এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন।। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় – প্রাণীদেহে সাড়াপ্রদানের একটি প্রকার হিসেবে গমন – রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

জীবেরা তাদের চারপাশের পরিবেশের সাথে নিয়মিত মিথস্ক্রিয়া করে। এই মিথস্ক্রিয়াগুলির ফলে জীবের দেহে বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটে। এই পরিবর্তনগুলিকে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় করে জীবের দেহ স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে।

Table of Contents

মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় 2

গমন কাকে বলে? গমনের চালিকা শক্তিগুলি সংক্ষেপে লেখো। অথবা, গমনের সংজ্ঞা নিরূপণ করো। গমনের উদ্দেশ্য কী?

গমন জীবন বিজ্ঞানে প্রাণীদেহে সাড়াপ্রদানের একটি প্রকার হিসেবে বিবেচিত হয়, যা প্রাণীদের শরীরের বিভিন্ন অংশগুলির সংযোগ এবং সমন্বয়ে সৃষ্টি করে।

গমন

যে প্রক্রিয়ায় সাধারণত প্রাণীরা উদ্দীপকের প্রভাবে সাড়া দিয়ে বা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সামগ্রিক স্থান পরিবর্তন করে, তাকে গমন বলে।

গমনের চালিকা শক্তি বা গমনের উদ্দেশ্য

গমনের চালিকাশক্তি তথা উদ্দেশ্যগুলি সম্পর্কে নীচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল —

  1. খাদ্য খোঁজা বা খাদ্যান্বেষণ অধিকাংশ উদ্ভিদ নিজের খাদ্য নিজে উৎপাদন করতে পারে। তাই উদ্ভিদকে খাদ্যন্বেষণে অন্যত্র গমন করতে হয় না। কিন্তু প্রাণীরা সাধারণত পরভোজী, অর্থাৎ প্রাণীদেরকে খাদ্যের জন্য অন্যের ওপর নির্ভর করতে হয়। তাই প্রাণীকে খাদ্যের সন্ধানে স্থানান্তরে গমন করতে হয়।
  2. খাদকের খাদ্যে পরিণত হওয়া এড়িয়ে চলা বা আত্মরক্ষা যেসব জীব নিজেরা খাদ্য প্রস্তুত করতে পারে না, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে খাদ্যের জন্য অপরের ওপর নির্ভরশীল, তাদের খাদক বলে। এক শ্রেণির খাদক অপর শ্রেণির খাদককে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করতে অগ্রসর হয়। তাই শত্রুর আক্রমণ থেকে নিজেকে বাঁচাবার জন্য প্রাণীকে স্থানান্তরে গমন করতে হয়। যেমন — বাঘ শিকারের সময় হরিণকে আক্রমণ করলে, হরিণ অন্যস্থানে গমন করে আত্মরক্ষার চেষ্টা করে।
  3. পরিযান পরিবেশগত কারণে প্রাণীরা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। একে পরিযান বলে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি থেকে রক্ষা পেতে প্রাণীরা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গমন করে।
  4.  অনুকূল পরিবেশের সন্ধান উপযুক্ত মাত্রায় জল, আলো, বাতাস ইত্যাদির জন্য প্রাণীকে স্থানান্তরে গমন করতে হয়। যেমন, বর্ষাকালে পিঁপড়েরা মাটি ছেড়ে ঘরের ভিতর চলে আসে।
  5.  নতুন এবং সুরক্ষিত বাসস্থান খুঁজে নেওয়া সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য নিরাপদ বাসস্থানের প্রয়োজন হয়। বহুক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে বাসস্থানের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়, তখন নতুন বাসস্থানের সন্ধানে গমনের প্রয়োজন হয়। ফলে উপযুক্ত বাসস্থানের জন্য প্রাণীকে স্থানান্তরে গমন করতে হয়।
  6. প্রজননিক কাজের জন্য জীবের একত্রিত হওয়া – বংশবিস্তারের জন্য প্রাণী ও নিম্নশ্রেণির কিছু উদ্ভিদকে উপযুক্ত প্রজনন স্থান খুঁজে নেওয়ার জন্য বা উপযুক্ত সঙ্গী নির্বাচনের জন্য স্থানান্তরে গমন করতে হয়। যেমন — ইলিশ মাছ সমুদ্রের লবণাক্ত জলে বাস করে। প্রধানত ডিম পাড়ার জন্য এরা নদীর মিঠে জলে আসে।

অ্যামিবা-র গমনের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও। সিলিয়া ও ফ্ল্যাজেলার মধ্যে পার্থক্য উল্লেখ করো। অথবা, অ্যামিবা-র গমনে সিউডোপোডিয়ার ভূমিকা বর্ণনা করো। সিলিয়া ও ফ্ল্যাজেলার মধ্যে পার্থক্য উল্লেখ করো।

অ্যামিবার গমন হলো একটি সিলিয়েটেড প্রাণীর গতিবিধি, যেখানে সে শরীরের এক অংশ দ্বারা আবার আরেক অংশে সরায়। এটি অ্যামিবা নামক একটি সিলিয়েটেড সংকোচিত রূপ নিয়ে প্রবাসিত হয় যা পরিবর্তনশীল হতে পারে।

অ্যামিবার গমন

  1. অ্যামিবা-র গমনাঙ্গ হল ক্ষণপদ বা সিউডোপোডিয়া। অ্যামিবার গমনের সময় কোশস্থ সাইটোপ্লাজমের ঘনত্ব পরিবর্তনের ফলে কোশের পরিধির দিকে কোশপর্দাসহ সাইটোপ্লাজমের আঙুলের মতো প্রবর্ধক সৃষ্টি হয়। এটিই ক্ষণপদ অ্যামিবা যেদিকে গমন করতে সচেষ্ট হয়, সেই দিকে ক্ষণপদ তৈরি হয়।
  2. ওই ক্ষণপদের আঠালো অগ্রভাগকে অ্যামিবা কোনো কঠিন বস্তু বা গমনের মাধ্যম (সাবস্ট্রাটাম) -এর সাথে সংলগ্ন করে।
  3. দেহের বাকি প্রোটোপ্লাজম এরপর ধীরে ধীরে ক্ষণপদের মধ্যে প্রবাহিত হয়। এর ফলে অ্যামিবার পশ্চাদভাগ গুটিয়ে আসে এবং প্রাণীটি গতিপথের দিকে অগ্রসর হয়।
  4. ক্ষণপদের সাহায্যে অ্যামিবার এইজাতীয় গমনকে অ্যামিবয়েড গমন বলে।
অ্যামিবা-র গমনের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও

সিলিয়া ও ফ্ল্যাজেলা-র অবস্থান ও কাজের তুলনা

বিষয়সিলিয়াফ্ল্যাজেলা
1. অবস্থানসাধারণত কোশের পরিধি বরাবর।সাধারণত কোশের কোনো এক প্রান্তে অবস্থান করে।
2. প্রকৃতিঅপেক্ষাকৃত সরু ও ছোটো হয়।অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ ও মোটা হয়।
3. কাজগমনে সাহায্য করা ও বিভিন্ন বস্তুকে নির্দিষ্ট দিকে সঞ্চালন করা।গমনে সাহায্য করা।

প্যারামেসিয়াম-এর গমনের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও। প্যারামেসিয়াম ছাড়া অন্যান্য কোন্ কোন্ প্রাণীর দেহে সিলিয়ার উপস্থিতি লক্ষ করা যায? অথবা, সিলিয়ার সাহায্যে প্যারামেসিয়াম কীভাবে গমন করে তা লেখো। প্যারামেসিয়াম ছাড়া অন্যান্য কোন্ কোন্ প্রাণীর দেহে সিলিয়ার উপস্থিতি লক্ষ করা যায়?

প্যারামেসিয়াম এর গমন হলো অবিশ্রান্ত পরিবাহের মাধ্যমে প্যারামেসিয়াম জীবাশ্ম শরীরে চলে যাওয়া, যা অস্থায়ীভাবে সংকোচিত হতে পারে। এটি প্রাণীদের বিভিন্ন অংশের গমন এবং সমন্বয়ে সহায়তা করে।

