মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান – গ্যাসের আচরণ – বিষয়সংক্ষেপ

Rahul

আজকের আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের দ্বিতীয় অধ্যায়, ‘গ্যাসের আচরণ,’ এর মূল বিষয়গুলো সংক্ষেপে আলোচনা করব। এই অধ্যায়টি মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ প্রায়ই এখান থেকে পরীক্ষায় প্রশ্ন আসে। আশা করি, এই আর্টিকেলটি আপনাদের পড়াশোনায় সহায়ক এবং উপকারী হবে।

মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান – গ্যাসের আচরণ - বিষয় সংক্ষেপ

মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান – গ্যাসের আচরণ – বিষয়সংক্ষেপ

গ্যাসের অণুগুলি দ্বারা পাত্রের দেয়ালের একক ক্ষেত্রফলের ওপর লম্বভাবে প্রযুক্ত ধাক্কাজনিত বলই হল গ্যাসের চাপ।

CGS পদ্ধতি ও SI-তে চাপের একক যথাক্রমে dyn/cm2 ও N/m2। N/m2-কে Pa (পাস্কাল) বলা হয়। 1 Pa = 10 dyn/cm2

CGS পদ্ধতি ও SI-তে ক্ষেত্রফলের একক যথাক্রমে cm2 ও m2। 1 m2 = 104 cm2। আবার, CGS পদ্ধতি ও SI-তে আয়তনের একক যথাক্রমে cm3 ও m3। 1 m3 = 106 cm3

ম্যানোমিটার যন্ত্রের সাহায্যে কোনো পাত্রে আবদ্ধ বায়ু বা গ্যাসের চাপ নির্ণয় করা যায়। একে চাপ-গেজ বলা হয়।

বয়েলের সূত্র – উষ্ণতা স্থির থাকলে নির্দিষ্ট ভরের কোনো গ্যাসের আয়তন, ওই গ্যাসের চাপের সঙ্গে ব্যস্তানুপাতে পরিবর্তিত হয়।

নির্দিষ্ট ভরের গ্যাসের আয়তন ও চাপ p হলে, বয়েলের সূত্রানুযায়ী, pV = K, যেখানে K একটি ধ্রুবক যার মান গ্যাসের ভর ও উষ্ণতার ওপর নির্ভরশীল।

চার্লসের সূত্র – চাপ স্থির থাকলে নির্দিষ্ট ভরের কোনো গ্যাসের উষ্ণতা 1°C বৃদ্ধি বা হ্রাসের জন্য ওই গ্যাসের 0°C উষ্ণতায় যা আয়তন তার \(\frac1{273}\) অংশ বৃদ্ধি বা হ্রাস পায়।

স্থির চাপে নির্দিষ্ট ভরের কোনো গ্যাসের আয়তন -273°C উষ্ণতায় শূন্য হয়ে যায়। এই উষ্ণতাকে পরম শূন্য উষ্ণতা বলা হয়। সূক্ষ্মভাবে, পরিমাপ করলে পরম শূন্য উষ্ণতার মান হয় -273.15°C। যদিও প্রকৃতপক্ষে বাস্তবে এরূপ ঘটে না কারণ এই উষ্ণতায় পৌঁছোনোর অনেক আগেই গ্যাস তরলে রূপান্তরিত হয়, আর তরলের ক্ষেত্রে চার্লসের সূত্রটি প্রযোজ্য নয়।

বিজ্ঞানী কেলভিন তাপমাত্রার একটি নতুন স্কেল প্রবর্তন করেন যার শূন্য বিন্দু ধরা হয় -273°C-কে এবং প্রতি ডিগ্রির মান ধরা হয় সেলসিয়াস স্কেলের প্রতি ডিগ্রির সমান। উষ্ণতার এই স্কেলকে বলা হয় পরম স্কেল। এই স্কেলে উষ্ণতার পাঠ K দ্বারা এবং উষ্ণতাকে T দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

কোনো বস্তুর উষ্ণতা সেলসিয়াস স্কেলে t°C এবং কেলভিন স্কেলে ওই উষ্ণতা TK হলে, T = t + 273 |

চার্লসের সূত্রের বিকল্প রূপ – স্থির চাপে নির্দিষ্ট ভরের কোনো গ্যাসের আয়তন, গ্যাসটির পরম উষ্ণতার সমানুপাতিক।

TK উষ্ণতায় কোনো গ্যাসের আয়তন V হলে, V ∝ T [যখন গ্যাসের ভর ও চাপ স্থির]।

বয়েল ও চার্লসের সূত্রের সমন্বিত রূপ – নির্দিষ্ট ভরের কোনো গ্যাসের T পরম উষ্ণতায় চাপ p ও আয়তন V হলে বয়েল ও চার্লসের সূত্রের সমন্বিত রূপটি হল, pV = KT বা, \(\frac{pV}T=K\) যেখানে K একটি ধ্রুবক, যার মান গ্যাসের ভর এবং চাপ, আয়তন ও তাপমাত্রার এককের ওপর নির্ভরশীল।

আদর্শ গ্যাস ও বাস্তব গ্যাস – যে সমস্ত গ্যাস সব অবস্থাতেই আদর্শ গ্যাসের অবস্থার সমীকরণ pV = KT মেনে চলে তারা হল আদর্শ গ্যাস।

যে সমস্ত গ্যাস খুব নিম্নচাপ বা উচ্চ উষ্ণতা ছাড়া pV = KT সমীকরণ মেনে চলে না তারা হল বাস্তব গ্যাস।

একই চাপ ও উষ্ণতায় সম-আয়তনবিশিষ্ট সকল গ্যাসেই (মৌলিক বা যৌগিক) সমান সংখ্যক অণু বর্তমান।

অ্যাভোগাড্রো প্রকল্পে গ্যাসের আয়তন বলতে, গ্যাস দ্বারা অধিকৃত অঞ্চলের আয়তনকে বোঝায়, কখনোই গ্যাসের মধ্যে থাকা অণুদের আয়তনকে বোঝায় না। STP-তে কোনো গ্যাসের মোলার আয়তন 22.4L। 1 mol গ্যাসে অণু থাকে 6.022 × 1023 টি।

n মোল গ্যাসের জন্য আদর্শ গ্যাস সমীকরণ হল pV = nRT, যেখানে R একটি ধ্রুবক। R-কে মোলার গ্যাস ধ্রুবক বা সর্বজনীন গ্যাস ধ্রুবক বলা হয়। R-এর মান সকল গ্যাসের ক্ষেত্রে সমান এবং এই মান গ্যাসের প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে না।

মনে করি, n mol আদর্শ গ্যাসের ভর W g। গ্যাসের মোলার ভর \(Mg⋅mol^{-1}\) হলে, \(n=\frac WM\)। সুতরাং, pV = nRT সমীকরণ থেকে পাই, \(pV=\left(\frac WM\right)RT\)।

CGS পদ্ধতিতে R = 8.31 × 107 erg.mol-1. K-1 ও SI-তে R = 8.31 J.mol-1. K-1

ব্যাপন – যে ধর্মের জন্য দুই বা ততোধিক গ্যাস (হালকা বা ভারী যাই হোক না কেন) বাহ্যিক সাহায্য ছাড়াই স্বতঃস্ফূর্তভাবে মিশে যায় এবং সমসত্ত্ব মিশ্রণ গঠন করে তাকে ব্যাপন বলা হয়।

কোনো আবদ্ধ গ্যাসের ওপর চাপ বৃদ্ধি করলে গ্যাসের আয়তন হ্রাস পায়। বাহ্যিক সংস্থা দ্বারা চাপ বৃদ্ধি করলে গ্যাসের অণুগুলির মধ্যে ব্যবধান হ্রাস পায় ফলে আয়তন কমে। আয়তন কমার জন্য পাত্রের দেয়ালের প্রতি একক ক্ষেত্রফলে প্রতি সেকেন্ডে ধাক্কার সংখ্যা বৃদ্ধি পায় ফলে গ্যাসের চাপও বৃদ্ধি পায় এবং বাহ্যিক চাপ ও অভ্যন্তরীণ চাপ সমান ও বিপরীতমুখী হয়।

Class 10 Physical Science – Notes for All Chapters

1. পরিবেশের জন্য ভাবনাবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
2. গ্যাসের আচরণবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত ও দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
গাণিতিক উদহারণ
3. রাসায়নিক গণনাবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
গাণিতিক উদহারণ
4. তাপের ঘটনাসমূহবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত ও দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
গাণিতিক উদাহরণ
5. আলোবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত ও দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
গাণিতিক উদাহরণ
সক্রিয়তামূলক প্রশ্নোত্তর
6. চলতড়িৎবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত ও দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
গাণিতিক উদাহরণ
সক্রিয়তামূলক প্রশ্নোত্তর
7. পরমাণুর নিউক্লিয়াসবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত ও দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
সক্রিয়তামূলক প্রশ্নোত্তর
8. পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ – পর্যায়-সারণি এবং মৌলদের ধর্মের পর্যাবৃত্ততাবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
9. পদার্থের ভৌত রাসায়নিক ধর্মসমূহ – আয়নীয় ও সমযোজী বন্ধনবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
সক্রিয়তামূলক প্রশ্নোত্তর
10. পদার্থের ভৌত রাসায়নিক ধর্মসমূহ – তড়িৎপ্রবাহ ও রাসায়নিক বিক্রিয়াবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
সক্রিয়তামূলক প্রশ্নোত্তর
11. পদার্থের ভৌত রাসায়নিক ধর্মসমূহ – পরীক্ষাগার ও রাসায়নিক শিল্পে অজৈব রসায়নবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
সক্রিয়তামূলক প্রশ্নোত্তর
12. পদার্থের ভৌত রাসায়নিক ধর্মসমূহ – ধাতুবিদ্যাবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
সক্রিয়তামূলক প্রশ্নোত্তর
13. পদার্থের ভৌত রাসায়নিক ধর্মসমূহ – জৈব রসায়নবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
সক্রিয়তামূলক প্রশ্নোত্তর

আজকের আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের দ্বিতীয় অধ্যায় ‘গ্যাসের আচরণ’ সম্পর্কিত বিষয়গুলো সংক্ষেপে আলোচনা করেছি। এই বিষয়টি মাধ্যমিক এবং চাকরির পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ প্রায়ই এখান থেকে প্রশ্ন আসে। আশা করি, এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য উপকারী হয়েছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকে, টেলিগ্রামে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন; আমরা দ্রুত উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। এছাড়া, পোস্টটি আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না, যাদের এটি সহায়ক হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ-কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ-মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান

মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

দেশীর রাজ্য দফতর কেন গঠিত হয়েছিল? দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তির দলিল বলতে কী বোঝায়?

দেশীর রাজ্য দফতর কেন গঠিত হয়েছিল?

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

দেশীর রাজ্য দফতর কেন গঠিত হয়েছিল?

ভারতের জনজীবনে নদনদীর প্রভাব আলোচনা করো।

উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের নদনদীর পার্থক্য লেখো।