এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

নবম শ্রেণী – ভূগোল – ভারতের সম্পদ (সম্পদের ধারণা, শ্রেণীবিভাগ ও সংরক্ষণ) – সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর

আমরা আমাদের আর্টিকেলে নবম শ্রেণীর ভূগোলের সপ্তম অধ্যায় ‘ভারতের সম্পদ (সম্পদের ধারণা শ্রেণীবিভাগ ও সংরক্ষণ)’ এর সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষার জন্য ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

ভারতের সম্পদ (সম্পদের ধারণা, শ্রেণীবিভাগ ও সংরক্ষণ) - সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর
ভারতের সম্পদ (সম্পদের ধারণা, শ্রেণীবিভাগ ও সংরক্ষণ) – সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর
Contents Show

স্থায়িত্ব অনুসারে সম্পদের শ্রেণিবিভাগ করো ও বর্ণনা দাও।

স্থায়িত্ব অনুসারে সম্পদ পাঁচ প্রকার। যথা –

গচ্ছিত বা ক্ষয়িষ্ণু বা অপুনর্ভব সম্পদ – যে-সকল সম্পদ প্রাকৃতিক পরিবেশে নির্দিষ্ট পরিমাণে সঞ্চিত আছে, তাদের সঞ্চিত বা গচ্ছিত সম্পদ বলে। নির্দিষ্ট পরিমাণে গচ্ছিত এই সম্পদগুলি ব্যবহারের ফলে ক্রমশ ক্ষয় হয়ে যায় বলে, একে ক্ষয়িষ্ণু সম্পদ বলে। আবার, এই সম্পদগুলি ব্যবহারের পর পুনরায় সৃষ্টি করে পরিবেশে ফিরিয়ে দেওয়া যায় না, তাই এগুলি অপুনর্ভব সম্পদ নামে পরিচিত।

গচ্ছিত বা ক্ষয়িষ্ণু বা অপুনর্ভব সম্পদ
গচ্ছিত বা ক্ষয়িষ্ণু বা অপুনর্ভব সম্পদ

উদাহরণ – কয়লা, খনিজ তেল, আকরিক লোহা, তামা, বক্সাইট, টিন প্রভৃতি।

অবাধ বা প্রবহমান সম্পদ – যে-সকল সম্পদ বারবার ব্যবহারের ফলেও শেষ হওয়ার সম্ভাবনা নেই, তাদের অবাধ বা প্রবহমান বা অফুরন্ত সম্পদ বলে।

প্রবহমান সম্পদ
প্রবহমান সম্পদ

উদাহরণ – সূর্যালোক, বায়ুপ্রবাহ, জলপ্রবাহ প্রভৃতি।

পুনর্ভব সম্পদ – কতকগুলি সম্পদ আছে যেগুলি ব্যবহারের ফলে সাময়িকভাবে হ্রাস পেলেও পুনরায় তা সৃষ্টি করা যায়, তাদের পুনর্ভব বা পূরণশীল সম্পদ বলে।

পুনর্ভব বা পূরণশীল সম্পদ
পুনর্ভব বা পূরণশীল সম্পদ

উদাহরণ – অরণ্য, তৃণভূমি, মৎস্য সম্পদ প্রভৃতি।

রুদ্ধ প্রবহমান সম্পদ – কোনো কোনো প্রবহমান সম্পদ যথেচ্ছভাবে ব্যবহারের ফলে কমতে কমতে একসময় অবলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। এই জাতীয় সম্পদকে রুদ্ধ প্রবহমান সম্পদ বলে।

রুদ্ধ প্রবহমান সম্পদ
রুদ্ধ প্রবহমান সম্পদ

উদাহরণ – নির্বিচারে অরণ্য সংহারের ফলে অরণ্য রুদ্ধ প্রবহমান সম্পদে পরিণত হতে পারে।

আবর্তনীয় গচ্ছিত সম্পদ – যে-সকল গচ্ছিত সম্পদ ব্যবহারের পর পুনরায় ব্যবহার করা যায়, তাদের আবর্তনীয় গচ্ছিত সম্পদ বলে।

উদাহরণ – বাতিল বা ছাঁট লোহা, পরিত্যক্ত অ্যালুমিনিয়াম প্রভৃতি।

নিরপেক্ষ সামগ্রী (Neutral stuff) কাকে বলে?

পৃথিবীতে উপস্থিত যে-সমস্ত দ্রব্য বা উপাদান মানুষের কোনো চাহিদা মেটায় না, আবার কোনো ক্ষতিসাধনও করে না, তাদের নিরপেক্ষ সামগ্রী বলে। সংস্কৃতির ব্যবহার ঘটিয়ে মানুষই নিরপেক্ষ সামগ্রী থেকে নতুন সম্পদ সৃষ্টি করে। যেমন – আন্টার্কটিকা মহাদেশে সঞ্চিত খনিজ ভাণ্ডার একটি নিরপেক্ষ সামগ্রীর উদাহরণ। কারণ – প্রতিকূল প্রাকৃতিক পরিবেশে খনিজ সম্পদ উত্তোলন মানুষের পক্ষে অসম্ভব। তবে এটির ভবিষ্যতে নিরপেক্ষ সামগ্রী থেকে মূল্যবান সম্পদে পরিণত হবার সম্ভাবনা রয়েছে।

সম্পদ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা কী?

সম্পদ গচ্ছিত হোক বা প্রবহমান, বিরামহীন অপরিকল্পিত ব্যবহারের ফলে তার ক্ষয় অনিবার্য। তাই যে-কোনো সম্পদ সংরক্ষণ আবশ্যক। সম্পদ সংরক্ষণের মূল প্রয়োজনীয়তাগুলি হল –

  • জোগান অব্যাহত রাখা – বর্তমান প্রজন্মের চাহিদা মেটানোর সঙ্গে সঙ্গে ভাবী প্রজন্মের জন্য সম্পদের জোগান অব্যাহত রাখতে সম্পদ সংরক্ষণ একান্ত প্রয়োজন।
  • পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা – পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার তাগিদে জৈব, অজৈব সকল প্রকার সম্পদ সংরক্ষণ করা দরকার।
  • জৈব বৈচিত্র্য রক্ষা – জৈব বৈচিত্র্য রক্ষার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন জৈবসম্পদ (অরণ্য, মৎস্য, পশু, পাখি প্রভৃতি) সংরক্ষণ করা অবশ্যই প্রয়োজন।
  • আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি – ভাবী প্রজন্মের জন্য উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে ক্ষয়ি সম্পদগুলির (কয়লা, খনিজ তেল, তামা, আকরিক লোহা প্রভৃতি) আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি করার প্রয়োজনে সম্পদ সংরক্ষণ করা দরকার।
  • পরিবেশের অবনমন রোধ – সম্পদের ক্রমবর্ধমান ব্যবহার পরিবেশের অবনমন ঘটায়। তাই পরিবেশের অবনমন রোধ করার জন্য সম্পদ সংরক্ষণ প্রয়োজন।
  • বিপর্যয় মোকাবিলা – সম্পদ সংরক্ষণ বিপর্যয় মোকাবিলায় সাহায্য করে। তাই সম্পদ সংরক্ষণ আবশ্যক।
  • অর্থনৈতিক উন্নতি – সম্পদের যথোপযুক্ত সংরক্ষণ দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির সহায়ক হয়।

ক্রায়োলাইট কী?

ক্রায়োলাইট (Na3 AIF16) – এটি সাদা রঙের বা বর্ণহীন খনিজ। অ্যালুমিনা থেকে অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদনের জন্য দ্রাবকরূপে ক্রায়োলাইট ব্যবহৃত হয়। এটি শুধুমাত্র গ্রিনল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিমে ইভিটাট অঞ্চলেই পাওয়া যায়, এই জন্য একে অদ্বিতীয় বা একমাত্রলভ্য সম্পদ বলে।

অবরুদ্ধ প্রবহমান সম্পদ কাকে বলে?

অবরুদ্ধ প্রবহমান সম্পদ – যে সম্পদ ক্রমাগত ব্যবহার করলেও নিঃশেষিত হয় না, তাকে প্রবহমান সম্পদ বলে। যেমন – সৌররশ্মি থেকে উৎপন্ন সৌরশক্তি।

কিন্তু, পুনর্ভব সম্পদের যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে অদূর ভবিষ্যতে এই সম্পদ সম্পূর্ণ বিনষ্ট হতে পারে নতুবা গচ্ছিত বা অপুনর্ভব সম্পদে পরিণত হবে। এ ধরনের রূপান্তরিত প্রবহমান সম্পদকে জিমারম্যান অবরুদ্ধ প্রবহমান সম্পদ বলে ব্যাখ্যা করেছেন।

উদাহরণ – অরণ্যভূমি প্রবহমান বা পুনর্ভব সম্পদ হলেও এর যথেচ্ছ ব্যবহার, বৃক্ষচ্ছেদন বৃদ্ধি পেলে এই সম্পদ ক্রমশ হ্রাস পেয়ে বিলুপ্ত হতে পারে।

নিরপেক্ষ সামগ্রী থেকে সম্পদ কীভাবে সৃষ্টি হয়?

