অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে

Gopi

অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবেপ্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে প্রশ্ন ও উত্তর গুলি যদি তোমরা প্রস্তুত করে না যাও তাহলে পরীক্ষায় প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে প্রশ্ন ও উত্তর গুলোর উত্তর দিতে পারবে না। তাই প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে প্রশ্ন ও উত্তর গুলি ভালো করে মুখস্ত করে গেলে তোমরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল পাবে।

এই গানটিতে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্বচেতনা ও ঈশ্বরের প্রতি আকুল তৃষ্ণার কথা ব্যক্ত করেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে, এই মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তুতেই ঈশ্বরের অধিষ্ঠান বিদ্যমান। কবি ঈশ্বরের করুণা অনুভব করেছেন এবং সেই করুণা পূর্ণভাবে লাভ করার জন্য তিনি আকুল।

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে

প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে অধ্যায়ের কবি পরিচিতি

১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ৭ মে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ওরিয়েন্টাল সেমিনারি, নর্মাল স্কুল, বেঙ্গল একাডেমি, সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলের ছাত্র হলেও কোথাও তিনি শিক্ষা সমাপ্ত করেননি। অর্থাৎ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় তিনি শিক্ষিত হননি। ছেলেবেলা থেকেই সাহিত্যের প্রতি তাঁর প্রবল আকর্ষণ ছিল। ঠাকুরবাড়ির শিক্ষা-সংস্কৃতির পরিমণ্ডলেই তিনি বড়ো হয়েছেন। রবীন্দ্রনাথের প্রথম প্রকাশিত কবিতা ‘হিন্দু মেলার উপহার’ তাঁর কিশোর বয়সেই রচিত হয়েছিল। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল – ‘চিত্রা’, ‘চৈতালী’, ‘খেয়া’, ‘সোনার তরী’, ‘মানসী’, ‘গীতাঞ্জলি’, ‘বলাকা’, ‘আরোগ্য’, ‘শিশু’, ‘শিশু ভোলানাথ’, ‘নৈবেদ্য’, ‘প্রান্তিক’ ইত্যাদি। বহু ছোটোগল্পের স্রষ্টা হলেন রবীন্দ্রনাথ। তাঁর উল্লেখযোগ্য ছোটোগল্পগুলি হল – ‘দেনাপাওনা’, ‘ছুটি’, ‘বলাই’, ‘কাবুলিওয়ালা’, ‘পোস্টমাস্টার’, ‘কঙ্কাল’, ‘ক্ষুধিত পাষাণ’, ‘গুপ্তধন’, ‘সওগাত’ ইত্যাদি। ‘গোরা’, ‘ঘরে বাইরে’, ‘চার অধ্যায়’, ‘চোখের বালি’, ‘নৌকাডুবি’ তাঁর উল্লেখযোগ্য উপন্যাস। তাঁর উল্লেখযোগ্য নাটক হল – ‘ডাকঘর’, ‘রক্তকরবী’, ‘কালের যাত্রা’, ‘বিসর্জন’, ‘রাজা ও রানী’ ইত্যাদি।

এ ছাড়া বহু প্রবন্ধ, গান, সমালোচনামূলক সাহিত্যও। তিনি রচনা করেছেন। বহু ছবিও এঁকেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ‘গীতাঞ্জলি’র ইংরেজি অনুবাদ ‘Song offerings’-এর জন্য তিনি সাহিত্যে ‘নোবেল পুরস্কার’ অর্জন করেন ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে। এশিয়াবাসী হিসেবে তিনিই প্রথম সাহিত্যে ‘নোবেল’ পান। ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন রবীন্দ্রনাথ। এই সময়েই ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ গানটি তিনি রচনা করেছিলেন। ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইংরেজের দেওয়া ‘নাইট’ উপাধি ঘৃণার সঙ্গে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই তিনি রচনা করেছিলেন ‘এ মণিহার আমায় নাহি সাজে’ গানটি। ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সাম্মানিক ‘ডক্টরেট’ উপাধি প্রদান করে। দুটি স্বাধীন দেশের জাতীয় সংগীত (বাংলাদেশের ‘আমার সোনার বাংলা’ এবং ভারতের ‘জনগণমন’) রচনার বিরল কৃতিত্ব কেবল রবীন্দ্রনাথেরই আছে। রবীন্দ্রনাথ একইসঙ্গে ছিলেন কবি, গল্পকার, নাট্যকার, গীতিকার, গায়ক এবং চিত্রকর। এই মহান মানুষটি ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের ৭ আগস্ট ইহলোক ত্যাগ করেন।

প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে অধ্যায়ের পাঠপ্রসঙ্গ

সংগীতকে কবিতা পাঠের মতো করে মনের গভীরে প্রবেশ করানো যায় না। সুর-তানের সংযোগে তাকে হৃদয়ের সামগ্রী করে তুলতে পারলে সংগীতের মর্মকথা অনুধাবন করা যায়। এই বিশ্বের জীবকুল সর্বদাই নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকতে অভ্যস্ত। বিশ্বপিতার পরম-পবিত্র হাতের স্পর্শ ছাড়া যে আমরা এক মুহূর্তও চলতে পারি না, তা আমাদের বোধের অগম্যই থেকে যায়। কিন্তু বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনকে দেখেছেন ঋষির দৃষ্টি দিয়ে, জগৎকে চিনেছেন অন্তর থেকে গভীর প্রজ্ঞার সাথে। তাই তিনি বিশ্বপিতার অবদানকে স্মরণ করেন প্রতিক্ষণে। প্রভুই আমাদের মনে জ্ঞানের দীপশিখা প্রজ্বলিত করে আমাদের চিত্তশুদ্ধি ঘটাবেন, তাই তার কাছে মনপ্রাণ নিবেদন করতে হবে। পাঠ্য কবিতায় সেই নিবেদন প্রসঙ্গেই আলোচনা করা হয়েছে।

প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে অধ্যায়ের বিষয়সংক্ষেপ

বিশ্বপিতার কাছে কবির ঐকান্তিক আবেদন – প্রভু যেন তার সকল তৃষ্ণা হরণ করে তাকে প্রাণবান করে তোলেন। পরমপিতার সৃষ্টি এই ভুবনে কবির যেন স্থান হয়। কবি অনেক অনেক আলো আকাঙ্ক্ষা করেছেন। এই আলো জ্ঞানের আলো, এই আলো মনের আঁধারকে দূর করে মনকে দীপ্তিমান করে তোলার আলো। এই আলো কবিচিত্তকে উদার হতে সাহায্য করবে, যা কবির মনের গহনে জমে থাকা সামান্যতম অন্ধকারকেও দূরীভূত করবে। কবির মন যেন সুরের ছন্দে, বাঁশির তানে স্পন্দিত হয়, যে বাঁশিতে সুর ভরে দেবেন স্বয়ং বিশ্বপিতা। কবির কামনা-বিশ্বপিতা তাকে বেদনার ভারে ভারাক্রান্ত করে তুলুন। কারণ বেদনার আঘাতেই চিত্তশুদ্ধি ঘটবে, বেদনার আঘাত না থাকলে সুখের অনুভূতি কবি পাবেন কীভাবে? এই বেদনাই চেতনার আলোকে উদ্ভাসিত করবে কবির মনকে, সেই চেতনার প্রজ্ঞায় কবির সকল বাধাবন্ধ ছিন্ন হয়ে যাবে, নিজেকে পবিত্র বলে মনে হবে। প্রভুর কাছে কবির প্রার্থনা প্রভু যেন তাকে সকল অন্ধকার ত্রাণ করেন। কবি প্রার্থনা করেছেন যেন বিশ্বপ্রেমের আধার হতে পারে কবির হৃদয়, আর তার ফলে কবির সকল আমিত্ব-অহংবোধ যাবে টুটে, হৃদয় হবে সহজসরল পবিত্র। পরমপিতাই সকল সুধার আধার, তিনি যেন সকলকে সেই সুধা দান করে সকলের হৃদয়কেই অমৃতময় করে তোলেন।

প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে অধ্যায়ের নামকরণ

স্বরবিতানে গানটির কোনো নামকরণ করা নেই। প্রসঙ্গত বলা চলে রবীন্দ্রনাথ সংগীতের নামকরণ করা নিয়ে বিরোধী ছিলেন। কারণ একই ভাবের গান অনেকগুলিই আছে। তবু শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা ভেবে শিক্ষা পর্ষদ আলোচ্য গানের প্রথম চরণটিকে শিরোনাম হিসেবে ব্যবহার করেছেন।

