অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – মাসিপিসি – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

Sourav Das

অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের মাসিপিসি অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে মাসিপিসি অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি যদি তোমরা প্রস্তুত করে না যাও তাহলে পরীক্ষায় মাসিপিসি অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলোর উত্তর দিতে পারবে না। তাই মাসিপিসি অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি ভালো করে মুখস্ত করে গেলে তোমরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল পাবে।

আমাদের সমাজে অনেক পরিবার আছে যেখানে মহিলারা জীবিকার জন্য কাজ করেন। তাদের জীবন দারিদ্র্য ও সংগ্রামে পূর্ণ। আমাদের অনেক ক্ষেত্রে তাদের সাথে কাজের সম্পর্ক গড়ে উঠে, কিন্তু তাদের ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে আমরা অনেক সময়ই অজ্ঞ থাকি। এই মহিলা শ্রমজীবীদের আমরা ‘মাসিপিসি’ বলেই চিনি।

চোখের ঘুম না ভেঙেই, চোখের পাতায় জল লেগে, ভোরের আলো ফোটার আগেই শুরু হয় ‘মাসিপিসি’দের দিনের কাজ। আকাশে সূর্যদেব এখনও দেখা দেননি, তবুও ‘মাসিপিসি’রা বাসি কাপড় কেচে ট্রেন ধরতে ছুটে যান। দুই-এক ফোঁটা শিশির ঘাসের মাথায় জেগে ওঠে, ঘুমকে তারা দূরে সরিয়ে বেরিয়ে পড়েন গ্রাম থেকে শহরে আসার উদ্দেশ্যে।

‘মাসিপিসি’দের পরিবারে সদস্যসংখ্যা অনেক, কিন্তু উপার্জন করার মানুষ কম। তাই একজনের সামান্য উপার্জনে অনেক পেট চলে। তাই প্রতিদিনই কালঘাম ফেলে শহরের উদ্দেশ্যে ছুটতে হয় তাদের। ট্রেনে ওঠার আগে-পরে নানা বাধার সম্মুখীন হতে হয় তাদের। রেলবাজারের হোমগার্ডরা নানা সমস্যায় ফেলে দেয় তাদের। বছর বা মাসের হিসাব নয়, সারাবছরই এভাবে জীবনসংগ্রামে লিপ্ত থাকতে হয় ‘মাসিপিসি’দের।

বছর আসে, বছর যায়, তাদের জীবনে কোনো পরিবর্তন আসে না। পরিবারের মুখে ক্ষুধার অন্ন তুলে দেওয়ার জন্য লালগোলা-বনগাঁয় চালের বস্তা তুলে ছুটে যান শহরের দিকে, উপার্জনের আশায়।

এভাবেই কবি ‘মাসিপিসি’র প্রতীকে সমাজে দরিদ্র, খেটে-খাওয়া মহিলাদের জীবনের কাহিনি তুলে ধরেছেন।

মাসিপিসি – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

শুকতারাটি ছাদের ধারে, চাঁদ থামে তালগাছে – এই পঙ্ক্তিটির মাধ্যমে দিনের কোন সময়ের কথা বলা হয়েছে? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।

প্রশ্নোক্ত অংশটি কবি জয় গোস্বামীর ‘মাসিপিসি’ নামক কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। প্রশ্নোক্ত উক্তিটির মাধ্যমে কবি মাঝ রাত ও প্রভাতের মাঝামাঝি সময়কে বুঝিয়েছেন। অন্যভাবে বলা যায় শেষ রাতের কথা বলা হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা যায় পূর্ব আকাশে শুকতারা দেখা যায় সূর্যোদয়ের আগে। অর্থাৎ ‘শুক তারাটি ছাদের ধারে’-এর দ্বারা বোঝা যায় সূর্যের উদয় তখনও হয়নি। আবার ‘চাঁদ থামে তালগাছে’-অর্থাৎ আকাশে তখনও চাঁদের অস্তিত্ব আছে। আকাশে চাঁদ দেখা যাচ্ছে মানে রাত শেষ হয়নি-তবে প্রহর গোনা চলছে প্রভাতের আগমনের।