অথবা, কোনো নিরপেক্ষ বস্তুর সম্পদ হয়ে ওঠার শর্তগুলি কী কী?

নিরপেক্ষ সামগ্রী – যে সকল বস্তু বা পদার্থের মানুষের অভাব মোচনের ক্ষেত্রে কোনোরূপ অনুকূল বা প্রতিকূল প্রভাব থাকে না, তাদের নিরপেক্ষ সামগ্রী বলে।

নিরপেক্ষ সামগ্রী থোক সম্পদ সৃষ্টি –

জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত কৌশল – যেহেতু মানুষের মস্তিষ্ক অন্যান্য প্রাণীর থেকে উন্নত, তাই মানুষ জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত কৌশলকে কাজে লাগিয়ে নিরপেক্ষ সামগ্রীগুলিকে সম্পদে পরিণত করে।

উদাহরণ – মালাবার উপকূলের বালুকারাশি থেকে তেজস্ক্রিয় পদার্থ থোরিয়াম সংগ্রহ করা।

প্রাকৃতিক বাধা অতিক্রম – প্রাচীনকাল থেকে মানুষ বিভিন্ন ভাবে প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে চলেছে। জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রসারের ফলে মানুষ আজ প্রাকৃতিক বাধা বিপত্তিকে উপেক্ষা করে বিভিন্ন নিরপেক্ষ সামগ্রীকে সম্পদের রূপ দান করেছে।

উদাহরণ – বর্তমানে সাহারা মরুভূমি ও উত্তর সাগর থেকে খনিজ তেল উত্তোলন করা হয়েছে।

চাহিদা – পুরাতন প্রস্তর যুগে মানুষ কয়লার ব্যবহার জানত না। কিন্তু পরবর্তীকালে তাপ ও শক্তির চাহিদা পুরণের ক্ষেত্রে কয়লার ব্যবহার শিখল। সুতরাং, প্রাচীনকালে যে সকল দ্রব্যসামগ্রী ছিল নিরপেক্ষ সামগ্রী, আজ তা সম্পদ হয়েছে এবং আজ যা নিরপেক্ষ সামগ্রী ভবিষ্যতে তা সম্পদে পরিণত হতে পারে।

সম্পদের পুনরাবর্তন কাকে বলে?

অথবা, আবর্তনীয় সঞ্চিত সম্পদ কাকে বলে?

গচ্ছিত বা অপুনর্ভব সম্পদ -এর পরিমাণ নির্দিষ্ট এবং এটি ক্রমাগত ব্যবহারের ফলে নিঃশেষিত হতে থাকে। যেমন – বক্সাইট, আকরিক লোহা প্রভৃতি। কিন্তু বক্সাইট থেকে উৎপাদিত অ্যালুমিনিয়াম বা আকরিক লোহা থেকে উৎপাদিত ইস্পাতজাত সামগ্রী একবার ব্যবহারের পর অকেজো হয়ে গেলেও তাকে গলিয়ে অর্থাৎ, পুনরাবর্তন (Recycling) করে নতুন দ্রব্য তৈরি করার পদ্ধতিকে সম্পদের পুনরাবর্তন (Recycling of resources) বলে এবং এইভাবে সঞ্চিত সম্পদও প্রবহমান সম্পদে পরিণত হবে। একইভাবে অব্যবহার্য ধাতব আবর্জনা (scrap) থেকে সম্পদের পুনরাবর্তন প্রক্রিয়ায় সিসা, তামা, নিকেল প্রভৃতি ধাতু নিষ্কাশন করে তা দিয়ে নতুন ধাতব দ্রব্য তৈরি করা যাবে। এইভাবে সৃষ্ট গচ্ছিত বা সঞ্চিত সম্পদ, আবর্তনীয় সম্পদে পরিণত হলে, তাকে আবর্তনীয় সঞ্চিত সম্পদ বলে সম্পদ শাস্ত্রকার জিমারম্যান বর্ণনা করেছেন।

সম্পদের মালিকানা অনুসারে উদাহরণসহ সম্পদের শ্রেণিবিভাগ করো।

সংজ্ঞা – কোনো ব্যক্তির নিজস্ব সম্পদকে ব্যক্তিগত সম্পদ বলে।

বৈশিষ্ট্য –

  • এই সম্পদ স্পর্শযোগ্য বা অস্পর্শযোগ্য মৌকেই উভয়ই হতে পারে।
  • ইহা পুনর্ভব বা ক্ষয়িষ্ণু উভয় প্রকার গীত হতে পারে।
  • এই সম্পদ প্রাকৃতিক বা সাংস্কৃতিক যে-কোনো প্রকার হতে পারে।

উদাহরণ – নিজের জমি, বাড়ি, টাকাপয়সা, অলংকার সামগ্রী, নিজের বুদ্ধি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি।

সম্পদের বাধা বলতে কী বোঝো? উদাহরণ সহযোগে সম্পদের বাধা সম্পর্কে আলোচনা করো।

সম্পদ আহরণ ও উৎপাদনের ক্ষেত্রে যেসব বাধা বা প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়, যার ফলে সম্পদ সৃষ্টি ব্যাহত হয়, তাদেরকে সম্পদের বাধা বলে।

  • প্রাকৃতিক বাধা – বন্ধুর ভূপ্রকৃতি, ঘূর্ণিঝড়, প্রতিকূল আবহাওয়া, বন্যা, খরা, ভূমিকম্প, ধস প্রভৃতি।
  • সামাজিক বাধা – কুসংস্কার, অশিক্ষা, বর্ণবিদ্বেষ, ধর্মান্ধতা প্রভৃতি।
  • মানবিক বাধা – জনবিস্ফোরণ, অপুষ্টি, অস্বাস্থ্য, বিরল জনসংখ্যা, মারণব্যাধি প্রভৃতি।
  • অর্থনৈতিক বাধা – কালোবাজারি, দুর্নীতি, মুদ্রাস্ফীতি প্রভৃতি।

উদাহরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা – হিমালয়ের সুউচ্চ ঢালে পাইন গাছের বিস্তৃত অরণ্য আছে। কাগজ শিল্পের জন্য ওই নরম কাঠের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও পার্বত্য বন্ধুর ভূপ্রকৃতি,  অতিশীতল আবহাওয়া, দক্ষ শ্রমিকের অভাব, কাষ্ঠ আহরণের বেশি পরিবহণ ব্যয় প্রভৃতি ওই নরম কাষ্ঠ সম্পদের বাধা হিসেবে কাজ করে।

“জ্ঞান হল সম্পদের প্রকৃত জননী”- কারণ ব্যাখ্যা করো।

“প্রকৃতি, মানুষ ও সংস্কৃতি” – এই তিন উপাদানের সমন্বয়ে সম্পদ সৃষ্টি হয়। সংস্কৃতির মধ্যে মানুষের জ্ঞান অন্যতম। জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্নতির জন্য মানুষ প্রাকৃতিক বাধাকে প্রতিরোধ করে নতুন নতুন সম্পদ সৃষ্টি করতে পেরেছে। প্রকৃতির উপাদান আছে, মানুষও আছে, কিন্তু মানুষের জ্ঞান যদি না থাকে তাহলে সম্পদ সৃষ্টি হতে পারে না। আদিম মানুষ থেকে বিবর্তনের পথ ধরে মানুষ যত আধুনিক হয়েছে, মানুষের জ্ঞানের পরিধি তত বেড়েছে এবং ততই সম্পদের সৃষ্টি হয়েছে। যেমন – মানুষ তার জ্ঞানের দ্বারা নদীর জলস্রোতকে কাজে লাগিয়ে জলবিদ্যুৎ তৈরি করেছে। তাই বলা হয় “জ্ঞান হল সম্পদের প্রকৃত জননী”।

সম্পদ সংরক্ষণ (Conservation of Resources) কাকে বলে? 

মানব সমাজের কল্যাণের জন্য সম্পদকে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করতে হলে সম্পদ সংরক্ষণ করা দরকার।

সম্পদ সংরক্ষণের উদ্দেশ্য

  • সম্পদকে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে সম্পদের যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধ করে তাকে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা
  • ভবিষ্যতে মানুষের সুবিধার জন্যে বর্তমানে ত্যাগ স্বীকার করা। এর ফলে বহু সংখ্যক মানুষের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে
  • সম্পদের স্থায়িত্ব বাড়ানোর উদ্দেশ্যে অপচয় নিবারণ করে সম্পদ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা
  • সম্পদের দ্রুত উৎপাদন এবং অতি ব্যবহার কমিয়ে তাকে সংরক্ষণ করা
  • পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা ও প্রাকৃতিক সম্পদগুলিকে তাদের নিজস্ব পরিবেশে রক্ষা করার জন্যও সম্পদ সংরক্ষণ জরুরি।

সম্পদ সৃষ্টিতে মানুষের দ্বৈত ভূমিকাটি (Dual Role) ব্যাখ্যা করো।

সম্পদ সৃষ্টি এবং উন্নয়নের ক্ষেত্রে মানুষ দ্বৈত ভূমিকা পালন করে। একদিকে সে সম্পদ উৎপাদন করে এবং অপর দিকে সে তা ভোগ করে।

সম্পদ স্রষ্টা বা উৎপাদকের ভূমিকায় মানুষ – সম্পদের স্রষ্টা বা উৎপাদক হিসেবে মানুষ তার কায়িক এবং মানসিক দু-রকম শ্রমই প্রয়োগ করে থাকে।

সম্পদ স্রষ্টা হিসেবে মানুষের গুরুত্ব –

  • মানুষের হস্তক্ষেপ ব্যতীত সম্পদের উৎপাদন সম্ভব নয়
  • সম্পদ উৎপাদনে মানুষের শ্রম সর্বাধিক কার্যকরী হয় তখনই, যখন তা মানসিক বৃত্তিতে সীমাবদ্ধ থাকে
  • একমাত্র পশুশক্তি এবং যন্ত্র ব্যবহার করে মানুষ কায়িক শ্রমের গ্লানি থেকে মুক্ত হয়ে মানসিক শ্রমে আত্মনিয়োগ করার সুযোগ পায়
  • উন্নত ধরনের মানসিক বৃত্তির জন্য মানুষকে উপযুক্তভাবে গড়ে তুলতে হয়। এর জন্য মানুষের প্রয়োজন হয় স্বাস্থ্য, আধুনিক শিক্ষা ও প্রযুক্তিবিদ্যা।

সম্পদের ভোগকারীর ভূমিকায় মানুষ – সম্পদের সৃষ্টি এবং উন্মোচনে ভোক্তা বা ভোগকারী হিসেবে মানুষের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের চাহিদা মেটানোর জন্যই পৃথিবীতে সম্পদ সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং, প্রথমে চাহিদা, তারপর সম্পদ সৃষ্টি, তারপর সম্পদ দ্বারা মানুষের চাহিদা পূরণ – এরূপ চক্রাকার পদ্ধতিতে মানুষ সম্পদ সৃষ্টি ও ভোগ করে। অর্থাৎ, মানুষের চাহিদাই হল সম্পদ সৃষ্টির মূলমন্ত্র। মানুষের চাহিদার পরিবর্তন হলে চাহিদা পূরণের উপায়ও পরিবর্তিত হয়ে নতুন সম্পদ সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ, যে-কোনো সম্পদই মানুষের চাহিদা পূরণ করে।

মানুষের চাহিদার শ্রেণিবিভাগ –

ভোগকারী হিসেবে মানুষের চাহিদা দু প্রকার। যথা –

  • প্রাথমিক চাহিদা – জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য, বস্ত্র, পানীয়, বাসস্থান ইত্যাদি হল প্রাথমিক বা মৌলিক চাহিদা।
  • সাংস্কৃতিক চাহিদা – মানুষের মানসিক অভাববোধ থেকে যেসব চাহিদার জন্ম হয়েছে তাদের সাংস্কৃতিক চাহিদা বলা হয়। সাংস্কৃতিক চাহিদাগুলি হল শিক্ষা, বিজ্ঞান, শিল্পকলা ইত্যাদি। মানুষের প্রাথমিক চাহিদার সীমা থাকলেও সাংস্কৃতিক চাহিদার কোনো শেষ নেই।

আমরা আমাদের আর্টিকেলে নবম শ্রেণীর ভূগোলের সপ্তম অধ্যায় ‘ভারতের সম্পদ (সম্পদের ধারণা শ্রেণীবিভাগ ও সংরক্ষণ)’ এর সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষার জন্য বা চাকরির পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি নবম শ্রেণীর পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায় দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে, আপনারা আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাছাড়া নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Share via:

মন্তব্য করুন