এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।
আমরা আমাদের আর্টিকেলে নবম শ্রেণীর ভূগোলের তৃতীয় অধ্যায় ‘পৃথিবীপৃষ্ঠে কোনো স্থানের অবস্থান নির্ণয়’ এর কিছু পার্থক্যধর্মী প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষার জন্য ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
নবম শ্রেণী – ভূগোল – পৃথিবীপৃষ্ঠে কোনো স্থানের অবস্থান নির্ণয় – পার্থক্যধর্মী প্রশ্নোত্তর
মহাবৃত্ত (Great Circle) ও ক্ষুদ্রবৃত্ত (Small Circle) -এর মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করো।
বিষয়
মহাবৃত্ত (Great Circle)
ক্ষুদ্রবৃত্ত (Small Circle)
কেন্দ্রবিন্দু
ভূগোলকের কেন্দ্র ও মহাবৃত্তের কেন্দ্র একই বিন্দুতে অবস্থান করে।
ভূগোলকের কেন্দ্র ও ক্ষুদ্রবৃত্তের কেন্দ্র কখনো একই বিন্দুতে অবস্থান করে না।
পরিধি
ভূগোলকের ওপর অঙ্কিত প্রতিটি মহাবৃত্তের পরিধি সমান হয়।
ভূগোলকের ওপর অঙ্কিত প্রতিটি ক্ষুদ্রবৃত্তের পরিধি সাধারণত আলাদা আলাদা হয়।
সমান ভাগ
মহাবৃত্ত বরাবর ভূগোলক ভাগ করলে সমান দুটি ভাগ হবে।
ক্ষুদ্রবৃত্ত বরাবর ভূগোলককে কখনো সমান দু-ভাগে ভাগ করা যাবে না।
আকৃতি
মহাবৃত্তই হল ভূগোলকের সর্ববৃহৎ বৃত্ত।
অন্যান্য যে-কোনো আকৃতির বৃত্তই ক্ষুদ্রবৃত্ত।
উদাহরণ
পৃথিবীর নিরক্ষরেখা।
নিরক্ষরেখা ছাড়া অন্যান্য অক্ষরেখা।
অক্ষাংশ (Latitude) ও অক্ষরেখা (Parallels of latitude) -এর মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করো।
বিষয়
অক্ষাংশ (Latitude)
অক্ষরেখা (Parallels of latitude)
সংজ্ঞা
নিরক্ষরেখার উত্তর বা দক্ষিণে অবস্থিত কোনো স্থানের কৌণিক দূরত্বের মান হল অক্ষাংশ।
ভূপৃষ্ঠের ওপর দিয়ে নিরক্ষরেখার সমান্তরালে পূর্ব-পশ্চিমে অঙ্কিত কাল্পনিক বৃত্তাকার রেখাগুলির নাম অক্ষরেখা।
ধারণা
ভূপৃষ্ঠের কোনো স্থান থেকে ভূকেন্দ্র পর্যন্ত টানা একটি সরলরেখা নিরক্ষীয়তলের সঙ্গে যে কোণ উৎপন্ন করে, সেই কৌণিক দূরত্বই হল ওই স্থানটির অক্ষাংশ।
ভূপৃষ্ঠের একই কৌণিক মানবিশিষ্ট স্থানগুলির ওপর দিয়ে পূর্ব-পশ্চিমে অঙ্কিত কাল্পনিক রেখাগুলির নাম অক্ষরেখা।
দূরত্ব
অক্ষাংশ হল কৌণিক দূরত্ব।
অক্ষরেখা হল রৈখিক দূরত্ব।
প্রকৃতি
অক্ষাংশ স্থির ও নির্দিষ্ট স্থানবিন্দু।
অক্ষরেখাগুলি পূর্ণবৃত্ত।
অবস্থান
কটি অক্ষাংশ কেবলমাত্র একটি স্থানের অক্ষাংশগত অবস্থানকে নির্দেশ করে। যেমন – কলকাতার অক্ষাংশ 22°34′ উত্তর।
একটি অক্ষরেখা একাধিক স্থানের অক্ষাংশগত অবস্থানকে নির্দেশ করে। যেমন – 23½° উত্তর অক্ষরেখায় অবস্থিত স্থানসমূহ।
প্রসার
অক্ষাংশ কেবলমাত্র একটি দ্রাঘিমার ওপর প্রসারিত।
অক্ষরেখাগুলি একাধিক দ্রাঘিমার ওপর প্রসারিত।
স্থানীয় সময় (Local Time) ও প্রমাণ সময় (Standard Time) -এর মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করো।
বিষয়
স্থানীয় সময় (Local Time)
প্রমাণ সময় (Standard Time)
প্রকৃতি
কোনো স্থানের মধ্যাহ্ন সূর্যের অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে যে সময় নির্ণয় করা হয়, তাকে স্থানীয় সময় বলে।
কোনো একটি দেশের প্রশাসনিক কাজকর্ম পরিচালনার জন্য দেশের মধ্যভাগ দিয়ে প্রসারিত নির্দিষ্ট দ্রাঘিমারেখার স্থানীয় সময়কে প্রমাণ সময় বলে।
ভিত্তি
স্থানীয় সময় নির্ণয়ের ভিত্তি হল স্থানীয় দ্রাঘিমারেখার ওপর মধ্যাহ্ন সূর্যের অবস্থান।
প্রমাণ সময় নির্ণয়ের ভিত্তি হল দেশের মাঝ বরাবর প্রসারিত দ্রাঘিমারেখার স্থানীয় সময়।
সংখ্যা
একটি দেশে বিভিন্ন স্থানীয় সময় লক্ষ করা যায়।
সাধারণত পূর্ব-পশ্চিমে অপেক্ষাকৃত স্বল্পবিস্তৃত দেশের ক্ষেত্রে একটি প্রমাণ সময় লক্ষ করা যায়।
উপযোগিতা
একই দেশের ভিন্ন স্থানের স্থানীয় সময় ভিন্ন হওয়ায়, স্থানীয় সময়ের ব্যবহার কম।
সারা দেশের প্রমাণ সময় এক ও অভিন্ন হওয়ায় পৃথিবীর সব দেশেই প্রমাণ সময় ব্যবহৃত হয়।
উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক
দ্রাঘিমারেখার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় সময়েরও পরিবর্তন হয়।
দ্রাঘিমারেখার পরিবর্তন ঘটলে সাধারণভাবে প্রমাণ সময়ের পরিবর্তন হয় না। তবে, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে এই নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটে।
নিরক্ষরেখা (Equator) ও মূলমধ্যরেখা (Prime Meridian) -এর মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করো।
বিষয়
নিরক্ষরেখা (Equator)
মূলমধ্যরেখা (Prime Meridian)
বিস্তার
নিরক্ষরেখা পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত।
মূলমধ্যরেখা উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত।
আকার
নিরক্ষরেখা পূর্ণবৃত্ত।
মূলমধ্যরেখা অর্ধবৃত্ত।
গণনা
নিরক্ষরেখা থেকে অক্ষরেখা গণনা করা হয়।
মূলমধ্যরেখা থেকে দ্রাঘিমারেখা গণনা করা হয়।
ভাগ
নিরক্ষরেখা পৃথিবীকে উত্তর গোলার্ধ ও দক্ষিণ গোলার্ধে ভাগ করেছে।
মূলমধ্যরেখা 180° দ্রাঘিমারেখার সঙ্গে মিলিত হয়ে পৃথিবীকে পূর্ব ও পশ্চিম গোলার্ধে ভাগ করেছে।
দ্রাঘিমা (Longitude) ও দ্রাঘিমারেখা (Meridians of longitude) -এর মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করো।
বিষয়
দ্রাঘিমা (Longitude)
দ্রাঘিমারেখা (Meridians of longitude)
সংজ্ঞা
মূলমধ্যরেখা থেকে পূর্ব বা পশ্চিমদিকে অবস্থিত কোনো স্থানের কৌণিক দূরত্বকে সেই স্থানের দ্রাঘিমা বলে।
ভূপৃষ্ঠের ওপর সুমেরুবিন্দু থেকে কুমেরুবিন্দু পর্যন্ত উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত অর্ধবৃত্তাকার কাল্পনিক রেখাগুলিকে দ্রাঘিমারেখা বলে।
ধারণা
নিরক্ষীয়তল বরাবর ভূপৃষ্ঠের কোনো স্থান থেকে ভূকেন্দ্র পর্যন্ত টানা একটি সরলরেখা ও মূলমধ্যরেখা থেকে ভূকেন্দ্র পর্যন্ত টানা অপর একটি সরলরেখার মধ্যবর্তী কৌণিক দূরত্বই হল ওই স্থানটির দ্রাঘিমা।
ভূপৃষ্ঠের একই কৌণিক মানবিশিষ্ট উত্তর-দক্ষিণে অবস্থিত স্থানগুলির ওপর দিয়ে অঙ্কিত কাল্পনিক রেখাগুলি হল দ্রাঘিমারেখা।
দূরত্ব
দ্রাঘিমা হল কৌণিক দূরত্ব।
দ্রাঘিমারেখা হল রৈখিক দূরত্ব।
প্রকৃতি
দ্রাঘিমা স্থির ও নির্দিষ্ট স্থানবিন্দু।
দ্রাঘিমারেখাগুলি অর্ধবৃত্ত।
অবস্থান
একটি দ্রাঘিমা কেবলমাত্র একটি স্থানের দ্রাঘিমাগত অবস্থানকে নির্দেশ করে। যেমন – কলকাতার দ্রাঘিমা 88°30′ পূর্ব।
একটি দ্রাঘিমারেখা একাধিক স্থানের দ্রাঘিমাগত অবস্থানকে নির্দেশ করে, যেমন – 60° দ্রাঘিমারেখায় অবস্থিত স্থানসমূহ।
প্রসার
দ্রাঘিমাগুলি কেবলমাত্র একটি অক্ষাংশের ওপর প্রসারিত।
দ্রাঘিমারেখাগুলি একাধিক অক্ষাংশের ওপর প্রসারিত।
অক্ষরেখা (Parallels of latitude) ও দ্রাঘিমারেখা (Meridians of longitude) -এর পার্থক্য নির্ণয় করো।
বিষয়
অক্ষরেখা (Parallels of latitude)
দ্রাঘিমারেখা (Meridians of longitude)
সংজ্ঞা
পৃথিবীর সমঅক্ষাংশযুক্ত স্থানগুলিকে যুক্ত করলে পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত যে কাল্পনিক রেখা পাওয়া যায়, তাকে অক্ষরেখা বলে।
পৃথিবীর সমদ্রাঘিমাযুক্ত স্থানগুলিকে যুক্ত করলে উত্তর-দক্ষিণে যে কাল্পনিক রেখা পাওয়া যায়, তাকে দ্রাঘিমারেখা বলে।
অক্ষরেখাগুলি পূর্ণবৃত্তাকার। প্রতিটি অক্ষরেখা পরস্পর সমান্তরাল।
দ্রাঘিমারেখাগুলি অর্ধবৃত্তাকার। প্রতিটি দ্রাঘিমারেখা পরস্পর সমান্তরাল নয়।
সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মান
অক্ষরেখার সর্বোচ্চ মান 90° এবং সর্বনিম্ন মান 0°।
দ্রাঘিমারেখার সর্বোচ্চ মান 180° এবং সর্বনিম্ন মান 0°।
মধ্যবর্তী দূরত্ব
পরস্পর সমান্তরাল হওয়ায় দুটি অক্ষরেখার মধ্যবর্তী দূরত্ব সর্বদা সমান।
পরস্পর সমান্তরাল না হওয়ায় দুটি দ্রাঘিমারেখার মধ্যবর্তী দূরত্ব নিরক্ষরেখায় সবচেয়ে বেশি হয় এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিকে এই দূরত্ব কমতে কমতে সুমেরু ও কুমেরু বিন্দুতে দ্রাঘিমারেখা দুটি মিলিত হয়।
পরিধি
অক্ষরেখাগুলির পরিধি নিরক্ষরেখা থেকে উভয় মেরুর দিকে ক্রমশ কমতে কমতে অবশেষে দুটি বিন্দুতে পরিণত হয়।
দ্রাঘিমারেখাগুলির পরিধি সর্বত্র সমান।
সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময়
একই অক্ষরেখায় সর্বত্র একই সময়ে সূর্যোদয়, মধ্যাহ্ন ও সূর্যাস্ত হয় না, আগে অথবা পরে হয়।
দ্রাঘিমারেখাগুলি পৃথিবীকে উত্তর-দক্ষিণে বেষ্টন করে রয়েছে বলে একই দ্রাঘিমারেখায় সর্বত্র একই সময়ে সূর্যোদয়, মধ্যাহ্ন ও সূর্যাস্ত হয়।
প্রয়োজনীয়তা
কোনো স্থান নিরক্ষরেখা থেকে কতটা উত্তর বা দক্ষিণে অবস্থিত তা জানতে হলে অক্ষরেখার প্রয়োজন।
কোনো স্থান মূলমধ্যরেখা থেকে কতটা পূর্বে বা পশ্চিমে অবস্থিত তা জানার জন্য দ্রাঘিমারেখার প্রয়োজন।
উষ্ণতার তারতম্য
একই অক্ষরেখার ওপর অবস্থিত বিভিন্ন স্থানের উষ্ণতার মধ্যে খুব একটা তারতম্য হয় না।
একই দ্রাঘিমারেখার ওপর অবস্থিত বিভিন্ন স্থানের উষ্ণতা তথা জলবায়ুর মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য দেখা যায়।
স্থানীয় সময়ের পার্থক্য
একই অক্ষরেখার ওপর অবস্থিত বিভিন্ন স্থানের স্থানীয় সময়ের মধ্যে পার্থক্য দেখা যায়।
একই দ্রাঘিমারেখার ওপর অবস্থিত বিভিন্ন স্থানের স্থানীয় সময় একই রকম হয়।
গ্রিনিচ সময় (Greenwich Mean Time) ও ভারতীয় প্রমাণ সময় (Indian Standard Time) -এর মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করো।
বিষয়
গ্রিনিচ সময় (Greenwich Mean Time)
ভারতীয় প্রমাণ সময় (Indian Standard Time)
সংজ্ঞা
0° দ্রাঘিমারেখার স্থানীয় সময়কে গ্রিনিচ সময় বলে।
82°30′ পূর্ব দ্রাঘিমারেখার স্থানীয় সময়কে ভারতীয়প্রমাণ সময় বলে।
সময়ের পার্থক্য
গ্রিনিচের সময় ও ভারতীয় প্রমাণ সময়ের পার্থক্য 5 ঘণ্টা 30 মিনিট এবং গ্রিনিচের সময় ভারতের প্রমাণ সময়ের থেকে পিছিয়ে থাকে।
ভারতের প্রমাণ সময় গ্রিনিচ সময়ের তুলনায় 5 ঘণ্টা 30 মিনিট এগিয়ে থাকে।
ব্যবহার
আন্তর্জাতিক সময় হিসেবে সারা পৃথিবীতে যাবতীয় কাজকর্ম করার জন্য গ্রিনিচ সময় ব্যবহৃত হয়।
ভারতে এলাহাবাদের বা 82°30′ পূর্ব দ্রাঘিমার স্থানীয় সময়কে ভারতের প্রমাণ সময় ধরে ভারতের যাবতীয় কাজকর্ম করা হয়।
আমরা আমাদের আর্টিকেলে নবম শ্রেণীর ভূগোলের তৃতীয় অধ্যায় ‘পৃথিবীপৃষ্ঠে কোনো স্থানের অবস্থান নির্ণয়’ এর কিছু পার্থক্যধর্মী প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষার জন্য বা চাকরির পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি নবম শ্রেণীর পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায় দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে, আপনারা আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাছাড়া নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।