সমগ্র গানটির মধ্যেই বিশ্বপিতা বা পরমপুরুষের কাছে নিজেকে নিবেদন করার প্রয়াসটি দেখা গেছে। কবি চেয়েছেন, তার আত্মশুদ্ধি ঘটুক, মোহের সামান্য আবরণও দূরে সরে যাক, নির্মল হোক হৃদয়। তাই প্রভুর কাছে কবি আবেদন রেখেছেন – প্রভু যেন তার সকল তৃষ্না দূর করে প্রাণকে আনন্দে ভরিয়ে দেন, প্রভু যেন তাঁর সৃষ্ট বিশ্বভুবনে কবিকে আশ্রয় দেন, তার হৃদয়ে জমে থাকা আঁধারকে দূরীভূত করে আলোকময় করে তোলেন হদয়কে। প্রভুর বাঁশির সুর কবির মনকে যেন স্পন্দিত করে। অনেক অনেক বেদনার মাঝে তাকে যেন শুদ্ধ করে তোলেন, কবির চেতনাকে যেন জ্ঞানের প্রজ্ঞায় ভরিয়ে তোলেন। আর সকলকেই যেন বিশ্বপিতা প্রেমসুধারসে সিক্ত করেন-সেই আবেদনও কবি করেছেন।

সমগ্র গানটিতেই কবি মহাবিশ্বের অধীশ্বর পরমপুরুষের কাছে আবেদন রেখেছেন, যেন বাইরের তৃষ্না হরণ করে জ্ঞানের আলোয় কবির হৃদয়কে তিনি ভরিয়ে তোলেন। তাই বলতে পারি যে, পর্ষদের দেওয়া গানটির নামকরণ ‘প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে’ সার্থক হয়েছে।

এই গানে কবি বিশ্বপ্রেম ও প্রকৃতির শক্তির জয়গান করেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে, ঈশ্বরের প্রতি ভালোবাসা ও প্রকৃতির সাথে একাত্মতা লাভের মাধ্যমেই মানুষ সত্যিকারের সুখ ও তৃপ্তি লাভ করতে পারে।

কবি তার কবিতায় বিশ্বপিতার কাছে ঐকান্তিক আবেদন জানিয়েছেন। তিনি চান ঈশ্বর যেন তার সকল তৃষ্ণা পূরণ করে তাকে নতুন করে জীবন দান করেন। তিনি এই পৃথিবীতে পরমপিতার সৃষ্টির একটি অংশ হতে চান।

কবি জ্ঞানের আলো ও মনের আঁধার দূরীভূতকারী আলো কামনা করেন। এই আলো কবির মনকে উদার করে তুলবে এবং তার মনের গভীরতম অন্ধকারকেও দূর করবে। তিনি চান তার মন যেন সুরের ছন্দে ও বাঁশির তানে স্পন্দিত হয়, যে বাঁশিতে সুর ভরে দেবেন স্বয়ং বিশ্বপিতা।

কবি বেদনার ভার বহন করতে চান কারণ তিনি বিশ্বাস করেন বেদনার আঘাতেই চিত্তশুদ্ধি ঘটে। বেদনার মাধ্যমেই তিনি সুখের অনুভূতি উপলব্ধি করতে পারবেন। এই বেদনাই তার মনে চেতনার আলো জ্বালাবে এবং সেই চেতনার আলোতে তার সকল বাধা-বিঘ্ন দূর হয়ে যাবে। তিনি নিজেকে পবিত্র অনুভব করবেন।

কবি প্রার্থনা করেন ঈশ্বর যেন তাকে সকল অন্ধকার থেকে মুক্তি দান করেন। তিনি চান তার হৃদয় বিশ্বপ্রেমের আধারে পরিণত হোক। এর ফলে তার সকল আমিত্ব-অহংবোধ দূর হয়ে যাবে এবং তার হৃদয় সহজসরল ও পবিত্র হয়ে উঠবে।

কবি বিশ্বাস করেন পরমপিতাই সকল সুধার আধার। তিনি প্রার্থনা করেন ঈশ্বর যেন সকলকে সেই সুধা দান করে সকলের হৃদয়কে অমৃতময় করে তোলেন।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না –  ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer