এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

নবম শ্রেণী – ভূগোল – আবহবিকার – টীকা

আমরা আমাদের আর্টিকেলে নবম শ্রেণীর ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় ‘আবহবিকার’ এর টীকা নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষার জন্য ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই অধ্যায় থেকে প্রায়শই মূল ধারণাভিত্তিক প্রশ্ন আসে।

নবম শ্রেণী - ভূগোল - আবহবিকার - টীকা
নবম শ্রেণী – ভূগোল – আবহবিকার – টীকা

আবহবিকার (Weathering)

সংজ্ঞা – আবহাওয়ার অন্তর্গত বিভিন্ন উপাদান, যেমন – উষ্ণতা, বৃষ্টিপাত, বায়ুপ্রবাহ, তুষারপাত প্রভৃতির দ্বারা যান্ত্রিকভাবে শিলা বিচূর্ণীকৃত হলে কিংবা অক্সিজেন, কার্বন ডাইঅক্সাইড, জল প্রভৃতির দ্বারা রাসায়নিকভাবে শিলা বিয়োজিত হলে, তাকে আবহবিকার বা বিচূর্ণীভবন বলে।

বৈশিষ্ট্য –

  • আবহবিকারে ভূপৃষ্ঠস্থ শিলা বিচূর্ণীকৃত বা বিয়োজিত হয়।
  • বিচূর্ণীকৃত বা বিয়োজিত পদার্থগুলি মূল শিলার কাছাকাছি পড়ে থাকে।

উদাহরণ – ক্ষুদ্রকণা বিসরণ, প্রস্তরচাঁই খণ্ডীকরণ, শল্কমোচন (যান্ত্রিকভাবে সৃষ্ট), অঙ্গারযোজন, জারণ, আর্দ্রবিশ্লেষণ (রাসায়নিকভাবে সৃষ্ট) প্রভৃতি প্রক্রিয়ায় আবহবিকার সংঘটিত হয়।

যান্ত্রিক আবহবিকার (Mechanical Weathering)

সংজ্ঞা – উষ্ণতার তারতম্য, উষ্ণতা ও শুষ্কতার পার্থক্য, শিলাস্তরে চাপের প্রভেদ, তুষার ও লবণের কেলাস গঠন, জৈবিক কার্যকলাপ ইত্যাদির প্রভাবে শিলাসমূহ চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে সেই স্থানে অবস্থান করলে, তাকে যান্ত্রিক আবহবিকার বলে। যান্ত্রিক আবহবিকারের ফলে শিলার ভৌত পরিবর্তন হয় কিন্তু কোনো রাসায়নিক পরিবর্তন হয় না অর্থাৎ শিলা উপাদানের নিজস্ব ধর্ম অক্ষুণ্ণ থাকে।

প্রক্রিয়াসমূহ – যান্ত্রিক আবহবিকার প্রধানত পাঁচটি পদ্ধতিতে ঘটে থাকে, যথা –

  • তাপের প্রভাবে শিলার সংকোচন ও প্রসারণ,
  • কেলাসন প্রক্রিয়া,
  • চাপমোচনের ফলে প্রসারণ,
  • কলয়েডীয় উৎপাটন,
  • বৃষ্টিপাত ও আর্দ্রতার প্রভাবে যান্ত্রিক আবহবিকার।

প্রভাবিত অঞ্চল – উষ্ণ মরু ও শীতল জলবায়ুযুক্ত অঞ্চলে যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রভাব সর্বাধিক।

শল্কমোচন (Exfoliation)

