এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন।। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান – চলতড়িৎ – বিষয় সংক্ষেপ

আমরা আমাদের আর্টিকেলে দশম শ্রেণীর ভৌতবিজ্ঞানের ষষ্ঠ অধ্যায় ‘চলতড়িৎ’ এর বিষয় সংক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো দশম শ্রেণীর ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

মাধ্যমিক – ভৌতবিজ্ঞান – চলতড়িৎ – বিষয় সংক্ষেপ
মাধ্যমিক – ভৌতবিজ্ঞান – চলতড়িৎ – বিষয় সংক্ষেপ

তড়িদাধান – তড়িদাধান হল বস্তুর এমন এক ভৌত ধর্ম যার জন্য বস্তুটি কোনো তড়িদ্‌গ্রস্ত বা অনাহিত বস্তুকে বল প্রয়োগ করে।

কুলম্বের সূত্র – দুটি স্থির বিন্দু-আধানের মধ্যে পারস্পরিক আকর্ষণ বা বিকর্ষণ বল আধান দুটির গুণফলের সমানুপাতিক এবং আধান দুটির মধ্যবর্তী দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক।

\(q_1\) ও \(q_2\) মানের দুটি বিন্দু-আধান r ব্যবধানে থাকলে পারস্পরিক তাড়িতিক বল \(F=k⋅\frac{q_1q_2}{r^2}\) যেখানে k একটি ধ্রুবক এবং এর মান পারিপার্শ্বিক মাধ্যম ও এককের পদ্ধতির ওপর নির্ভরশীল।

\( CGS \) পদ্ধতি ও \( SI \) -তে আধানের একক যথাক্রমে esu আধান ও C (কুলম্ব) এবং \(1C\;=\;3\times10^9\) esu আধান।

তড়িৎক্ষেত্র – তড়িৎক্ষেত্র হল এমন একটি ক্ষেত্র বা অঞ্চল যেখানে কোনো তড়িদাধানকে রাখলে সেই আধানটি একটি তড়িৎ বল অনুভব করে।

তড়িৎবিভব – অসীম দূরত্ব থেকে একটি একক ধনাত্মক তড়িদাধানকে তড়িৎক্ষেত্রের কোনো বিন্দুতে আনতে যে কার্য করতে হয়, তাকে তড়িৎক্ষেত্রের ওই বিন্দুতে তড়িৎবিভব বলা হয়।

তড়িৎবিভবের \( CGS \) পদ্ধতি ও \( SI \) -তে একক যথাক্রমে 1 esu বিভব বা statvolt ও V (ভোল্ট) এবং 1 esu বিভব = 300 V।

তড়িৎকোশ – তড়িৎকোশ হল এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে কোনো যন্ত্রের সাহায্য ছাড়া অন্য কোনো শক্তিকে তড়িৎশক্তিতে রূপান্তরিত করা যায়।

তড়িৎপ্রবাহমাত্রা – পরিবাহীর যে-কোনো প্রস্থচ্ছেদের মধ্য দিয়ে একক সময়ে যে পরিমাণ তড়িদ্‌গ্রস্ত কণা প্রবাহিত হয় তা হল তড়িৎপ্রবাহের পরিমাণ বা তড়িৎপ্রবাহমাত্রা।

তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ বলতে ধনাত্মক আধানের গতির অভিমুখকে বোঝায়। ধাতব পরিবাহীর ক্ষেত্রে তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ হল মুক্ত ইলেকট্রনের গতির বিপরীত অভিমুখে।

ওহমের সূত্র – পরিবাহীর তাপমাত্রা ও অন্যান্য ভৌত অবস্থা অপরিবর্তিত থাকলে পরিবাহীর মধ্য দিয়ে প্রবাহমাত্রা পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভবপ্রভেদের সমানুপাতিক।

পরিবাহীর রোধ – যে ধর্মের জন্য কোনো পরিবাহী ওর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহকে বাধা দেয়, তাকে ওই পরিবাহীর রোধ বলে।

ওহমের সূত্র থেকে রোধের সংজ্ঞা – কোনো পরিবাহীর দু-প্রান্তে বিভব পার্থক্য সৃষ্টি করলে পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ হয়। পরিবাহীর দু-প্রান্তের বিভবপ্রভেদ ও পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহমাত্রার অনুপাতকে পরিবাহীর রোধ বলা হয়।

অভ্যন্তরীণ রোধ – তড়িৎকোশের মধ্য দিয়ে যখন তড়িৎপ্রবাহ হয় তখন কোশের উপাদানগুলি এই তড়িৎপ্রবাহের বিরুদ্ধে বাধার সৃষ্টি করে। কোশের মধ্যে এই বাধাকেই অভ্যন্তরীণ রোধ বলা হয়।