প্যারামেসিয়াম-এর গমন

  1. প্যারামেসিয়াম-এর গমনাল হল সিলিয়া। সিলিয়াগুলি আণুবিক্ষণিক সূক্ষ্ম সুতোর মতো ও আকারে ছোটো হয়। প্যারামেসিয়াম নামক আদ্যপ্রাণীর দেহের সমগ্রতলে অর্থাৎ সমগ্র কোশের চারপাশে অসংখ্য সিলিয়ার উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। এদের সিলিয়াগুলি একই সময়ে প্রায় একই দিকে সঞ্চালিত হয়। এর ফলে প্যারামেসিয়াম জলে বা তরল মাধ্যমে সিলিয়া সঞ্চালনের বিপরীত দিকে গমন করে।
  2. পরবর্তী পর্যায়ে সিলিয়াগুলি আবার আগের অবস্থার ফিরে আসে।
  3. এইভাবে সিলিয়া পর্যায়ক্রমিক সঞ্চালনের মাধ্যমে প্রাণীটি অগ্রসর হয়।
  4. সিলিয়ার সাহায্যে গমনের এই ধরনের পদ্ধতিকে সিলিয়া-নির্ভর গমন বা সিলিয়ারি গমন বলা হয়।

প্যারামেসিয়াম ব্যাতিত সিলিয়া-যুক্ত প্রাণী

প্যারামেসিয়াম ছাড়া অন্যান্য কিছু সিলিয়াযুক্ত প্রাণী ভটিসেলা নামক এককোশী প্রাণী, এ ছাড়া বিভিন্ন বহুকোশী প্রাণীর কিছু কোশে সিলিয়া উপস্থিত। যেমন — মানুষের শ্বাসনালীর কোশ।

ইউগ্লিনা-র গমন পদ্ধতির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও। ইউগ্লিনা-র সাথে অ্যামিবা-র গমনের পার্থক্য লেখো।

ইউগ্লিনার গমন হলো একটি শক্তিশালী প্রাণীর গতিবিধি, যেখানে ইউগ্লিনার নামক পদার্থ দ্বারা তার শরীরের গঠন পরিবর্তন করে এবং মাসপাতা নির্মাণ করে। এটি প্রাণীর প্রকৃতির সঙ্গে তার আনুগত্য বা আদত্ত সম্পর্কিত।

ইউগ্লিনার গমন পদ্ধতি

  1. ইউগ্লিনার গমনা হল ফ্ল্যাজেলা। এগুলি আণুবিক্ষণিক, সূক্ষ্ম তন্তুর মতো, সঞ্চালনে সক্ষম, একক পর্দাবৃত সাইটোপ্লাজমীয় বহিঃবৃদ্ধি। ফ্ল্যাজেলার সুশৃঙ্খল সঞ্চালনের মাধ্যমে সংঘটিত ইউগ্লিনার গমন পদ্ধতিকে ফ্ল্যাজেলা-নির্ভর গমন বা ফ্ল্যাজেলারি গমন বলা হয়।
  2. ইউগ্লিনা জল বা তরল মাধ্যমে এক বা একাধিক ফ্ল্যাজেলাকে চাবুকের মতো সঞ্চালনের দ্বারা একস্থান থেকে অন্যস্থানে যায়।
  3. ফ্লাজেলাটিকে সঞ্চালনের মাধ্যমে জলে সক্রিয় ঘাতের সৃষ্টি হয়। এর প্রত্যাখাতে প্রাণীটি ফ্ল্যাজেলার চলনের বিপরীতে গমন করে।
  4. ইউগ্লিনার ফ্ল্যাজেলার কাছে উপস্থিত চক্ষুবিন্দু সূর্যালোক অনুভব করে ফ্ল্যাজেলার সঞ্চালনে সাহায্য করে।
ইউগ্লিনা-র গমন পদ্ধতির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও

ইউগ্লিনা-র সাথে অ্যামিবা-র গমনের পার্থক্য

বিষয়ইউগ্লিনা-র গমনঅ্যামিবা-র গমন।
1. গমনাঙ্গফ্ল্যাজেলা।ক্ষণপদ।
2. গমনের মাধ্যমতরল মাধ্যমে গমন করে।কঠিন কোন বস্তু বা সারস্ট্রাটাম-এ আটকে গমন করে।
3. গমনের পদ্ধতিফ্ল্যাজেলা-নির্ভর গমন।অ্যামিবয়েড গমন।
4. গমন অঙ্গের প্রকৃতিফ্ল্যাজেলাগুলির সূক্ষ্ম তন্তুর মতো দীর্ঘ ও মোটা হয়। ক্ষণপদগুলি সাইটোপ্লাজমের আঙুলের মতো কোশীয় উপবৃদ্ধি।