অথবা, ‘শল্কমোচনে শিলা গোলাকৃতির হয়’ – ব্যাখ্যা করো।

শল্কমোচন (Exfoliation) –

  • সংজ্ঞা – ‘শল্ক’ শব্দের অর্থ ‘পেঁয়াজের খোসা’, এবং ‘মোচন’ -এর অর্থ ‘ত্যাগ’। উষ্ণতার হ্রাস-বৃদ্ধির কারণে যখন কোনো শিলার উপরের স্তরটি পেঁয়াজের খোসার মতো খুলে যায়, তখন তাকে শল্কমোচন বলে।
  • প্রক্রিয়া – একই জাতীয় খনিজ দ্বারা গঠিত সমসত্ত্ব শিলার স্তরগুলি যদি সমকেন্দ্রিক হয় তাহলে দিনেরবেলা সূর্যতাপে উপরের স্তরটি ভিতরের স্তরগুলির তুলনায় অধিক উষ্ণ ও প্রসারিত হয় এবং রাতে অধিক শীতল ও সংকুচিত হয়। দীর্ঘ দিন ধরে এভাবে সংকোচন ও প্রসারণের ফলে উপরের স্তরটি পেঁয়াজের খোসার মতো খুলে যায়। এর ফলে, শিলার আকৃতি গোলাকার বা উপগোলাকার হয় বলে শল্কমোচনকে গোলাকার বা উপগোলাকার (Spheroidal) আবহবিকার বলে।
  • উদাহরণ – গ্রানাইট শিলায় এই আবহবিকার অধিক দেখা যায়। তামিলনাড়ুর মহাবলীপুরমের ‘কৃষ্ণ ভেন্নাই পান্ধ’ নামক বিখ্যাত গ্রানাইট গম্বুজটি এভাবে সৃষ্ট।
শল্কমোচন (Exfoliation)
শল্কমোচন (Exfoliation)

অক্সিডেশন (Oxidation)

অথবা, অক্সিডেশন বা জারণ প্রক্রিয়ায় শিলা কীভাবে বিয়োজিত হয় উদাহরণসহ লেখো।

সংজ্ঞা – শিলা গঠনকারী খনিজের সঙ্গে অক্সিজেনের রাসায়নিক বিক্রিয়াকে জারণ বা অক্সিডেশন বলে।

প্রক্রিয়া – সাধারণত লোহাযুক্ত শিলায় জারণ ঘটে থাকে। লোহা যখন ফেরাস অক্সাইডরূপে শিলার মধ্যে অবস্থান করে তখন তা ভীষণ কঠিন, কিন্তু জারণ প্রক্রিয়ায় তা যখন ফেরিক অক্সাইডে পরিণত হয় তখন সহজেই শিলা ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। শিলার উপর হলদে-বাদামি ছোপ দেখা যায়, একে মরচে বলে। ফেরাস অক্সাইড এই প্রক্রিয়ায় লিমোনাইটে পরিণত হয়।

বিক্রিয়া –

4FeO + O₂ → 2Fe₂O₃
ফেরাস অক্সাইড + অক্সিজেন → ফেরিক অক্সাইড

4FeO + 3H₂O + O₂ → 2Fe₂O₃, 3H₂O
ফেরাস + জল + অক্সিজেন → লিমোনাইট অক্সাইড

হিউমাস (Humus)

সংজ্ঞা – উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহাবশেষ মৃত্তিকার উপরিস্তরে জৈব পদার্থরূপে সঞ্চিত হয়। ওই সব পদার্থ মৃত্তিকাস্থিত আণুবীক্ষণিক জীব দ্বারা বিয়োজিত হয় এবং তা ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয়ে এক জটিল কালো বর্ণের পদার্থ সৃষ্টি করে, একে হিউমাস বলে। হিউমাসসমৃদ্ধ মাটি খুব উর্বর ও পুষ্টিগুণসম্পন্ন হয়। এই ধরনের মাটির জলধারণ ক্ষমতাও খুব বেশি। কিন্তু, হিউমাস মাটিতে দীর্ঘদিন থাকতে পারে না। এটি ধীরে ধীরে খনিজ পদার্থে রূপান্তরিত হয়ে মাটিতে মিশে যায়। হিউমাস সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে হিউমিফিকেশন বলে।

হিউমাস (Humus)
হিউমাস (Humus)

অঙ্গারযোজন (Carbonation)

সংজ্ঞা – শিলা গঠনকারী খনিজের সঙ্গে কার্বন ডাইঅক্সাইডের সংযোগকে অঙ্গারযোজন বা কার্বনেশান বলে।

প্রক্রিয়া – বাতাসের কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO₂) বৃষ্টির জলের (H₂O) সঙ্গে মিশে মৃদু কার্বনিক অ্যাসিড (H₂CO₃) সৃষ্টি হয়। এই অ্যাসিডবৃষ্টি ভূপৃষ্ঠে চুনাপাথর, ডলোমাইট, ক্যালসাইট প্রভৃতি শিলাকে সহজেই রাসায়নিকভাবে বিয়োজিত করে দেয়। যেমন ক্যালশিয়াম কার্বনেট ক্যালশিয়াম বাইকার্বনেটে পরিণত হয়, যা অতি দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।

