এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

নবম শ্রেণী – ভূগোল – ভারতের সম্পদ (খনিজ সম্পদ) – রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

আমরা আমাদের আর্টিকেলে নবম শ্রেণীর ভূগোলের সপ্তম অধ্যায় ‘ভারতের সম্পদ (খনিজ সম্পদ)’ এর রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষার জন্য ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

ভারতের সম্পদ (খনিজ সম্পদ) - রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর
ভারতের সম্পদ (খনিজ সম্পদ) – রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

আকরিক লোহার গুরুত্ব ও ব্যবহার লেখো। 

আকরিক লোহার গুরুত্ব – আকরিক লোহা ক্ষয়িষ্ণু, অপুনর্ভব ধাতব খনিজ পদার্থ। এই খনিজ সম্পদ থেকে প্রস্তুত লোহা ও ইস্পাত আধুনিক সভ্যতার ধারক ও বাহক। ছোট্ট ছুঁচ থেকে শুরু করে ভারী ও বৃহৎ শিল্পে বিভিন্ন ক্ষেত্রে লোহার ব্যবহার অপরিসীম। তাই, সকল শিল্পের মূল বা মেরুদণ্ড হল লোহা। মানুষের জীবনধারণের প্রতিটি মুহূর্তে লোহার ব্যবহার অপরিহার্য। এই কারণে আধুনিক যুগকে ‘লৌহযুগ’ বা আধুনিক সভ্যতাকে ‘লোহা নির্ভর সভ্যতা’ বলা হয়।

আকরিক লোহার ব্যবহার – আকরিক লোহার ব্যবহার মূলত কম, কিন্তু আকরিক লোহা থেকে তৈরি লোহা ও ইস্পাতের ব্যবহার বহুবিধ। যেমন –

আকরিক লৌহ খনি
আকরিক লৌহ খনি

পিগ আয়রন বা লোহাপিন্ড তৈরিতে – খনি থেকে তোলা আকরিক লোহায় যে অপ্রয়োজনীয় পদার্থ মিশে থাকে তা বাদ দেওয়ার জন্য এর সঙ্গে চুনাপাথর ও ডলোমাইট মিশিয়ে বাতচুল্লিতে গলানো হয় এবং পরিস্রুত গলিত তরল লোহা ছাঁচে ফেলে পিগ আয়রন প্রস্তুত করা হয়।

কাঁচামাল রূপে – আকরিক লোহা কাঁচামাল রূপে লৌহ-ইস্পাত শিল্পে এবং রং প্রস্তুতে ব্যবহার করা হয়। পিগ আয়রনের সঙ্গে ম্যাঙ্গানিজ, নিকেল, ক্রোমিয়াম প্রভৃতি মিশিয়ে বিভিন্ন ধরনের ইস্পাত তৈরি করা হয়।

লৌহ-ইস্পাতের ব্যবহার –

  • গৃহ নির্মাণে – রড, গ্রিল, বিম প্রভৃতি নির্মাণে ব্যবহৃত হয়।
  • গৃহস্থলিতে – বাসনপত্র, আসবাবপত্র, ছুরি, কাঁচি, ছুঁচ প্রভৃতি তৈরি হয়।
  • ভারী যন্ত্রপাতি নির্মাণে- বয়লার, গিয়ার, স্টিম টারবাইন, রেডিয়েটর প্রভৃতি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
  • পরিবহণে – জাহাজ, রেলপথ, রেল ইঞ্জিন, রেলগাড়ি, সেতু, রিকশা, সাইকেল, বিভিন্ন মোটরগাড়ি, বাস, লরি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
  • কৃষি যন্ত্রপাতি – লাঙল, ট্রাক্টর, কোদাল, কাস্তে, হারভেস্টার প্রভৃতি তৈরিতে লোহা ব্যবহৃত হয়।
  • সমরাস্ত্র – বন্দুক, গুলি, ট্যাঙ্ক, মেশিনগান, বেয়নেট, মিশাইল প্রভৃতি তৈরি হয়।
  • শিল্পক্ষেত্রে – ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে নানা যন্ত্রপাতি, করাত, হাতুড়ি, বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ, কর্নিক, বাটালি, নাট, বল্টু প্রভৃতি নির্মাণে ব্যবহৃত হয়।
  • চিকিৎসা ব্যবস্থায় – শল্য চিকিৎসার বিভিন্ন সরঞ্জাম প্রস্তুতে ব্যবহৃত হয়।

স্পঞ্জ আয়রন উৎপাদনে – বিগালকের সাহায্যে ছাঁট লোহার অপদ্রব্য দূর করে স্পঞ্জ আয়রন তৈরি করা হয়, যা ক্ষুদ্র ইস্পাত শিল্পের কাঁচামাল রূপে ব্যবহৃত হয়।

