এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান – পদার্থের ভৌত রাসায়নিক ধর্মসমূহ – ধাতুবিদ্যা – সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

আমরা আমাদের আর্টিকেলে দশম শ্রেণীর ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায়ের ‘পদার্থের ভৌত রাসায়নিক ধর্মসমূহ‘ থেকে ‘ধাতুবিদ্যা’ এর কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো দশম শ্রেণীর ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য ও চাকরির পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান-পদার্থের ভৌত রাসায়নিক ধর্মসমূহ-ধাতুবিদ্যা-সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
Contents Show

কার্বনের পরিমাণের উপর ভিত্তি করে আয়রন বা লোহাকে কী কী শ্রেণিতে ভাগ করা যায়? এর মধ্যে কোনটি বিশুদ্ধতম?

কার্বনের পরিমাণের উপর ভিত্তি করে আয়রনকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় – কাস্ট আয়রন বা ঢালাই লোহা (C – 2-4.5%), রট আয়রন বা পেটা লোহা (C – 0.1-0.15%) ও স্টিল বা ইস্পাত (C – 0.15-1.5%)।

এই তিন প্রকার আয়রনের মধ্যে রট আয়রন বা পেটা লোহা বিশুদ্ধতম।

কাস্ট আয়রন বা ঢালাই লোহার ব্যবহার লেখো।

কাস্ট আয়রন বা ঢালাই লোহার ব্যবহার হল –

  • অধিকাংশ ঢালাই লোহা ইস্পাত বা পেটা লোহা প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত হয়। 
  • লোহার নল, ম্যানহোলের ঢাকনা, ইস্ত্রি, রেলিং, কড়াই, আলোকস্তম্ভ প্রভৃতি তৈরিতে কাস্ট আয়রন বা ঢালাই লোহা ব্যবহৃত হয়।

রট্ আয়রন বা পেটা লোহার ব্যবহার লেখো।

রট্ আয়রন বা পেটা লোহার ব্যবহার হল –

  • তড়িৎচুম্বকের মজ্জা তৈরিতে রট্ আয়রন ব্যবহৃত হয়।
  • তার, শেকল, পেরেক, রড প্রভৃতি তৈরিতে পেটা লোহা ব্যবহৃত হয়।

ইস্পাত বা স্টিলের ব্যবহার লেখো।

ইস্পাত বা স্টিলের ব্যবহার হল –

  • মোটরগাড়ি, রেললাইন, ছুরি, কাঁচি, অস্ত্রোপচারের যন্ত্রপাতি, জাহাজ, যুদ্ধবিমান, যন্ত্রপাতি, বন্দুক, ব্লেড, ট্যাংকার, লাঙলের ফলা, ট্রাক্টর প্রভৃতি তৈরিতে স্টিল ব্যবহৃত হয়।
  • হাতা, খুন্তি, থালা, বাটি, গ্লাস ইত্যাদি গৃহস্থালির সামগ্রী প্রস্তুতিতে স্টিল ব্যবহৃত হয়।
  • ইস্পাতের সঙ্গে অন্যান্য ধাতু মিশিয়ে সংকর স্টিল বা অ্যালয় স্টিল তৈরি করা হয়।

তড়িৎ-পরিবাহী তার ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি তৈরিতে তামা ব্যবহার করা হয় কেন?

তামার দুটি বিশেষ ধর্ম আছে –

  • এটি নিম্ন রোধসম্পন্ন এবং
  • নমনীয় প্রকৃতির ধাতু।

এই কারণে তড়িৎ-পরিবাহী তার, টেলিফোনের তার, ডায়নামো, মোটর ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকারের বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি তৈরিতে তামা ব্যবহৃত হয়।

তামা তাপের সুপরিবাহী – এই ধর্মটির ব্যাবহারিক প্রয়োগ উল্লেখ করো।

তামা তাপের সুপরিবাহী – এই ধর্মটির ব্যাবহারিক প্রয়োগগুলি হল –

  • রান্নার বাসনপত্র তৈরিতে তামা ব্যবহৃত হয়। এর ফলে সহজে খাদ্যবস্তুতে তাপ সরবরাহ করা যায় ও রান্না দ্রুত সম্পন্ন হয়।
  • ক্যালোরিমিটার প্রস্তুতিতে তামা ব্যবহৃত হয়। এর সাহায্যে পরীক্ষাধীন বস্তুর দ্বারা গৃহীত বা বর্জিত তাপ সহজে পরিমাপ করা যায়।
  • কলকারখানার বয়লার তৈরিতে তামা ব্যবহৃত হয়। তাপের সুপরিবাহী হওয়ায় বয়লারের জল দ্রুত গরম হয়।

জিংকের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহারগুলি উল্লেখ করো।

জিংকের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহারগুলি হল –

  • পরীক্ষাগারে হাইড্রোজেন প্রস্তুতির জন্য ও বিজারকরূপে জিংক ব্যবহৃত হয়।
  • তড়িৎকোশ এবং জিংক হোয়াইট নামক সাদা রং প্রস্তুতিতে জিংক ব্যবহৃত হয়।
  • লোহার জিনিসের ওপর জিংকের প্রলেপ দিয়ে মরচে পড়া রোধ করা যায়।

অ্যালুমিনিয়াম একটি হালকা ও ক্ষয়রোধী ধাতু – এই ধর্মগুলির ব্যাবহারিক প্রয়োগ উল্লেখ করো।

অ্যালুমিনিয়াম একটি হালকা ও ক্ষয়রোধী ধাতু – এই ধর্মগুলির ব্যাবহারিক প্রয়োগগুলি হল –

  • অ্যালুমিনিয়াম হালকা ধাতু হওয়ায় বিভিন্ন শিল্পে হালকা যন্ত্রাংশ তৈরিতে Al ব্যবহৃত হয়।
  • হালকা ও ক্ষয়রোধী হওয়ায় বিমান ও মোটরগাড়ির কাঠামো নির্মাণে, চেয়ার, সিঁড়ি, বাক্স, বাড়িঘরের আচ্ছাদন, জানালা-দরজার ফ্রেম, বালতি ইত্যাদি প্রস্তুতিতে অ্যালুমিনিয়াম ধাতু ব্যবহৃত হয়।

অ্যালুমিনিয়ামের দুটি ধর্ম নীচে উল্লেখ করা হল। ব্যাবহারিক ক্ষেত্রে কোথায় এদের প্রয়োগ করা হয় উল্লেখ করো – (1) Al তড়িতের সুপরিবাহী (2) Al -কে খুব পাতলা পাতে পরিণত করা যায়।

অ্যালুমিনিয়ামের দুটি ধর্ম হল –

  • তড়িতের সুপরিবাহী হওয়ায় বৈদ্যুতিক পরিবাহী তার ও বিভিন্ন বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ নির্মাণে Al ব্যবহার করা হয়।
  • Al -কে খুব পাতলা পাতে পরিণত করা যায়। এই ধর্মকে কাজে লাগিয়ে প্যাকিং ফয়েল (যা চকোলেট, ওষুধ, মিষ্টি প্যাকিংয়ে কাজে) প্রস্তুতিতে Al ব্যবহৃত হয়।

খনিজ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

ভূগর্ভে বা ভূপৃষ্ঠে প্রাপ্ত প্রকৃতিজাত অজৈব পদার্থসমূহ যাদের মধ্যে ধাতুগুলি মুক্ত অবস্থায় বা যৌগরূপে অন্যান্য অশুদ্ধির সঙ্গে মিশ্রিত অবস্থায় থাকে, তাদের খনিজ বলে।

উদাহরণ – রেড হিমাটাইট (Fe2O3), ম্যাগনেটাইট (Fe3O4), আয়রন পাইরাইট্স্ (FeS2) প্রভৃতি আয়রন ধাতুর খনিজ।

আকরিক কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

যে খনিজ পদার্থ থেকে অপেক্ষাকৃত সহজ উপায়ে, সুলভে এবং তুলনামূলকভাবে কম জটিল রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় উচ্চ গুণমানসম্পন্ন ধাতু নিষ্কাশন করা যায়, সেই খনিজকে সংশ্লিষ্ট ধাতুর আকরিক বলে।

উদাহরণ – রেড হিমাটাইট (Fe2O3) থেকে সহজে, সুলভে ও সরল রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় উচ্চমানের লোহা নিষ্কাশন করা যায় বলে রেড হিমাটাইটকে লোহার আকরিকরূপে গণ্য করা হয়।

আকরিক কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

খনিজমল কী?

