এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন।। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান – রাসায়নিক গণনা – গাণিতিক উদাহরণ

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের তৃতীয় অধ্যায় ‘রাসায়নিক গণনা‘ নিয়ে আলোচনা করবো, যেখানে গাণিতিক উদাহরণসহ প্রশ্ন ও উত্তর অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এই প্রশ্নগুলো দশম শ্রেণির পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যদি আপনি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কারণ, এই ধরনের প্রশ্ন মাধ্যমিক বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায়শই উঠে আসে।

Table of Contents

রাসায়নিক গণনা – গাণিতিক উদাহরণ

3 g কার্বন, 8 g অক্সিজেনের সাথে সম্পূর্ণরূপে বিক্রিয়া করে কার্বন ডাইঅক্সাইড উৎপন্ন করে। এক্ষেত্রে কত গ্রাম কার্বন ডাইঅক্সাইড উৎপন্ন হবে? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ভরের সংরক্ষণ ঘটে অর্থাৎ বিক্রিয়ক পদার্থ যদি সম্পূর্ণরূপে বিক্রিয়াজাত পদার্থে পরিণত হয় তবে বিক্রিয়কগুলির মোট ভর, বিক্রিয়াজাত পদার্থগুলির মোট ভরের সমান হয়।

এক্ষেত্রে কার্বনের ভর = 3 g ও অক্সিজেনের ভর = 8 g

∴ উৎপন্ন কার্বন ডাইঅক্সাইডের ভর = (8 + 3) g = 11 g

15.9 g কপার সালফেট ও 10.6 g সোডিয়াম কার্বনেট বিক্রিয়া করে 14.2 g সোডিয়াম সালফেট ও 12.3 g কপার কার্বনেট উৎপন্ন করে। দেখাও যে, এই তথ্যগুলি রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ভরের সংরক্ষণকে সমর্থন করে।

প্রদত্ত বিক্রিয়ায় বিক্রিয়কগুলির মোট ভর = (কপার সালফেটের ভর = 15.9 g) + (সোডিয়াম কার্বনেটের ভর = 10.6 g)

∴ বিক্রিয়কগুলির মোট ভর = (15.9 + 10.6) g = 26.5 g

বিক্রিয়াজাত পদার্থগুলির মোট ভর = (সোডিয়াম সালফেটের ভর = 14.2 g + কপার কার্বনেটের ভর = 12.3 g)

∴ বিক্রিয়াজাত পদার্থের মোট ভর = (14.2 + 12.3) g = 26.5 g

প্রদত্ত বিক্রিয়ায়, বিক্রিয়কগুলির মোট ভর = বিক্রিয়াজাত পদার্থগুলির মোট ভর

অতএব, প্রদত্ত তথ্যগুলি রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ভরের সংরক্ষণবে সমর্থন করে।

3.0 g ইথেন (C2H6) -কে বাতাসে জারিত করলে 8.8 g CO2 ও 5.4 g H2O উৎপন্ন হয়। দেখাও যে পরীক্ষায় প্রাপ্ত ফলটি রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ভরের সংরক্ষণকে সমর্থন করে।

ইথেনকে বাতাসে জারিত করলে CO2, ও H2O উৎপন্ন হয়।

2C2H6 + 7O2 → 4CO2 + 6H2O

C2H6 -এর গ্রাম-আণবিক ভর = 30 g।

∴ (2 × 30) g ইথেন (7 × 32) g অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয় করে।

∴ 3 g ইথেন=7×32×320×30g=11.2g অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে।

অর্থাৎ, বিক্রিয়কগুলির মোট ভর = (3 + 11.2) g = 14.2 g।

বিক্রিয়াজাত পদার্থগুলির মোট ভর = (8.8 + 5.4) = 14.28 g।

অতএব, পরীক্ষায় প্রাপ্ত ফল রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ভরের সংরক্ষণকে সমর্থন করে।

90 গ্রাম জলে পটাশিয়াম অক্সাইড যোগ করার ফলে সম্পূর্ণ পটাশিয়াম অক্সাইড প্রদত্ত জলের সাথে বিক্রিয়ায় 1.120 কেজি পটাশিয়াম হাইড্রক্সাইড উৎপন্ন করে। কত গ্রাম পটাশিয়াম অক্সাইড জলে যোগ করা হয়েছিল?

রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ভর সংরক্ষিত হয়।

অতএব, পটাশিয়াম অক্সাইডের ভর + জলের ভর = উৎপন্ন পটাশিয়াম হাইড্রক্সাইডের ভর

বা, পটাশিয়াম অক্সাইডের ভর = পটাশিয়াম হাইড্রক্সাইডের ভর – জলের ভর।

= 1120 g – 90 g = 1030 g = 1.030 kg

8.4 g ম্যাগনেশিয়াম কার্বনেটকে উত্তপ্ত করলে 4.4 g CO2 এবং 4 g ম্যাগনেশিয়াম অক্সাইড পাওয়া যায়। দেখাও যে, এক্ষেত্রে ভরের সংরক্ষণ হয়।

ম্যাগনেশিয়াম কার্বনেটের ভর = 8.4 g

উৎপন্ন CO2 ও MgO -এর মোট ভর = (4.4 + 4) g = 8.4 g অর্থাৎ, ম্যাগনেশিয়াম কার্বনেটের ভর, উৎপন্ন CO2 ও MgO -এর মোট ভরের সমান। তাই বলা যায়, এক্ষেত্রে ভরের সংরক্ষণ হয়।

30 g পটাশিয়াম ক্লোরেটকে উত্তপ্ত করায় তার কিছুটা বিয়োজিত হয়ে 14.9 g পটাশিয়াম ক্লোরাইড ও 9.6 g অক্সিজেন উৎপন্ন করে। কী পরিমাণ পটাশিয়াম ক্লোরেট অবিয়োজিত অবস্থায় থাকবে?

ধরা যাক, অবিয়োজিত পটাশিয়াম ক্লোরেটের ভর = xg।

যেহেতু রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ভরের সংরক্ষণ হয়, তাই প্রদত্ত পটাশিয়াম ক্লোরেটের ভর = অবিয়োজিত পটাশিয়াম ক্লোরেটের ভর + উৎপন্ন পটাশিয়াম ক্লোরাইডের ভর + উৎপন্ন অক্সিজেনের ভর।

∴ 30 g = (x + 14.9 + 9.6) g

বা, x = 5.5 g

∴ 5.5 g পটাশিয়াম ক্লোরেট অবিয়োজিত অবস্থায় থাকবে।

12.25 গ্রাম পটাশিয়াম ক্লোরেটকে তীব্রভাবে উত্তপ্ত করায় 7.45 g পটাশিয়াম ক্লোরাইড এবং প্রমাণ চাপ ও উষ্ণতায় 3.36 লিটার অক্সিজেন পাওয়া গেল। দেখাও যে, এই রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ভরের সংরক্ষণ ঘটেছে।

প্রমাণ চাপ ও উষ্ণতায় 22.4 লিটার অক্সিজেনের ভর = 32 g [∵ অক্সিজেনের গ্রাম-আণবিক ভর = 32 g]

∴ 3.36 লিটার অক্সিজেনের ভর =32×3.3622.4gg=4.8g

পটাশিয়াম ক্লোরেটের ভর = 12.25 g

উৎপন্ন পটাশিয়াম ক্লোরাইড ও অক্সিজেনের মোট ভর (7.45 + 4.8) g = 12.25 g

∴ এই রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ভরের সংরক্ষণ ঘটেছে।

কিছু পরিমাণ পেট্রোলকে বাতাসে দহন করলে যে পদার্থগুলি উৎপন্ন হয় সেগুলির মোট ভর 45.2 g। ওই পরিমাণ পেট্রোলের দহনে প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের পরিমাণ 35.2 g। কী পরিমাণ পেট্রোলের দহন করা হয়েছিল?

রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ভর সংরক্ষিত হয়। সুতরাং পেট্রোলের ভর + অক্সিজেনের ভর = উৎপন্ন পদার্থগুলির ভর

বা, পেট্রোলের ভর + 35.2 g = 45.2 g

∴ পেট্রোলের ভর = (45.2 – 35.2) g = 10 g

কত গ্রাম সোডিয়াম ক্লোরাইডের সঙ্গে 3.41 গ্রাম সিলভার নাইট্রেট বিক্রিয়া করলে 1.70 গ্রাম সোডিয়াম নাইট্রেট এবং 2.87 গ্রাম সিলভার ক্লোরাইড উৎপন্ন হবে? মনে করো এক্ষেত্রে ভর যথাযথভাবে সংরক্ষিত হয়েছে।

যেহেতু রাসায়নিক বিক্রিয়াটিতে ভরের যথাযথ সংরক্ষণ হয়েছে, অতএব বলা যায় যে,

সোডিয়াম ক্লোরাইডের ভর + সিলভার নাইট্রেটের ভর = সিলভার ক্লোরাইডের ভর + সোডিয়াম নাইট্রেটের ভর

বা, সোডিয়াম ক্লোরাইডের ভর + 3.41 g = (2.87 + 1.70) g

∴ সোডিয়াম ক্লোরাইডের ভর = 1.16 g।

6.3 g NaHCO3, 15 g অ্যাসিটিক অ্যাসিডের দ্রবণে যোগ করলে যে অবশেষ পাওয়া যায় তার ভর 18 g। বিক্রিয়ায় নির্গত CO2 -এর পরিমাণ নির্ণয় করো।

ভরের সংরক্ষণ সূত্রানুসারে, বিক্রিয়কগুলির মোট ভর = বিক্রিয়াজাত পদার্থের মোট ভর (ধরা যাক সমস্ত বিক্রিয়ক, বিক্রিয়াজাত পদার্থে রূপান্তরিত হয়েছে)

এক্ষেত্রে বিক্রিয়কগুলির মোট ভর = (6.3 + 15) g = 21.3 g

∴ 21.3 g = অবশেষের ভর + নির্গত CO2 -এর ভর = 18g + নির্গত CO2 -এর ভর

∴ নির্গত CO2 -এর ভর = (21.3 – 18) g = 3.3 g

প্রমাণ চাপ ও উষ্ণতায় 100 mL কোনো গ্যাসের ভর 0.144 g। গ্যাসটির বাষ্পঘনত্ব কত?

STP -তে 100 mL গ্যাসের ভর = 0.144 g

STP -তে 22400 mL গ্যাসের ভর =0.144×22400100g=32.256g

∴ গ্যাসটির বাষ্পঘনত্ব =আণবিক ভর2=32.2562=16.128g

STP -তে 250 ml. একটি গ্যাসের ভর 0.7317 g। যদি STP -তে H2 গ্যাসের ঘনত্ব 0.08987 gL1 হয়, তাহলে গ্যাসটির বাষ্পঘনত্ব কত? গ্যাসটির আণবিক ভর নির্ণয় করো।

STP -তে 250 mL H2 গ্যাসের ভর =0.08987×250100g=0.0224g

গ্যাসটির বাষ্পঘনত্ব =STP-তে 250 mL গ্যাসের ভরSTP-তে 250 mL H₂ গ্যাসের ভর =0.7317g0.0224g=32.66

∴ গ্যাসটির আণবিক ভর = 32.66 × 2 = 65.32

750 mm চাপে এবং 25°C উষ্ণতায় 0.15 g একটি গ্যাস 45.95 mL আয়তন অধিকার করে। STP -তে গ্যাসটির প্রমাণ ঘনত্ব, বাষ্পঘনত্ব ও আণবিক গুরুত্ব নির্ণয় করো।

ধরি STP -তে গ্যাসটির আয়তন = V1mL

P1 = 760 mm, P2 = 750 mm, V1 = ?

V2 = 45.95 mL, T1 = 273 K, T2 = (25 + 273) K = 298 K

চার্লস ও বয়েলের সূত্রের সমন্বয় থেকে পাওয়া যায়,

P1V1T1=P2V2T2

V1=750×45.95×273760×298=41.54mL

STP -তে 41.54 mL গ্যাসের ভর 0.15 g

∴ STP -তে 1000 mL গ্যাসের ভর =0.15×100041.54g=3.61g

অর্থাৎ, গ্যাসটির প্রমাণ ঘনত্ব =3.61gL1

∴ গ্যাসটির বাষ্পঘনত্ব =3.610.089=40.56

∴ গ্যাসটির আণবিক গুরুত্ব = 40.56 × 2 = 81.12

24 g ভরের একটি কঠিন মৌলকে সম্পূর্ণরূপে একটি গ্যাসীয় অক্সাইডে পরিণত করতে STP -তে 44.8 L অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। গ্যাসীয় অক্সাইডটি STP -তে 44.8 L আয়তন অধিকার করে। উৎপন্ন গ্যাসীয় অক্সাইডের ভর এবং বাষ্পঘনত্ব নির্ণয় করো।

STP -তে 22.4 L অক্সিজেনের ভর 32 g

∴ STP -তে 44.8 L অক্সিজেনের ভর =32×44.822.4g=64g

∴ গ্যাসীয় অক্সাইডের ভর = (24 + 64) g= 88 g

STP -তে 44.8 L গ্যাসীয় অক্সাইডের ভর 88 g

∴ STP -তে 22.4 L গ্যাসীয় অক্সাইডের ভর =88×22.444.8g=44g

অর্থাৎ, গ্যাসীয় অক্সাইডের আণবিক ভর = 44

∴ গ্যাসীয় অক্সাইডের বাষ্পঘনত্ব =442=22

একটি গ্যাসের বাষ্পঘনত্ব 8.62 হলে STP -তে ওই গ্যাসের 8.62 g -এর আয়তন কত হবে?

গ্যাসের বাষ্পঘনত্ব = 8.62

∴ গ্যাসটির আণবিক গুরুত্ব = 8.62 × 2= 17.24

অর্থাৎ, STP -তে 17.24 g গ্যাসের আয়তন = 22.4 L

∴ STP -তে 8.62 g গ্যাসের আয়তন =22.4×8.6217.24 L=11.2L

একটি গ্যাসীয় মৌলের বাষ্পঘনত্ব অক্সিজেনের 5 গুণ। যদি মৌলটি ত্রি-পরমাণুক হয়, তাহলে মৌলটির পারমাণবিক ভর কত?

অক্সিজেনের বাষ্পঘনত্ব (D)=322=16 [যেহেতু, অক্সিজেনের আণবিক ভর = 32]

∴ গ্যাসীয় মৌলটির বাষ্পঘনত্ব = 5 × 16 = 80

গ্যাসীয় মৌলটির আণবিক ভর = 80 × 2 = 160

মৌলটি ত্রি-পরমাণুক হওয়ায় মৌলটির পারমাণবিক ভর=1603=53.33

কোনো মৌলিক পদার্থের বাষ্পঘনত্ব 48। মৌলটির পারমাণবিক ভর 16 এবং মৌলটির চিহ্ন M হলে বাষ্পীয় অবস্থায় মৌলটির আণবিক সংকেত নির্ণয় করো।

মৌলিক পদার্থটির বাষ্পঘনত্ব = 48

∴ মৌলিক পদার্থটির আণবিক ভর 2 × 48 = 96

মৌলটির পারমাণবিক ভর = 16

∴ মৌলটির 1টি অণুতে পরমাণুর সংখ্যা=9616=6

∴ বাষ্পীয় অবস্থায় মৌলটির আণবিক সংকেত M6

প্রমাণ উষ্ণতা ও চাপে নাইট্রোজেন গ্যাসের সাপেক্ষে সালফার বাষ্পের বাষ্পঘনত্ব 9.143। সালফার বাষ্পের আণবিক সংকেত নির্ণয় করো।

নাইট্রোজেন গ্যাসের সাপেক্ষে সালফার বাষ্পের বাষ্পঘনত্ব =সালফার বাষ্পের আণবিক ভরনাইট্রোজেনের আণবিক ভর

∴ সালফার বাষ্পের আণবিক ভর = 9.143 × 28 = 256.004। সালফারের পারমাণবিক ভর = 32

∴ সালফার বাষ্পের অণুতে S পরমাণুর সংখ্যা=256.00432=8(প্রায়)

∴ সালফার বাষ্পের আণবিক সংকেত = S

বায়ুর সাপেক্ষে একটি গ্যাসের বাষ্পঘনত্ব 1.528। 27°C উষ্ণতা ও 750 mm Hg চাপে গ্যাসটির 2 লিটারের ভর কত? [হাইড্রোজেনের সাপেক্ষে বায়ুর বাষ্পঘনত্ব 14.4]