রোধাঙ্ক – একক দৈর্ঘ্য ও একক প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলবিশিষ্ট কোনো পরিবাহীর দুই বিপরীত পৃষ্ঠের মধ্যবর্তী অংশের রোধকে ওই পরিবাহীর উপাদানের রোধাঙ্ক বলা হয়।

পরিবাহিতাঙ্ক – একক দৈর্ঘ্য ও একক প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলযুক্ত কোনো পরিবাহীর পরিবাহিতাকে ওই পরিবাহীর উপাদানের পরিবাহিতাঙ্ক বলা হয়।

পরিবাহী, অন্তরক ও অর্ধপরিবাহী – কিছু পদার্থ আছে যারা সহজে তড়িৎ পরিবহণ করতে পারে তাদের সুপরিবাহী বলা হয়, যেমন – ধাতব পরিবাহী। আবার কিছু পদার্থ আছে যারা সাধারণত তড়িৎ পরিবহণ করতে পারে না, তাদের অন্তরক বলা হয়, যেমন – কাঠ, প্লাস্টিক, রবার। সুপরিবাহী ও অন্তরক ছাড়া আরও একধরনের পদার্থ আছে যাদের রোধাঙ্ক সুপরিবাহী পদার্থের তুলনায় বেশি কিন্তু অন্তরকের তুলনায় কম, এদের অর্ধপরিবাহী বলা হয়। যেমন – Ge, Si।

অতিপরিবাহী – এক ধরনের ধাতু ও যৌগিক পদার্থ আছে যাদের তাপমাত্রা একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা অপেক্ষা কম হলে রোধাঙ্ক শূন্য হয়ে যায়। এই নির্দিষ্ট উষ্ণতাকে সংকট উষ্ণতা এবং এই ধরনের পদার্থকে অতিপরিবাহী বলা হয়। যেমন – পারদ 4.2K তাপমাত্রায় অতিপরিবাহী হয়।

রোধের শ্রেণি সমবায় – যদি কতকগুলি রোধ পরপর এমনভাবে যুক্ত থাকে যে একটির শেষ প্রান্ত পরেরটির প্রথম প্রান্তের সঙ্গে যুক্ত, তবে এই সমবায়কে শ্রেণি সমবায় বলা হয়।

R1, R2 ও R3 রোধ তিনটি শ্রেণি সমবায়ে যুক্ত থাকলে যদি তুল্য রোধ Rs হয় তবে, Rs = R1 + R2 + R3

রোধের সমান্তরাল সমবায় – যদি কতকগুলি রোধের একপ্রান্ত একটি নির্দিষ্ট বিন্দুতে ও অপর প্রান্ত অপর একটি নির্দিষ্ট বিন্দুতে যুক্ত থাকে, তবে ওই সমবায়কে সমান্তরাল সমবায় বলা হয়।

\(R_1\), \(R_2\) ও \(R_3\) রোধ তিনটি সমান্তরাল সমবায়ে যুক্ত থাকলে যদি তুল্য রোধ \(R_p\) হয় তবে, \(\frac1{R_p}=\frac1{R_1}+\frac1{R_2}+\frac1{R_3}\)।

R রোধের মধ্য দিয়ে t সময় ধরে \( I \) তড়িৎপ্রবাহ পাঠালে যদি H তাপ উৎপন্ন হয় তবে জুলের সূত্রানুযায়ী, \(H=\frac{I^2Rt}{4.2}Cal\) অথবা, \(H=I^2Rt\) joule।

তড়িৎক্ষমতা – কোনো তড়িৎযন্ত্রের সময়ের সাপেক্ষে বৈদ্যুতিক শক্তি ব্যয়ের হারকে তড়িৎক্ষমতা বলা হয়। তড়িৎক্ষমতা, \(P=VI=I^2R=\frac{V^2}R\)।

kW⋅h বা BOT – 1 kW ক্ষমতাসম্পন্ন কোনো তড়িৎযন্ত্র 1h ধরে চললে যে পরিমাণ বৈদ্যুতিক শক্তি ব্যয়িত হয় তাকে 1 kW⋅h বা 1 BOT বলা হয়।

একটি বৈদ্যুতিক বাতির রেটিং 220V – 100W বলতে বোঝায়, বাতিটির দু-প্রান্তের বিভবপ্রভেদ 220V হলে বাতিটি সবচেয়ে উজ্জ্বলভাবে জ্বলবে এবং বাতিটি প্রতি সেকেন্ডে 100J তড়িৎশক্তি ব্যয় করবে।

ভাস্বর ল্যাম্পের তুলনায় CFL (Compact Fluorescent Lamp) ও LED (Light Emitting Diode) ল্যাম্প বেশি তড়িৎশক্তি সাশ্রয়কারী। CFL ব্যয়িত তড়িৎশক্তির প্রায় 7% থেকে 9% এবং LED ল্যাম্প ব্যয়িত তড়িৎশক্তির প্রায় 4% থেকে 18% দৃশ্যমান আলো উৎপন্ন করে।

অ্যাম্পিয়ারের সন্তরণ নিয়ম – তড়িদবাহী তার বরাবর কোনো ব্যক্তি চুম্বক শলাকার দিকে মুখ করে তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখে সাঁতার কাটতে থাকলে, ব্যক্তিটির প্রসারিত বাম হাতটি যেদিকে থাকবে চুম্বক শলাকার উত্তর মেরু সেইদিকে বিক্ষিপ্ত হবে, অর্থাৎ চৌম্বক ক্ষেত্রের দিক নির্দেশ করবে।

দক্ষিণ মুষ্টি নিয়ম – কোনো তড়িদবাহী তারকে ডান হাতের মুষ্টিতে ধরে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ বরাবর তড়িৎপ্রবাহ দেখানো হলে বাকি আঙুলগুলি চৌম্বক বলরেখার অভিমুখ নির্দেশ করবে।

ফ্লেমিং -এর বাম হস্ত নিয়ম – বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ, তর্জনী ও মধ্যমাকে পরস্পরের সমকোণে রেখে প্রসারিত করলে যদি তর্জনী চৌম্বক ক্ষেত্রের অভিমুখ এবং মধ্যমা তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ নির্দেশ করে, তবে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ পরিবাহীর গতির অভিমুখ বা পরিবাহীর ওপর ক্রিয়াশীল বলের অভিমুখ নির্দেশ করবে।

বৈদ্যুতিক মোটর – বৈদ্যুতিক মোটর হল এমন এক তড়িৎযন্ত্র যেখানে স্থির চৌম্বক ক্ষেত্রে একটি তড়িদবাহী কুণ্ডলী একটি নির্দিষ্ট অক্ষ সাপেক্ষে আবর্তন করে এবং তড়িৎশক্তি যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।

তড়িৎচুম্বকীয় আবেশ সংক্রান্ত সূত্রাবলি – ফ্যারাডের সূত্রাবলি –

  • প্রথম সূত্র – কোনো বদ্ধ কুণ্ডলীর সঙ্গে জড়িত চৌম্বক প্রবাহের পরিবর্তন হলে কুণ্ডলীতে তড়িৎচালক বল আবিষ্ট হয় এবং কুণ্ডলীতে তড়িৎপ্রবাহ চলে।
  • দ্বিতীয় সূত্র – তড়িৎচুম্বকীয় আবেশের ক্ষেত্রে আবিষ্ট তড়িৎচালক বলের মান কুণ্ডলীর সঙ্গে জড়িত চৌম্বক প্রবাহের পরিবর্তনের হারের সঙ্গে সমানুপাতিক।
  • লেঞ্জের সূত্র – আবিষ্ট তড়িৎপ্রবাহ এমন একটি অভিমুখে হবে যাতে, যে কারণে প্রবাহের সৃষ্টি হয় প্রবাহ সর্বদা সেই কারণকে বাধা দেয়।

dc ও ac – তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ সর্বদা একইদিকে হলে তাকে একমুখী তড়িৎপ্রবাহ বা dc এবং তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ নির্দিষ্ট সময় অন্তর পর্যায়ক্রমে বিপরীতমুখী হলে তাকে পরিবর্তী তড়িৎপ্রবাহ বা ac বলা হয়।

ডায়নামো – যে যন্ত্রে তড়িৎচুম্বকীয় আবেশের নীতিকে কাজে লাগিয়ে চৌম্বক ক্ষেত্রে পরিবাহী কুণ্ডলীকে ঘুরিয়ে যান্ত্রিক শক্তিকে তড়িৎশক্তিতে রূপান্তরিত করা হয় তাকে ডায়নামো বা জেনারেটর বলে।

বাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ সংস্থার ওভারহেড বা আন্ডারগ্রাউন্ড কেবল থেকে বাড়িতে দুটি তার টানা হয়। একটি হল লাইভ তার, অন্যটি নিউট্রাল তার। সাধারণত লাইভ তারে লাল প্লাস্টিকের আবরণ ও নিউট্রাল তারে কালো প্লাস্টিকের আবরণ দেওয়া থাকে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী লাইভ তারটি বাদামি ও নিউট্রাল তারটি হালকা নীল (বা আকাশি) রঙের প্লাস্টিকের আবরণ দেওয়া হয়।


আমরা আমাদের আর্টিকেলে দশম শ্রেণীর ভৌতবিজ্ঞানের ষষ্ঠ অধ্যায় ‘চলতড়িৎ’ এর বিষয় সংক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো দশম শ্রেণীর ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য বা চাকরির পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি দশম শ্রেণীর পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায় দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে, আপনারা আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাছাড়া নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Share via:

মন্তব্য করুন