উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য আলোচনা করো।

প্রশ্নোক্ত অংশটি কবি জয় গোস্বামীর ‘মাসিপিসি’ নামক কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোচ্য কবিতায় কবি শ্রমজীবী মহিলাদের কঠোর জীবনসংগ্রামের কাহিনি তুলে ধরেছেন।

মাসিপিসিদের জীবনে আয়াসের কোনো স্থান নেই, রাতের অন্ধকারেই ঘুম ত্যাগ করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে তারা ট্রেন ধরেন-কেউ বা লালগোলা লোকাল, কেউ বা বনগাঁ লোকালে চেপে শহরের দিকে যাত্রা করেন, তাদের কোলে-কাঁখে তখন থাকে চালের বস্তা। বছরের প্রতিটা দিনই এমনভাবে ট্রেন ধরতে হয়, যাতে তারা শহরের বাজারে পৌঁছোতে পারেন পণ্যদ্রব্য বিক্রয়ের জন্য। এভাবেই পেটের অন্নের সংস্থানের জন্য লালগোলা বা বনগাঁ লোকালে তারা সওয়ার হন।


আজকের এই আর্টিকেলে অষ্টম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের পঞ্চত্রিংশ অধ্যায়মাসিপিসি’–এর ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো অষ্টম শ্রেণির বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এসব প্রশ্ন প্রায়ই পরীক্ষায় আসে। আশা করি, এই নিবন্ধটি আপনার প্রস্তুতিতে সহায়ক হয়েছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন থাকে বা আরও সহায়তার প্রয়োজন হয়, টেলিগ্রামে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এছাড়াও, এই পোস্টটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না, যাতে তারাও উপকৃত হতে পারে। ধন্যবাদ!

Please Share This Article

Related Posts

নবাব সিরাজউদ্দোলা কে ছিলেন? পলাশীর যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল লেখো।

পলাশীর যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল

Class 8 English – The Happy Prince – About Author and Story

Class 8 English – The Happy Prince – About Author and Story

Class 8 English – The Happy Prince – Question and Answer

Class 8 English – The Happy Prince – Question and Answer

About The Author

Sourav Das

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

সিঙ্গাপুরের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে জলবায়ু ও গোলার্ধ শনাক্ত করো।

বাংলায় ছাপাখানা ও মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কীরূপ অবদান ছিল?

তুন্দ্রা জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করো।

ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ুর অবস্থান ও বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো।

ক্রান্তীয় মৌসুমি জলবায়ুর অবস্থান ও প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী তা আলোচনা করো।