ভারতের আকরিক লোহা উত্তোলক অঞ্চলগুলির বণ্টন বর্ণনা করো।

অথবা, ভারতের প্রধান 5টি রাজ্যের আকরিক লোহার বণ্টন লেখো।

আকরিক লোহা উত্তোলনে ভারত পৃথিবীতে চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে। 2012-13 সালে ভারতের আকরিক লোহা উত্তোলনের পরিমাণ 1360.19 লক্ষ টন। ভারতের প্রধান আকরিক লোহা উত্তোলক অঞ্চলগুলির বণ্টন নিম্নে ছকের সাহায্যে দেখানো হল –

রাজ্যউত্তোলক অঞ্চলউত্তোলন 2012-13 (লক্ষ টন)
ওড়িশা
(প্রথম স্থানাধিকারী)
(i) ময়ূরভঞ্জ জেলার বাদামপাহাড়, গুরুমহিষানি এবং সুলাইপাত; (ii) সুন্দরগড় জেলার বোনাই, বারসুয়া; (iii) কেওনঝড় জেলার ঠাকুরানি, বাঁশপানি, টোডা, কিরিবুরু; (iv) কোরাপুট জেলার অমরকোট এবং (v) কটক জেলার দৈতারি প্রভৃতি।643.08
ছত্তিশগড়
(দ্বিতীয় স্থানাধিকারী)
(i) দুর্গ জেলার দাল্লিরাজহারা; বাস্তার জেলার বায়লাডিলা, রাওঘাট; (ii) কাঁকের জেলার ছোটেডোঙ্গার প্রভৃতি।279.41
ঝাড়খন্ড
(তৃতীয় স্থানাধিকারী)
(i) পশ্চিম সিংভূম জেলার চিরিয়া (পৃথিবীর একক বৃহত্তম লৌহ খনি), নোয়ামুন্ডি, গুয়া, জামদা, নোটুবুরু, দুবলাবেরা (ii) পালামৌ জেলার ডালটনগঞ্জ প্রভৃতি।180.10
কর্নাটক
(চতুর্থ স্থানাধিকারী)
(i) চিকমাগুলুর জেলার বাবাবুদান; (ii) বেল্লারি জেলার সানদুর, হসপেট, রমনদুর্গ; (iii) চিত্রদুর্গ জেলার কুদ্রেমুখ; (iv) সিমোগ্গা জেলার আরাসুল প্রভৃতি।112.25
গোয়া
(পঞ্চম স্থানাধিকারী)
(i) বিচোলেম, সিরিগাঁও অঞ্চল; (ii) পিরনা, মাপুসা, সাতারি, ওন্দা প্রভৃতি অঞ্চল।105.75
অন্যান্যমধ্যপ্রদেশের জব্বলপুর, নরসিংপুর, কাটনি; মহারাষ্ট্রের রত্নগিরি, চন্দ্রপুরা; অন্ধ্রপ্রদেশের অনন্তপুর, কৃষ্ণা, কুরনুল; রাজস্থানের উদয়পুর, ভিলওয়ারা, জয়পুর; তামিলনাড়ুর সালেম, নীলগিরি, মালনাদ প্রভৃতি।39.6
ভারতের লৌহ উত্তোলক অঞ্চল
ভারতের লৌহ উত্তোলক অঞ্চল

কয়লার গুরুত্ব ও ব্যবহার লেখো।

কয়লার গুরুত্ব – কয়লা হল একপ্রকার ক্ষয়িষ্ণু, ওজন হ্রাসকারী অপুনর্ভব প্রকৃতির জ্বালানি খনিজ সম্পদ। কয়লা পুড়িয়ে সর্বাধিক তাপশক্তি পাওয়া যায় বলে পৃথিবীর যাবতীয় শক্তি সম্পদের মধ্যে কয়লার গুরুত্ব সর্বাধিক। এছাড়া, আধুনিক শিল্পক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল হিসেবে কয়লার বিশেষ গুরুত্ব আছে। কিছুকাল আগে পর্যন্ত পরিবহণ ও শিল্প ছিল সম্পূর্ণভাবে কয়লানির্ভর। তাই কয়লাকে ‘শিল্প সভ্যতার ভিত’ বলা হয়।

কয়লার ব্যবহার – কয়লার ব্যবহার বহুবিধ ও ব্যাপক। যেমন –

  • তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনে – তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি কাঁচামাল হিসেবে কয়লার ব্যবহার সর্বাধিক। ভারতের উত্তোলিত কয়লার 70 শতাংশের বেশি তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত হয়।
  • ধাতব শিল্পে – কয়লা থেকে উৎপন্ন ‘কোক কয়লা’ -এর সাহায্যে বিভিন্ন লৌহ-ইস্পাত শিল্পে আকরিক লোহা গলিয়ে লৌহপিণ্ড (Pig iron) প্রস্তুত করা হয়।
  • বাষ্পশক্তি উৎপাদনে – কয়লা পুড়িয়ে যে তাপশক্তি পাওয়া যায় তার সাহায্যে জলকে বাষ্পে পরিণত করে বাষ্পশক্তি উৎপন্ন করা যায়। এই বাষ্পশক্তির সাহায্যে স্টিমইঞ্জিনযুক্ত জাহাজ, রেলগাড়ি, স্টিমার, কলকারখানার যন্ত্রপাতি প্রভৃতি চালানো যায়।
  • গৃহস্থলিতে – কয়লা গৃহস্থলিতে প্রধানত রান্নার কাজে এবং শীতপ্রধান অঞ্চলে ঘর গরম রাখার জন্য ব্যবহৃত হয়। এছাড়া কয়লা থেকে তৈরি ‘কোলগ্যাস’ জ্বালানিরূপে ব্যবহৃত হয়।
  • উপজাত দ্রব্য প্রস্তুতে – কয়লা থেকে কার্বনাইজেশন প্রক্রিয়ায় কোক উৎপাদনের সময় অ্যামোনিয়া, আলকাতরা, স্যাকারিন, ন্যাপথালিন, পিচ, বেনজল, গন্ধক, ফেনল, কৃত্রিমতত্ত্ব, বেনজিন, টলুইন প্রভৃতি উপজাত দ্রব্য প্রস্তুত হয়।
  • রাসায়নিক শিল্পে – কয়লার উপজাত দ্রব্যগুলি নানা প্রকার রাসায়নিক শিল্পে ব্যবহৃত হয়। যেমন –
    • বেনজিন – কীটনাশক তৈরিতে
    • অ্যামোনিয়া – রাসায়নিক সার তৈরিতে
    • বেনজল – ঔষুধ তৈরিতে
    • ক্রিয়োজোট ও ন্যাপথালিন – কীটনাশক, সাবান, অ্যান্টিসেপটিক তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
  • অন্যান্য – এছাড়া, কয়লা কুটির শিল্পে জ্বালানিরূপে ব্যবহৃত হয়, রাস্তা তৈরিতে পিচ ব্যবহৃত হয়, সিমেন্ট শিল্পে কাঁচামালরূপে কয়লা ব্যবহৃত হয়।

পরিশেষে বলা যায়, আধুনিক যন্ত্র সভ্যতার যুগে কয়লার এই সমস্ত নানাবিধ ব্যবহার ও উপযোগিতার জন্যই কয়লাকে ‘কালো হিরে’ (Black Diamond) বলা হয়।

ভারতের গন্ডোয়ানা যুগের কয়লার আঞ্চলিক বণ্টন বর্ণনা করো।

ভারতের মোট কয়লা সম্পদের প্রায় 98% হল গন্ডোয়ানা যুগের। প্রায় 250 মিলিয়ন বছর আগে ভূগর্ভে এই কয়লার স্তর গড়ে ওঠে। এই কয়লার বেশির ভাগই বিটুমিনাস প্রকৃতির এবং এর তাপ উৎপাদন ক্ষমতা যথেষ্ট বেশি। ভারতের বেশ কিছু নদী অববাহিকায় গন্ডোয়ানা যুগের কয়লা পাওয়া যায়। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল –

  • দামোদর অববাহিকা – এখানকার অন্যতম কয়লাক্ষেত্রগুলি হল –
    • ঝাড়খণ্ডের ঝরিয়া, বোকারো, গিরিডি, উত্তর ও দক্ষিণ করনপুরা, রামগড়, ডালটনগঞ্জ, ইতকুরি প্রভৃতি।
    • পশ্চিমবঙ্গের রানিগঞ্জ, আসানসোল, জামুরিয়া, অন্ডাল, মেজিয়া, কাপাসডাঙা প্রভৃতি।
  • শোন অববাহিকা – এই অববাহিকায় অবস্থিত উল্লেখযোগ্য কয়লাক্ষেত্রগুলি হল –
    • ছত্তিশগড়ের চিরিমিরি, তাতাপানি, ঝিলিমিলি, রামকোল, হাসদেও, শোনহাট প্রভৃতি।
    • মধ্যপ্রদেশের উমারিয়া, সোহাগপুর, সোনাদা, শাহপুর প্রভৃতি।
  • মহানদী অববাহিকা –
    • ওড়িশার তালচের, রামপুর, হিঙ্গার এবং
    • ছত্তিশগড়ের কোরবা প্রভৃতি এই অববাহিকার অন্যতম কয়লাক্ষেত্র।
  • গোদাবরী অববাহিকা – এই অববাহিকার উল্লেখযোগ্য কয়লাক্ষেত্রগুলি হল – অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের অন্তগাঁও, ভেঙ্কটপুর, তান্ডুর, রামাগুন্ডাম, সিঙ্গারেনি, ইয়েলান্ডু, কামারাম প্রভৃতি।
  • ওয়ার্ধা অববাহিকা – মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুরা, বল্লারপুর, রাজুরা, নাগপুর, ওয়ানি প্রভৃতি এই অববাহিকার প্রধান কয়লাক্ষেত্র।
  • অন্যান্য অঞ্চল – এছাড়া ভারতের অন্যান্য কয়লাক্ষেত্রগুলি হল –
    • নর্মদা উপত্যকার কাম্পতি ও উমরের।
    • সিকিমের রংগতি উপত্যকা অঞ্চল।
    • পশ্চিমবঙ্গের বক্সাদুয়ার।
    • গুজরাটের ঘুনেরি।
    • উত্তর প্রদেশের মির্জাপুর প্রভৃতি।

ভারতের প্রধান 5টি রাজ্যের কয়লার বণ্টন লেখো।

অথবা, ভারতের কয়লার আঞ্চলিক বণ্টন চিত্রসহ উল্লেখ করো।  

কয়লা উত্তোলনে ভারত পৃথিবীতে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে। 2012-13 সালে ভারতের কয়লা উত্তোলনের পরিমাণ 5577.07 লক্ষ টন। ভারতের প্রধান 5টি রাজ্যের কয়লা উত্তোলক অঞ্চলের বণ্টন নিম্নে ছকের মাধ্যমে দেখানো হল –

ভারতের কয়লা উত্তোলন কেন্দ্র
ভারতের কয়লা উত্তোলন কেন্দ্র
রাজ্যউত্তোলক অঞ্চলউত্তোলন 2012-13 (লক্ষ টন)
ছত্তিশগড় (প্রথম স্থানাধিকারী)(i) সরগুজা জেলার ঝিলিমিলি, সোনহাট, খারসিয়া, বিসরামপুর, লাখনপুর; (ii) সিধি জেলার সিংগ্রাউলি;
(iii) বিলাসপুর জেলার কোরবা;
(iv) কোরিয়াগড় জেলার চিরিমিরি প্রভৃতি।
1178.30
ঝাড়খণ্ড (দ্বিতীয় স্থানাধিকারী)(i) ধানবাদ জেলার ঝরিয়া (ভারতের বৃহত্তম), নিরঘা, চিকুণ্ডা;
(ii) বোকারো জেলার বোকারো, চন্দ্রপুরা;
(iii) পালামৌ জেলার ডালটনগঞ্জ, ঔরঙ্গা;
(iv) হাজারিবাগের গিরিডি, ইটখেরি প্রভৃতি।
2794.1
ওড়িশা (তৃতীয় স্থানাধিকারী)তালচের, সুন্দরগড়, সম্বলপুর, ঢেংকানল, রামপুর, হিনগির প্রভৃতি।1101.31
মধ্যপ্রদেশ(চতুর্থ স্থানাধিকারী)(i) শাহদোল জেলার উমারিয়া, বিজুরি, কোটমা;
(ii) ছিন্দোয়ারা জেলার কানহান, পেঞ্চ;
(iii) বেতুর জেলার পাথরখেরা প্রভৃতি।
772.78
অপ্তপ্রাদশ (পঞ্চম স্থানাধিকারী)(i) ওয়ারংগল জেলার কুমারম, কয়রাপল্লি;
(ii) করিম নগরের রামাগুন্ডাম;
(iii) আদিলাবাদ জেলার খয়েরগুড়া, তান্ডুর, ভেঙ্কটপুর, অন্তগাঁও;
(iv) খাম্মাম জেলার ইয়েলান্ডু, কোঠাগুদাম প্রভৃতি।
531.90
অন্যান্যমহারাষ্ট্র (39.003) -র বল্লারপুর, রাজুরা প্রভৃতি; শ্চিমবঙ্গের (26.478) রানিগঞ্জ, আসানসোল, জামুরিয়া, মেজিয়া প্রভৃতি; উত্তরপ্রদেশের (14.760) মির্জাপুর প্রভৃতি; মেঘালয়ের (7.137) চেরাপুঞ্জি, লাকসা, সালুঙ্গা প্রভৃতি; অসমের (0.605) মিকির, মাকুম প্রভৃতি; অরুণাচলপ্রদেশের (0.073) ডাফলা, অ্যাবর প্রভৃতি; জম্মু-কাশ্মীরের (0.019) রাইতান, কালাকোট প্রভৃতি।

খনিজ তেলের ব্যবহার ও গুরুত্ব লেখো। 

খনিজ তেল হল গচ্ছিত, অপুনর্ভব এবং ক্ষয়িষ্ণু প্রকৃতির তরল জ্বালানি। আধুনিক শিল্প সভ্যতায় খনিজ তেলের ব্যবহার ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম।

খনিজ তেলের ব্যবহার –

  • পরিবহণ ক্ষেত্রে – খনিজ তেলের বিভিন্ন পরিশোধিত সামগ্রী, যেমন – পেট্রোল, ডিজেল, গ্যাসোলিন, হাইস্পিড অয়েল প্রভৃতি বাস, লরি, মোটরগাড়ি, জাহাজ, নৌকা, রেলগাড়ি, বিমান ইত্যাদির প্রধান চালিকাশক্তি।
  • কৃষিক্ষেত্রে – কৃষিতে ব্যবহৃত ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার, হারভেস্টার, পাম্প, জেনারেটর ইত্যাদি চালাতে পেট্রোল, ডিজেল, কেরোসিন ব্যবহার করা হয়। এছাড়া নাইট্রোজেন সার, কীটনাশক প্রভৃতি খনিজ তেলের উপজাত দ্রব্য থেকে তৈরি হয়।
  • শিল্পক্ষেত্রে – পেট্রোরাসায়নিক শিল্পের মূল কাঁচামাল হল খনিজ তেল। খনিজ তেল শোধন করে পাওয়া ন্যাপথা, বুটেন, প্রোপেন, বেনজিন, প্যারাফিন, কেরোসিন, স্পিরিট প্রভৃতি উপজাত দ্রব্যগুলিকে কেন্দ্র করে কীটনাশক, কৃত্রিমতত্ত্ব, রান্নার গ্যাস, কৃত্রিম রবার, বিস্ফোরক দ্রব্য, নাইলন, রং ইত্যাদি শিল্প গড়ে উঠেছে। এছাড়া অন্যান্য বিভিন্ন শিল্প কারখানার যন্ত্রপাতি ও মেশিনপত্র চালানোর জন্য খনিজ তেল ব্যবহৃত হয়।
  • বিদ্যুৎ উৎপাদনে – ডিজেল পুড়িয়ে তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়, যেমন – অসমের ডিগবয়। এছাড়া জেনারেটরের সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ডিজেল, কেরোসিন ব্যবহৃত হয়।
  • সামরিক ক্ষেত্রে – বিভিন্ন সামরিক যানবাহন যেমন – ট্যাংক, কামানবাহী শকট, যুদ্ধ বিমান ইত্যাদি চালাতে এবং যুদ্ধের নানা অস্ত্রশস্ত্র ও বিস্ফোরক তৈরিতে খনিজ তেল ব্যবহৃত হয়।
  • গৃহস্থালিতে – রান্নার স্টোভে, ল্যাম্প, হ্যারিকেনের আলো জ্বালাতে, শীতপ্রধান দেশে ঘর গরম রাখতে খনিজ তেল ব্যবহৃত হয়।
  • পিচ্ছিলকারক পদার্থ তৈরিতে – খনিজ তেল থেকে মবিল, গ্রিজ প্রভৃতি পিচ্ছিলকারক পদার্থ তৈরি করা হয়, যেগুলি বিভিন্ন যন্ত্রপাতিকে ঘর্ষণজনিত ক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করে।
  • অন্যান্য ব্যবহার – এছাড়া খনিজ তেলের উপজাত দ্রব্য পিচ রাস্তা তৈরিতে, প্যারাফিন মোম তৈরিতে, অ্যাসফল্ট জল নিরোধক বস্তু তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

খনিজ তেলের গুরুত্ব –

মানুষ পৃথিবীর বুকে যে-সকল বহুমুখী উদ্দেশ্য সাধনকারী সম্পদ খুঁজে পেয়েছে, তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ হল খনিজ তেল। বহুমুখী ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে খনিজ তেলের গুরুত্ব তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ খনিজ তেল নির্ভর শিল্পগুলি জীবিকার মূল উৎস। তাছাড়া কোনো দেশে খনিজ তেলের সম্ভার ও ব্যবহার ওই দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সূচক। মোটকথা শিল্প, সমাজ-সংস্কৃতি, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, রাজনীতি, অর্থনীতি ও দৈনন্দিন জীবনের এমন কোনো দিক নেই যেখানে খনিজ তেল প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ব্যবহৃত হয় না। তাই খনিজ তেলের অপরিসীম ব্যবহারিক মূল্যের কথা ভেবে একে ‘তরল সোনা‘ আখ্যা দেওয়া হয়েছে।

