এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

নবম শ্রেণী – ভূগোল – ভূ-গাঠনিক প্রক্রিয়া এবং পৃথিবীর বিভিন্ন ভূমিরূপ – পার্থক্যধর্মী প্রশ্নোত্তর

আমরা আমাদের আর্টিকেলে নবম শ্রেণীর ভূগোলের চতুর্থ অধ্যায় ‘ভূ-গাঠনিক প্রক্রিয়া এবং পৃথিবীর বিভিন্ন ভূমিরূপ’ এর কিছু পার্থক্যধর্মী প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষার জন্য ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই অধ্যায়ের মূল ধারণাগুলো থেকে পরীক্ষায় প্রায়শই প্রশ্ন আসে।

ভূ-গাঠনিক প্রক্রিয়া এবং পৃথিবীর বিভিন্ন ভূমিরূপ - পার্থক্যধর্মী প্রশ্নোত্তর
ভূ-গাঠনিক প্রক্রিয়া এবং পৃথিবীর বিভিন্ন ভূমিরূপ – পার্থক্যধর্মী প্রশ্নোত্তর
Contents Show

মহীভাবক আলোড়ন ও গিরিজনি আলোড়নের পার্থক্য লেখো।

বিষয়মহীভাবক আলোড়ন (Epeirogenic movement)গিরিজনি আলোড়ন (Orogenic movement)
অর্থ‘মহী’ = মহাদেশ এবং ‘ভাবক’ = উদ্ভব, অর্থাৎ, মহীভাবক কথার অর্থ মহাদেশের উদ্ভব।‘গিরি’ = পর্বত এবং ‘জনি’ = সৃষ্টি, অর্থাৎ, গিরিজনি কথার অর্থ পর্বত সৃষ্টি।
সংজ্ঞাযে ভূ-আলোড়নের প্রভাবে উত্থান ও অবনমনের মধ্য দিয়ে মহাদেশের গঠন নির্ধারিত হয়, তাকে মহীভাবক আলোড়ন বলে।যে আলোড়নের প্রভাবে শিলাস্তরে ভাঁজ পড়ে গিরি বা পর্বত গঠিত হয়, তাকে গিরিজনি আলোড়ন বলে।
প্রকৃতিএই আলোড়ন পৃথিবীর ব্যাসার্ধ বরাবর, অর্থাৎ, উল্লম্বভাবে ক্রিয়া করে।এই আলোড়ন পৃথিবীর স্পর্শক বরাবর, অর্থাৎ, অনুভূমিকভাবে ক্রিয়া করে।
শিলাস্তরের সরণএর প্রভাবে উপরের দিকে বা নীচের দিকে শিলাস্তরের সরণ ঘটে।এর প্রভাবে পাশের দিকে শিলাস্তরের সরণ ঘটে।
ব্যাপ্তিএর প্রভাব সাধারণত স্থানীয়ভাবে ঘটে থাকে।সাধারণত বিশাল অঞ্চল জুড়ে এই আলোড়নের প্রভাব দেখা যায়।
শ্রেণিবিভাগদু-প্রকার – ঊর্ধ্বমুখী আলোড়ন ও নিম্নমুখী আলোড়ন।দু-প্রকার – সংকোচন ও প্রসারণ।
সৃষ্ট ভূমিরূপস্তূপ পর্বত, গ্রস্ত উপত্যকা, মালভূমি, ভৃগুতট প্রভৃতি।হিমালয়, রকি, আন্দিজ প্রভৃতি ভঙ্গিল পর্বত, চ্যুতি ইত্যাদি।

প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বত ও নবীন ভঙ্গিল পর্বত -এর মধ্যে পার্থক্য লেখো।