বায়ুর সাপেক্ষে গ্যাসটির বাষ্পঘনত্ব

=গ্যাসটির আণবিক ভরবায়ুর আণবিক ভর

∴ 1.528=গ্যাসটির আণবিক ভর28.8

অর্থাৎ, গ্যাসটির আণবিক ভর = 1.528 × 28.8 = 44

STP -তে গ্যাসটির আয়তন V হলে, 750×2(273+27)=760×V273

বা, =750×2×273300×760=1.796L

STP -তে গ্যাসটির 22.4 L আয়তনের ভর = 44g

∴ STP -তে 1.796 L গ্যাসটির ভর = \(\left(\frac{44}{22.4}\times1.796\right)g=3.528g\)

STP -তে 1.0 g হাইড্রোজেনের আয়তন 11.2 L এবং সম-অবস্থায় 0.6786 g পরিমাণ বায়ুর আয়তন 0.525 L।হাইড্রোজেনের পরিপ্রেক্ষিতে বায়ুর বাষ্পঘনত্ব নির্ণয় করো।

STP -তে 11.2 L বায়ুর ভর=0.67860.525×11.2g=14.476g

হাইড্রোজেনের পরিপ্রেক্ষিতে বায়ুর বাষ্পঘনত্ব

=STP-তে 11.2 L বায়ুর ভরSTP-তে 11.2 L হাইড্রোজেনের ভর=14.476g1g=14.476

20 g ক্যালশিয়াম কার্বনেটকে উত্তপ্ত করলে কত ভরের ক্যালশিয়ান অক্সাইড পাওয়া যাবে? এক্ষেত্রে STP -তে কত আয়তন CO2, উৎপন্ন হবে? ধরে নাও ক্যালশিয়াম কার্বনেটের সম্পূর্ণ বিয়োজন হয়েছে। [Ca = 40, C = 12, O = 16]

CaCO3100gCaO(40+16)g=56g+ CO244g

100 g CaCO3 -কে উত্তপ্ত করলে CaO পাওয়া যায় = 56 g

∴ 20 g CaCO3-কে উত্তপ্ত করলে CaO পাওয়া যায়=56×20100g=11.2g

∴ CO2 উৎপন্ন হবে = (20 – 11.2) g = 8.8 g

STP -তে 44 g CO2 -এর আয়তন = 22.4 L

∴ STP -তে 8.8 g CO2-এর এর আয়তন=22.444×8.8=4.48L

10 g ক্যালশিয়াম কার্বনেটের সঙ্গে অতিরিক্ত লঘু হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের বিক্রিয়ায় CO2 উৎপন্ন হল। (i) এক্ষেত্রে কত মোল CO2 উৎপন্ন হল? (ii) STP -তে ওই CO2 -এর আয়তন কত হবে?

i. CaCO3+(40+12+16×3)g=100g2HClCaCl2+CO2(12+16×2)g=44g+H2O

ওপরের সমীকরণ অনুসারে, 100 g CaCO3 থেকে CO2 পাওয়া যায় = 44 g

∴ 10 g CaCO3 থেকে CO2 পাওয়া যায়=44100×10=4.4g

44 g CO2 = 1 মোল CO2

∴ 4.4 g CO2=4.444 মোল = 0.1 মোল CO2

ii. STP -তে 1 মোল CO2 -এর আয়তন = 22.4 L

STP -তে 0.1 মোল CO2 এর আয়তন=22.41×0.1=2.24L

সাধারণ উষ্ণতায় 23 g Na জলের সঙ্গে বিক্রিয়া করে কত গ্রাম NaOH উৎপন্ন করবে? [Na = 23, O = 16, H = 1]

সাধারণ উষ্ণতায় Na জলের সঙ্গে বিক্রিয়া করে সোডিয়াম হাইড্রক্সাইড (NaOH) ও হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন করে।

2Na(2×23)g=46g+2H2O2NaOH2(23+16+1)g=80g +H2

ওপরের সমীকরণ অনুসারে, 46 g Na জলের সঙ্গে বিক্রিয়ায় NaOH উৎপন্ন করে = 80 g

সুতরাং, 23 g Na জলের সঙ্গে বিক্রিয়া করে NaOH উৎপন্ন করবে=80×2346g=40g

কত গ্রাম CaCO3 অতিরিক্ত পরিমাণ লঘু HCl -এর সঙ্গে বিক্রিয়া করে 66 গ্রাম CO2 উৎপন্ন করবে।

CaCO3 নিম্নলিখিত রাসায়নিক সমীকরণ অনুসারে HCl এর সাথে বিক্রিয়া করে CO2 গ্যাস উৎপন্ন করে।

CaCO340+12+3×16=100g+2HClCaCl2+CO212+2+16=44g+H2O

ওপরের সমীকরণ অনুসারে, 44 g CO2 উৎপন্ন হয় 100 g CaCO3 থেকে।

∴ 66 g CO2 উৎপন্ন হয় 100×6644g=150 g CaCO3 থেকে।

4 গ্রাম সোডিয়াম হাইড্রক্সাইডকে প্রশমিত করতে কত গ্রাম সালফিউরিক অ্যাসিড প্রয়োজন? [H = 1, O = 16, Na = 23, S = 32]

2NaOH2×40g=80g+H2SO498gNa2SO4+2H2O

ওপরের সমীকরণ অনুসারে, 80 g NaOH -কে প্রশমিত করতে H2SO4 প্রয়োজন = 98 g

সুতরাং, 4 g NaOH -কে প্রশমিত করতে H2SO4 প্রয়োজন=98×480g =4.9g

9.6 গ্রাম অক্সিজেন প্রস্তুত করতে কত গ্রাম পটাশিয়াম ক্লোরেট প্রয়োজন? [K = 39, Cl = 35.5]

পটাশিয়াম ক্লোরেটের তাপীয় বিয়োজনে O2 প্রস্তুতির বিক্রিয়ার রাসায়নিক সমীকরণটি হল –

2KClO3(2×125.5)g=245g2KCL+3O2(3×32)g=96g

ওপরের সমীকরণ অনুসারে, 96 g O2 তৈরি করতে KClO3 প্রয়োজন = 245 g

∴ 9.6 g O2 তৈরি করতে প্রয়োজনীয় KClO3 -এর পরিমাণ

= \(\frac{245\times9.6}{96}\)g

= 24.5 g

64 g সালফার ডাইঅক্সাইড উৎপন্ন করার জন্য কী পরিমাণ তামার সঙ্গে কত পরিমাণ গাঢ় সালফিউরিক অ্যাসিডের বিক্রিয়ার প্রয়োজন?

তামা ও ঘন সালফিউরিক অ্যাসিডের মধ্যে সংঘটিত বিক্রিয়ার রাসায়নিক সমীকরণটি হল –

Cu63.5g+2H2SO42(2+32+4×16)=196gCuSO4+SO2(32+2×16)=64g+2H2O

ওপরের সমীকরণ অনুসারে, 64 g SO2 তৈরি করতে প্রয়োজনীয় তামার পরিমাণ = 63.5 g এবং 64 g SO2 তৈরি করতে প্রয়োজনীয় গাঢ় সালফিউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ = 196 g

অতিরিক্ত পরিমাণ লঘু H2SO4, এর সঙ্গে FeS -এর বিক্রিয়ায় STP -তে 1.12 L H2S পেতে হলে কী পরিমাণ ফেরাস সালফাইড প্রয়োজন?

বিক্রিয়ার সমীকরণ –

FeS+(56+32)g=88gH2SO4FeSO4+H2S(STP -তে 22.4L)

∴ ওপরের সমীকরণ অনুসারে, 22.4 L H2S গ্যাস পাওয়া যায় 88 g FeS থেকে।

∴ 1.12 L H2S গ্যাস পাওয়া যায় =88×1.1222.24g=4.4gFeS থেকে।

উত্তপ্ত লোহার ওপর দিয়ে স্টিম চালনা করলে ফেরোসোফেরিক অক্সাইড ও হাইড্রোজেন উৎপন্ন হয়। এক্ষেত্রে 8 মোল হাইড্রোজেন উৎপন্ন করতে হলে কত মোল লোহার প্রয়োজন হবে?

বিক্রিয়ার সমীকরণ –

3Fe(3মোল)+4H2OFe3O4+4H2(4মোল)

4 মোল H2 উৎপন্ন করতে লোহা প্রয়োজন = 3 মোল।

1 মোল H2 উৎপন্ন করতে লোহা প্রয়োজন =34 মোল।

∴ 8 মোল H2 উৎপন্ন করতে লোহা প্রয়োজন =3×84 = 6 মোল।

7 g হাইড্রোজেন গ্যাস প্রস্তুত করতে কত গ্রাম অবিশুদ্ধ জিংক প্রয়োজন? অবিশুদ্ধ জিংকে 88% জিংক বর্তমান। [Zn = 65.5]

বিক্রিয়ার সমীকরণ –

Zn65.5g+H2SO4ZnSO4+H22g

সমীকরণ অনুসারে, 2 g H2 উৎপন্ন করতে Zn প্রয়োজন = 65.5 g

∴ 7 g H2 উৎপন্ন করতে Zn প্রয়োজন=65.52×7g=229.25g

এখন, 88 g বিশুদ্ধ Zn আছে 100 g অবিশুদ্ধ Zn -এর নমুনায়

∴ 229.25 g বিশুদ্ধ Zn আছে=100×229.2588g=260.51 অবিশুদ্ধ Zn -এর নমুনায়।

∴ 7 g H2 প্রস্তুত করতে 260.51 g অবিশুদ্ধ জিংক প্রয়োজন।

15.25 g KCIO3 ও MnO2 -এর একটি মিশ্রণ উত্তপ্ত করলে 4.8 g O2 নির্গত হয়। কী পরিমাণ MnO2 অনুঘটকরূপে ব্যবহৃত হয়েছিল? [K= 39, Cl = 35.5, O = 16]

বিক্রিয়ার সমীকরণ –

2KClO3(2×122.5)g=245g2KCl+3O2(3×32)g=96g

ওপরের সমীকরণ অনুসারে, 96 g O2 নির্গত হয় 245 g KClO3 থেকে।

∴ 4.8 g O2 নির্গত হয়=245×4.896g=12.25g KClO3 থেকে।

∴ বিক্রিয়াতে ব্যবহৃত KClO3 -এর ভর = 12.25 g

KCIO3 ও MnO2 মিশ্রণের ভর = 15.25 g

∴ ব্যবহৃত MnO2 -এর ওজন = (15.25 – 12.25) g = 3 g

200 g মারকিউরিক অক্সাইড (HgO) -কে উত্তপ্ত করে যত গ্রাম অক্সিজেন পাওয়া যায় সেই পরিমাণ অক্সিজেন কত গ্রাম পটাশিয়াম ক্লোরেটকে উত্তপ্ত করলে পাওয়া যাবে? [K = 39, Hg = 200]

বিক্রিয়ার সমীকরণ –

2HgO2(200+16)=(2×216)gΔ2Hg+O232g

2KClO32(39+35.5+3×16)g2KCl +3O2(3×2×16)g=96g

সমীকরণ অনুসারে, (2 × 216) g HgO থেকে O2 পাওয়া যায় = 32 g

∴ 200g HgO থেকে O2 পাওয়া যায়=32×2002×216g=14.815 g

আবার, 96 g O2 পাওয়া যায় 245 g KClO3 থেকে।

∴ 14.815 g O2 পাওয়া যায়=24596×14.815=37.809g KClO3 থেকে।

174 g বিশুদ্ধ MnO2 কে অতিরিক্ত গাঢ় HCI দ্বারা উত্তপ্ত করায় যে গ্যাস নির্গত হয়, সেই গ্যাসকে KI দ্রবণে চালনা করলে কত গ্রাম I2, মুক্ত হবে? [Mn = 55, I = 127]

বিক্রিয়ার সমীকরণ –

4HCl+MnO255+2×16=87gMnCl2+Cl22×35.5=71g+2H2O

87 g MnO2 উৎপন্ন করে 71 g Cl2

174 g MnO2 উৎপন্ন করে =7187×174g=142gCl2

আবার, Cl2 +2×35.5=71g2Kl2KCl+I22×127=254g

অর্থাৎ, 71 g Cl2 মুক্ত করে 254 g l2

∴ 142 g Cl2 মুক্ত করে 25471×142g=508gI2

KCl ও NaCl -এর 1.873 g মিশ্রণের সঙ্গে অতিরিক্ত AgNO3 যোগ করায় 3.731 g AgCl পাওয়া যায়। মিশ্রণটিতে KCl -এর পরিমাণ নির্ণয় করো। [K = 39, Ag = 108, Cl = 35.5]

ধরা যাক, মিশ্রণে NaCl আছে xg ও KCI আছে (1.873 – x) g

NaCl +23+35.5=58.5gAgNO3AgCl +108+35.5=143.5gNaNO3

58.5 g NaCl থেকে AgCl পাওয়া যায় 143.5 g

x g NaCl থেকে AgCl পাওয়া যায় 143.5×x58.5g=2.453xg

আবার, KCl + 39+35.5=74.5gAgNO3AgCl 143.5g+KNO3

74.5 g KCl থেকে AgCl পাওয়া যায় 143.5 g

(1.873 – x) g KCl থেকে AgCl পাওয়া যায় 143.5(1.873x)74.5g=(3.611.926x)g

প্রশ্নানুসারে, 3.61 – 1.926x + 2.453x = 3.731

বা, x = 0.2296 g

∴ KCI -এর পরিমাণ = (1.873 – 0.2296) = 1.6434 g

ম্যাগনেশিয়াম অক্সাইড ও ম্যাগনেশিয়াম কার্বনেটের একটি মিশ্রণের 6.23 g কে তীব্রভাবে উত্তপ্ত করার ফলে 2.2 g ওজন হ্রাস পেল। মিশ্রণটির শতকরা সংযুতি নির্ণয় করো।

উত্তপ্ত করলে MgO অবিকৃত থাকে কিন্তু MgCO3 বিয়োজিত হয়ে MgO ও CO2 উৎপন্ন করে। CO2 গ্যাসরূপে নির্গত হয় বলে মিশ্রণের ওজন হ্রাস পায়।

MgCO324+12+3×16=84gMgO+CO244g

44 g CO2 নির্গত হয় 84 g MgCO3 থেকে।

2.2 g CO2 নির্গত হয় 84×2.244g= 4.2gMgCO3 থেকে।

সুতরাং, মিশ্রণটিতে MgCO3 -এর পরিমাণ 4.2 g

∴ মিশ্রণটিতে MgCO3 -এর শতকরা পরিমাণ =4.26.23×100=67.42%

∴ মিশ্রণটিতে MgO -এর শতকরা পরিমাণ = (100 – 67.42) = 32.58%

112 g বিশুদ্ধ আয়রনকে ফেরিক ক্লোরাইডে রূপান্তরিত করে জলে দ্রবীভূত করা হল। এই ফেরিক ক্লোরাইডকে সম্পূর্ণরূপে ফেরাস ক্লোরাইডে পরিণত করতে STP -তে কত লিটার H2S গ্যাসের প্রয়োজন হবে? [Fe = 56, Cl = 35.5]

বিক্রিয়ার সমীকরণ –

i. 2Fe+2×56=112g3Cl22FeCl32(56+3×35.5)=325g

ii. 2FeCl32×(56+35.5×3)=325g+H2S22.4L (STP – তে)2FeCl2+2HCl+S

(i) নং সমীকরণ অনুসারে, 112 g আয়রন থেকে FeCl3, পাওয়া যায় 325 g

(ii) নং সমীকরণ অনুস অনুসারে, 325 g FeCl3 -কে ফেরাস ক্লোরাইডে বিজারিত করতে STP তে H2S প্রয়োজন হয় 22.4 লিটার।


আজকের এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের তৃতীয় অধ্যায়, “রাসায়নিক গণনা” অধ্যায়ের গাণিতিক উদাহরণসহ প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নোত্তরগুলো দশম শ্রেণীর পরীক্ষার প্রস্তুতি বা বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সহায়ক হবে, কারণ এ ধরনের প্রশ্ন প্রায়ই পরীক্ষায় আসে। আমি আশা করি, এই আর্টিকেলটি আপনাদের কাজে লেগেছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকে, তাহলে টেলিগ্রামে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। আমি আপনার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকব। ধন্যবাদ!

Share via:

মন্তব্য করুন