ভারতের খনিজ তেল উত্তোলক অঞ্চলগুলির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।

অথবা, ভারতের প্রধান তিনটি খনিজ তেল উত্তোলক অঞ্চলের পরিচয় দাও।

খনিজ তেল উত্তোলনে পৃথিবীতে ভারতের স্থান উল্লেখযোগ্য নয়। 2011-12 সালে ভারতে মাত্র 287 লক্ষ টন খনিজ তেল উত্তোলিত হয়েছিল। এ দেশের প্রধান খনিজ তেল উত্তোলক অঞ্চলগুলিকে চারটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা –

ভারতের খনিজ তেল উত্তোলন কেন্দ্র ও শোধনাগার
ভারতের খনিজ তেল উত্তোলন কেন্দ্র ও শোধনাগার
অঞ্চলতৈলক্ষেত্রবিশেষত্ব
উত্তর-পূর্ব ভারত(i) অসমের ডিগবয়, নাহারকাটিয়া, মোরান, রুদ্রসাগর, আমগুড়ি, অঙ্গুরি, বদরপুর, তিনালি প্রভৃতি;
(ii) অরুণাচল প্রদেশের খারসাং (iii) নাগাল্যান্ডের বোরহোল্লা;
(iv) ত্রিপুরার মানু, সোভাং প্রভৃতি।
ভারতের প্রাচীনতম তৈলখনি অসমের ডিগবয় (1889); খনিজ তেল উত্তোলনে অসমের স্থান ভারতে তৃতীয়।
পশ্চিম ভারত(i) গুজরাটের আঙ্কেলেশ্বর, খাম্বাত, সানন্দ, আমেদাবাদ, মহেসানা, ধোলকা, লুনেজ প্রভৃতি; (ii) রাজস্থানের মঙ্গলা, ভাগ্যম, রাগেশ্বরী।গুজরাট খনিজ তেল উত্তোলনে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে; আঙ্কেলেশ্বর ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈলক্ষেত্র।
আরবসাগরীয় দরিয়া অঞ্চলবোম্বে হাই, দমনদরিয়া, হিরা, পান্না, রত্না, নিলম, গান্ধার বেসিন প্রভৃতি এই অঞ্চলের প্রধান তৈলখনি।বোম্বে হাই ভারতের বৃহত্তম তৈলক্ষেত্র; মুম্বাই থেকে 173 কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে আরব সাগরের গর্ভে 1974 সালে ONGC -র প্রচেষ্টায় 2000 বর্গকিমি বিস্তৃত তৈলক্ষেত্র বোম্বেহাই আবিষ্কৃত হয়; এখানে ‘সাগর সম্রাট’ ও ‘সাগর বিকাশ’ নামের দুটি ভাসমান প্লাটফর্মের সাহায্যে খনিজ তেল তোলা হয়।

কয়লার উৎপত্তি কীভাবে ঘটেছে?

কয়লা স্তরীভূত জৈব শিলা বিশেষ। সম্পদ হিসেবে এটি ক্ষয়িষ্ণু, গচ্ছিত, অপুনর্ভব ও ভারহ্রাসমান সম্পদ। উদ্ভিদ দেহ রূপান্তরিত হয়ে কয়লায় পরিণত হয়। মাটির নীচে 30 মিটার থেকে 2000 মিটার গভীরতার মধ্যে পাওয়া যায়।

প্রায় 30 কোটি বছর আগে কার্বোনিফেরাস যুগে ভূ-আলোড়নের ফলে উষ্ণু আর্দ্র জলবায়ু অঞ্চলের (নিরক্ষীয় ও ক্রান্তীয়) বনভূমির অতিকায় ক্যালামাইটিস নামের উদ্ভিদ মাটির নীচে চাপা পড়ে ভূগর্ভে প্রোথিত হয় এবং ভূগর্ভের চাপ ও তাপের ফলে গাছপালার কান্ডের মধ্যে সঞ্চিত কার্বন রাসায়নিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে কয়লায় পরিণত হয়। বিভিন্ন ভূ-তাত্ত্বিক সময়কালে কয়লা স্তরে স্তরে গড়ে উঠেছে। কার্বন কয়লার প্রধান উপাদান। এই কার্বনের পরিমাণ আবার নির্ভর করে কত সময় ধরে ও কোন ভূতাত্ত্বিক সময়কালে কয়লা গঠিত হয়েছে। কারণ যে জটিল রাসায়নিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে কয়লা গঠিত হয় তা আবার নির্দিষ্ট সময়কাল ও ভূ-গর্ভের তাপ ও চাপের মাত্রার উপর নির্ভর করে, যেমন – পৃথিবীর অধিকাংশ উন্নতমানের কয়লা (অ্যানথ্রাসাইট ও বিটুমিনাস) কার্বোনিফেরাস উপযুগে 30°-60° অক্ষাংশীয় অঞ্চলে গন্ডোয়ানা ভূ-খণ্ডের মধ্যে সৃষ্টি হয়। তাই একে গন্ডোয়ানা কয়লাও বলে। ভারতে অধিকাংশ কয়লা এই সময়কালেই সৃষ্টি হয়েছে এবং এই জাতীয় কয়লা দামোদর, শোন, মহানদী, গোদাবরী, ওয়ার্ধা, পেঞ্চ উপত্যকায় পাওয়া যায়।

কয়লার উৎপত্তি
কয়লার উৎপত্তি

এর পরবর্তী পর্যায়ে টার্শিয়ারি যুগে 6-7 কোটি বছর আগে লিগনাইট ও পিট জাতীয় অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের কয়লা সৃষ্টি হয়। ভারতের তামিলনাড়ুর নেভেলিতে লিগনাইট জাতীয় কয়লা সঞ্চিত রয়েছে এবং উত্তোলিত হয়। এই জাতীয় কয়লার গঠন এখনও প্রাথমিক স্তরে রয়েছে এবং এই জাতীয় কয়লায় কার্বনের পরিমাণ অনেক কম, কারণ কয়লার গঠনের পর্যায়ের উপর কার্বনের পরিমাণ নির্ভর করে। এই জাতীয় কয়লায় বালি, কাদা, পাথর ইত্যাদি অপদ্রব্য (Impurities) বা মালিন্য থাকে, এ ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প থাকে। তাই এ জাতীয় কয়লা পোড়ালে প্রচুর ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়।

উৎপত্তি পদ্ধতি –

ভূবিজ্ঞানীদের মতে কার্বোনিফেরাস এবং টার্শিয়ারি যুগের কয়লার উৎপত্তির পদ্ধতি একই প্রকৃতির। যথা –

  • জলবায়ুর অনুকূলতা – কার্বোনিফেরাস ও টার্শিয়ারি যুগে অনুকূল জলবায়ু (অধিক বৃষ্টিপাত ও উষ্ণতা) জনিত কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে প্রকান্ড শাখা-প্রশাখা যুক্ত বিশাল বিশাল বৃক্ষের অতি গভীর বনভূমির সৃষ্টি হয়েছিল।
  • প্রবল ভূ-আলোড়ন ও সমুদ্রতলের তারতম্য – কার্বোনিফেরাস ও টার্শিয়ারি যুগে প্রবল ভূ-আলোড়ন ও সমুদ্রতলের পার্থক্যের জন্য পৃথিবীর আদি বনভূমি মাটির নীচে চাপা পড়ে যায়।
  • অঙ্গারীভূতকরণ – ভূগর্ভস্থ চাপ ও তাপের মিলিত প্রভাবে গাছপালার কান্ডের মধ্যে সঞ্চিত কার্বন, রাসায়নিক বিয়োজনের ফলে আংশিক পাতলা স্তরে অঙ্গারীভূত হতে থাকে।
  • সমতলীকরণ – অঙ্গারীভূত স্তরের ওপর পরবর্তী পর্যায়ে ভূ-আলোড়ন ও ব্যাপক প্লাবনের প্রভাবে পলি, বালি, কাদার স্তর জমা হয়ে সমতল ভূমি সৃষ্টি হয়।
  • কয়লার স্তর গঠন – নবগঠিত সমতল ভূমির ওপর আবার গভীর অরণ্যের সৃষ্টি হয়। পুনরায় একই ভাবে চাপা পড়ে উদ্ভিজ্জ পদার্থ অঙ্গারীভূত হয় এবং পরবর্তী প্লাবনে আবার পলিস্তর গঠিত হয়। ক্রমাগত পলি সঞ্চয়ের ফলে তাপ, চাপ ও রাসায়নিক বিয়োজনে উদ্ভিদের বায়বীয় ও তরল অংশ বাষ্পীভূত হয়ে শ্বেতসার কার্বন ও অঙ্গাররূপে কয়লার স্তর গঠিত হয়।

কে সর্বপ্রথম কয়লা খুঁজে বার করেন?

ড. থমাস ওয়ালকার আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকি প্রদেশে সর্বপ্রথম কয়লা খুঁজে বার করেন এবং ব্যবহার করেন।

ভারতে কয়লা উত্তোলনের সমস্যাগুলি কী?

ভারত কয়লা উত্তোলনে পৃথিবীতে উল্লেখযোগ্য স্থান অধিকার করে (2012 সালের হিসাব অনুসারে তৃতীয়) কিন্তু ভারতে কয়লা উত্তোলনে বেশ কিছু সমস্যা দেখা যায়। যেমন –

  • কয়লার গুণগত মান – এদেশের কয়লার মান খুব উন্নত নয়। বিটুমিনাস জাতীয় কয়লাই বেশি পাওয়া যায়।
  • পরিবহণ সমস্যা – কয়লা পরিবহণের জন্য ভারতে রেলপথের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি করা হয়। কিন্তু রেলপথে পরিবহণ কালে কয়লা চুরি, বোঝাই ও খালাসের সময় অপচয় বেশি হয়। তাছাড়াও রেলপথে কয়লা পরিবহণের খরচ অনেক বেশি পড়ে।
  • প্রাচীন উত্তোলন পদ্ধতি – ভারতে কয়লা উত্তোলন পদ্ধতি এখনো অনেকটাই প্রাচীন। অধিকাংশই আন্ডার গ্রাউন্ড মাইনিং পদ্ধতির প্রয়োগের ফলে খরচ অনেক বেশি হয়। ভারতে এখনো পর্যন্ত ‘ওপেন কাস্ট পদ্ধতিতে’ কয়লা উত্তোলন খুব কম অঞ্চলেই করা হয়েছে। ভারতে কয়লা উত্তোলনে ‘UCG’ (Underground Coal Gasification) পদ্ধতি এখনও চালু হয়নি।
  • অত্যধিক ছাই – ভারতের অধিকাংশ কয়লা গন্ডোয়ানা ও টার্শিয়ারি যুগের হওয়ায় এতে কার্বনের পরিমাণ কম এবং দহন শক্তিও কম, ফলে ছাই বেশি।
  • উপজাত দ্রব্যের সংগ্রহে প্রযুক্তির অভাব – কয়লা থেকে বিভিন্ন উপজাত দ্রব্য যেমন – ন্যাপথলিন, বেনজিন, পিচ প্রভৃতি পাওয়া যায় যা থেকে বিভিন্ন প্রকার শিল্প গড়ে ওঠে। কিন্তু ভারতে উন্নত প্রযুক্তির অভাবে সব কয়লা থেকে ঠিকমতো উপজাত দ্রব্য সংগ্রহ করা যায় না। যেমন – কয়লা স্তরে আবদ্ধ থাকা মিথেন গ্যাস সবক্ষেত্রে এখনও আহরণ করা সম্ভব হয়নি।
  • শ্রমিক অসন্তোষ – কয়লা খনি অঞ্চলে প্রায়শই শ্রমিকরা বঞ্চিত হওয়ার কারণে শ্রমিক বিক্ষোভ, দ্বন্দ্ব, কর্মবিরতি, সংঘর্ষের কারণে কয়লা উত্তোলন ব্যাহত হয়।
  • দুর্ঘটনা – উন্নত প্রযুক্তি ও পরিকাঠামোর অভাবে ও দক্ষ পরিচালন ব্যবস্থার অভাবে খনিতে মাঝে মধ্যেই ধস, জল ঢুকে যাওয়া, আগুন লেগে যাওয়া, বিস্ফোরণ ইত্যাদি দুর্ঘটনার কারণে কয়লা উত্তোলন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
  • অপচয় – ভারতের কয়লাখনিতে আগুন লাগা, ধস, জল ঢোকা, বিস্ফোরণ, মাফিয়া দৌরাত্ম্য, চুরি ইত্যাদির কারণে প্রচুর কয়লা নষ্ট হয়।
  • পরিবেশগত সমস্যা – অবৈজ্ঞানিকভাবে ভারতে কয়লা উত্তোলন করা হয় বলে, প্রচুর বনভূমি বিনষ্ট হয়, পরিবেশ দূষিত হয়, কয়লা খনি অঞ্চলে বসবাসকারী শ্রমিকগণ ও তাদের পরিবার বিভিন্ন দুরারোগ্য ব্যাধির স্বীকার হয়।
  • অন্যান্য – এছাড়াও পরিবহণের সমস্যা, মাফিয়া রাজ, প্রশাসনিক দুর্বলতা, আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা ভারতের কয়লা উত্তোলনে গভীর প্রভাব বিস্তার করে।

আমরা আমাদের আর্টিকেলে নবম শ্রেণীর ভূগোলের সপ্তম অধ্যায় ‘ভারতের সম্পদ (খনিজ সম্পদ)’ এর রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষার জন্য বা চাকরির পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি নবম শ্রেণীর পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায় দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে, আপনারা আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাছাড়া নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Share via:

মন্তব্য করুন