“গ্রে স্ট্রিটে ট্রামলাইন ঘেঁষে একফালি ঘরে দোকানটি।” এই উক্তিটি দশম বাংলা সহায়ক পাঠ কোনি উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে। “গ্রে স্ট্রিটে ট্রামলাইন ঘেঁষে একফালি ঘরে দোকানটি।’ – কার কোন্ দোকানের কথা বলা হয়েছে? কাহিনিতে দোকানের বিষয় কী তথ্য পাওয়া যায়?” এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যান্ত গুরুত্তপূর্ণ। কোনি উপন্যাসের এই রচনাধর্মী প্রশ্নটি তৈরী করে গেলে মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষায় একটি ৫ নম্বরের পাওয়া যেতে পারে।
‘সিনহা টেলারিং’ নামের একটি পুরনো টেলারিং দোকান ছিল যা অবহেলার কারণে লোকসানের মুখে পতিত হয়েছিল। দোকানটির মালিক ক্ষিতীশ সাঁতার কাটার প্রতি আসক্ত ছিলেন এবং দোকানের দিকে তেমন মনোযোগ দিতেন না। এই অবস্থায় ক্ষিতীশের স্ত্রী লীলাবতী দোকানের দায়িত্ব নেন। তিনি দোকানের নাম পরিবর্তন করে ‘প্রজাপতি’ রাখেন এবং পুরুষদের পোশাক বানানো বন্ধ করে শুধুমাত্র মেয়েদের ও বাচ্চাদের পোশাক বানানো শুরু করেন। দুজন ডিপ্লোমাধারী মহিলাকে নিয়োগ করে তিনি দোকানকে নতুন করে সাজান। লীলাবতীর অধ্যবসায় ও পরিশ্রমের ফলে ‘প্রজাপতি’ দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং লোকসানের পরিবর্তে লাভের মুখ দেখতে শুরু করে। কাজের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় লীলাবতীকে দোকানের জন্য নতুন ও বড় ঘর খুঁজতে হয়। ‘প্রজাপতি’ দোকান আজও সফলভাবে চলছে এবং লীলাবতী একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত।
“গ্রে স্ট্রিটে ট্রামলাইন ঘেঁষে একফালি ঘরে দোকানটি।” – কার কোন্ দোকানের কথা বলা হয়েছে? কাহিনিতে দোকানের বিষয় কী তথ্য পাওয়া যায়?
উদ্দিষ্ট ব্যক্তি ও তার দোকান – প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে ক্ষিতীশ সিংহের স্ত্রী লীলাবতীর ‘প্রজাপতি’ নামক লেডিজ টেলারিং-এর দোকানটির কথা বলা হয়েছে।
দোকানটির বিবরণ –
- পূর্বনাম – কাহিনিতে উল্লেখিত দোকানটির আগে নাম ছিল ‘সিনহা টেলারিং’। সেই সময় ক্ষিতীশ দোকান চালাতেন আর দুজন দর্জি জামাপ্যান্ট তৈরি করত। সঙ্গে দেয়াল আলমারিতে থাকত কিছু সিন্থেটিক কাপড়।
- দোকানের প্রতি অবহেলা – কিন্তু সাঁতারে আসক্ত ক্ষিতীশ দু-ঘণ্টাও দোকানে থাকতেন না, বরং তাঁকে প্রায় সবসময়ই পাওয়া যেত জুপিটার সুইমিং ক্লাবে। এভাবে চলতে চলতে হঠাৎ একদিন আবিষ্কার করা হয় যে আলমারির কাপড় অর্ধেকেরও বেশি অদৃশ্য হয়েছে, দোকানের চার মাসের ভাড়া বাকি পড়েছে আর লাভের বদলে হয়েছে শুধুই লোকসান।
- নতুন নাম – এই অবস্থায় লীলাবতী দোকানের দায়িত্ব নেন। নিজের গয়না বন্ধক দিয়ে দোকানটিকে ঢেলে সাজান, দোকানের নতুন নাম হয় ‘প্রজাপতি’।
- নতুন দোকানের সামন্ত্রী – পুরুষদের পোশাক তৈরি বন্ধ করে দিয়ে টেলারিং-এ ডিপ্লোমা পাওয়া দুজন মহিলাকে নিয়ে তিনি শুধু মেয়েদের এবং বাচ্চাদের পোশাক তৈরি করতে থাকেন, তাঁর দোকান আবার প্রতিষ্ঠা পায়।
- দোকানে কাজের চাহিদা – দোকানে কাজের চাহিদাও প্রবলভাবে বেড়ে যায়। যে কাজ আগে তিন দিনে করে দেওয়া যেত এখন তা দশ দিনের আগে করা সম্ভব হয় না। কাজের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় লীলাবতীকে দোকানের জন্য নতুন ঘর খুঁজতে হয়।
‘প্রজাপতি’ দোকানটি লীলাবতীর অদম্য সাহস, পরিশ্রম ও দূরদর্শিতার প্রতীক। ক্ষিতীশের অবহেলার কারণে যেখানে দোকানটি লোকসানের মুখে পতিত হয়েছিল, সেখানে লীলাবতী দায়িত্ব নেওয়ার পর দোকানটি নতুন করে জীবন পায়। পুরুষদের পোশাক বানানো বন্ধ করে মেয়েদের ও বাচ্চাদের পোশাকের দিকে মনোযোগ দেওয়ার মাধ্যমে তিনি দোকানকে নতুন দিগন্তে নিয়ে যান।
লীলাবতীর এই গল্প আমাদের শেখানোর জন্য অনেক কিছু আছে। প্রথমত, যেকোনো পরিস্থিতিতেও হাল না ছেড়ে লড়াই করে গেলে অবশ্যই সাফল্য আসে। দ্বিতীয়ত, নারীরাও পুরুষদের মতো যেকোনো কাজে সফল হতে পারে। তৃতীয়ত, সঠিক পরিকল্পনা ও দূরদর্শিতা থাকলে যেকোনো ব্যবসাকেই সফলতার শিখরে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব।
‘প্রজাপতি’ দোকান আজও সফলভাবে চলছে এবং লীলাবতী একজন অনুপ্রেরণা হিসেবে আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন।