নবম শ্রেণী – ভূগোল – ভারতের সম্পদ (প্রচলিত ও অপ্রচলিত শক্তি সম্পদ) – সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর

Solution Wbbse

আমরা আমাদের আর্টিকেলে নবম শ্রেণীর ভূগোলের সপ্তম অধ্যায় ‘ভারতের সম্পদ (প্রচলিত ও অপ্রচলিত শক্তি সম্পদ)’ এর সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষার জন্য ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

ভারতের সম্পদ (প্রচলিত ও অপ্রচলিত শক্তি সম্পদ) - সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর
ভারতের সম্পদ (প্রচলিত ও অপ্রচলিত শক্তি সম্পদ) – সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর
Contents Show

জলবিদ্যুতের ব্যবহার লেখো।

অথবা, জলবিদ্যুতের অর্থনৈতিক গুরুত্ব লেখো।

ভারতে জলবিদ্যুৎ শক্তির ব্যবহার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে জলবিদ্যুৎ শক্তির ব্যবহারগুলি হল-

  • ধাতু পরিশোধন শিল্প – জলবিদ্যুতের তাপশক্তি বেশি হওয়ায় অ্যালুমিনিয়াম, তামা প্রভৃতি ধাতু পরিশোধনে এটি অপরিহার্য।
  • ভারী শিল্প – লৌহ ও ইস্পাত শিল্প, কাচশিল্প, বস্ত্রবয়ন শিল্প এবং রাসায়নিক শিল্পে জলবিদ্যুৎ ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
  • সূক্ষ্ম যন্ত্রপাতি ও ইলেকট্রনিক্স শিল্প – জলবিদ্যুৎকে এক ওয়াট থেকে হাজার ওয়াট পর্যন্ত বিভাজন করা যায় বলে এই শিল্পে এর ব্যবহার সর্বাধিক।
  • পরিবহণ – রেলপথে জলবিদ্যুৎ শক্তির ব্যবহার ক্রমবর্ধমান।
  • কৃষিকাজ – জলসেচের জন্য পাম্প চালাতে জলবিদ্যুৎ ব্যবহৃত হয়।
  • গৃহস্থালি ও পৌর ব্যবহার
    • ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট আলোকিত করা
    • হিমঘরে খাদ্য ও অন্যান্য দ্রব্য সংরক্ষণ
    • হাসপাতাল, অফিস ও আদালত চালু রাখা

অন্যান্য শক্তির তুলনায় জলবিদ্যুৎ শক্তি ব্যবহারের সুবিধাগুলি লেখো।

অন্যান্য শক্তির তুলনায় জলবিদ্যুৎ ব্যবহারের সুবিধাগুলি হল –

  • প্রবহমান সম্পদ – জলবিদ্যুৎ শক্তির ভাণ্ডার অফুরন্ত। তাপশক্তি, পারমাণবিক শক্তি উৎসের ন্যায় এই শক্তির উৎস (জলপ্রবাহ) ব্যবহারের ফলে নিঃশেষ হয়ে যায় না।
  • পরিবেশ বান্ধব – কয়লা, খনিজ তেলের ব্যবহার পরিবেশ দূষণ ঘটায়। কিন্তু জলবিদ্যুৎ শক্তি ব্যবহারে পরিবেশ দূষণ ঘটে না।
  • উৎপাদন ব্যয় কম – অন্যান্য শক্তি কেন্দ্র স্থাপনের প্রাথমিক ব্যয় কম হলেও উৎপাদন ব্যয় অনেক বেশি। সেক্ষেত্রে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রাথমিক ব্যয় বেশি হলেও উৎপাদন ব্যয় অনেক কম।
  • অপচয় কম – জলবিদ্যুতের অপচয় কম। কিন্তু কয়লা, খনিজ তেল পরিবহণ ও ব্যবহারের সময় প্রচুর অপচয় হয়।
    অধিক তাপশন্তি- তাপবিদ্যুতের তুলনায় জলবিদ্যুতের তাপশক্তি বেশি।
  • কম শ্রমশক্তি – জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে শ্রমশক্তির প্রয়োজন কম। কিন্তু কয়লা, খনিজ তেল উত্তোলন ও তা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রচুর শ্রমশক্তির প্রয়োজন হয়।
  • প্রেরণ ব্যবস্থা – ট্রান্সমিশন লাইনের মাধ্যমে খুব সহজেই জলবিদ্যুৎ শক্তিকে বহু দূরে পাঠানো যায়।
  • বিভাজন ক্ষমতা – জলবিদ্যুৎকে এক ওয়াট থেকে প্রায় হাজার ওয়াটে বিভাজন করা যায় বলে ইলেকট্রনিক্স শিল্পে এর ব্যবহার অপরিহার্য।