বিক্রিয়া –

CO₂ + H₂O → H₂CO₃
CaCO₃ + H₂CO₃ → Ca(HCO₃)₂
ক্যালশিয়াম + কার্বনিক → ক্যালশিয়াম
কার্বনেট অ্যাসিড বাইকার্বনেট

জৈবিক আবহবিকার (Organic Weathering)

সংজ্ঞা – জীবজগৎ দ্বারা যান্ত্রিক ও রাসায়নিক পদ্ধতিতে শিলা চূর্ণবিচূর্ণ ও বিয়োজিত হলে, তাকে জৈব আবহবিকার বলে।

পদ্ধতি – জৈব আবহবিকার প্রধানত দুটি পদ্ধতিতে সংঘটিত হয়। যথা – জৈব-যান্ত্রিক আবহবিকার, জৈব- রাসায়নিক আবহবিকার।

জৈব-যান্ত্রিক আবহবিকার (Bio-Mechanical Weathering) – জৈব-যান্ত্রিক আবহবিকার আবার তিন ভাগে বিভক্ত। যথা – উদ্ভিদ দ্বারা সৃষ্ট জৈব-যান্ত্রিক আবহবিকার, প্রাণীদের দ্বারা সৃষ্ট জৈব-যান্ত্রিক আবহবিকার এবং মানুষের বিভিন্ন কার্যাবলি।

  • উদ্ভিদ দ্বারা সৃষ্ট জৈব-যান্ত্রিক আবহবিকার – শিলাস্তরের উপর কোনো গাছপালা জন্মালে ওই গাছপালার শিকড় শিলার মধ্যস্থিত ফাটলের মধ্যে প্রবেশ করে শিলাস্তরকে ফাটিয়ে দেয়। এর ফলে, শিলা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে মূল শিলাস্তর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
  • প্রাণীদের দ্বারা সৃষ্ট জৈব-যান্ত্রিক আবহবিকার – কেঁচো, ছুঁচো, ইঁদুর, খরগোশ, প্রেইরী কুকুর ইত্যাদি প্রাণী এবং নানা প্রকার কীটপতঙ্গ শিলার উপর গর্ত খুঁড়ে শিলার আবহবিকারে সাহায্য করে।
  • মানুষের বিভিন্ন কার্যাবলি – রাস্তা নির্মাণ, কৃষিকাজ, খনিজ দ্রব্য উত্তোলন, বৃক্ষচ্ছেদন -এর ফলেও শিলায় আবহবিকার হয় এবং এর ফলে শিলা বিচূর্ণও হয়ে থাকে।
  • জৈব-রাসায়নিক আবহবিকার (Bio-Chemical Weathering) – শিলার উপর অনেক সময় মস্, লিচেন, শৈবাল ইত্যাদি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্ভিদ জমে থাকে। এরা শিলাস্তরের উপরিভাগে জল আটকে রাখে। ওই সমস্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্ভিদসমূহ কোনো কোনো ক্ষেত্রে পচে গিয়ে হিউমাসের (Humus) সৃষ্টি করে। ওই হিউমাসের ওপর বৃষ্টির জল পড়লে হিউমিক অ্যাসিড বা জৈব অ্যাসিডের (C40H24O12) সৃষ্টি হয়। ওই হিউমিক অ্যাসিড ব্যাসল্ট, ম্যাগনেশিয়াম, ফেল্ডসপার এবং সালফার যৌগ দ্বারা গঠিত শিলাস্তরে খুব দ্রুত রাসায়নিক আবহবিকার ঘটায়।
জৈব আবহবিকার পদ্ধতি সমূহ
জৈব আবহবিকার পদ্ধতি সমূহ

প্রস্তরচাঁই বিচ্ছিন্নকরণ (Block Disintegration)

