আমরা আমাদের আর্টিকেলে নবম শ্রেণীর ভূগোলের চতুর্থ অধ্যায় ‘ভূ-গাঠনিক প্রক্রিয়া এবং পৃথিবীর বিভিন্ন ভূমিরূপ’ এর কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষার জন্য ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই অধ্যায়ের মূল ধারণাগুলো থেকে পরীক্ষায় প্রায়শই প্রশ্ন আসে।

অ্যাসথেনোস্ফিয়ার বা ক্ষুব্ধমণ্ডল কাকে বলে?
অর্থ – ‘Asthenosphere’ শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ ‘As-thenica’ থেকে, যার অর্থ ‘দুর্বল’ এবং ‘Sphere’ -এর অর্থ ‘মণ্ডল’। অর্থাৎ, অ্যাসথেনোস্ফিয়ার হল দুর্বলমণ্ডল।
সংজ্ঞা – ভূত্বকের নীচে গড়ে 150-200 কিমি পুরু ঊর্ধ্ব গুরুমণ্ডলের অন্তর্গত সান্দ্র, দুর্বল ও নমনীয় প্রকৃতির পরিবর্তনশীল স্তরকে অ্যাসথেনোস্ফিয়ার বলে। পাতগুলি এই স্তরের উপর ভাসমান অবস্থায় আছে। এখানকার ম্যাগমার পরিচলন স্রোতের কারণে পাতের চলন ঘটে, অগ্ন্যুৎপাত হয়, ভূমিকম্প হয়। তাই এই স্তরকে ক্ষুব্ধমণ্ডল বলে।
সমস্থিতিক আলোড়ন (Isostatic Movement) বলতে কী বোঝো?
গ্রিক শব্দ ‘Iso’ = সম এবং ‘Static’ = স্থির। অর্থাৎ, যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠে অবস্থিত বিভিন্ন উঁচু-নিচু স্থান যেমন পর্বত, মালভূমি, সমভূমি প্রভৃতি পরস্পরের মধ্যে উচ্চতাগত সাম্য অবস্থা বজায় রাখার চেষ্টা করে, তাকে সমস্থিতিক আলোড়ন বলে।
ইউস্ট্যাটিক আলোড়ন (Eustatic Movement) বলতে কী বোঝো?
সমুদ্রবক্ষের জলধারণ ক্ষমতার হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটলে সমুদ্রপৃষ্ঠের যে উত্থান ও অবনমন ঘটে, তাকেই সমুদ্রপৃষ্ঠের পরিবর্তন বা ইউস্ট্যাটিক আলোড়ন বলে। যেমন – প্রতিসারী পাতসীমান্তে সমুদ্রবক্ষের বিস্তার ঘটে ও জলধারণ ক্ষমতা বেড়ে যায়, ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠ নেমে যায়। আবার, অভিসারী পাতসীমান্তে সমুদ্রবক্ষ সংকুচিত হওয়ায় জলধারণ ক্ষমতা কমে যায়, ফলে সমুদ্রবক্ষ উত্থিত হয়।
তৃতীয় ক্রমের ভূমিরূপ গঠনে কোন্ প্রক্রিয়া কীভাবে কাজ করে?
প্রাথমিক ভূমিরূপ যথা পাহাড়, পর্বত, মালভূমি, সমভূমির ওপর বহির্জাত প্রক্রিয়াগুলি ক্ষয়, বহন ও সঞ্চয়কার্যের মাধ্যমে যে ভূদৃশ্য বা ভূমিরূপ গড়ে তোলে তাকে তৃতীয় ক্রমের (3rd order) ভূমিরূপ বলে। যেমন – জলপ্রপাত, অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ, সার্ক, ইয়ার্দাং, গৌর প্রভৃতি। বহির্জাত প্রক্রিয়াগুলি, যথা – নদী, হিমবাহ, বায়ু, সমুদ্রতরঙ্গ, আবহবিকার, পুঞ্জিত ক্ষয় প্রভৃতি ক্ষয়, বহন ও সঞ্চয় কাজের মাধ্যমে তৃতীয় ক্রমের ভূমিরূপ গঠন করে।
পাহাড় কাকে বলে?
সাধারণত সমুদ্রতল থেকে 1000 মিটারের কম উচ্চতা বিশিষ্ট অল্পদূর বিস্তৃত মাঝারি ঢালযুক্ত শিলাস্তূপকে পাহাড় বলে।
উদাহরণ – অযোধ্যা পাহাড়, রাজমহল পাহাড়, শুশুনিয়া পাহাড় প্রভৃতি।
পর্বতের বৈশিষ্ট্য লেখো।
- পর্বতের উচ্চতা সাধারণত 1000 মিটারের বেশি হয়।
- পর্বতগুলি বহুদূর বিস্তৃত হয়।
- পর্বতের ঢাল খুব খাড়া হয়।
- পর্বতগুলি সুউচ্চ শৃঙ্গবিশিষ্ট ও গভীর গিরিখাতযুক্ত হয়।
- পর্বতের ভূমিরূপ অত্যন্ত বন্ধুর প্রকৃতির।
পাত (Plate) কী?
অ্যাসথেনোস্ফিয়ারের উপর ভাসমান ও চলনশীল শিলামণ্ডলের শক্ত ও কঠিন খণ্ডগুলিকে পাত বলে। 1956 খ্রিস্টাব্দে কানাডার ভূ-পদার্থবিদ জে. টি. উইলসন প্রথম পাত বা Plate শব্দটি ব্যবহার করেন। ভূত্বকে 7টি বড়ো পাত, ৪টি মাঝারি পাত ও 20টিরও বেশি ছোটো পাত আছে।
উদাহরণ – ইউরেশীয় পাত, প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাত প্রভৃতি।
অপসারী বা প্রতিসারী পাতসীমানা কাকে বলে?
সংজ্ঞা – যে সীমানা বরাবর দুটি পাত পরস্পর থেকে ক্রমশ দূরে সরে যেতে থাকে, তাকে অপসারী বা প্রতিসারী পাতসীমানা বলে। এই পাতসীমানায় নতুন ভূমিরূপের উৎপত্তি হয় বলে একে গঠনকারী পাতসীমানা বলা হয়।

উদাহরণ – আফ্রিকান পাত ও আমেরিকান পাত সীমানা।
অভিসারী পাতসীমানা কাকে বলে?
সংজ্ঞা – যে সীমানা বরাবর দুটি পাত পরস্পরের দিকে অগ্রসর হতে থাকে, তাকে অভিসারী পাতসীমানা বলে। এই পাতসীমানায় ভূত্বকের কিছুটা অংশ ধ্বংস হয় বলে একে ধ্বংসাত্মক পাতসীমানা বলা হয়।

উদাহরণ – উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকান পাত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাত সীমানা।
নিরপেক্ষ বা ট্রান্সফর্ম পাতসীমানা কাকে বলে?
সংজ্ঞা – যে সীমানা বরাবর দুটি পাত পরস্পরের সমান্তরালে পাশাপাশি সঞ্চারিত হয়, তাকে নিরপেক্ষ বা ট্রান্সফর্ম পাত সীমানা বলে।

উদাহরণ – ক্যালিফোর্নিয়ার উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত ‘সান-আন্দ্রিজ চ্যুতি’ এই পাত সীমানার উদাহরণ।
অধঃপাত মণ্ডল (Subduction Zone) কাকে বলে?
অধঃপাত মণ্ডল (Subduction Zone) – পাত-সংস্থান তত্ত্ব অনুযায়ী অভিসারী অর্থাৎ, বিনাসকারী পাত সীমানায় কোনো ভারী মহাদেশীয় পাত যখন অন্য একটি হালকা মহাসাগরীয় পাতের সীমানায় প্রবেশ করে, তখন ভারী পাতের সেই নিমজ্জিত অংশকে অধঃপাত মণ্ডল বলে।
বেনিঅফ মণ্ডল (Beni-off Zone) কাকে বলে?
বেনিঅফ মণ্ডল (Beni-off Zone) – পাতসংস্থান তত্ত্ব অনুযায়ী, অভিসারী পাত সীমানায় কোনো ভারী মহাসাগরীয় পাত কোনো অপেক্ষাকৃত হালকা মহাদেশীয় পাত বরাবর ঢালু হয়ে অ্যাসথেনোস্ফিয়ারে প্রবেশ করে 45° কোণে নত হয়ে যে অধঃপাত মণ্ডল গঠন করে, তাকে বেনিঅফ মণ্ডল বলে।
পাতসংস্থান তত্ত্ব অনুযায়ী বিভিন্ন ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টির প্রক্রিয়া গুলি লেখো?
পাতসংস্থান তত্ত্ব অনুযায়ী বিভিন্ন ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টির প্রক্রিয়া –
- রকি ও আন্দিজ পর্বতের উৎপত্তি – আমেরিকা ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাতের সংঘর্ষের ফলে সৃষ্টি হয়েছে।
- আল্পস্ পর্বতের উৎপত্তি – উত্তরদিকে ইউরেশিয়া ও দক্ষিণদিকে আফ্রিকা পাতের সংঘর্ষের ফলে সৃষ্টি হয়েছে।
- গ্রেট ডিভাইডিং রেঞ্জ – অস্ট্রেলিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাতের সংঘর্ষে সৃষ্টি হয়েছে।
- হিমালয় পর্বত – ভারতীয় পাত ও এশিয়া পাতের মধ্যে সংঘর্ষে সৃষ্টি হয়েছে।
সূচার লাইন কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
সূচার লাইন (Suture Line) – দুটি অভিসারী পাত প্রথম যে রেখা বরাবর মিলিত হয় তাকে সূচার লাইন বলে।
উদাহরণ – হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের সিন্ধু-সীবনরেখা সূচার লাইনের নিদর্শন।
চ্যুতি কাকে বলে?
প্রবল মহীভাবক ও আলোড়নের ফলে শিলাস্তরে সৃষ্ট যে ফাটল বরাবর একদিকের শিলাস্তূপ অপরদিকের শিলাস্তূপের তুলনায় উল্লম্ব বা অনুভূমিক বা তির্যকভাবে উত্থিত বা অবনমিত হয়, তাকে চ্যুতি বলে।
পামির মালভূমিকে ‘পৃথিবীর ছাদ’ বলে কেন?
উপরিভাগ কিছুটা সমতল ও চারপাশ খাড়া ঢালযুক্ত মালভূমিগুলির গড় উচ্চতা 300 মিটারের সামান্য বেশি হলেও পামির মালভূমির উচ্চতা পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি, প্রায় 4,873 মিটার। এত উঁচুতে অবস্থিত হওয়ার জন্য পামিরকে ‘পৃথিবীর ছাদ’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে।
তির্যক মালভূমি (Tilt Blocks) বলতে কী বোঝো?
অনেক সময় ভূ-আলোড়নের ফলে ভূপৃষ্ঠের কোনো বিস্তৃত ভূভাগ একদিকে হেলে পড়ে যে মালভূমি সৃষ্টি হয়, তাকে তির্যক মালভূমি বলে।
উদাহরণ – দক্ষিণ ভারতের উপদ্বীপীয় মালভূমি এবং আরব মালভূমি পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ঢালু।
ডেকানট্র্যাপ (Decantrap) কী?
‘ডেকান’ (Deccan) শব্দের অর্থ ‘দাক্ষিণাত্য’ এবং সুইডিশ শব্দ ট্র্যাপ’ (Trap) -এর অর্থ ‘সিঁড়ির ধাপ’। ভারতের দাক্ষিণাত্য মালভূমি বিভিন্ন পর্যায়ে লাভা জমে সৃষ্টি হওয়ার ফলে এবং পরবর্তী কালে অসম ক্ষয়কার্যের কারণে সিঁড়ির মতো ধাপযুক্ত মালভূমিতে পরিণত হয়েছে। তাই দাক্ষিণাত্য মালভূমিকে ডেকানট্র্যাপ বলা হয়।
মেসা (Mesa) ও বিউট (Butte) কী?
স্পেনীয় শব্দ ‘Mesa’ -এর অর্থ ‘টেবিল’। মরুঅঞ্চলে বায়ুর ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট টেবিল আকৃতির মালভূমিকে মেসা বলে।
মেসাগুলি আরও ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে ছোটো ছোটো ঢিবিতে পরিণত হলে তাকে বিউট বলে। ফরাসি শব্দ ‘Butte’ -এর অর্থ ঢিবি।
লাভা মালভূমি (Lava Plateau) কাকে বলে?
ভূত্বকের কোনো ফাটল বা ছিদ্রপথ দিয়ে ভূগর্ভের উত্তপ্ত ম্যাগমা বিদার অগ্ন্যুৎপাতের মাধ্যমে ধীরে ধীরে ভূপৃষ্ঠের বাইরে বেরিয়ে এসে লাভারূপে শীতল ও কঠিন হয়ে যে মালভূমি গঠিত হয়, তাকে লাভা মালভূমি বলে। যেমন – দাক্ষিণাত্য মালভূমি।
বিদার (Fissure) অগ্ন্যুৎপাত কাকে বলে?
ভূপৃষ্ঠের দীর্ঘ ফাটল বা বিদার (Fissure) বরাবর বিস্ফোরণ ছাড়া শান্তভাবে এবং ধীরে ধীরে ম্যাগমা নিঃসৃত হওয়াকে বিদার অগ্ন্যুৎপাত বলে। এর ফলে বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে লাভা সঞ্চিত হয়ে মালভূমি বা সমভূমি সৃষ্টি হয়। যেমন – ভারতের দাক্ষিণাত্য মালভূমি।
সমপ্রায় ভূমি কাকে বলে?
অথবা, সমপ্রায় ভূমি কিভাবে সৃস্টি হয়।
সমপ্রায় ভূমি বা তরঙ্গায়িত সমভূমি (Peneplain or Undulating Plain) – অনুচ্চ পার্বত্যভূমি বা মালভূমি অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে নানা রকম প্রাকৃতিক শক্তির (সূর্যতাপ, বায়ুপ্রবাহ, বৃষ্টিপাত, জলপ্রবাহ, নদী ইত্যাদি) প্রভাবে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে প্রায় সমতল ভূমিতে পরিণত হয়। এরূপ ক্ষয়প্রাপ্ত প্রায়সমতল ভূমিকে সমপ্রায়ভূমি বলে। এরূপ ভূমির উপরিভাগের আকৃতি ‘ঢেউ খেলানো’ বলে, এদের তরঙ্গায়িত সমভূমিও বলা হয়ে থাকে।
পেডিমেন্ট কাকে বলে?
পেডিমেন্ট (Pediment) – পৃথিবীর কোনো কোনো মরু অঞ্চলে পর্বত অবস্থান করতে দেখা যায়। মরুভূমির মধ্যস্থিত পর্বতের পাদদেশে বায়ুর ক্ষয়কার্যের ফলে প্রায় সমতল প্রস্তরময় একরকম ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়। বায়ুর ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত এরূপ প্রস্তরময় প্রায় সমতলভূমি পেডিমেন্ট নামে পরিচিত। আফ্রিকা মহাদেশের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত আটলাস পর্বতের সর্ব দক্ষিণের শ্রেণিটি (অ্যান্টি বা সাহারীয় আটলাস) সাহারা মরুভূমির মধ্যে অবস্থিত। এই পর্বতশ্রেণিটির পাদদেশে পেডিমেন্ট লক্ষ করা যায়।
ইনসেলবার্জ কী?
ইনসেলবার্জ – মরু অঞ্চলের পাদদেশীয় সমভূমির মধ্যে অবস্থিত কঠিন শিলায় গঠিত অনুচ্চ পাহাড়গুলিকে ইলসেলবার্জ বলে।
উদাহরণ – সাহারা মরুভূমিতে ইলসেলবার্জ দেখা যায়।
মোনাডনক্ কী?
মোনাডনক্ – সমপ্রায় ভূমির মধ্যে অবস্থিত কঠিন শিলায় গঠিত অনুচ্চ পাহাড় বা টিলাগুলিকে মোনাডনক্ বলে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাউন্ট মোনাডনক্ -এর নামানুসারে এর নামকরণ।
উদাহরণ – অযোধ্যা, শুশুনিয়া প্রভৃতি পাহাড় মোনাডনকের উদাহরণ।
বাজাদা (Bajada) কী?
কোনো মরু অঞ্চলে পর্বত পাদদেশীয় নিম্নাংশে জল ও বায়ুপ্রবাহের সম্মিলিত কার্যে টুকরো টুকরো পাথর ও বালিকণা সঞ্চিত হয়ে যে সমতল ভূমিভাগ গঠন করে, তাকে বাজাদা বলে।
পৃথিবীর প্রধান প্রধান ভঙ্গিল পর্বতগুলির নাম লেখো।
এশিয়ার – হিমালয়, ইউরোপের – আল্পস্, উত্তর আমেরিকার – রকি এবং দক্ষিণ আমেরিকার – আন্দিজ।
পৃথিবীর প্রধান কয়েকটি মালভূমির নাম লেখো।
এশিয়ার – পামির, ছোটোনাগপুর; ইউরোপের – ফ্রান্সের সেন্ট্রাল ম্যাসিফ, জার্মানির রাইন মালভূমি; উত্তর আমেরিকার – কানাডিয়ান শিল্ড, কলোরাডো মালভূমি; অস্ট্রেলিয়ার – পশ্চিম অস্ট্রেলিয় মালভূমি, বার্কলে মালভূমি প্রভৃতি।
পৃথিবীর প্রধান কয়েকটি সমভূমির নাম লেখো।
এশিয়ার – গাঙ্গেয় সমভূমি,
ইউরোপের – পোল্ডারল্যান্ড সমভূমি (নেদারল্যান্ডস), নিপার (ডনিপার) নদী সংলগ্ন ইউক্রেনীয় সমভূমি,
উত্তর আমেরিকার – গ্রেট লেকস (মধ্য হ্রদাঞ্চল) সংলগ্ন সমভূমি,
অস্ট্রেলিয়ার – মারে-ডার্লিং সমভূমি প্রভৃতি।
ভারতের একটি স্তূপ পর্বত ও পূর্ব উপকূলের একটি উপহ্রদের নাম লেখো।
ভারতের একটি স্তূপ পর্বত হল সাতপুরা এবং পূর্ব উপকূলের একটি উপহ্রদ হল চিল্কা।
হোর্স্ট (Horst)
ভূ-আলোড়নজনিত সংকোচন ও প্রসারণের প্রভাবে সৃষ্ট দুটি সমান্তরাল চ্যুতির মধ্যবর্তী অংশ উল্লম্বভাবে উপরে উত্থিত হলে তাকে হোর্স্ট বলে। এটি এক ধরনের স্তূপ পর্বত।
উদাহরণ – ভারতের সাতপুরা হল একটি হোর্স্ট।
ভূ-বিপর্যয় (Diastrophism)
ভূ-অভ্যন্তরে সর্বদা ঘটে চলা বিভিন্ন ধরনের ভৌত ও রাসায়নিক প্রক্রিয়ার ফলে উদ্ভূত শক্তি বা বলের প্রভাবে নানা ধরনের আলোড়ন ঘটে থাকে। এই সব আলোড়নের ফলে মহাদেশের উত্থান, পর্বতের উৎপত্তি, ভূমিকম্প, আগ্নেয়োচ্ছ্বাস, শিলার রূপান্তর, অনুভূমিক বা উল্লম্বভাবে ভূত্বকের চলন প্রভৃতি নানান ঘটনা সংঘটিত হয়। এই সব ঘটনাকে একত্রে বলা হয় ভূ-বিপর্যয় বা Diastrophism।
মহীভাবক আলোড়ন, গিরিজনি আলোড়ন, সমস্থিতিক আলোড়ন প্রভৃতি ভূ-বিপর্যয়কারী আলোড়নের উদাহরণ।
গ্রাবেন কী?
দুটি স্তূপ পর্বতের মাঝে সৃষ্ট উপত্যকাকে জার্মান ভাষায় গ্রাবেন বলে।
টিলা সমভূমি কী?
হিমাবাহের সঞ্চয় কাজের ফলে গঠিত সমভূমি মূলত টিলা জাতীয় পদার্থ (হিমাবাহের ক্ষয়প্রাপ্ত নুড়িকাদার সঞ্চয়) দ্বারা গড়ে ওঠে বলে একে টিলা সমভূমি বলে।
আমরা আমাদের আর্টিকেলে নবম শ্রেণীর ভূগোলের চতুর্থ অধ্যায় ‘ভূ-গাঠনিক প্রক্রিয়া এবং পৃথিবীর বিভিন্ন ভূমিরূপ’ এর কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষার জন্য বা চাকরির পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি নবম শ্রেণীর পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায় দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে, আপনারা আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাছাড়া নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।