এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

নবম শ্রেণী – ভূগোল – ভারতের সম্পদ (সম্পদের ধারণা, শ্রেণীবিভাগ ও সংরক্ষণ) – সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

আমরা আমাদের আর্টিকেলে নবম শ্রেণীর ভূগোলের সপ্তম অধ্যায় ‘ভারতের সম্পদ (সম্পদের ধারণা শ্রেণীবিভাগ ও সংরক্ষণ)’ এর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষার জন্য ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

ভারতের সম্পদ (সম্পদের ধারণা, শ্রেণীবিভাগ ও সংরক্ষণ) - সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
ভারতের সম্পদ (সম্পদের ধারণা, শ্রেণীবিভাগ ও সংরক্ষণ) – সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
Contents Show

জৈব সম্পদ (Biotic Resource) কাকে বলে?

জীবজগৎ অর্থাৎ প্রাণী ও উদ্ভিদ জগৎ থেকে যেসব সম্পদ পাওয়া যায়, সেগুলিকে জৈব সম্পদ বলে।

উদাহরণ – মানুষ, অরণ্য সম্পদ, মৎস্য সম্পদ, পশুজাত দ্রব্য (যেমন – দুগ্ধ, চর্ম, পশম প্রভৃতি)।

অজৈব সম্পদ (Abiotic Resource) কাকে বলে?

প্রাণহীন জড় বস্তু থেকে সৃষ্ট সম্পদগুলিকে বলা হয় অজৈব সম্পদ।

উদাহরণ – জল, বায়ু, ধাতব খনিজ প্রভৃতি।

বস্তুগত বা স্পর্শযোগ্য সম্পদ কাকে বলে?

যেসব সম্পদের বস্তুগত অস্তিত্ব আছে এবং যাদের প্রত্যক্ষ করা যায় ও স্পর্শ করে অনুভব করা যায়, তাদের বস্তুগত বা স্পর্শযোগ্য সম্পদ বলে।

উদাহরণ – সমস্ত খনিজ সম্পদ, কৃষিজ ফসল প্রভৃতি।

অবস্তুগত বা অস্পর্শযোগ্য সম্পদ কাকে বলে?

যেসব সম্পদের বস্তুগত অস্তিত্ব নেই এবং যাদের স্পর্শ করা যায় না, প্রত্যক্ষ করা যায় না, তাদের অবস্তুগত বা অস্পর্শযোগ্য সম্পদ বলে।

উদাহরণ – শিক্ষা, বুদ্ধি, জ্ঞান, উদ্ভাবনী ক্ষমতা, আইন প্রভৃতি।

সম্পদের বাধা কাকে বলে?

পৃথিবীর সমস্ত বস্তু ও অবস্তুকে সম্পদ, বাধা এবং নিরপেক্ষ উপাদান -এই তিন ভাগে ভাগ করা হয়। এর মধ্যে সম্পদ সৃষ্টির ক্ষেত্রে যারা বাধা দান করে, মানুষের ক্ষতিসাধন করে, তাদের সম্পদের বাধা (Resistance of Resources) বলে। যেমন – ঘূর্ণিঝড়, যুদ্ধ, ধর্মীয় কুসংস্কার প্রভৃতি।

সম্পদের উপযোগিতা (Utility) কাকে বলে?

মানুষের অভাব মোচন বা চাহিদা পূরণ করার ক্ষমতাকে সম্পদের উপযোগিতা (Utility) বলে। সম্পদের উপযোগিতা মানুষের অভাব মিটিয়ে পরিতৃপ্তি দান করে। সম্পদের কার্যকারিতা বাড়লে সম্পদের উপযোগিতা বৃদ্ধি পায়। যেমন – এক গ্লাস ঠান্ডা জল তৃষ্ণার্ত মানুষের পিপাসা মিটিয়ে তাকে তৃপ্ত করে, এটাই জলের উপযোগিতা।

ফ্যানটম পাইল (Phantom Pile) বা ভৌতিক স্তূপ কাকে বলে?

ফ্যানটম পাইল (Phantom Pile) বা ভৌতিক স্তূপ –

সংজ্ঞা – বস্তুত কোনো সম্পদের প্রকৃত পরিমাণ হ্রাস পেলেও ওই সম্পদের কার্যকারিতা বৃদ্ধির ফলে যে কাল্পনিক সম্প্রসারণ ঘটে, তাকেই সম্পদের ভৌতিক স্তূপ বা ফ্যানটম পাইল বলে।

ব্যাখ্যা – সূত্রানুসারে, P = [F × (O – L)]

ফ্যানটম পাইল
ফ্যানটম পাইল

যেখানে, P = ফ্যানটম পাইল, F = কার্যকারিতা বৃদ্ধির, পরিমাণ, O = সম্পদের প্রকৃত পরিমাণ, L = ওই সম্পদের ব্যবহার জনিত হ্রাসের পরিমাণ।

ধরা যাক, নির্দিষ্ট কোনো সম্পদের পরিমাণ (O) = 4000 টন। ওই সম্পদের ব্যবহারজনিত হ্রাসের পরিমাণ (L) = 1000 টন। ওই সম্পদের কার্যকারিতা বৃদ্ধির পরিমাণ (F) = 4 গুণ।

সুতরাং, P = [ 4 × (4000-1000)] = 12000 টন।

অর্থাৎ, আছে 3000 টন সম্পদ কিন্তু কাজ করবে 12000 টনের।

প্রবহমান বা অফুরন্ত সম্পদ কাকে বলে?

যে-সমস্ত প্রাকৃতিক সম্পদ ক্রমাগত ব্যবহারের পরও নিঃশেষিত হয় না কিংবা যাদের জোগান অব্যাহত থাকে, তাদের প্রবহমান বা অফুরন্ত সম্পদ (Flow or Inexhaustible Resources) বলা হয়। যেমন – বাতাস, জল, সূর্যালোক প্রভৃতি।

পুনর্ভব সম্পদ কাকে বলে?

পুনর্ভব সম্পদ – কতকগুলি সম্পদ আছে যেগুলি ব্যবহারের ফলে সাময়িকভাবে হ্রাস পেলেও পুনরায় তা সৃষ্টি করা যায়, তাদের পুনর্ভব বা পূরণশীল সম্পদ বলে।

উদাহরণ – অরণ্য, তৃণভূমি, মৎস্য সম্পদ প্রভৃতি।

গচ্ছিত বা ক্ষয়িষ্ণু বা অপুনর্ভব সম্পদ কাকে বলে? 

গচ্ছিত বা ক্ষয়িষ্ণু বা অপুনর্ভব সম্পদ – যে-সকল সম্পদ প্রাকৃতিক পরিবেশে নির্দিষ্ট পরিমাণে সঞ্চিত আছে, তাদের সঞ্চিত বা গচ্ছিত সম্পদ বলে। নির্দিষ্ট পরিমাণে গচ্ছিত এই সম্পদগুলি ব্যবহারের ফলে ক্রমশ ক্ষয় হয়ে যায় বলে, একে ক্ষয়িষ্ণু সম্পদ বলে। আবার, এই সম্পদগুলি ব্যবহারের পর পুনরায় সৃষ্টি করে পরিবেশে ফিরিয়ে দেওয়া যায় না, তাই এগুলি অপুনর্ভব সম্পদ নামে পরিচিত।

উদাহরণ – কয়লা, খনিজ তেল, আকরিক লোহা, তামা, বক্সাইট, টিন প্রভৃতি।

সম্পদের ব্যবহারযোগ্যতা বা সুগমতা (Accessibility) বলতে কী বোঝো?

কোনো বস্তুর ব্যবহারযোগ্যতা না থাকলে তাকে সম্পদ বলা হয় না। দুর্গম এবং বিপদসংকুল মরু অঞ্চল ও পার্বত্য অঞ্চলের খনিজদ্রব্য, দুর্ভেদ্য অরণ্যের কাঠ এবং জনহীন সমুদ্র উপকূলের জলসম্পদ ব্যবহার করা যায় না বলে তাদের সম্পদ বলা হয় না। কাজেই, সম্পদ হতে হলে তার ব্যবহারযোগ্যতা বা সুগমতা থাকা প্রয়োজন।

সংস্কৃতির শ্রেণিবিভাগ করো।

সংস্কৃতিকে দুটি পৃথক ভাগে ভাগ করা যায়। যথা – বস্তুগত সংস্কৃতি এবং ভাবগত সংস্কৃতি। নানারকম কলকবজা, মেশিনপত্র, যন্ত্রপাতি, যানবাহন ইত্যাদি হল বস্তুগত সংস্কৃতি (Material Culture)। আর বিজ্ঞান, প্রযুক্তিবিদ্যা, উন্নত কলা-কৌশল, ভাবনা-চিন্তা ইত্যাদিকে ভাবগত সংস্কৃতি (Thematic Culture) বলা হয়।

অপুনর্ভব বা গচ্ছিত সম্পদের দুটি অসুবিধা লেখো।

  • অপুনর্ভব সম্পদ ক্রমাগত ব্যবহারে একসময় শেষ হয়ে যায়।
  • অধিক মাত্রায় গচ্ছিত সম্পদের ব্যবহার পরিবেশ দূষণ ঘটায়।

পুনর্ভব সম্পদের দুটি সুবিধা লেখো।

  • পৃথিবীতে প্রতিটি পুনর্ভব সম্পদ অফুরন্ত হওয়ার ফলে এগুলি ফুরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
  • পুনর্ভব সম্পদের জন্য কোনোরকম ব্যয় করতে হয় না।

আগে সম্পদ সম্পর্কে মানুষের কী কী ভ্রান্ত ধারণা ছিল?

  • সম্পদ মাত্রই তা অসীম প্রকৃতির।
  • ব্যক্তি বিশেষে সম্পদের উপযোগিতা থাকে।
  • সম্পদের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করা যায় না।
  • সম্পদ শুধুমাত্র বস্তুগত চরিত্রের হয়।

সম্পদ হ্রাস ও সম্পদ সংকট বলতে কী বোঝো?

সম্পদ হাস – পৃথিবীর গচ্ছিত সম্পদগুলি ক্রমাগত ব্যবহারের ফলে কমে যাচ্ছে। মানুষের জন্য এবং মানুষের দ্বারা সৃষ্ট সম্পদের এই ক্রমহ্রাসমান অবস্থাকে সম্পদ হ্রাস বলে।

সম্পদ সংকট – সম্পদের হ্রাসের ফলে একসময় সম্পদ প্রকৃতিতে পাওয়া যাবে না, তখন যে সমস্যার সৃষ্টি হবে তাকে সম্পদ সংকট বলে।

ধাতুমল বা অপদ্রব্য বা স্ল্যাগ কী?

ধাতুমল বা স্ল্যাগ (Slag) – যে সমস্ত খারাপ পদার্থ, গাদ বা ময়লা মূল ধাতুর পরিশোধনকালে মূল ধাতুর থেকে বাইরে বেরিয়ে আসে, তাকে ‘ধাতুমল’ বা স্ল্যাগ বলে।

উদাহরণ – চুনাপাথর সহ বাতচুল্লিতে 1600° সেঃ উষ্ণতায় আকরিক লোহাকে গলানো হয়। লৌহ আকরিক গলে গেলে চুনমিশ্রিত হালকা গাদ বা ময়লা (লৌহ আকরে থাকা), লোহা ছাড়া অন্যান্য খারাপ পদার্থ উপরে ভেসে ওঠে এবং ভারী ধাতব লোহা বাতচুল্লির নিম্নাংশে অবস্থান করে। বাতচুল্লির এই গলিত লোহার উপর ভাসমান গাদ বা ময়লাই হল ধাতুমল বা অপদ্রব্য বা স্ল্যাগ।

ব্যবহার – আকরিক লোহার ধাতুমল সিমেন্ট, রাসায়নিক দ্রব্য, সার, রং, টার ও পিচ শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়।


আমরা আমাদের আর্টিকেলে নবম শ্রেণীর ভূগোলের সপ্তম অধ্যায় ‘ভারতের সম্পদ (সম্পদের ধারণা শ্রেণীবিভাগ ও সংরক্ষণ)’ এর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষার জন্য বা চাকরির পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি নবম শ্রেণীর পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায় দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে, আপনারা আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাছাড়া নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Share via:

মন্তব্য করুন