  • সংজ্ঞা – উষ্ণতার তারতম্যের কারণে সৃষ্ট প্রসারণ ও সংকোচন বলের প্রভাবে শিলাস্তর যখন বড়ো বড়ো চাঁই -এর আকারে ভেঙে যায়, তখন তাকে প্রস্তর চাঁই খণ্ডীকরণ বলে।
  • প্রক্রিয়া – দিনের বেলা প্রখর সূর্যতাপে শিলাস্তর উষ্ণ হয়ে প্রসারিত হয় এবং রাতের বেলা তাপ বিকিরণ করে সংকুচিত হয়ে পড়ে। এইভাবে, প্রতিনিয়ত অসম প্রসারণ ও সংকোচনের কারণে শিলাস্তরে ব্যাপক পীড়নের সৃষ্টি হয়। পীড়ন নির্দিষ্ট মাত্রা অতিক্রম করলে শিলাস্তরে অসংখ্য উল্লম্ব ও সমান্তরাল ফাটলের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীকালে, এই ফাটল বরাবর বড়ো বড়ো চাঁই মূল শিলা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
  • উদাহরণ – মরু বা মরুপ্রায় অঞ্চলে পাললিক শিলা ও ব্যাসল্ট শিলায় এই আবহবিকার অধিক দেখা যায়।

রেগোলিথ (Regolith)

সংজ্ঞা – মৃত্তিকা সৃষ্টির প্রথম পর্যায়ে আদি শিলা যান্ত্রিক ও রাসায়নিক আবহবিকারের ফলে চূর্ণবিচূর্ণ হয়। এই শিলাচূর্ণ ভূত্বকের উপর শিথিল ও কোমল একটি আবরণ সৃষ্টি করে। একে রেগোলিথ বলে। রেগোলিথই মৃত্তিকা সৃষ্টির প্রাথমিক পর্যায় ও প্রধান শর্ত। কালক্রমে বিভিন্ন জৈবিক, রাসায়নিক ও জৈব-রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রেগোলিথের সূক্ষ্ম শিলাচূর্ণগুলি বিশ্লিষ্ট ও স্তরীভূত হয়ে মৃত্তিকা সৃষ্টি করে। প্রকৃতপক্ষে, রেগোলিথ হল আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট যাবতীয় বস্তুভারের অসমৃদ্ধ স্তর। এই বস্তুটি শিলাচূর্ণ ও মৃত্তিকার মাঝামাঝি অবস্থা।

উদাহরণ – পর্বতের পাদদেশীয় ঢালে সঞ্চিত ট্যালাস, স্ক্রি ইত্যাদি হল রেগোলিথ জাতীয় পদার্থ।

রেগোলিথ (Regolith)
রেগোলিথ (Regolith)

ট্যাফোনি (Tafoni)

সংজ্ঞা – যান্ত্রিক আবহবিকারের ফলে গঠিত একটি অন্যতম ভূমিরূপের নিদর্শন হল ট্যাফোনি। প্রধানত, লবণের দ্বারা শিলা আবহবিকারপ্রাপ্ত হলে মৌচাকের মতো দেখতে এই ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়। বেলেপাথর, গ্রানাইট, বালিময় চুনাপাথরে ট্যাফোনি গড়ে উঠতে দেখা যায়। শিলাগাত্রে অসংখ্য ছোটো বড়ো গর্ত পাশাপাশি সৃষ্টি হয়ে শিলাটিকে মৌচাকের মতো রূপ দান করে। ভারতের থর মরুভূমিতে, ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলে, সুমেরু অঞ্চলে ও আন্টার্কটিকায় প্রচুর ট্যাফোনি দেখতে পাওয়া যায়।

ট্যাফোনি (Tafoni)
ট্যাফোনি (Tafoni)

পুঞ্জিতক্ষয় (Mass Wasting)

সংজ্ঞা – আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট বিয়োজিত ও চূর্ণবিচূর্ণ শিলাখণ্ড, মৃত্তিকা প্রভৃতি পুঞ্জাকারে পিচ্ছিল তলের মাধ্যমে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে দ্রুত বা ধীরভাবে নীচে নেমে আসার সময় ভূ-গাত্রে যে ক্ষয় হয়, তাকে পুঞ্জিতক্ষয় বলে।