চিত্রসহ মাছের গমন পদ্ধতি বর্ণনা করো। অথবা, চিত্রসহ মাছের সস্তরণ পদ্ধতি সংক্ষেপে লেখো।

মাছের গমন হলো মাছের শরীরে স্কেল, পিকচল এবং পাংশুদের সাহায্যে চলাচল পদার্থিক প্রক্রিয়া, যা তাদের জলে বিভিন্ন কাজে সহায়তা করে। এটি মাছের জীবনকে ব্যাপারটি সম্পর্কে সঙ্গত ও সামঞ্জস্যপূর্ণ করে।

মাছের গমন পদ্ধতি

  • মাছের প্রধান গমনাঙ্গ হল পাখনা। এ ছাড়া মায়োটম পেশি পটকা বা সুইম ব্লাডারও গমনে সাহায্য করে।
  • পাখনার সাহায্যে মাছ জলে সাঁতার কাটতে পারে। মাছের দেহে সাধারণত সাত প্রকার পাখনা থাকে। এর মধ্যে দুটি জোড় ও তিনটি বিজোড় পাওনা।
  1. বক্ষপাখনা শ্রোণিপাখনা নামক জোড় পাখনার সাহায্যে মাছ জলের মধ্যে ওপরে-নীচে ওঠা নামা করতে পারে।
  2. পুচ্ছপাখনা মায়োটম পেশির সংকোচন প্রসারণকে কাজে লাগিয়ে ক্রমিক আন্দোলন গতি সৃষ্টি করে। যার ফলে প্রবল ঘাত সৃষ্টির মাধ্যমে মাছ জলের মধ্যে অগ্রগতির জন্য প্রয়োজনীয় বল সৃষ্টি করে। এর পাশাপাশি পুচ্ছ পাখনা নৌকার হালের মতো মাছকে দিক পরিবর্তনে সহায়তা করে।
  3. পৃষ্ঠপাখনা পায়ুপাখনা মাছকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সহায়তা করে এবং জলের মধ্যে মাছের স্থিতাবস্থা বজায় রাখে।
চিত্রসহ মাছের গমন পদ্ধতি বর্ণনা করো
  • বেশিরভাগ অস্থিবিশিষ্ট মাছের দেহের পটকা বা বায়ুথলি মাছকে জলের মধ্যে প্লবতা নিয়ন্ত্রণ করে ওপর-নীচে ওঠা-নামা করতে সাহায্য করে।
  1. পটকায় গ্যাসের পরিমাণ হ্রাস পেলে, মাছের দেহের আপেক্ষিক গুরুত্ব বৃদ্ধি পায় ফলে মাছ জলের গভীরে নেমে আসে।আবার বিপরীতভাবে পটকায় গ্যাসের পরিমাণ বাড়লে মাছের দেহের আপেক্ষিক গুরুত্ব কমে। ফলে মাছ জলের উপরিতলে উঠে আসে।
  • মাছের মেরুদণ্ডের দুই পাশে অবস্থিত ‘V’ আকৃতির মায়োটম পেশিগুলিও মাছের গমনে সাহায্য করে। এই পেশির সংকোচন-প্রসারণের ফলে মাছের দেহে তরঙ্গের মতো আন্দোলন সৃষ্টি হয়। যার ফলে মাছ সামনে এগোতে পারে।

মানুষের দ্বিপদ গমন পদ্ধতি বর্ণনা করো।

মানুষের দ্বিপদ গমন হলো মানুষের প্রধান চলাচল পদার্থিক পদ্ধতি, যা তাকে দূরত্ব পার করতে এবং বিভিন্ন কাজে ক্ষমতা প্রদান করে। এটি মানুষের সামঞ্জস্যপূর্ণ চলাচল ও কার্যকলাপের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

মানুষের দ্বিপদ গমন পদ্ধতি

  • মানুষের গমন পদ্ধতিকে দ্বিপদ গমন বলে। মানুষের গমনাশ হল একজোড়া পা হওয়ায় এই গমন বিপদ গমন নামে। পরিচিত। পা-সংলগ্ন অস্থি, অস্থিপেশি এবং বিভিন্ন অসিদ্ধি একত্রিত হয়ে গমনে সাহায্য করে।
  • মানুষের হাঁটার সময়ে দেহের ওপরের অংশ অগ্রগতি লাভ করে এবং পা দুটি ভূমির ওপর অবস্থান করে।
  • দেহের ওপরের অংশ অগ্রগতি লাভ করলে দেহকাণ্ড সামনের দিকে পতনের সম্মুখীন হয়। এই পতন রোধ করার জন্য একটি পা, ধরা যাক বাঁ পা সামনের দিকে অগ্রসর হয়। ফলে দেহ এগিয়ে আসে এবং বাঁ পা ভূমি স্পর্শ করে। এইসময়ে ডান পা ভূমি সংলগ্ন থাকে এবং দেহের সম্পূর্ণ ভার বহন করে।
মানুষের দ্বিপদ গমন পদ্ধতি বর্ণনা করো।
  • বাঁ পা ভূমি স্পর্শ করলে ডান পায়ের গোড়ালি উত্তোলিত হয় এবং হাঁটু ভাঁজ হয়। ফলে দেহ সামনের দিকে এগিয়ে আসে। এইসময়ে দেহের ভার বাঁ পায়ের ওপর এসে পড়ে।
  • এরপর ডান পায়ের তল ভূমি স্পর্শ করলেই আবার বাঁ পা উঠে আসে। এইভাবে ডান ও বাঁ পায়ের পর্যায়ক্রমিক সঞ্চালনের পুনরাবৃত্তির ঘটতে থাকে। এইরূপ সঞ্চালনের দ্বারাই মানুষের গমন সাধিত হয়।.
  • এইরকম গমনের সময়ে মানুষের হাত দুটিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। মানুষের দুটি হাত গমনের সময়ের পর্যায়ক্রমে সামনে ও পিছনে আন্দোলিত হয়। মানুষের ডান পা অগ্রসর হওয়ার সময় বাঁ হাত এবং বাঁ পা অগ্রসর হওয়ার সময় ডান হাত প্রসারিত হয়। এইভাবে হাতদুটি দেহের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।
  • এ ছাড়া পশ্চাদমস্তিষ্কে অবস্থিত লঘুমস্তিষ্ক ও অন্তঃকর্ণের অর্ধবৃত্তাকার নালীও মানুষের গমনের সময় দেহের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

গমন কীরূপে চলনের ওপর নির্ভরশীল তা বর্ণনা করো। চলন ও গমনের পার্থক্য উল্লেখ করো।

চলন ও গমন হলো বস্তুদের স্থান পরিবর্তন করার পদার্থিক প্রক্রিয়া, যা জীবনকে সংগঠিত এবং কার্যকর করে। এটি বস্তুদের চলাচল, সরবরাহ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

চলনের ওপর গমনের নির্ভরশীলতা

যে প্রক্রিয়ায় জীব স্বতঃস্ফূর্তভাবে বা উদ্দীপকের প্রভাবে একস্থানে স্থির থেকে তার দেহের কোনো অংশকে সঞ্চালন করে, তাকে চলন বলে। আবার যে প্রক্রিয়ায় জীব স্বেচ্ছায় বা উদ্দীপকের প্রভাবে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঞ্চালনের দ্বারা সামগ্রিকভাবে স্থান পরিবর্তন করে, তাকে গমন বলে। অর্থাৎ গমনের জন্য প্রাণী চলনের ওপর নির্ভরশীল, কিন্তু চলন কখনোই গমনের ওপর নির্ভরশীল হয় না।

চলন ও গমনের পার্থক্য

বিষয়চলনগমন
1. জীবের সামগ্রিক স্থান পরিবর্তনএক্ষেত্রে ঘটে না।এক্ষেত্রে ঘটে।
2. সারিত অঙ্গকিছু নির্দিষ্ট অঙ্গবিশেষে সীমিত।সমগ্র দেহ সঞ্চারিত হয়।
3. দুই পদ্ধতির পারস্পরিক সম্পর্কচলন গমন-নিরপেক্ষগমন চলন-নির্ভর।
4. সংশ্লিষ্ট জীবউদ্ভিদ ও প্রাণী সকল জীবের দেহেই ঘটে।প্রধানত প্রাণীর দেহে ঘটে।

গমন হলো প্রাণীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। এটি তাদের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য। গমনের মাধ্যমে প্রাণীরা তাদের খাদ্য, সঙ্গী, বাসস্থান ইত্যাদির সন্ধান করতে পারে। এছাড়াও, গমনের মাধ্যমে তারা শত্রুর হাত থেকে বাঁচতে পারে।

Share via:

মন্তব্য করুন