দু এক ফোঁটা শিশির তাকায় ঘাসের থেকে ঘাসে – এই পঙ্ক্তিটিতে যে ছবিটি ফুটে উঠেছে তা নিজের ভাষায় লেখো।

প্রশ্নোক্ত উদ্ধৃতিটি কবি জয় গোস্বামীর ‘মাসিপিসি’ নামক কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।

গ্রামবাংলার প্রভাতি সৌন্দর্যের অনুপম চিত্রের প্রকাশ ঘটেছে উদ্ধৃতাংশের মাধ্যমে। প্রভাতে ঘাসের আগায় শিশিরকণা জমতে থাকে, আর সূর্যের প্রথম কিরণ তার উপরে যখন পতিত হয় তখন তা অপূর্ব শোভা নিয়ে উপস্থিত হয় দর্শকের চোখে। ঘাসের মাথায় জমে ওঠা শিশিরবিন্দুরা যেন একে অপরের দিকে তাকিয়ে থাকে। এই দৃশ্য এতটাই মনোরম যে না দেখলে তা অনুভব করা যায় না। প্রশ্নোক্ত উদ্ধৃতির মাধ্যমে কবি সেই দৃষ্টিনন্দন ছবিই উপস্থাপিত করতে চেয়েছেন।

সাল মাহিনার হিসেব তো নেই – সাল মাহিনার হিসাব নেই কেন?

প্রশ্নোক্ত অংশটি কবি জয় গোস্বামীর ‘মাসিপিসি’ নামক কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।

সাল অর্থাৎ বছর আর ‘মাহিনা’ অর্থাৎ মাস-এর কথা আলোচ্য অংশে বোঝানো হয়েছে। আমাদের সমাজে অত্যন্ত দরিদ্র, খেটে-খাওয়া মানুষ হলেন ‘মাসিপিসি’রা। বলা ভালো যে তারা দিন-আনা, দিন-খাওয়া শ্রেণির মানুষ। সারাবছরই তাদের একই জীবনাচরণ। প্রতিদিনই রাত থাকতে থাকতে শুরু হয় তাদের জীবনসংগ্রাম, তাই সাল-মাস হিসাব করে তাদের দিন কাটে না। বছর বা মাসের প্রতিটি দিনই তাদের কাছে সমানরূপে দেখা দেয়। এই কারণেই কবি বলেছেন যে, মাসিপিসিরা সাল মাহিনার হিসাব করে না।

মাসিপিসি কবিতায় উল্লিখিত ‘ঘুমপাড়ানি মাসিপিসি’র কথা এর আগে শুনেছ কী? শুনে থাকলে তা উল্লেখ করো।

মাসিপিসি কবিতায় উল্লিখিত ‘ঘুমপাড়ানি মাসিপিসি’র কথা ছেলেবেলায় ঘুমপাড়ানি ছড়ায় শুনেছি।

ঘুমপাড়ানি ছড়াটি হল –

ঘুমপাড়ানি মাসিপিসি
মোদের বাড়ি এসো,
খাট নেই, পালঙ্ক নেই
খোকার চক্ষু পেতে বোসো।
এই গালে দিনু চুমো দে রে ঐ গাল,
ঘুমে ঘোর খোকা মোর চুমোর মাতাল॥

মাসিপিসি বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে? তাদের এভাবে ডাকার কারণ কী?

মাসিপিসি কবিতায় কবি জয় গোস্বামী গ্রাম থেকে শহরে আসা চালবিক্রেতা মহিলাদের ‘মাসিপিসি’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে ব্যাপক অর্থে শুধু চাল বিক্রেতাই নয়, দরিদ্র, নিম্নবিত্ত যে শ্রমজীবী মহিলারা গ্রাম থেকে শহর অভিমুখে যাত্রা করেন ভোর হতে না হতেই, তাদেরও মাসিপিসি বলে বোঝানো হয়েছে।

