আমরা আমাদের আর্টিকেলে নবম শ্রেণীর ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় ‘আবহবিকার’ এর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষার জন্য ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই অধ্যায় থেকে প্রায়শই মূল ধারণাভিত্তিক প্রশ্ন আসে।

আবহবিকারের সংজ্ঞা দাও।
আবহবিকার (Weathering) – আবহাওয়ার অন্তর্গত বিভিন্ন উপাদানের (উষ্ণতা, বৃষ্টিপাত, বায়ুপ্রবাহ, বায়ুমণ্ডলীয় অক্সিজেন, কার্বন ডাইঅক্সাইড প্রভৃতি) দ্বারা যান্ত্রিকভাবে ভূপৃষ্ঠস্থ শিলার বিচূর্ণীকরণ কিংবা রাসায়নিকভাবে বিয়োজনকে আবহবিকার (Weathering) বলা হয়।
আবহবিকারের অপর নাম বিচূর্ণীভবন কেন?
যান্ত্রিক, রাসায়নিক ও জৈবিক পদ্ধতিতে আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদানের সহায়তায় শিলার অসংহতি ও বিয়োজন সংঘটিত হলে শিলা চূর্ণবিচূর্ণ হয়। তাই আবহবিকারের অপর নাম বিচূর্ণীভবন।
ক্ষয়ীভবন কাকে বলে?
আবহবিকারের অপর নাম বিচূর্ণীভবন। এই বিচূর্ণীভবনের সঙ্গে অপসারণ যুক্ত হলে, তাকে ক্ষয়ীভবন বলে। অর্থাৎ সূর্যতাপ, বায়ুপ্রবাহ, বৃষ্টিপাত, তুষারপাত, নদী, হিমবাহ সমুদ্রতরঙ্গ ইত্যাদি প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে ভূত্বক চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে অপসারিত হলে, তাকে ক্ষয়ীভবন (Erosion) বলা হয়।
নগ্নীভবন কাকে বলে?
আবহবিকার, ক্ষয়ীভবন এবং পুঞ্জিতক্ষয়ের সম্মিলিত প্রভাবে শিলাস্তরের উপরিভাগ বিচ্ছিন্ন হয়ে অপসারিত হলে অভ্যন্তরভাগ উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। এভাবে শিলাস্তরের ভিতরের অংশ ভূপৃষ্ঠে উন্মুক্ত হলে, তাকে বলা হয় নগ্নীভবন। সুতরাং, নগ্নীভবন হল আবহবিকার, ক্ষয়ীভবন ও পুঞ্জিতক্ষয়ের সম্মিলিত ফল।
কী প্রকার শিলায় শল্কমোচন ঘটে?
সমসত্ত্ব শিলায়, অর্থাৎ একই প্রকার খনিজের সমন্বয়ে গঠিত শিলায় শল্কমোচন ঘটে। গ্রানাইট সমসত্ত্ব বা সমপ্রকৃতির শিলা। তাই উক্ত শিলাগঠিত অঞ্চলে শল্কমোচন প্রক্রিয়ায় আবহবিকার সংঘটিত হয়। এর ফলে, গোলাকৃতি ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়।
স্ক্রি বা ট্যালাস কাকে বলে?
শীতপ্রধান পার্বত্য অঞ্চলে যান্ত্রিক আবহবিকারের মাধ্যমে শিলাস্তর ফেটে টুকরো টুকরো অসংখ্য কোণবিশিষ্ট প্রস্তরখণ্ডের সৃষ্টি করে। এই কোণবিশিষ্ট প্রস্তরখণ্ডগুলি উল্লম্বভাবে পর্বতগাত্রে অবস্থান করলে তাকে, স্ক্রি বা ট্যালাস বলে।
ফেলসেনমার বা ব্লকস্পেড কাকে বলে?
তুষারের দ্বারা আবহবিকৃত কোণবিশিষ্ট স্ক্রি বা ট্যালাসে পর্বতের পাদদেশ আবৃত থাকলে, তাকে ফেলসেনমার বা ব্লকস্পেড বা প্রস্তরক্ষেত্র বলা হয়।
মৃত্তিকা কাকে বলে?
মৃত্তিকা বা Soil শব্দটি ল্যাটিন শব্দ ‘Solum’ থেকে এসেছে। যার অর্থ ভূমিতল বা মেঝে (Floor)। ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে বিভিন্ন খনিজ ও জৈব পদার্থসমৃদ্ধ যে শিথিল, নিষ্ক্রিয়, ভঙ্গুর আবরণী স্তর উদ্ভিদ ধারণ ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, তাকে মৃত্তিকা বলে।
টেরারোসা কী?
‘টেরা’ (Terra) শব্দের অর্থ ‘মৃত্তিকা’ এবং ‘রোসা’ (Rossa) শব্দের অর্থ ‘লাল’। ক্রান্তীয় অঞ্চলে ল্যাটেরাইটের মতো একপ্রকার লাল রঙের মৃত্তিকাকে টেরারোসা বলে। আবহবিকারের ফলে (প্রধানত কার্বনেশন প্রক্রিয়ায়) চুনাপাথরযুক্ত বা কার্স্ট অঞ্চলে লৌহকণাযুক্ত যে ভূ-আস্তরণের সৃষ্টি হয়, তাকে ‘টেরারোসা’ বা লাল মাটি বলে।

মাটির গঠনগত উপাদানগুলি লেখো।
মাটি প্রধানত খনিজ পদার্থ (সিলিকা, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদি) জল, বায়ু এবং জৈব পদার্থ (পচা পাতা, কীটপতঙ্গ, ব্যাকটেরিয়া ইত্যাদি) দ্বারা গঠিত। মাটির গঠনগত উপাদানের 50% -ই হল খনিজ পদার্থ। এছাড়া 25% মৃত্তিকাস্থিত জল, 20% মৃত্তিকাস্থিত বায়ু এবং 5% জৈব পদার্থ দ্বারা গঠিত।
প্রস্তরচাঁই বিচ্ছিন্নকরণের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।
প্রস্তরচাঁই বিচ্ছিন্নকরাণর বৈশিষ্ট্যগুলি হল –
- এই প্রকার আবহবিকার ব্যাসল্ট জাতীয় শিলায় বেশি দেখা যায়,
- এই প্রকার আবহবিকারে শিলায় অসংখ্য সমান্তরাল ও উল্লম্ব ফাটল সৃষ্টি হয়ে সিঁড়ির মতো ধাপের সৃষ্টি হয়,
- এই আবহবিকারের ফলে পাহাড়ের মাথাগুলি চ্যাপটা আকৃতির হয়।
শল্কমোচনের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।
শল্কমোচানের বৈশিষ্ট্যগুলি হল –
- এই প্রকার আবহবিকার গ্রানাইট জাতীয় শিলায় বেশি দেখা যায়,
- সমপ্রকৃতির বা একই জাতীয় খনিজ পদার্থে গঠিত শিলায় এই প্রকার আবহবিকার দেখা যায়।
- এই প্রকার আবহবিকারের ফলে পাহাড়ের মাথাগুলি গোলাকৃতির হয়।
ক্ষুদ্রকণা বিসরণের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।
ক্ষুদ্রকণা বিসরণের বৈশিষ্ট্যগুলি হল –
- বিষমপ্রকৃতির খনিজ পদার্থ যুক্ত শিলায় এই আবহবিকার দেখা যায়,
- এই আবহবিকার সংঘটিত হওয়ার সময় বন্দুক থেকে গুলি ছোড়ার মতো শব্দ সৃষ্টি হয়ে শিলা চূর্ণবিচূর্ণ হয়,
- এই প্রকার আবহবিকারের ফলে ইনসেলবার্জ নামক ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়,
- মরু অঞ্চলে এই প্রকার আবহবিকার সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
কার্স্ট ভূমিরূপ কাকে বলে?
চুনাপাথরযুক্ত অঞ্চলে ভৌমজলের কার্যের ফলে যে বিশেষ ধরনের ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, তাকে কার্স্ট ভূমিরূপ বলে। সাধারণত, কার্বনেশন প্রক্রিয়ায় জল, বাতাসের কার্বন ডাইঅক্সাইড চুনাপাথরের সঙ্গে বিক্রিয়া করে ক্যালশিয়াম বাইকার্বোনেট উৎপন্ন করে এই প্রকার ভূমিরূপ গঠন করে। স্ট্যালাকটাইট, স্ট্যালাগমাইট, গুহা, স্তম্ভ, সিঙ্কহোল ইত্যাদি হল এই ভূমিরূপের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য।
সোলাম কী?
সংজ্ঞা – ইংরাজি ‘Soil’ শব্দটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘Solum’ (সোলাম) থেকে, যার অর্থ ভূমি বা মেঝে (Floor)।
আবহবিকারের ফলে আদি শিলা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যে রেগোলিথের সৃষ্টি হয় তার উপরিভাগের যে মৃত্তিকা স্তর থেকে উদ্ভিদ খাদ্য সংগ্রহ করে তাকে সোলাম বলে। এককথায় মৃত্তিকার A ও B স্তরকে একত্রে সোলাম বলে।
বৈশিষ্ট্য –
- অপরিণত মাটিতে সোলাম গঠিত হয় না কেবলমাত্র পরিণত মাটিতেই সোলাম গঠিত হয়।
- এটি উদ্ভিদ, ছোটো প্রাণী ও জীবাণুকুলের আবাসস্থল। এটি মৃত্তিকার জৈব রসায়নাগার হিসেবে কাজ করে।
ফালি চাষ বা Strip Cropping কী?
অসংরক্ষিত বা উদ্ভিদ বিহীন ঢালু জমিতে আড়াআড়িভাবে চওড়া ফিতাকৃতি বা ফালি আকৃতির (Strip) কৃষি জমি তৈরি করে শস্য চাষ করাকে ফালি চাষ বা Strip Cropping বলে। এর ফলে মৃত্তিকা ক্ষয় হ্রাস পায়।

ধাপ চাষ বা Step Cropping কী?
পাহাড়ি অঞ্চলে ঢাল কয়েকটি ভাগে কেটে ধাপের (step) সৃষ্টি করে প্রবহমান জলের গতি প্রশমিত করা হয় এবং কৃষিকাজে ব্যবহার করা হয়। এই কৃষিকাজকে ধাপ চাষ বা Step Cropping বলে। এর ফলে পাহাড়ের ঢালে মৃত্তিকা ক্ষয় কম হয়।

সমোন্নতি শস্যায়ন (Contour farming) কাকে বলে?
শস্য চাষের জন্য মালভূমি বা পার্বত্য অঞ্চলের ঢালু জমিতে সমোন্নতি রেখা বরাবর আল ও নালা (Ridge) তৈরি করা হয়। এর ফলে শুষ্ক অঞ্চলে বৃষ্টির জল আলে বাধা পেয়ে মৃত্তিকায় অনুপ্রবেশ করে এবং অধিক বৃষ্টিপাত যুক্ত অঞ্চলে অতিরিক্ত জল নালার মাধ্যমে বাইরে বেরিয়ে যায়, এই শস্যায়নকে সমোন্নতি শস্যায়ন বলে। ঢালু জমিতে মৃত্তিকাকে ক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করার অন্যতম পদ্ধতি হল এই সমোন্নতি শস্যায়ন।

নিরক্ষীয় জলবায়ুতে যান্ত্রিক আবহবিকার প্রক্রিয়া দেখা যায় কেন?
নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলে সৃষ্ট আবহবিকার প্রক্রিয়া – নিরক্ষীয় অঞ্চলে সারা বছর উষ্ণ আর্দ্র পরিবেশের জন্য রাসায়নিক আবহবিকার অধিক সংঘটিত হলেও এখানে যান্ত্রিক আবহবিকারও দেখা যায়।
যান্ত্রিক আবহবিকার প্রক্রিয়া – দিনের বেলার প্রচণ্ড সূর্যতাপে উত্তপ্ত হয়ে থাকা শিলার উপর বিকালে পরিচলন বৃষ্টির ফোঁটা পড়লে শিলা দ্রুত শীতল হয়। পর্যায়ক্রমে এরূপ হতে থাকলে শিলার যান্ত্রিক আবহবিকার ঘটে। আবার, কিছু শিলা বৃষ্টির জলে আর্দ্র বা সিক্ত হয়ে পড়লে ওই শিলা আবহবিকারপ্রাপ্ত হয়।
মরুভার্নিস (Desert Varnish) কাকে বলে?
সংজ্ঞা – মরু অঞ্চলে কোয়ার্টজ কণা, শিলাখণ্ডের বা বোল্ডারের ওপর যে কমলা-বাদামি চকচকে আস্তরণ পড়ে তাকে মরুভার্নিস বলে। এই চকচকে আস্তরণটি কাদা এবং লোহা ও ম্যাঙ্গানিজ অক্সাইড দ্বারা গঠিত হয়। খালি চোখে এদের দেখা যায় না, তবে কখনো-কখনো মরুভার্নিস বেশ পুরু হয়ে থাকে।

বৈশিষ্ট্য –
- এটি আবহবিকার প্রাপ্ত এমন একটি ভূমিরূপ যেখানে শিলা খনিজের ক্ষেত্রমান অপরিবর্তিত থাকে।
- এই আস্তরণটি মূলত লৌহ অক্সাইড, ম্যাঙ্গানিজ ডাইঅক্সাইড এবং সিলিকা দ্বারা গঠিত হয়।
- এই আস্তরণের পুরুত্ব (Thickness) 1 মিমি পর্যন্ত হতে পারে।
‘টর’ কাকে বলে?
অর্থ – টর (Tor) কথার অর্থ Hill বা ‘Rocky Peaks’।
সংজ্ঞা – আর্দ্র অঞ্চলে দারণ সমৃদ্ধ গ্রানাইট জাতীয় শিলায় আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট ছোটো ছোটো গোলাকৃতি টিলার ন্যায় ভূমিরূপকে টর বলে।
সৃষ্টি – সাধারণত অন্তঃস্থ কঠিন শিলার চারপাশের দারণ যুক্ত অংশ যান্ত্রিক ও রাসায়নিক আবহবিকারের সম্মিলিত প্রভাবে ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। এই ভঙ্গুর অংশ পরবর্তীকালে অপসারিত হলে অন্তঃস্থ কঠিন শিলাটি অনুচ্চ টিলার ন্যায় দাঁড়িয়ে থেকে টর সৃষ্টি করে।
বৈশিষ্ট্য –
- আর্দ্র ক্রান্তীয় জলবায়ু অঞ্চলে যেখানে যান্ত্রিক ও রাসায়নিক আবহবিকার একত্রে দেখা যায় সেখানে টর দেখা যায়।
- এগুলি গোলাকার আকৃতির হয়।
- এদের উচ্চতা 6-20 মিটার হয় এবং এগুলি বিচ্ছিন্ন ভাবে দাঁড়িয়ে থাকে।
উদাহরণ – ছোটোনাগপুর মালভূমিতে টর দেখা যায়।
চাপ হ্রাসজনিত গম্বুজ (Exfoliation dome) কাকে বলে?
সংজ্ঞা – আগ্নেয় শিলায় গঠিত উদবেধ বহুকাল ধরে ক্ষয়কার্যের ফলে ভূপৃষ্ঠে আত্মপ্রকাশ করলে ওপরের চাপ হ্রাসের জন্য তা প্রসারিত হয়ে ধনুকের মতো বেঁকে গম্বুজে পরিণত হয়। একে চাপ হ্রাসজনিত গম্বুজ বলে। এফ ই ম্যাথেস (F E Mathes) প্রথম এক্সফোলিয়েশন গম্বুজের নামকরণ করেন।
বৈশিষ্ট্য –
- এটি দেখতে গম্বুজাকৃতির যা অনুচ্চ পাহাড় বা টিলার ন্যায় অবস্থান করে।
- এটি বৃক্ষহীন, খণ্ড খণ্ড অসংলগ্ন পাতের ন্যায় আস্তরণ দিয়ে ঢাকা থাকে।
- এর উচ্চতা 10 ফুট থেকে কয়েকশো ফুট হয়।
উদাহরণ – ছোটোনাগপুর মালভূমিতে এরূপ গম্বুজ দেখা যায়।
কেন্সপ্রাঙ্ (Kens prung) কাকে বলে?
সংজ্ঞা – প্রসারণজনিত আবহবিকারের ফলে বিশালাকার বোল্ডার গুলিতে এমন কিছু ফাটল সৃষ্টি হয়, যেগুলি থেকে বোল্ডারটি কম সংখ্যক বড়ো বড়ো খণ্ডে ভেঙে যায়। এই ফাটলগুলিকে কেন্সপ্রাঙ্ বলে।
বৈশিষ্ট্য –
- গ্রানাইট শিলার ছোটো ছোটো ফাটলগুলি থেকে প্রসারণজনিত কারণে এই ধরনের ফাটলগুলির সৃষ্টি হয়।
- একটি বৃহৎ আকৃতির বোল্ডার ভেঙে গিয়ে একাধিক ছোটো ছোটো বোল্ডারে পরিণত হয়।
আবহবিকার গর্ত (Weathering Pit) বা গামাগত (Ghamma Pit) কাকে বলে?
গামাগর্ত – সাধারণত গ্রানাইট, নিস বা বেলেপাথর জাতীয় শিলায় ক্ষুদ্রকণা বিসরণ বা ফ্লেকিং -এর কারণে গর্তের সৃষ্টি হয়। এই গর্তগুলিকে আবহবিকার গর্ত বা গামাগর্ত বলে।
শল্কমোচন প্রক্রিয়ায় তাপীয় ঢাল (Thermal Gradient) জনিত পীড়ন ও শিলা সমসত্ত্বতার ভূমিকা লেখো।
সংজ্ঞা – ‘শল্ক’ শব্দের অর্থ ‘পেঁয়াজের খোসা’ এবং ‘মোচন’ -এর অর্থ ত্যাগ। উষ্ণতা হ্রাস বৃদ্ধির কারণে যখন কোনো শিলার ওপরের স্তরটি পেঁয়াজের খোসার মতো খুলে যায় তখন তাকে শল্কমোচন বলে। আবহবিকারের এই প্রক্রিয়াটি সংঘটিত হওয়ার জন্য যে সকল উপাদানের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ তা হল –
- শিলার সমসত্ত্বতা – একই জাতীয় খনিজ দ্বারা গঠিত সমসত্ত্ব শিলার স্তরগুলি যদি সমকেন্দ্রিক হয় তাহলে উষ্ণতার হ্রাস বৃদ্ধির কারণে ওপরের স্তরটি ভিতরের স্তরের তুলনায় অধিক সংকুচিত ও প্রসারিত হয় এবং পিঁয়াজের খোসার মতো খুলে যায়।
- তাপীয় ঢাল – উষ্ণতার হ্রাস বৃদ্ধির ফলে সমসত্ত্ব শিলার উপরিভাগ থেকে ভিতরের দিকে এক তাপীয় ঢাল সৃষ্টি হয়। এই তাপীয় ঢাল অনুসারে পীড়নের মাত্রা ভিতরের দিকে কমতে থাকে। ওপরের স্তরে পীড়ন বেশি হওয়ায় তা সহজেই খুলে যায়।
আমরা আমাদের আর্টিকেলে নবম শ্রেণীর ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় ‘আবহবিকার’ এর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষার জন্য বা চাকরির পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি নবম শ্রেণীর পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায় দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে, আপনারা আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাছাড়া নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।