এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

নবম শ্রেণী – ভূগোল – পৃথিবীর গতিসমূহ – সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

আমরা আমাদের এই আর্টিকেলে নবম শ্রেণীর ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় ‘পৃথিবীর গতিসমূহ’-এর গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে স্পষ্ট ও গঠনমূলক আলোচনা করব। এই প্রশ্নোত্তরগুলো নবম শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষা, বিভিন্ন বোর্ড পরীক্ষা, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা, এবং চাকরির প্রস্তুতির জন্য অত্যন্ত জরুরি, কারণ এই অধ্যায়ের মূল ধারণাগুলো থেকে পরীক্ষায় প্রায়শই প্রশ্ন আসে।

পৃথিবীর গতিসমূহ - সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
পৃথিবীর গতিসমূহ – সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
Contents Show

29 ফেব্রুয়ারি কারোর জন্মদিন হলে কী হবে?

29 ফেব্রুয়ারি কারোর জন্মদিন হলে সে প্রতি চার বছর অন্তর জন্মদিন পালন করবে। কারণ, একমাত্র অধিবর্ষ বা লিপইয়ারেই ফেব্রুয়ারি মাসে 1 দিন যোগ করে 29 ফেব্রুয়ারি করা হয়। অন্য বছরগুলিতে ফেব্রুয়ারি মাসে 28 দিন থাকে।

সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে পৃথিবী কতবার নিজের অক্ষের ওপর আবর্তন করে?

পৃথিবী নিজের অক্ষের ওপর আবর্তন করতে সময় নেয় 23 ঘণ্টা 56 মিনিট 4 সেকেন্ড বা 24 ঘণ্টা বা 1 দিন এবং পৃথিবী সূর্যকে 365 দিনে একবার প্রদক্ষিণ করে। অর্থাৎ, সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে পৃথিবী 366 বার নিজের অক্ষের ওপর আবর্তন করে।

দুই মেরুতে 1 দিন ও 1 রাত্রিতে কীভাবে বছর শেষ হয়?

পৃথিবীর অক্ষ কক্ষতলের সঙ্গে 66½° কোণে হেলে অবস্থানের জন্য 21 মার্চ থেকে 23 সেপ্টেম্বর একটানা 6 মাস উত্তর মেরুতে দিন ও দক্ষিণ মেরুতে রাত থাকে এবং 23 সেপ্টেম্বর থেকে 21 মার্চ একটানা 6 মাস উত্তর মেরুতে রাত ও দক্ষিণ মেরুতে দিন থাকে। অর্থাৎ, উত্তর ও দক্ষিণ উভয় মেরুর 6 মাস দিন আমাদের 1 দিনের মতো এবং 6 মাস রাত আমাদের 1 রাতের মতো। তাই বলা যায় দুই মেরুতে 1 দিন ও 1 রাত্রিতে বছর (6 মাস + 6 মাস = 12 মাস) শেষ হয়।

প্রতিটি গ্রহই সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে, কিন্তু তাদের নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ হয় না কেন?

সূর্যকে পরিক্রমণরত গ্রহগুলির পারস্পরিক সংঘর্ষ না হওয়ার কারণগুলি হল –

  • প্রতিটি গ্রহ নিজ নিজ কক্ষপথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করছে এবং প্রত্যেকটি গ্রহের কক্ষপথ ভিন্ন। গ্রহগুলির সঙ্গে সূর্যের দূরত্বও ভিন্ন এবং এদের পরিক্রমণ বেগও ভিন্ন। একারণে গ্রহগুলির মধ্যে সংঘর্ষ হওয়া সম্ভব নয়।
  • সূর্য যেমন প্রতিটি গ্রহকে আকর্ষণ করে তেমনি প্রতিটি গ্রহও সূর্য থেকে দূরে সরে যেতে চায় নিজেদের কেন্দ্রবিমুখ শক্তির জন্য। তাই গ্রহগুলি একটি স্বতন্ত্র দূরত্ব বজায় রেখে পরিক্রমণ সম্পূর্ণ করে। যার ফলে সংঘর্ষের সম্ভাবনা থাকে না।

1 দিনে বা 24 ঘণ্টায় কত মিনিট আছে?

1 ঘণ্টায় 60 মিনিট হয়, আর 1 মিনিটে হয় 60 সেকেন্ড। সুতরাং, 24 ঘণ্টা = (24 × 60) মিনিট = 1440 মিনিট এবং 1440 মিনিট = (1440 × 60) সেকেন্ড = 86400 সেকেন্ড।

বুধের এক বছর পৃথিবীর এক বছরের চেয়ে কম কেন?

পৃথিবী সূর্যের চারদিকে 365 দিন 5 ঘণ্টা 48 মিনিট 46 সেকেন্ড সময়ে একবার পরিক্রমণ করে। এই সময়কে (365 দিন) আমরা এক বছর ধরি। একই ভাবে সমস্ত গ্রহই সূর্যের চারদিকে একবার ঘুরতে যে সময় নেয় তা হল তাদের এক বছর। বুধের এক বছর 88 দিনে হয়। অর্থাৎ, বুধ 88 দিনে সূর্যকে পরিক্রমণ করে। তাই বুধের এক বছর পৃথিবীর এক বছরের চেয়ে কম।

সবচেয়ে দ্রুতগামী গ্রহের নাম লিখ?

বুধ হল সবচেয়ে দ্রুতগামী গ্রহ। মাত্র 88 দিনে সূর্যকে একবার পাক খায়। মানুষের আবিষ্কৃত যে-কোনো মহাকাশ রকেটের চেয়ে এর গতি বেশি।

শুক্রগ্রহের একদিন এক বছরের থেকে বড়ো কেন?

পৃথিবী নিজের চারদিকে আবর্তন করে 24 ঘণ্টা বা 1 দিনে এবং সূর্যকে পরিক্রমণ করে 365 দিনে। এই হিসেবে প্রতিটি গ্রহের নিজের চারপাশে একবার আবর্তনের সময় হল তার একদিন। আর সূর্যের চারদিকে একবার ঘুরতে গ্রহদের যে সময় লাগে তা হল ওই গ্রহদের এক বছর।

এখন দেখা যাচ্ছে, শুক্র গ্রহ নিজের চারদিকে একবার আবর্তন করে 243 দিনে অর্থাৎ, পৃথিবীর 243 দিন শুক্র গ্রহের একদিন। আর সূর্যের চারদিকে একবার পরিক্রমণ করে 225 দিনে অর্থাৎ, পৃথিবীর 225 দিন শুক্র গ্রহের একবছর। তাই বলা যায় শুক্র গ্রহের একদিন একবছরের থেকে বড়ো।

সৌরবছর (Solar year) কী? 

পৃথিবী সূর্যকে সামনে রেখে নিজ মেরুদণ্ডের উপর ঘূর্ণায়মান হয়ে একটি উপবৃত্তাকার কক্ষপথে (ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে) সূর্যকে একবার পূর্ণ প্রদক্ষিণ করতে সময় নেয় 365 দিন 5 ঘণ্টা 48 মিনিট 46 সেকেন্ড বা 365 দিন 6 ঘণ্টা, একে এক সৌরবছর বলে।

সকল শতাব্দীগুলি 4 দ্বারা বিভাজ্য হলেও অধিবর্ষ নয় কেন?

4 বছর অন্তর 1 দিন বাড়িয়ে দিয়ে অধিবর্ষ (366 দিন) গনণা করা হলেও সময়ের হিসাব সঠিকভাবে মেলানো সম্ভব হয় না। কারণ – 4 বছরে 1 দিন বাড়ানোয় 44 মিনিট 56 সেকেন্ড (11 মিনিট 14 সেকেন্ড × 4) সময় বেশি ধরা হয়ে যায়। এই হিসাবে 400 বছরে 3 দিনের সামান্য বেশি সময় অতিরিক্ত হয়। এই সমস্যা সমাধানের জন্যই শতাব্দীর বছরগুলিকে 4 -এর পরিবর্তে 400 দিয়ে বিভাজ্য করা হয়। তাই 4 দ্বারা বিভাজ্য হলেও শতাব্দীর বছর অধিবর্ষ হয় না।

মহাকর্ষ সূত্র বলতে কী বোঝো?

এই মহাবিশ্বের ভরযুক্ত প্রতিটি বস্তু ভরযুক্ত অন্য বস্তুকে আকর্ষণ করে। এই আকর্ষণের মান বস্তুগুলির ভরের গুণফলের সর্বদা সমানানুপাতিক হয় এবং সংশ্লিষ্ট বস্তুগুলির মধ্যে দূরত্ব তার বর্গের ব্যাস্তানুপাতিক হয়। 1687 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটন আবিষ্কৃত এই ধারণাটিই মহাকর্ষ সূত্র নামে পরিচিত।

মাধ্যাকর্ষণ শক্তি কাকে বলে? এর সুবিধা কী?

যে বলের সাহায্যে পৃথিবী তার উপরিস্থিত সমস্ত পদার্থকেই  নিজ কেন্দ্রের দিকে আকর্ষণ করে রাখে, তাকে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি বলে।

সুবিধা – মাধ্যাকর্ষণ শক্তির সহায়তায় জল, বায়ু, মৃত্তিকা, জীবজন্তু, উদ্ভিদ গোষ্ঠী পৃথিবীর বুকে অবস্থান করে।

নাক্ষত্রদিন (Sidereal day) কাকে বলে? 

মহাকাশে কোনো নির্দিষ্ট নক্ষত্রের সাপেক্ষে পৃথিবী একবার আবর্তন করতে সময় নেয় 23 ঘণ্টা 56 মিনিট 4.09 সেকেন্ড। এই সময়কালকে নাক্ষত্রদিন বলে।

মুক্তিবেগ কাকে বলে?

যে গতিতে কোনো পার্থিব বস্তু বা উপাদানকে উপরের দিকে ছুড়লে সেটি পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি কাটিয়ে মহাশূন্যে চলে যায়, তাকে মুক্তিবেগ বলা হয়।

  • মুক্তিবেগের মান – পৃথিবীতে কোনো বস্তুকে সেকেন্ডে 11.2 কিমি গতিবেগে ছুড়লে বস্তুটি মুক্তিবেগ লাভ করে।
  • ব্যবহার – কৃত্রিম উপগ্রহ, মহাকাশযান, রকেট এই বেগ কাটিয়ে মহাকাশে পৌঁছায়।

সৌরদিন (Solar day) কী? 

পৃথিবী নিজ মেরুদণ্ডের উপর ক্রমাগত পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে আবর্তন করে চলেছে। এই আবর্তনের জন্য পৃথিবীর কোনো নির্দিষ্ট দ্রাঘিমায় পরপর দুটি মধ্যাহ্নের সময়ের ব্যবধান হয় 23 ঘণ্টা 56 মিনিট 4 সেকেন্ড বা 1 দিন, একে সৌরদিন বলে।

নিরক্ষরেখা বরাবর পৃথিবীর আবর্তন বেগ বেশি কেন?

পৃথিবীর নিরক্ষরেখার পরিধি হল প্রায় 40,076 কিমি। সুতরাং, নিরক্ষরেখাকেন্দ্রিক পৃথিবীর আবর্তনের জন্য সবচেয়ে বেশি জোরে ঘুরতে হয়। উদাহরণস্বরূপ, 24 ঘণ্টায় পৃথিবীকে এই নিরক্ষরেখা বরাবর প্রায় 40,076 কিমি পথ অতিক্রম করতে হয়। এই গতিবেগে পৃথিবী 1 ঘণ্টায় প্রায় 1,674 কিমি পথ অতিক্রম করে। তাই নিরক্ষরেখা বরাবর পৃথিবীর আবর্তন বেগ সর্বাধিক।

চান্দ্রমাস কাকে বলে?

পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ হল চাঁদ। চাঁদের পৃথিবীকে একবার পূর্ণ প্রদক্ষিণ করতে সময় লাগে 29 দিন 12 ঘণ্টা 44 মিনিট 3 সেকেন্ড, এই সময়কে চান্দ্রমাস বলে।

চান্দ্রমাস কাকে বলে
চান্দ্রমাস কাকে বলে

মধ্যাহ্ন ও মধ্যরাত্রি কাকে বলে?

মধ্যাহ্ন – ভূপৃষ্ঠের কোনো স্থান যখন লম্ব সূর্যালোক পায় তাকেই ওই স্থানের মধ্যাহ্ন বলে। এই সময়কে বেলা 12টা ধরা হয়।

মধ্যরাতি – ভূপৃষ্ঠের যে স্থানটিতে মধ্যাহ্ন সূচিত হয় বিপরীত গোলার্ধে ভূপৃষ্ঠের একই অবস্থানে অন্ধকারাচ্ছন্ন অংশটিকে মধ্যরাত্রি বলে। এই সময়কে রাত্রি 12টা ধরা হয়।

নক্ষত্রদের আপাতগতি কাকে বলে?

বছরের যে কোনো দিন রাতের আকাশে পর্যবেক্ষণ করা নক্ষত্রগুলি ধীরে ধীরে পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে সরে গিয়ে হঠাৎ মিলিয়ে যায়। পরের বছর আবার একই সময়ে তাদের আকাশে উদয় ঘটে, একেই নক্ষত্রদের আপাতগতি বলে।

পৃথিবীর আবর্তন বেগ কোথায় প্রায় শূন্য এবং কেন?

পৃথিবীর উভয় মেরুবিন্দুতে অর্থাৎ সুমেরু বিন্দু (90° উঃ) এবং কুমেরু বিন্দু (90° দঃ) -তে পৃথিবীর আবর্তন বেগ প্রায় শূন্য।

কারণ – পৃথিবীর উভয় মেরুবিন্দুর পরিধি যেহেতু শূন্য তাই এখানে পৃথিবীকে কোনো পথ অতিক্রম করতে হয় না। কাজেই এখানে পৃথিবীর আবর্তন বেগ প্রায় শূন্য।

ঊষা ও গোধূলি কাকে বলে? 

ঊষা (Dawn) – সূর্যোদয়ের ঠিক আগে সূর্যালোক বায়ুমণ্ডলের ধূলিকণা দ্বারা প্রতিফলিত হয়ে পূর্ব আকাশে যে ক্ষীণ আলোর সৃষ্টি করে, তাকে ঊষা বলে। এই সময় সূর্য দিগন্তরেখা থেকে 18° নীচে অবস্থান করে।

গোধূলি (Twilight) – সূর্যাস্তের ঠিক পরে বায়ুমণ্ডলীয় ধূলিকণা দ্বারা সূর্যালোক প্রতিফলিত হয়ে পশ্চিম আকাশে যে ক্ষীণ আলোর সৃষ্টি করে, তাকে গোধূলি বলে।

নিরক্ষরেখা বরাবর সারা বছর দিন-রাত্রি সমান হয় কেন?

নিরক্ষরেখা বরাবর দিন-রাত্রির হ্রাস-বৃদ্ধি হয় না, সারাবছরই 12 ঘণ্টা দিন ও 12 ঘণ্টা রাত্রি দেখা যায়। পৃথিবী গোলকাকার বলে পৃথিবীর কেন্দ্র ও ছায়াবৃত্তের কেন্দ্র এক হওয়ায় পরিক্রমণের সময় ছায়াবৃত্ত যে অবস্থায় থাকুক না কেন, নিরক্ষরেখাকে সারাবছরই দুটি সমান ভাগে ভাগ করে। ফলে, নিরক্ষরেখাতে সারাবছরই দিন ও রাত্রি সমান থাকে।

পৃথিবী মহাশূন্যে আবর্তন করছে কিন্তু আমরা ছিটকে বেরিয়ে যাচ্ছি না কেন? 

ভূপৃষ্ঠে অবস্থান করার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ, জীবজন্তু, যাবতীয় বস্তু পৃথিবীর সঙ্গে একই গতিতে আবর্তন করে চলেছে। অন্যদিকে, ভূপৃষ্ঠে অবস্থিত সমস্ত বস্তুকে পৃথিবী অভিকর্ষ বলের প্রভাবে নিজের কেন্দ্রের দিকে আকর্ষণ করে বলে দুরন্ত গতিতে ছুটে চলা পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে আমরা ছিটকে পড়ি না।

পৃথিবীর আবর্তন গতি কীভাবে সময় নির্ণয়ে সাহায্য করে বুঝিয়ে লেখো। 

পৃথিবী নিজের অক্ষের চারপাশে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে অনবরত ঘুরে চলেছে। এর ফলে আমরা প্রতিদিন সকালে সূর্যকে পূর্ব দিকে উদিত হতে এবং পশ্চিম দিকে অস্ত যেতে দেখি। পৃথিবী নিজের চারপাশে আবর্তন করতে যে সময় নেয় তা হল 24 ঘণ্টা বা 1 দিন। সুতরাং, প্রতি 1° আবর্তন করতে পৃথিবীর সময় লাগে 4 মিনিট। 1 দিনকে আবার 24 টা ভাগে ভাগ করে প্রতি ভাগকে 1 ঘণ্টা, প্রতি ঘণ্টাকে 60টা ভাগ করে 60 মিনিটে এবং 1 মিনিটকে আবার 60 সেকেন্ডে ভাগ করা হয়। এইভাবে একটি দিনকে ঘণ্টা, মিনিট, সেকেন্ডে ভাগ করে সময় নির্ণয় করা হয়।

ঋতুপরিবর্তন কাকে বলে?

পৃথিবীর পরিক্রমণ গতির জন্য সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়ন সংঘটিত হয় এবং ভূপৃষ্ঠে দিন-রাত্রির দৈর্ঘ্যের হ্রাস-বৃদ্ধি ও সৌরতাপের তারতম্য হয়। এর ফলে, ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন অংশে বছরের বিভিন্ন সময়ে উষ্ণতার যে তারতম্য ঘটে তারই জন্য জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটে। জলবায়ুর এই পরিবর্তনকে ঋতুপরিবর্তন বলে।

অরোরা অস্ট্রালিস কাকে বলে?

21 মার্চ থেকে 23 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত একটানা ছয়মাস কুমেরু অঞ্চলে রাত্রি থাকাকালীন আকাশে যে রামধনুর মতো সুন্দর অস্পষ্ট আলো বা জ্যোতি দেখা যায় , তাকে অরোরা অস্ট্রালিস বা কুমেরুপ্রভা বলে।

অরোরা অস্ট্রালিস
অরোরা অস্ট্রালিস

নিরক্ষীয় অঞ্চলে উষ্ণতা বেশি হয় কেন?

নিরক্ষীয় অঞ্চলে সূর্যরশ্মি সারাবছর লম্বভাবে পড়ে। সেজন্য এই অঞ্চল প্রচণ্ড উত্তপ্ত হয়। সারাবছর গড় উত্তাপ 27° সেলসিয়াস পর্যন্ত হয়। এ ছাড়া, নিরক্ষীয় অঞ্চলে স্থলভাগ অপেক্ষা জলভাগ বেশি হওয়ায় বায়ুতে আর্দ্রতার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। তাই উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ার দরুন নিরক্ষীয় অঞ্চলে উষ্ণতা বেশি হয়।

‘বড়োদিন’ কি আসলে বড়ো দিন? 

আমরা প্রতিবছর 25 ডিসেম্বর যিশুখ্রিস্টের জন্মদিনে ‘বড়োদিন’ পালন করে থাকি। ওই দিন আমরা পৃথিবীর একজন মহান মানুষ তথা খ্রিস্টধর্মের প্রবর্তকের জন্মদিন পালন করি। ওই দিন আসলে কোনো বড়ো দিন নয়। তবে 22 ডিসেম্বর মকরসংক্রান্তিতে দক্ষিণ গোলার্ধে সবচেয়ে বড়ো দিন (14 ঘণ্টা) এবং সবচেয়ে ছোটো রাত (10 ঘণ্টা) অনুভূত হয়। অর্থাৎ, তখন দক্ষিণ গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল বিরাজ করে। তাই দক্ষিণ গোলার্ধে ‘বড়োদিন’ উত্তর গোলার্ধের মতো শীতল না হয়ে উষ্ণ হয়।

আবর্তন গতির মাধ্যমে তুমি কীভাবে উত্তর দিক নির্ণয় করবে?

পৃথিবী পশ্চিম থেকে পূর্বে আবর্তন করে। ফলে সূর্যকে প্রতিদিন পূর্ব দিকে উদয় হতে এবং পশ্চিম দিকে অস্ত যেতে দেখা যায়। তাই সূর্য উদয়ের সময় সূর্যের দিকে মুখ করে দাঁড়ালে সেই দিকটি হবে পূর্ব দিক। অর্থাৎ, আমার বাম হাতটি যেদিকে থাকবে সেই দিকটি হবে উত্তর দিক। আবার, সূর্য অস্ত যায় পশ্চিম দিকে। সেই সময় পশ্চিম দিকে মুখ করে দাঁড়ালে আমার ডান হাতটি যে দিকে থাকবে সেই দিকটি হবে উত্তর দিক। এইভাবে পৃথিবীর আবর্তন গতির সাহায্যে আমরা উত্তর দিক নির্ণয় করতে পারব।

ঋতু (Season) কাকে বলে? 

পৃথিবীর আবর্তন ও পরিক্রমণ গতি এবং অক্ষরেখার সঙ্গে কক্ষতলের কৌণিক অবস্থানের কারণে পৃথিবীতে দিবাভাগের দৈর্ঘ্য ও সূর্যালোকের তীব্রতার তারতম্য অনুসারে সারাবছরকে যে বিভিন্ন সময়কালে ভাগ করা হয়, সেই প্রতিটি ভাগকে এক-একটি ঋতু (Season) বলে। পৃথিবীর পরিক্রমণ গতির জন্য এখানে চারটি ঋতু পর্যায়ক্রমে আবর্তিত হয়। যেমন – গ্রীষ্ম, শরৎ, শীত ও বসন্ত।

পৃথিবীর কোন কোন অঞ্চলে ঋতু পরিবর্তন হয় না? 

পৃথিবীর নিরক্ষীয় অঞ্চল এবং মেরু অঞ্চলে ঋতুপরিবর্তন হয় না। কারণ –

  • নিরক্ষরেখা ও তার নিকটবর্তী অঞ্চলে সূর্যরশ্মি প্রায় সারাবছরই লম্বভাবে পড়ায় এখানে চিরকালই গ্রীষ্ম ঋতু থাকে।
  • অন্যদিকে, মেরু অঞ্চলে সূর্যরশ্মি সারাবছরই তির্যকভাবে পড়ায় এখানে সর্বদাই শীতকাল থাকে।

ঋতুচক্র বলতে কী বোঝো? 

পৃথিবীর পরিক্রমণ গতির জন্য আমরা বছরের বিভিন্ন সময়ে উষ্ণতার পরিবর্তন লক্ষ করি। উষ্ণতার তারতম্যের ওপর ভিত্তি করে বছরকে প্রধান চারটি (গ্রীষ্ম, শরৎ, শীত, বসন্ত) ভাগে ভাগ করা হয়। এক-একটি ভাগকে বলে ঋতু। ঋতুর এইপ্রকার পর্যায়ক্রমে এবং চক্রাকারে পরিবর্তনকে ঋতুচক্র বলে।

অরোরা বোরিওলিস কাকে বলে?

23 সেপ্টেম্বর থেকে 21 মার্চ পর্যন্ত একটানা ছয় মাস সুমেরু অঞ্চলে রাত্রি থাকাকালীন আকাশে যে রামধনুর মতো সুন্দর অস্পষ্ট আলো বা জ্যোতি দেখা যায়, তাকে অরোরা বোরিওলিস বা সুমেরুপ্রভা বলে।

অরোরা বোরিওলিস
অরোরা বোরিওলিস

নির্দিষ্ট কিছু মাসে সূর্যোদয়, সূর্যাস্তের সময় আলাদা এবং দিনের পরিমাণও আলাদা হয় তা একটি ছখের মাধ্যমে দেখাও।

নির্দিষ্ট কিছু মাসে সূর্যোদয়, সূর্যাস্তের সময় আলাদা এবং দিনের পরিমাণও আলাদা তা একটি ছখের মাধ্যমে দেখানো হল –

মাসসূর্যোদয়সূর্যাস্তদিনের পরিমাণ
মার্চপ্রায় সকাল 6 টাপ্রায় সন্ধ্যা 6 টাপ্রায় 12 ঘণ্টা
জুনপ্রায় ভোর 4.30প্রায় সন্ধ্যা 6.30প্রায় 14 ঘন্টা
সেপ্টেম্বরপ্রায় সকাল 6 টাপ্রায় সন্ধ্যা 6 টাপ্রায় 12 ঘণ্টা
ডিসেম্বরপ্রায় সকাল 6.30প্রায় বিকেল 4.30-5 টাপ্রায় 10 ঘণ্টা

7 জুলাই, 25 জানুয়ারি, 20 সেপ্টেম্বর বিষুবরেখার যে-কোনো জায়গায় কটার সময় সূর্য উঠবে?

সকাল 6 টার সময়, কারণ বিষুবরেখায় সূর্য সারাবছর লম্বভাবে কিরণ দেয়, এবং ছায়াবৃত্ত বিষুবরেখাকে সর্বদা সমদ্বিখণ্ডিত করে বলে বিষুবরেখায় প্রতিদিনই 12 ঘণ্টা দিন ও 12 ঘণ্টা রাত্রি হয়।

পৃথিবীর আবর্তনগতি না থাকলে কতদিন অন্তর পৃথিবীতে জোয়ারভাটা হত?

মূলত চাঁদের আকর্ষণে পৃথিবীতে জোয়ারভাটা হয়। পৃথিবীর আবর্তন গতি না থাকলে \(27\frac13\) দিন অন্তর পৃথিবীতে জোয়ারভাটা হত। কারণ – চাঁদ \(27\frac13\) দিনে পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিণ করে।

নির্দিষ্ট কিছু মাসে সূর্য কোনদিকে ঘেঁষে ওঠে তা একটি ছখের মাধ্যমে দেখাও।

নির্দিষ্ট কিছু মাসে সূর্য কোনদিকে ঘেঁষে ওঠে তা একটি ছখের মাধ্যমে নীচে দেখানো হল –

নির্দিষ্ট মাসদক্ষিণ-পূর্ব দিক
মার্চপূর্ব দিক
মে-জুনউত্তর-পূর্ব দিক
সেপ্টেম্বরপূর্ব দিক
নভেম্বর – ডিসেম্বরদক্ষিণ-পূর্ব দিক

সূর্যের আপাত বার্ষিক গতির সীমা উল্লেখ করো।

সূর্য 21 মার্চ থেকে 23 সেপ্টেম্বর উত্তর গোলার্ধে এবং 23 সেপ্টেমম্বর থেকে 21 মার্চ দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থান করে এবং সারা বছর সূর্য 23½° উত্তর থেকে 23½° দক্ষিণ অক্ষরেখার মধ্যে আপাতভাবে চলাচল করে।


আমরা আমাদের এই আর্টিকেলে নবম শ্রেণীর ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় ‘পৃথিবীর গতিসমূহ’-এর গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নোত্তরগুলো নবম শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষা, বিভিন্ন বোর্ড পরীক্ষা, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা, এবং চাকরির প্রস্তুতির জন্য বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক, কারণ এই অধ্যায়ের মূল ধারণাগুলো থেকে পরীক্ষায় প্রায়শই প্রশ্ন আসে। আশা করি, আর্টিকেলটি পাঠ্যসূচির জটিলতা কাটিয়ে উঠতে এবং পরীক্ষায় কাঙ্ক্ষিত নম্বর পেতে আপনাদের জন্য উপযোগী হয়েছে।

কোনো প্রশ্ন বা অস্পষ্টতা থাকলে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যুক্ত হয়ে নির্দ্বিধায় জানান—আমরা দ্রুত ও সঠিক গাইডলাইন দেওয়ার চেষ্টা করব। পাশাপাশি, এই পোস্টটি নিচের শেয়ার বাটন থেকে আপনার সহপাঠী, বন্ধু বা প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন, যারা ভূগোলের এই অধ্যায়টি নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছেন বা আগ্রহী। সকলের শিক্ষাজীবনে সাফল্য ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি! 

Share via:

মন্তব্য করুন