বিষয়প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বত (Old Fold mountain)নবীন ভঙ্গিল পর্বত (New Fold mountain)
বছরপৃথিবীতে প্রায় 20 কোটি বছর আগে সৃষ্টি হওয়া ভঙ্গিল পর্বতগুলি প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বত নামে পরিচতি।পৃথিবীতে প্রায় 1-2.5 কোটি বছর আগে সৃষ্টি হওয়া ভঙ্গিল পর্বতগুলি নবীন ভঙ্গিল পর্বত নামে পরিচিত।
যুগপ্রাচীন ভঙ্গিল পর্বতের অধিকাংশই ক্যালিডোনিয়ান কিংবা হার্সিয়ান যুগে সৃষ্টি হয়েছিল।নবীন ভঙ্গিল পর্বতগুলির বেশিরভাগই টার্শিয়ারি যুগে সৃষ্টি হয়েছিল।
গঠন প্রক্রিয়াএই পর্বতগুলির গঠনপ্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেছে।এই পর্বতগুলির গঠন প্রক্রিয়া অব্যাহত এবং ক্রমশ উত্থান ঘটছে।
বিস্তারএগুলির বিস্তার কম।এগুলি বিশাল অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত।
উচ্চতাক্ষয়কার্যের ফলে ক্রমশ উচ্চতা হ্রাস পাচ্ছে।উত্থানক্রিয়া অব্যাহত থাকায় উচ্চতা ক্রমশ বাড়ছে।
শৃঙ্গএই পর্বতের শৃঙ্গগুলি প্রায় গোলাকার।সুউচ্চ শৃঙ্গগুলি অত্যন্ত তীক্ষ্ণ ও ছুঁচোলো।
ঢালএই পর্বতের ঢাল খুব মৃদু হয়ে থাকে।এই পর্বতগুলি খাড়া ঢাল বিশিষ্ট হয়।
উপত্যকামাঝের উপত্যকাগুলি অগভীর ও চওড়া।মাঝের উপত্যকাগুলি সুগভীর ও সংকীর্ণ।
বন্ধুরতাএই পর্বতের বন্ধুরতা কম।এই পর্বতের ভূমিরূপগুলি অত্যন্ত এবড়োখেবড়ো এবং ভাঁজ চ্যুতিযুক্ত বন্ধুর।
উদাহরণআরাবল্লি, অ্যাপেলেশিয়ান প্রভৃতি।হিমালয়, আন্দিজ, রকি, আল্পস প্রভৃতি।

অন্তর্জাত প্রক্রিয়া ও বহির্জাত প্রক্রিয়ার পার্থক্য লেখো।

বিষয়অন্তর্জাত প্রক্রিয়া (Endogenetic process)বহির্জাত প্রক্রিয়া (Exogenetic process)
সংজ্ঞাযে প্রক্রিয়ায় ভূ-অভ্যন্তরে সৃষ্ট বলের প্রভাবে ভূ-ত্বকের পরিবর্তন ঘটে ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়, তাকে অন্তর্জাত প্রক্রিয়া বলে।যে প্রক্রিয়ায় ভূপৃষ্ঠের বাইরের বিভিন্ন শক্তির প্রভাবে বিভিন্ন ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়, তাকে বহির্জাত প্রক্রিয়া বলে।
প্রক্রিয়াসমূহমহীভাবক ও গিরিজনি আলোড়ন, ভূমিকম্প, অগ্ন্যুৎপাত প্রভৃতি।আবহবিকার, ক্ষয়ীভবন, নগ্নীভবন, পুঞ্জিতক্ষয় প্রভৃতি।
কার্যকালএই প্রক্রিয়া যেমন আকস্মিকভাবে কাজ করে, তেমনি ধীরে ধীরেও কাজ করে।এই প্রক্রিয়া দীর্ঘ সময় ধরে কেবল ধীরে ধীরে কাজ করে।
শক্তির উৎসভূ-অভ্যন্তরস্থ প্রচণ্ড তাপশক্তি এই প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয় শক্তির উৎস।সৌরশক্তি মূল উৎস। নদী, বায়ু, হিমবাহ, সমুদ্রতরঙ্গ প্রভৃতি পরোক্ষ উৎস।
ভূমিরূপএই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পৃথিবীতে প্রাথমিক ভূমিরূপ, পর্বত, মালভূমি, সমভূমি প্রভৃতি গড়ে ওঠে।এই প্রক্রিয়ায় দ্বিতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন ভূমিরূপ গড়ে ওঠে ও শেষে তা পর্যায়িত ভূমিরূপে পরিণত হয়।

ভঙ্গিল পর্বত ও স্তূপ পর্বতের মধ্যে পার্থক্য লেখো।

বিষয়ভঙ্গিল পর্বত (Fold mountain)স্তূপ পর্বত (Block mountain)
সংজ্ঞাশিলায় ভাঁজ পড়ে যে পর্বতের সৃষ্টি হয়, তাকে ভঙ্গিল পর্বত বলে।দুটি চ্যুতির মধ্যবর্তী অংশ ভূ-আলোড়নের ফলে উপরে উঠে গিয়ে যে পর্বতের সৃষ্টি হয়, তাকে স্তূপ পর্বত বলে।
বিস্তারভঙ্গিল পর্বতগুলি বহু দূর বিস্তৃত হয়।এগুলি বহু দূর বিস্তার লাভ করে না।
উচ্চতাএই পর্বতের উচ্চতা অপেক্ষাকৃত অনেক বেশি।এই পর্বতের উচ্চতা তুলনামূলকভাবে কম।
শৃঙ্গভঙ্গিল পর্বতের চূড়াগুলি শঙ্কু আকৃতির হয়। এগুলিকে শৃঙ্গ বলে।স্তূপ পর্বতের চূড়াগুলি চ্যাপটা হয়।
ভূ-আলোড়নভঙ্গিল পর্বত অনুভূমিক আলোড়নের ফলে সৃষ্টি হয়।স্তূপ পর্বত উল্লম্ব আলোড়নের ফলে সৃষ্টি হয়।
উদাহরণহিমালয়, আন্দিজ, রকি প্রভৃতি।সাতপুরা, ভোজ, ব্ল‍্যাকফরেস্ট প্রভৃতি।

হোর্স্ট (Horst) ও স্তূপ পর্বতের (Block Mountain) পার্থক্য লেখো।

বিষয়হোর্স্ট (Horst)স্তূপ পর্বত (Block mountain)
উৎপত্তিদুটি সমান্তরাল চ্যুতির মধ্যবর্তী অংশ উপরে উঠে হোর্স্ট সৃষ্টি হয়।দুটি তির্যক চ্যুতির মধ্যবর্তী অংশ উপরে উঠে স্তূপ পর্বতের উৎপত্তি হয়।
উত্থানহোর্স্টের ক্ষেত্রে ভূখণ্ডের উল্লম্ব উত্থান ঘটে।স্তূপ পর্বতের ক্ষেত্রে পর্বতের তির্যক উত্থান ঘটে।
ঢালচারপাশ খাড়া ঢালযুক্ত হয়।স্তূপ পর্বতের একদিকের ঢাল খাড়া ও অপর দিকের ঢাল মৃদু হয়।
সম্পর্কসব হোর্স্ট স্তূপ পর্বত।সব স্তূপ পর্বতই হোর্স্ট নয়।
উদাহরণসাতপুরা, ব্ল্যাকফরেস্ট প্রভৃতি।পশ্চিমঘাট পর্বত।

পর্বতবেষ্টিত মালভূমি ও ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমির পার্থক্য লেখো।

বিষয়পর্বতবেষ্টিত মালভূমি (Intermontane plateau)ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি (Dissected plateau)
উৎপত্তিগিরিজনি আলোড়নের ফলে ভঙ্গিল পর্বত সৃষ্টির সময় দুটি পর্বতের মধ্যবর্তী অংশ উঁচু হয়ে পর্বতবেষ্টিত মালভূমির সৃষ্টি হয়।কোনো বিস্তীর্ণ মালভূমি অঞ্চল বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা (নদী, বায়ু, হিমবাহ) ক্ষয় হয়ে বিচ্ছিন্ন আকারে অবস্থান করলে ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি সৃষ্টি হয়।
গঠনকারী শক্তিভূ-অভ্যন্তরস্থ শক্তির কারণে এই মালভূমি গঠিত হয়।বহির্জাত শক্তির প্রভাবে এই মালভূমি গঠিত হয়।
উচ্চতাভঙ্গিল পর্বত দ্বারা বেষ্টিত এই মালভূমিগুলির উচ্চতা অনেক বেশি এবং ক্রমশ উচ্চতা বাড়তে থাকে।নদী উপত্যকার দ্বারা বিচ্ছিন্ন এই মালভূমির গড় উচ্চতা কম এবং এর উচ্চতা ক্রমশ কমতে থাকে।
গঠনকারী শিলাএই মালভূমি পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত হয়।এই মালভূমি কঠিন আগ্নেয় ও রূপান্তরিত শিলা দ্বারা গঠিত হয়।
বয়সএগুলি বয়সে নবীন।এগুলি বয়সে প্রাচীন।
উদাহরণপামির মালভূমি, তিব্বত মালভূমি।ভারতের বুন্দেলখণ্ড, বাঘেলখণ্ড, ছোটোনাগপুর মালভূমি, মালনাদ প্রভৃতি।