কারণ –

  • আবহবিকার ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তি (নদী, হিমবাহ) দ্বারা ক্ষয়প্রাপ্ত পদার্থের সঞ্চয় পুঞ্জিত ক্ষয় ঘটায়।
  • ভূমির খাড়া ঢাল পুঞ্জিতক্ষয় সৃষ্টির প্রধান শর্ত।
  • বসতি স্থাপন, রাস্তাঘাট নির্মাণ প্রভৃতি কাজের ফলে পার্বত্য ঢালে যে চাপের সৃষ্টি হয় তা পুঞ্চিতক্ষয় ঘটায়।
  • জল দ্বারা সিক্ত হয়ে শিলার সহনশীলতা হ্রাস পেলে পুঞ্জিতক্ষয় ঘটে।

বৈশিষ্ট্য –

  • গাছের গোড়ার বক্রতা দেখে পুঞ্জিতক্ষয়ের গতি বোঝা যায়
  • পার্বত্য অঞ্চলে পুঞ্জিতক্ষয় প্রায়ই হয়, জল পুঞ্জিতক্ষয়ে সহায়তা করলেও পরিবহণের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে না।

শ্রেণিবিভাগ –

পুঞ্জিতক্ষয় (Mass Wasting)
পুঞ্জিতক্ষয় (Mass Wasting)

ফলাফল –

  • পুঞ্জিতক্ষয়ের ফলে পর্বতের পাদদেশে ট্যালাস বা স্ক্ৰি গড়ে ওঠে।
  • ধস বা হিমানী সম্প্রপাতের ফলে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়।
  • কর্দমপ্রবাহে দীর্ঘ খাতের সৃষ্টি হয়।
  • পুঞ্জিতক্ষয়ের ফলে ভূমিঢালের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে।

উদাহরণ – ভারতের হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে পুঞ্জিতক্ষয় প্রচুর পরিমাণে সংঘটিত হয়।

ঝুম চাষ

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের গারো, খাসি, নাগা প্রভৃতি আদিবাসী মানুষ বন কেটে ও পুড়িয়ে চাষের জমি তৈরি করে সেখানে বৃষ্টির জলের সাহায্যে আলু, ভুট্টা, সবজি প্রভৃতি চাষ করে। দু-তিন বছর চাষ করার পর সেই জমি ত্যাগ করে একইভাবে অন্য স্থানে জমি তৈরি করে চাষ করে। এই কৃষিকাজ স্থানান্তর কৃষি বা ঝুম চাষ নামে পরিচিত। ওড়িশায় একে ‘পডু ‘, কেরালায় ‘পোনম’ বলে।

ঝুম চাষ
ঝুম চাষ

প্রভাব –

  • মৃত্তিকাক্ষয় বৃদ্ধি – বনভূমি পুড়িয়ে ফেলার ফলে মৃত্তিকা আলগা হয়ে পড়ে এবং সহজেই ক্ষয়ের শিকার হয়।
  • মৃত্তিকার উর্বরতা হ্রাস – অবৈজ্ঞানিক প্রথায় ঝুম চাষের ফলে মাটির ক্ষুদ্র জীবাণু নষ্ট হয়ে উক্ত জমির উর্বরতা দ্রুত হ্রাস পায়। এ কারণে দু-তিন বছর অন্তর ঝুম চাষিরা জমি পরিবর্তন করেন।
  • পরিবেশ দূষণ – বনভূমি পোড়ানোর ফলে প্রচুর CO₂ বাতাসে মেশে, এ ছাড়া উদ্ভিদ হ্রাসের কারণে বাতাসে CO₂ বৃদ্ধি পায়। ফলে, বায়ু দূষণের মাত্রা বাড়তে থাকে।
  • বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস – ঝুম চাষের ফলে বনভূমির বাস্তুতান্ত্রিক ভারসাম্য নষ্ট হয়। পশুপাখি তাদের বাসস্থান হারায়, জীববৈচিত্র্য হ্রাস পায়।
  • ধস – পাহাড়ের ঢালে ঝুম চাষের ফলে ধসের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।

আমরা আমাদের আর্টিকেলে নবম শ্রেণীর ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় ‘আবহবিকার’ এর টীকা নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষার জন্য বা চাকরির পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি নবম শ্রেণীর পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায় দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে, আপনারা আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাছাড়া নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Share via:

মন্তব্য করুন