পারমাণবিক শক্তির ব্যবহারগুলি লেখো।

শক্তিসম্পদের উৎসের ক্ষেত্রে এক আধুনিক সংযোজন হল পারমাণবিক শক্তি। কম পরিমাণ কাঁচামাল থেকে অধিক পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদিত হওয়ায় এর ব্যাবহারিক গুরুত্ব উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। যথা – যুদ্ধ জাহাজ, সাবমেরিন, রকেট চালাতে পারমাণবিক শক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে; কৃত্রিম উপগ্রহের শক্তি জোগানোর জন্য এই বিদ্যুৎ ব্যবহৃত হয়; সমুদ্রের জল লবণমুক্ত করার জন্য পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করা হয়; বিভিন্ন শিল্প কাজে, রেলইঞ্জিন চালাতে এই শক্তির ব্যবহার ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে; ভূতাপ শক্তি নিষ্কাশনের কাজে পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করা হয়; বরফকাটা জাহাজে এই শক্তি ব্যবহৃত হয়। যেমন- একটি বরফকাটা জাহাজ মাত্র 150 গ্রাম ইউরেনিয়াম ব্যবহার করে এক বছর ধরে বরফ কাটাতে পারে; অ্যালুমিনিয়াম নিষ্কাশনে, তামা নিষ্কাশনে এই শক্তি ব্যবহৃত হয়; ক্যানসার রোগ নিরাময়ে পারমাণবিক খনিজ রেডিয়ামকে কাজে লাগানো হয়; রাত্রিতেও দেখতে পাওয়া যায় এরকম আলোকোজ্জ্বল রং বা লুমিনাস কালার প্রস্তুতিতে বর্তমানে পারমাণবিক খনিজ সম্পদ ব্যবহার করা হচ্ছে।

ভারতে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংখ্যা কম কেন?

পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে ভারতের স্থান বিশ্বে 15তম। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জাপান প্রভৃতি উন্নত দেশ সমূহের তুলনায় ভারতে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংখ্যা অনেক কম। এর পুন প্রধান কারণগুলি হল-

  • কাঁচামাল জনিত সমস্যা – পারমাণবিক শক্তির প্রধান কাঁচামাল হল ইউরেনিয়াম, থোরিয়াম, প্লুটোনিয়াম প্রভৃতি। তবে মূল খনিজ কাঁচামাল হল ইউরেনিয়াম। ভারতের একমাত্র যদুগোড়ায় ইউরেনিয়াম পাওয়া যায়। ফলে পারমাণবিক কেন্দ্র স্থাপনে কাঁচামালের অপ্রাচুর্যতা বাধার সৃষ্টি করে।
  • উন্নত প্রযুক্তিজনিত সমস্যা – পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন এবং এই শক্তির নিরাপদ ব্যবহারের জন্য আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির প্রয়োজন হয়। ভারতের মত উন্নয়নশীল দেশে এর অভাব রয়েছে।
  • মূলধন জনিত সমস্যা – পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্যাপন যেমন ব্যয়সাপেক্ষ তেমনি পারমাণবিক শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র থেকে যে ক্ষতিকর তেজস্ক্রিয় বর্জ্য নির্গত হয় তা উপযুক্তভাবে সংরক্ষণ করাও অত্যন্ত ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া। ভারতের মতো দেশের ক্ষেত্রে যা বহন করা সহজসাধ্য নয়।
  • জমি অধিগ্রহণ ও পরিবেশগত সমস্যা – অনেক সময় জমি অধিগ্রহণ ও পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া জনিত কারণে আন্দোলনের প্রভাবে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে বাধার সৃষ্টি হয়। যেমন -ফুকুশিমা দাইচি দুর্ঘটনার পর সারা ভারত জুড়েই পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়। এই আন্দোলন ও বিক্ষোভের কারণে মহারাষ্ট্রের জয়িতপুর ও
  • বিকল্প শক্তির প্রাচুর্যতা – ভারতে প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের পশ্চিমবঙ্গের হরিপুরে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কর্মসূচি বাতিল করা হয়। চাহিদা তাপবিদ্যুৎ ও জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে পাওয়া যায়। ফলে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা উন্নত দেশগুলির তুলনায় অনেক কম।

বর্তমানে ভারতে অচিরাচরিত শক্তি উৎপাদনের ওপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে কেন? 

বর্তমানে ভারতে চিরাচরিত তাপবিদ্যুৎ, জলবিদ্যুৎ ও পারমাণবিক বিদ্যুৎ অপেক্ষা অচিরাচরিত শক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, কারণ –

  • ক্ষয়িষ্ণু শক্তি সম্পদ – কয়লা, খনিজ তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, পারমাণবিক খনিজ ব্যবহারের ফলে দ্রুত নিঃশেষিত হয়ে যাচ্ছে। তাই বিদ্যুৎ উৎপাদনে সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, ভূতাপ শক্তি প্রভৃতির ওপর নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
  • অফুরন্ত অচিরাচরিত শক্তি – অচিরাচরিত শক্তি সম্পদগুলি ব্যবহারের ফলে শেষ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই এর গুরুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে।
  • পরিবেশ দূষণ কম – অচিরাচরিত শক্তি সম্পদগুলি ব্যবহারের ফলে পরিবেশ দূষিত হয় না। তাই এই পরিবেশবান্ধব সম্পদ ব্যবহারে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
  • সীমিত জলবিদ্যুৎ – জলবিদ্যুৎ পরিবেশবান্ধব ও প্রবহমান সম্পদ হলেও ভারতে অর্থ ও সঠিক পরিকল্পনার অভাবে এর উৎপাদন সীমিত।
  • ব্যয় কম, দাম কম – এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের ব্যয় বেশি হলেও পরবর্তীকালে উৎপাদন খরচ খুব কম, ফলে এই বিদ্যুতের বাজারমূল্যও অনেক কম।
  • সহজলভ্য – অচিরাচরিত শক্তির উৎসগুলি (সূর্যালোক, বায়ু প্রভৃতি) সর্বত্রই সহজলভ্য এবং এর পরিবহণ খরচ তেমন নেই। ফলে, আমাদের দেশে অচিরাচরিত শক্তি সম্পদের ব্যাবহারিক গুরুত্ব ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সৌরশক্তির ব্যবহারগুলি লেখো।

ভারতে সৌরশক্তি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। যথা –

  • সৌর হিটার – সৌর হিটার যন্ত্রের মাধ্যমে শীতকালে এবং শীতপ্রধান অঞ্চলে কম খরচে ঘর গরম করা হয়। হাসপাতাল, কলকারখানা, বাড়িতে জল গরম করা হয়।
  • সৌর ড্রায়ার – সৌর ড্রায়ার (Solar Dryer)-এর মাধ্যমে উৎপন্ন গরম বাতাসের সাহায্যে শস্যের আর্দ্রতা অপসারণ করে শস্য সংরক্ষণ, কাঠ শুকনো, মাছ শুষ্ককরণ, লবণ উৎপাদন করা হয়।
  • সৌর কুকার – সৌর কুকারের সাহায্যে সৌরতাপকে ধরে তার তীব্রতা বাড়িয়ে রান্না করা হয়।
  • সৌর ডিসটিলেটর – সৌর ডিসটিলেটরের সাহায্যে অপরিশোধিত জলকে বিশুদ্ধ জলে পরিণত করা হয় এবং সমুদ্র জলকে লবণমুক্ত করা হয়।
  • সৌরপুকুর – সৌর পুকুরের সাহায্যে জল গরম করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।
  • সৌরকোশ – সৌরকোশের মাধ্যমে সৌরশক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে তা আলো জ্বালাতে, পাখা, টিভি, পাম্প, রেফ্রিজারেটার চালাতে, রান্না করতে ব্যবহার করা হয়।

বায়ুশক্তি ব্যবহারের সুবিধা, অসুবিধাগুলি আলোচনা করো। 

বায়ুশক্তি ব্যবহারের সুবিধাগুলি হল –

  • অফুরন্ত সম্পদ – এটি প্রবহমান অফুরন্ত সম্পদ, নিঃশেষ হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
  • কম উৎপাদন ব্যয় – কাঁচামাল ক্রয়জনিত ব্যয় নেই বলে এই শক্তির উৎপাদন ব্যয় খুবই কম।
  • পরিবেশ বন্ধু – এই বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রক্রিয়ায় কোনো ধোঁয়া, ধুলো, বিষাক্ত গ্যাস বের হয় না, ফলে পরিবেশ দূষিত হয় না।
  • সহজ প্রযুক্তির সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়।
  • পর্যাপ্ত বায়ুপ্রবাহ থাকলে দিনে ও রাতে সবসময় বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব।
  • খুব অল্প সময়ে সহজে স্থাপন করা যায়।

বায়ুশক্তি ব্যবহারের অসুবিধাগুলি হল –

  • সর্বত্র প্রকল্প গড়ে তোলা যায় না – সারা বছর সর্বত্র বায়ুপ্রবাহ থাকে না বলে সমুদ্র তীরবর্তী বা ফাঁকা জায়গা (মরুভূমি, পার্বত্য অঞ্চল) ছাড়া প্রকল্প গড়ে তোলা অসুবিধাজনক।
  • সঞ্চয় হয় না – এই শক্তি ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করে রাখা যায় না।
  • শব্দদূষণ – যন্ত্র চলার সময় কম্পন তরঙ্গের ফলে শব্দদূষণ ঘটে।
  • উৎপাদনে ব্যাঘাত – বাতাসের এলোমেলো দিক ও গতি পরিবর্তন হলে উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটে।

ভূতাপ শক্তির ব্যবহারগুলি লেখো।

ভূতাপ শক্তি সাধারণত স্বল্প পরিসরে স্থানীয় প্রয়োজনে নানা কাজে ব্যবহার করা হয়। যেমন- শীতপ্রধান দেশে বা শীতকালে ঘর ও জল গরম করতে; গ্রিন হাউসে সবজি, ফুল প্রভৃতি চাষ করতে; বরফ গলাতে শীতপ্রধান অঞ্চলে মাটি বরফমুক্ত করতে; পেঁয়াজ, রসুন, মাছ, কাঠ শুকনো করতে; দুধ পাস্তুরাইজ করার কাজে; কাগজ উৎপাদন করতে;এছাড়া খনিজ তেল উত্তোলনে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনে ভূতাপ শক্তি ব্যবহৃত হয়।

ভূতাপ শক্তি ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধাগুলি আলোচনা করো।

ভূতাপ শক্তি ব্যবহারের সুবিধাগুলি হল –

  • প্রবহমান সম্পদ- ভূতাপ শক্তির ভাণ্ডার অফুরন্ত। জলবিদ্যুৎ, পারমাণবিক শক্তি উৎসের ন্যায় এই শক্তির উৎস ব্যবহারের ফলে নিঃশেষ হয়ে যায় না।
  • পরিবেশবান্ধব- কয়লা, খনিজ তেলের ব্যবহার পরিবেশ দূষণ ঘটায়। কিন্তু ভূতাপ শক্তি ব্যবহারে পরিবেশ দূষণ ঘটে না।
  • উৎপাদন ব্যয় কম- অন্যান্য শক্তি কেন্দ্র স্থাপনের প্রাথমিক ব্যয় কম হলেও উৎপাদন ব্যয় অনেক বেশি। সেক্ষেত্রে ভূতাপ শক্তিকেন্দ্র স্থাপনের প্রাথমিক ব্যয় বেশি হলেও উৎপাদন ব্যয় অনেক কম।
  • নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদন- সারাবছর ধরে নিয়মিত ভূতাপ শক্তির জোগান পাওয়া যায়, তাই নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।

ভূতাগ শক্তি ব্যবহারের অসুবিধাগুলি হল –

  • উৎপাদনে ব্যাঘাত – উম্নপ্রস্রবণ বা গিজার থেকে উম্ন জল সর্বদা সমান পরিমাণে বের হয় না। ফলে অবিরাম উৎপাদন হয় না।
  • প্রাথমিক ব্যয় – ভূগর্ভের সুগভীর পর্যন্ত খনন, পাইপ প্রবেশ করানো, টারবাইন ও জেনারেটারের জন্য প্রাথমিক ব্যয় বেশি হয়।
  • সীমিত উৎপাদন – ভূতাপ শক্তি উৎপাদন ক্ষমতা খুবই সীমিত।
  • প্রযুক্তির অভাব – এই শক্তি উৎপাদন ও উন্নয়নের জন্য যে উন্নত প্রযুক্তিবিদ্যা ও নিরন্তর গবেষণার প্রয়োজন তা বহু দেশে সহজলভ্য নয়।

বর্তমানে অচিরাচরিত শক্তি সম্পদের ব্যবহার বেশি লাভজনক – ব্যাখ্যা করো।

বর্তমানে অচিরাচরিত শক্তি সম্পদের ব্যবহার বেশি লাভজনক, কারণ –

  • অফুরন্ত উৎস – পৃথিবীতে অচিরাচরিত শক্তি সম্পদগুলি (সূর্যালোক, বায়ুপ্রবাহ, জলপ্রবাহ) অফুরন্ত হওয়ায় ফুরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
  • স্বল্প ব্যয় – অচিরাচরিত শক্তি উৎপাদনে কাঁচামাল ক্রয় করতে হয় না। তাছাড়া এই শক্তির উৎপাদন ব্যয়ও কম। তাই এই শক্তির ব্যবহারে খরচ কম হয়।
  • সর্বত্রপ্রাপ্ত – অচিরাচরিত শক্তির উৎসগুলি সর্বত্র পাওয়া যায়। জল পরিবহণ ব্যয় হয় না বললেই চলে।
  • ঝুঁকিহীন- এই শক্তি উৎপাদনে যেমন ঝুঁকি কম তেমনি এর ব্যবহারেও বিপদ কম।
  • পরিবেশ মিত্রতা – এই শক্তির উৎপাদন ও ব্যবহারে পরিবেশে কোনো দূষণ হয় না, যা মানব সমাজের পক্ষে অত্যন্ত কল্যাণকর।
  • একমাত্র বিকল্প – চিরাচরিত শক্তি সম্পদের নিঃশেষ সময়ের অপেক্ষা। তাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিকট অচিরাচরিত শক্তিসম্পদই একমাত্র বিকল্প।

ভারতে বর্জ্য আবর্জনা থেকে শক্তি উৎপাদন সম্পর্কে কী জানো লেখো।

বর্জ্য আবর্জনা থেকে শক্তি উৎপাদনের ধারণা অপ্রচলিত শক্তিগুলির মধ্যে নবীনতম। এ বিষয়ে ধারণা ও প্রযুক্তি অপেক্ষাকৃত আধুনিক বলে ভারতসহ মাত্র কয়েকটি দেশে স্বল্পমাত্রায় বর্জ্য আবর্জনা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। ভারতে প্রতিবছর প্রায় 5 বিলিয়ন টন কঠিন বর্জ্য পদার্থ নিক্ষেপিত হয়। ফলে বর্জ্য আবর্জনা থেকে শক্তি উৎপাদনের দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে শহরাঞ্চলের বর্জ্য আবর্জনা থেকে প্রথম বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়। দিল্লির তিমারপুরেও বর্জ্য আবর্জনা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। পাঞ্জাবের জলখেড়ি, অন্ধ্রপ্রদেশের তাপকুণ্ডে ধানের তুষ থেকে এবং দিশেরগড়ে আখের ছিবড়া থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। মহারাষ্ট্রের শোলাপুর ও কেরালার কোচি শহরের কঠিনবর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়ে থাকে।

Class 9 Geography All Chapter Notes

1. গ্রহরূপে পৃথিবীবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর
পার্থক্যধর্মী প্রশ্নোত্তর
ভৌগোলিক কারণ ব্যাখ্যা
টীকা
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর
2. পৃথিবী গতিসমূহবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
ভৌগোলিক কারণ ব্যাখ্যা
টীকা
পার্থক্যধর্মী প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর
দক্ষতামূলক প্রশ্নোত্তর
3. পৃথিবীপৃষ্ঠে কোনো স্থানের অবস্থান নির্ণয়অধ্যায় সারসংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
ভৌগোলিক কারণ ব্যাখ্যা
পার্থক্যধর্মী প্রশ্নোত্তর
টীকা
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর
➼ দক্ষতামূলক প্রশ্নোত্তর
গাণিতিক প্রশ্নোত্তর
4. ভূ-গাঠনিক প্রক্রিয়া এবং পৃথিবীর বিভিন্ন ভূমিরূপবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
ভৌগোলিক কারণ ব্যাখ্যা
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
পার্থক্যধর্মী প্রশ্নোত্তর
টীকা
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর
5. আবহবিকারঅধ্যায় সারসংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
দক্ষতামূলক প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
পার্থক্যধর্মী প্রশ্নোত্তর
টীকা
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর
6. দুর্যোগ ও বিপর্যয়অধ্যায় সারসংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
পার্থক্যধর্মী প্রশ্নোত্তর
টীকা
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর
7. ভারতের সম্পদ (সম্পদের ধারণা, শ্রেণীবিভাগ ও সংরক্ষণ)অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
ভৌগোলিক কারণ ব্যাখ্যা
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
পার্থক্যধর্মী প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর
8. ভারতের সম্পদ (খনিজ সম্পদ)অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
পার্থক্যধর্মী প্রশ্নোত্তর
টীকা
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর
9. ভারতের সম্পদ (প্রচলিত ও অপ্রচলিত শক্তি সম্পদ)অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
পার্থক্যধর্মী প্রশ্নোত্তর
টীকা
➼ সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর
10. পশ্চিমবঙ্গ (অবস্থান ও প্রশাসনিক বিভাগ)অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
টীকা
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর
11. পশ্চিমবঙ্গ (প্রাকৃতিক পরিবেশ)অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
টীকা
ভৌগোলিক কারণ ব্যাখ্যা
পার্থক্যধর্মী প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর
12. পশ্চিমবঙ্গ (প্রধান প্রধান অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপ)অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
টীকা
ভৌগোলিক কারণ ব্যাখ্যা
পার্থক্যধর্মী প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর
13. মানচিত্র ও স্কেলঅধ্যায় সারসংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
পার্থক্যধর্মী প্রশ্নোত্তর
টীকা
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর
মানচিত্র চিহ্নিতকরণ

আমরা আমাদের আর্টিকেলে নবম শ্রেণীর ভূগোলের সপ্তম অধ্যায় ‘ভারতের সম্পদ (প্রচলিত ও অপ্রচলিত শক্তি সম্পদ)’ এর সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষার জন্য বা চাকরির পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি নবম শ্রেণীর পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায় দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে, আপনারা আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাছাড়া নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে শীতকালে বৃষ্টিপাত হয় কেন -

পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে শীতকালে বৃষ্টিপাত হয় কেন? উত্তর গোলার্ধের তুলনায় দক্ষিণ গোলার্ধে পশ্চিমা বায়ুর গতিবেগ বেশি হয় কেন?

নবম শ্রেণী - ভৌতবিজ্ঞান - শব্দ - শব্দদূষণ - প্রশ্ন ও উত্তর

নবম শ্রেণী – ভৌতবিজ্ঞান – শব্দ – শব্দদূষণ – প্রশ্ন ও উত্তর

নবম শ্রেণী - ভৌতবিজ্ঞান - শব্দ - মানুষের কান ও শব্দ শোনার কৌশল - প্রশ্ন ও উত্তর

নবম শ্রেণী – ভৌতবিজ্ঞান – শব্দ – মানুষের কান ও শব্দ শোনার কৌশল – প্রশ্ন ও উত্তর

About The Author

Solution Wbbse

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

জেট বায়ুর বৈশিষ্ট্য – মৌসুমি বায়ুর সঙ্গে জেট বায়ুর সম্পর্ক

নিরক্ষীয় অঞ্চলে পরিচলন বৃষ্টি হয় কেন? বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কীভাবে করা হয়?

মাধ্যমিক ইতিহাস – বিশ শতকের ভারতে নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ – সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

মাধ্যমিক ইতিহাস – বিশ শতকের ভারতে নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

মাধ্যমিক ইতিহাস – বিশ শতকের ভারতে নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ – বিষয়সংক্ষেপ