লাভা মালভূমি (Lava Plateau) ও মহাদেশীয় মালভূমির (Continental Plateau) মধ্যে পার্থক্য লেখো।

বিষয়লাভা মালভূমি (Lava plateau)মহাদেশীয় মালভূমি (Continental plateau)
সংজ্ঞাভূপৃষ্ঠে ক্রমাগত লাভা সঞ্চয়ের ফলে সৃষ্ট মালভূমিকে লাভা মালভূমি বলে।বিস্তীর্ণ মহাদেশীয় অংশ জুড়ে গঠিত মালভূমিকে মহাদেশীয় মালভূমি বলে।
সৃষ্টিভূ-অভ্যন্তরের প্রবল চাপে উত্তপ্ত ম্যাগমা ভূপৃষ্ঠের কোনো দুর্বল অংশ দিয়ে বাইরে এসে সঞ্চিত হয়ে এই মালভূমি সৃষ্টি হয়।পাত সঞ্চালনের ফলে পৃথিবীর প্রাচীন ভূখণ্ড ফেটে গিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে মহাদেশীয় মালভূমির সৃষ্টি হয়েছে।
বিস্তারলাভা মালভূমি মহাদেশীয় মালভূমির তুলনায় কম অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত।মহাদেশীয় মালভূমি সুবিশাল অঞ্চল জুড়ে অবস্থান করে।
উচ্চতালাভা সঞ্চয়ের কারণে উচ্চতা ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে।ক্ষয়কার্যের কারণে এই মালভূমির গড় উচ্চতা ধীরে ধীরে হ্রাস পায়।
প্রাচীনত্বএই মালভূমি অপেক্ষাকৃত নবীন শিলায় গঠিত।এই মালভূমি অত্যন্ত প্রাচীন শিলাগঠিত।
উদাহরণদাক্ষিণাত্য মালভূমি, কলম্বিয়া মালভূমি প্রভৃতি।আরব মালভূমি, কানাডিয়ান শিল্ড প্রভৃতি।

পেনিপ্লেন ও পেডিপ্লেন -এর মধ্যে পার্থক্যগুলি আলোচনা করো।

বিষয়পেনিপ্লেন (সমপ্রায় ভূমি) (Peneplain)পেডিপ্লেন (পেডিমেন্ট) (Pediplain)
অবস্থানপেনিপ্লেন আর্দ্র অঞ্চলে সৃষ্ট ভূমিরূপ।পেডিপ্লেন শুষ্ক মরুভূমি ও মরুপ্রায় অঞ্চলে সৃষ্ট ভূমিরূপ।
সৃষ্টির কারণআর্দ্র অঞ্চলে নদীর ক্ষয়চক্রের বার্ধক্য পর্যায়ে উচ্চভূমি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে মৃদু ঢালযুক্ত সমতল ভূমিতে পরিণত হলে পেনিপ্লেন বা সমপ্রায় ভূমি গঠিত হয়।শুষ্ক অঞ্চলে বায়ু ও নদীর মিলিত ক্ষয়চক্রের বার্ধক্য অবস্থায় উচ্চভূমি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে স্বল্প ঢালযুক্ত প্রায় সমতল ভূমিতে পরিণত হলে পেডিপ্লেন বা পেডিমেন্ট গঠিত হয়।
ক্ষয়কারী শক্তিনদী বা জলধারার কার্যে এই ভূমিরূপ গঠিত হয়।বায়ু ও জলধারার মিলিত কার্যে এই ভূমিরূপ গঠিত হয়।
জলাভূমি ও হ্রদসমপ্রায় ভূমিতে জলাভূমি ও হ্রদের সৃষ্টি হয়।পেডিপ্লেনে ওয়াদি ও প্লায়া হ্রদ গঠিত হয়।
ভূমিরূপসমপ্রায় ভূমির ঢাল খুব মৃদু। এর মাঝে মাঝে কঠিন শিলায় গঠিত অনুচ্চ টিলা দেখা যায়, তাকে মোনাডনক্ বলে।পেডিমেন্টের ঢাল মৃদু প্রকৃতির। এর মাঝে অবস্থিত কঠিন শিলা দ্বারা গঠিত অনুচ্চ টিলাকে ইনসেলবার্জ বলে।

প্লাবন সমভূমি (Flood Plain) ও ব-দ্বীপ সমভূমির (Delta Plain) পার্থক্য লেখো।

বিষয়প্লাবন সমভূমি (Flood plain)ব-দ্বীপ সমভূমি (Delta plain)
উৎপত্তিবন্যার সময় নদীবাহিত পলি, বালি নদীর দুপাশে সঞ্চিত হয়ে প্লাবন সমভূমি সৃষ্টি হয়।নদী দ্বারা বাহিত পলি, বালি মোহানায় সঞ্চিত হয়ে ব-দ্বীপ সমভূমি সৃষ্টি হয়।
অবস্থাননদী অববাহিকার মধ্য ও নিম্নপ্রবাহে অবস্থিত।নদীর মোহানায় অবস্থিত।
গঠনকালবন্যার সময় নদীবাহিত পলি, বালি নদীর দুপাশে সঞ্চিত হয়ে প্লাবন সমভূমি সৃষ্টি হয়।প্রায় প্রতিদিনই ব-দ্বীপ সমভূমি ধীরে ধীরে আয়তনে বৃদ্ধি পায়।
আয়তনপ্লাবন সমভূমির আয়তন তুলনামূলকভাবে কম।ব-দ্বীপ সমভূমির আয়তন অপেক্ষাকৃত বেশি।
আকৃতিসাধারণত তেমন কোনো আকার নেই।এই সমভূমি মাত্রাহীন বাংলা অক্ষর ‘ব’ -এর মতো দেখতে।
ভূ-দৃশ্যএখানে নদী বাঁক, স্বাভাবিক বাঁধ প্রভৃতি ভূমিরূপ দেখা যায়।এখানে অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ, শাখানদী, জলাভূমি প্রভৃতি দেখা যায়।
উদাহরণনীল নদের তীরে মিশরের সমভূমি।গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র ব-দ্বীপ সমভূমি।

পেডিমেন্ট (Pediment) ও বাজাদা -র (Bajada) পার্থক্য লেখো।

বিষয়পেডিমেন্ট (Pediment)বাজাদা (Bajada)
সংজ্ঞামরু অঞ্চলে পর্বতের পাদদেশে বায়ু ও সাময়িক জলধারার মিলিত ক্ষয়কার্যের ফলে যে প্রস্তরময় সমতলভূমি গড়ে ওঠে, তাকে পেডিমেন্ট বলে।মরু অঞ্চলে পর্বতের পাদদেশে বায়ু ও জলধারার মিলিত সঞ্চয়কার্যের ফলে যে বালুময় সমতল ভূমির সৃষ্টি হয়, তাকে বাজাদা বলে।
গঠনমূলত ছোটো বড়ো প্রস্তরখণ্ড, নুড়ি, কাঁকর দ্বারা গঠিত হয়।মূলত সূক্ষ্ম পলি, বালি দ্বারা গঠিত হয়।
অবস্থানপর্বতের পাদদেশীয় ঢালের ঊর্ধ্বাংশে গঠিত হয়।পাদদেশীয় ঢালের নিম্নাংশে গঠিত হয়।
ঢালপেডিমেন্টের ঢাল অপেক্ষাকৃত বেশি (10°-12°)।বাজাদার ঢাল অত্যন্ত কম (3°-4°)।
পেডিমেন্ট (Pediment) ও বাজাদা (Bajada)
পেডিমেন্ট (Pediment) ও বাজাদা (Bajada)

ব-দ্বীপ সমভূমি (Delta Plain) ও উপকূলীয় সমভূমির (Coastal Plain) পার্থক্য লেখো।

বিষয়ব-দ্বীপ সমভূমি (Delta plain)উপকূলীয় সমভূমি (Coastal plain)
সৃষ্টিনদী মোহানায় পলি বালি দ্বারা সমুদ্রগর্ভ ভরাট হয়ে ব-দ্বীপ সমভূমি সৃষ্টি হয়।উপকূল অংশে সমুদ্র তরঙ্গের কার্যের ফলে ভূ-আলোড়নের ফলে উপকূলীয় সমভূমি সৃষ্টি হয়।
গঠনকারী শক্তিপ্রধানত নদীর সঞ্চয়কার্যের ফলেই ব-দ্বীপ গঠিত হয়।সমুদ্র তরঙ্গ ও নদীর মিলিত কার্য ও ভূ-আলোড়নের প্রভাবে সৃষ্টি হয়।
গঠনকারী উপাদানমূলত সূক্ষ্ম পলিবালি দ্বারা এই সমভূমি গঠিত হয়।নুড়ি, কাঁকর, পলি, বালি দ্বারা এই সমভূমি গঠিত হয়।
অবস্থানকেবলমাত্র নদী মোহানায় এই সমভূমি গড়ে ওঠে।সমস্ত উপকূল ভাগেই এই সমভূমি কম-বেশি দেখা যায়।
ঢালএই সমভূমি অত্যন্ত মৃদু ঢালযুক্ত হয়।ব-দ্বীপ সমভূমি অপেক্ষা এর ঢাল বেশি।
ভূ-দৃশ্যএই সমভূমিতে অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ, জলাভূমি দেখা যায়।এই সমভূমিতে বালিয়াড়ি, উপহ্রদ বা লেগুন দেখা যায়।
উদাহরণগঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র ব-দ্বীপ সমভূমি।ভারতের পূর্ব ও পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি।

আগ্নেয় পর্বত বা সঞ্চয়জাত পর্বত এবং ক্ষয়জাত পর্বত -এর মধ্যে পার্থক্য লেখো।

বিষয়আগ্নেয়/সঞ্চয়জাত পর্বত (Volcanic mountain)ক্ষয়জাত পর্বত (Erosional mountain)
উৎপত্তিভূ-অভ্যন্তরের উত্তপ্ত গলিত ম্যাগমা ভূপৃষ্ঠে সঞ্চিত হয়ে আগ্নেয় পর্বতের উৎপত্তি ঘটে।ভঙ্গিল, স্তূপ বা আগ্নেয় পর্বত বহুদিন ধরে ক্রমাগত ক্ষয় পেয়ে ক্ষয়জাত পর্বতের উৎপত্তি ঘটে।
আকৃতিআগ্নেয় পর্বত শঙ্কু আকৃতির হয়।এই পর্বতের কোনো বিশেষ আকার নেই।
উচ্চতাআগ্নেয় পর্বতের উচ্চতা অনেক বেশি এবং ক্রমান্বয়ে লাভা সঞ্চয়ের ফলে উচ্চতা বৃদ্ধি পায়।ক্ষয়জাত পর্বতের উচ্চতা তুলনামূলকভাবে কম এবং ক্ষয়ের ফলে ধীরে ধীরে হ্রাস পায়।
বয়সআগ্নেয় পর্বত বয়সে নবীন।ক্ষয়জাত পর্বত বয়সে প্রাচীন।
শিলাএই পর্বত সাধারণত নবীন আগ্নেয়শিলা দ্বারা গঠিত।এই পর্বত প্রাচীন আগ্নেয়, পাললিক বা রূপান্তরিত শিলা দ্বারা গঠিত।
উদাহরণফুজিয়ামা, ভিসুভিয়াস প্রভৃতি।আরাবল্লি, অ্যাপেলেশিয়ান প্রভৃতি।
গঠনকারী শক্তিভূ-অন্তর্জাত শক্তির প্রভাবে সৃষ্টি হয়।বহির্জাত শক্তির প্রভাবে সৃষ্টি হয়।
জ্বালামুখএক বা একাধিক জ্বালামুখ দেখা যায়।জ্বালামুখ দেখা যায় না।

পাহাড় (Hill), পর্বত (Mountain), মালভূমি (Plateau) ও সমভূমি (Plain) -এর তুলনামূলক আলোচনা করো।

বিষয়পাহাড় (Hill)পর্বত (Mountain)মালভূমি (Plateau)সমভূমি (Plain)
উচ্চতাপাহাড় সাধারণত 1000 মিটারের কম উচ্চতাবিশিষ্ট হয়।পর্বত সাধারণত 1000 মিটারের বেশি উচ্চতাবিশিষ্ট হয়।মালভূমি সাধারণত 300 মিটারের বেশি উচ্চতাবিশিষ্ট হয়।সমভূমি সাধারণত 300 মিটারের কম উচ্চতাবিশিষ্ট হয়।
বিস্তারপাহাড় অল্প দূর বিস্তৃত এবং বিচ্ছিন্নভাবে অবস্থান করে।পর্বত বহুদূর বিস্তৃত এবং একটানা অবস্থান করে।মালভূমি বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে অবস্থান করে।সমভূমি সুবিশাল অঞ্চল জুড়ে অবস্থান করে।
গঠনকারী শক্তিঅধিকাংশ পাহাড় বহির্জাত শক্তির ফলে গঠিত হয়।অধিকাংশ পর্বত ভূ-অভ্যন্তরীণ শক্তির ফলে গঠিত হয়।মালভূমি অন্তর্জাত ও বহির্জাত দুই শক্তির প্রভাবেই সৃষ্টি হয়।সমভূমি অন্তর্জাত ও বহির্জাত দুই শক্তির প্রভাবেই সৃষ্টি হয়।
বন্ধুরতাপাহাড়ের বন্ধুরতা কম।পর্বতের ভূমিরূপের বন্ধুরতা খুব বেশি।মালভূমি বেশ বন্ধুর, তবে পর্বতের তুলনায় কম।সমভূমি প্রায় সমতল, বন্ধুরতা তেমন দেখা যায় না।
ঢালপাহাড়ের ঢাল বেশি খাড়া হয় না। 45° -এর মধ্যে অবস্থান করে।পর্বতের ঢাল খুব খাড়া হয়।মালভূমির চারদিক খাড়া ঢালবিশিষ্ট হয়।সমভূমি সামান্য মৃদু ঢালযুক্ত হয়।
শীর্ষদেশ বা উপরিভাগপাহাড়ের চূড়াগুলি তীক্ষ্ণ হয় না।পর্বতের শৃঙ্গগুলি অতি তীক্ষ্ণ ও ছুঁচালো।মালভূমির উপরিভাগ তরঙ্গায়িত হয়।সমভূমির উপরিভাগ সমতল প্রকৃতির।
বরফের আবরণপাহাড়ের চূড়ায় তেমন বরফ দেখা যায় না।পর্বতের শৃঙ্গগুলি সাধারণত বরফাবৃত থাকে।পৃথিবীতে কিছু বরফাবৃত মালভূমি আছে। যেমন – আন্টার্কটিকা।পৃথিবীর কিছু সমভূমি বরফাবৃত। যেমন – সাইবেরিয় সমভূমি।
মাটিপাহাড়ের মাটি পাথুরে ও অনুর্বর।পর্বতের মাটি পাথুরে ও অনুর্বর।মালভূমির মাটি কাঁকরযুক্ত ও অনুর্বর।সমভূমির মাটি পলি সমৃদ্ধ ও উর্বর।
আকৃতিপাহাড়গুলি গম্বুজাকৃতির হয়।পর্বতগুলি শঙ্কু আকৃতির হয়।মালভূমির আকৃতি সাধারণত টেবিলের মতো হয়।সমভূমির আকৃতি সমতল।
উদাহরণপরেশনাথ, রাজমহল, শুশুনিয়া প্রভৃতি।হিমালয়, ফুজিয়ামা, সাতপুরা, আরাবল্লি প্রভৃতি।পামির, তিব্বত, দাক্ষিণাত্য মালভূমি, ছোটোনাগপুর প্রভৃতি।গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-সিন্ধু সমভূমি, ইয়াংসি কিয়াং সমভূমি প্রভৃতি।

ভূ-বিজ্ঞানী উইলিয়াম মরিস ডেভিসের ‘স্বাভাবিক ক্ষয়চক্রের’ ধারণাটি লেখো?

ভূ-বিজ্ঞানী উইলিয়াম মরিস ডেভিস তাঁর ‘স্বাভাবিক ক্ষয়চক্রের’ ধারণায় বলেছেন নদীর তিনটি পর্যায়ের (যৌবন, পরিণত, বার্ধক্য) শেষ পর্যায়ে অর্থাৎ বার্ধক্যে উচ্চভূমি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে ক্ষয়ের শেষ সীমায় পৌঁছে প্রায় সমতল ভূমিরূপ তৈরি করে। এই প্রায় সমতল ভূমিরূপকে তিনি পেনিপ্লেন আখ্যা দিয়েছেন।


আমরা আমাদের আর্টিকেলে নবম শ্রেণীর ভূগোলের চতুর্থ অধ্যায় ‘ভূ-গাঠনিক প্রক্রিয়া এবং পৃথিবীর বিভিন্ন ভূমিরূপ’ এর কিছু পার্থক্যধর্মী প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষার জন্য বা চাকরির পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি নবম শ্রেণীর পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায় দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে, আপনারা আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাছাড়া নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Share via:

মন্তব্য করুন