শহরের বাজারে বাজারে প্রতিদিন এমন অনেক শ্রমজীবী মহিলা উপার্জনের আশা নিয়ে এসে থাকেন। এই শ্রমজীবীদের সঙ্গে শহরবাসীদের কোনো আত্মিক বা ব্যক্তিগত সম্পর্ক কখনোই গড়ে ওঠে না। এরা ব্যক্তিনামেও আমাদের সঙ্গে পরিচিত হয় না, তাদের নাম আমাদের কাছে অজানাই থেকে যায়। তাদের কাউকে আমরা ‘মাসি’ আবার কাউকে ‘পিসি’ বলে সম্বোধন করে থাকি। এই কারণেই তাদের ‘মাসিপিসি’ বলে ডাকা হয়ে থাকে।

অনেকগুলো পেট বাড়িতে, একমুঠো রোজগার – তাৎপর্য আলোচনা করো।

প্রশ্নোক্ত অংশটি কবি জয় গোস্বামী রচিত ‘মাসিপিসি’ কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। ‘অনেকগুলো পেট’ অর্থে পরিবারের সভ্যসংখ্যা অনেক আর ‘একমুঠো রোজগার’ অর্থে সামান্য উপার্জনকে বোঝানো হয়েছে।

মাসিপিসিরা রাতের অন্ধকারেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে ট্রেন ধরতে ছোটে শহরে আসার জন্য। কারণ তাদের সংসার চালানোর জন্য উপার্জন করতেই হবে। বছরের প্রতিদিনই কঠোর জীবন-সংগ্রামে তারা লিপ্ত থাকেন। বাড়িতে অর্থাৎ পরিবারে অনেক সদস্য কিন্তু উপার্জন করার মতো সদস্য কেউ নেই—তাই বাধ্য হয়েই শ্রমজীবী মহিলারা সামান্য রোজগারের জন্যই গ্রাম থেকে শহরে আসেন; কারণ উদরের জ্বালা তো মেটাতেই হবে।

চাল তোলো গো মাসিপিসি লালগোলা বনগাঁয় — উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য আলোচনা করো।

প্রশ্নোক্ত অংশটি কবি জয় গোস্বামীর ‘মাসিপিসি’ নামক কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোচ্য কবিতায় কবি শ্রমজীবী মহিলাদের কঠোর জীবনসংগ্রামের কাহিনি তুলে ধরেছেন।

মাসিপিসি’দের জীবনে আয়াসের কোনো স্থান নেই, রাতের অন্ধকারেই ঘুম ত্যাগ করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে তারা ট্রেন ধরেন-কেউ বা লালগোলা লোকাল, কেউ বা বনগাঁ লোকালে চেপে শহরের দিকে যাত্রা করেন, তাদের কোলে-কাঁখে তখন থাকে চালের বস্তা। বছরের প্রতিটা দিনই এমনভাবে ট্রেন ধরতে হয়, যাতে তারা শহরের বাজারে পৌঁছোতে পারেন পণ্যদ্রব্য বিক্রয়ের জন্য। এভাবেই পেটের অন্নের সংস্থানের জন্য লালগোলা বা বনগাঁ লোকালে তারা সওয়ার হন।

‘মাসিপিসি’ – এই শব্দটি শুধু একটি নাম নয়, বরং সমাজের এক অসহায়, পরিশ্রমী শ্রেণীর প্রতীক। কবিতাটিতে তাদের জীবনের বাস্তব চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

চোখের ঘুম না ভেঙেই, ভোরের আলো ফোটার আগেই শুরু হয় তাদের দিনের কাজ। পরিবারের ভার বহন করে, ক্ষুধার অন্ন জোগাতে ছুটে যান তারা শহরের দিকে। ট্রেনে ওঠার আগে-পরে নানা বাধার সম্মুখীন হলেও থামেন না তারা।

বছরের পর বছর, তাদের জীবনে কোনো পরিবর্তন আসে না। পরিবারের মুখে ক্ষুধার অন্ন তুলে দেওয়ার জন্যই তাদের এই সংগ্রাম। কবিতাটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, সমাজের এই অদৃশ্য স্তম্ভদের প্রতি আমাদের কর্তব্য কী। তাদের প্রতি সহানুভূতি ও শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত।

‘মাসিপিসি’দের জীবন আমাদের জন্য শুধু একটি অনুপ্রেরণা নয়, বরং সমাজের বাস্তব চিত্রও তুলে ধরে। তাদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব পালন করা উচিত।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না –  ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer