আজকের আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের তৃতীয় অধ্যায় ‘রাসায়নিক গণনা’ এর বিষয় সংক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করব। এই অধ্যায়টি মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ প্রায়শই এই অধ্যায় থেকে পরীক্ষায় প্রশ্ন আসে। আশা করছি, এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য সহায়ক এবং উপকারি হবে।
মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান – রাসায়নিক গণনা – বিষয় সংক্ষেপ
চিহ্ন ও সংকেতের সাহায্যে কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়াকে সংক্ষেপে প্রকাশের পদ্ধতিকে রাসায়নিক সমীকরণ বলে। রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী পদার্থগুলিকে বিক্রিয়ক এবং বিক্রিয়ার ফলে উৎপন্ন পদার্থগুলিকে বিক্রিয়াজাত পদার্থ বলে।
রাসায়নিক বিক্রিয়ার সমীকরণ থেকে রাসায়নিক বিক্রিয়ার গুণগত ও পরিমাণগত তথ্য জানা যায়। রাসায়নিক সমীকরণ থেকে বিক্রিয়ক ও বিক্রিয়াজাত পদার্থের ভরের সম্পর্ক, আয়তনের সম্পর্ক বা ভর ও আয়তনের সম্পর্ক নির্ধারণ করা যায়।
ভরের সংরক্ষণ সূত্র – বিজ্ঞানী ল্যাভয়সিয়ে প্রদত্ত ভরের সংরক্ষণ সূত্র অনুসারে, যে-কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়ায় বিক্রিয়ক পদার্থগুলির মোট ভরের সঙ্গে বিক্রিয়াজাত পদার্থের মোট ভর সমান হয়।
ভর ও শক্তির সংরক্ষণ সূত্র – যে-কোনো পরিবর্তনের পূর্বে ও পরে ভর ও শক্তির মোট পরিমাণ সর্বদা একই থাকে।
ভর ও শক্তির তুল্যতা সূত্র – পদার্থের ভর ও শক্তি হল একই সত্তার ভিন্ন রূপ এবং উপযুক্ত পরিবেশে পারস্পরিক রূপান্তরযোগ্য। যদি m পরিমাণ ভর সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তিত হয়ে তুল্য পরিমাণ শক্তি EEE উৎপন্ন করে তবে ভর ও শক্তির পারস্পরিক রূপান্তর সম্পর্কিত আইনস্টাইনের সমীকরণটি হল E=mc2, যেখানে c হল শূন্য মাধ্যমে আলোর গতিবেগ।
সাধারণ রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ভরের পরিমাপযোগ্য পরিবর্তন ঘটে না। তাই রাসায়নিক বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে শক্তি ও ভরের তুল্যতা সূত্রটি প্রযোজ্য নয়। কিন্তু নিউক্লীয় বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে শক্তি ও ভরের তুল্যতা সূত্রটি প্রযোজ্য হয়।
গ্যাসের প্রমাণ ঘনত্ব – STP-তে 1 লিটার কোনো গ্যাসের গ্রামে প্রকাশিত ভরকে গ্যাসটির প্রমাণ ঘনত্ব বলে।
গ্যাসের আপেক্ষিক ঘনত্ব বা বাষ্পঘনত্ব – সমচাপ ও উষ্ণতায় কোনো গ্যাসের ভর, সম-আয়তন হাইড্রোজেন গ্যাসের তুলনায় যত গুণ ভারী, সেই তুলনামূলক সংখ্যাটিকে ওই গ্যাসের আপেক্ষিক ঘনত্ব বা বাষ্পঘনত্ব বলা হয়।
বাষ্পঘনত্বের কোনো একক নেই এবং উষ্ণতা ও চাপের পরিবর্তনে এর মানের কোনো পরিবর্তন হয় না।
কোনো গ্যাসের আণবিক ভর তার বাষ্পঘনত্বের দ্বিগুণ হয়।
STP-তে যে-কোনো গ্যাসের 1 মোল অণুর আয়তন = 22.4 লিটার।
STP-তে যে-কোনো গ্যাসের 1 লিটার আয়তনের ভর = গ্যাসের বাষ্পঘনত্ব × 0.089।
কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়ার সমতাযুক্ত সমীকরণের ভিত্তিতে বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী পদার্থ ও উৎপন্ন পদার্থের ভর, মোল-সংখ্যা, প্রদত্ত শর্ত সাপেক্ষে আয়তন ইত্যাদি নির্ণয় করা যায়।
স্টয়কিওমেট্রি – কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়ার বিক্রিয়ক ও বিক্রিয়াজাত পদার্থের মধ্যে পরিমাণগত সম্পর্কের ভিত্তিতে যে গণনা করা হয়, তাকে স্টয়কিওমেট্রি বলে।
আজকের আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের তৃতীয় অধ্যায় ‘রাসায়নিক গণনা’ সম্পর্কিত বিষয়সংক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছি। এই বিষয়টি মাধ্যমিক এবং চাকরির পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ প্রায়শই এই ধরনের প্রশ্ন পরীক্ষায় আসে। আশা করি, এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য উপকারী হয়েছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকে, টেলিগ্রামে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন; আমরা যথাসম্ভব দ্রুত উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। এছাড়া, পোস্টটি আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না, যাদের এটি সহায়ক হতে পারে। ধন্যবাদ।