আকরিকের মধ্যে মূল ধাতু বা ধাতব যৌগটি ছাড়াও মাটি, বালি, পাথর ও অন্যান্য যৌগ অশুদ্ধি অবস্থায় মিশে থাকে। এইসব অশুদ্ধিকে খনিজমল বলে। যেমন – কপার পাইরাইট্স্ (Cu2S⋅Fe2S3) নামক কপারের আকরিকের মধ্যে আয়রন সালফাইড, বালি, মাটি, সালফার আর্সেনিক ইত্যাদি মিশে থাকে। এই অশুদ্ধিগুলি হল ওই আকরিকের খনিজমল।

জারণ-বিজারণের ইলেকট্রনীয় সংজ্ঞা দাও।

জারণ – যে প্রক্রিয়ায় কোনো পরমাণু বা আয়ন থেকে এক বা একাধিক ইলেকট্রন বর্জিত হয়, তাকে জারণ বলে।

উদাহরণ – Na → Na+ + e, Fe2+ → Fe3+ + e

বিজারণ – যে প্রক্রিয়ায় কোনো পরমাণু বা আয়ন এক বা একাধিক ইলেকট্রন গ্রহণ করে, তাকে বিজারণ বলে।

উদাহরণ – Cl + e → Cl, Na+ + e → Na

থার্মিট মিশ্রণ কাকে বলে? থার্মিট পদ্ধতির ব্যাবহারিক প্রয়োগ উল্লেখ করো।

3 ভাগ ফেরিক অক্সাইড (Fe2O3) ও 1 ভাগ অ্যালুমিনিয়াম (Al) চূর্ণের মিশ্রণকে থার্মিট মিশ্রণ বলে।

থার্মিট পদ্ধতির ব্যাবহারিক প্রয়োগগুলি নিম্নরূপ –

  • থার্মিট পদ্ধতি ব্যবহার করে রেললাইন, ট্রামলাইন, বড়ো বড়ো লোহার মেশিন বা জাহাজের ভাঙা অংশ জোড়া লাগানো হয়।
  • এই পদ্ধতির সাহায্যে ক্রোমিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ প্রভৃতি ধাতুর নিষ্কাশনও করা হয়।

ধাতুর সক্রিয়তা সারি কাকে বলে? সক্রিয়তা সারিতে সবচেয়ে উপরে ও সবচেয়ে নীচে থাকা ধাতুদুটি কী কী?

ক্রমহ্রাসমান তড়িৎ-ধনাত্মকতা অনুযায়ী অথবা ক্রমহ্রাসমান রাসায়নিক সক্রিয়তা অনুযায়ী ধাতুগুলিকে উপর থেকে নীচের দিকে পরপর সাজিয়ে যে সারি পাওয়া যায়, তাকে ধাতুর সক্রিয়তা সারি বলে।

সক্রিয়তা সারিতে সবচেয়ে উপরে পটাশিয়াম (K) ও সবচেয়ে নীচে সোনা বা গোল্ড (Au) অবস্থিত।

ধাতুর সক্রিয়তা সারি –

ধাতুর সক্রিয়তা সারি কাকে বলে? সক্রিয়তা সারিতে সবচেয়ে উপরে ও সবচেয়ে নীচে থাকা ধাতুদুটি কী কী?

বামস্তম্ভের সঙ্গে ডানস্তম্ভ মিলিয়ে সঠিক উত্তরগুলি নির্বাচন করো।

বামস্তন্তডানস্তম্ভ
(i) Ca(A) লোহিততপ্ত অবস্থায় স্টিমের সঙ্গে বিক্রিয়ায় H2 উৎপন্ন করে।
(ii) Pb(B) ঠান্ডা জলের সঙ্গে বিক্রিয়ায় H2 উৎপন্ন করে।
(iii) Cu(C) কেবলমাত্র অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়ায় H2 উৎপন্ন করে।
(iv) Zn(D) অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়ায় H2 উৎপন্ন করে না।

বামস্তম্ভের সঙ্গে ডানস্তম্ভ মিলিয়ে সঠিক উত্তর হল –

বামস্তন্তডানস্তম্ভ
(i) Ca(B) ঠান্ডা জলের সঙ্গে বিক্রিয়ায় H2 উৎপন্ন করে।
(ii) Pb(C) কেবলমাত্র অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়ায় H2 উৎপন্ন করে।
(iii) Cu(D) অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়ায় H2 উৎপন্ন করে না।
(iv) Zn(A) লোহিততপ্ত অবস্থায় স্টিমের সঙ্গে বিক্রিয়ায় H2 উৎপন্ন করে।

প্রদত্ত বিক্রিয়াগুলির ভিত্তিতে Cu, Fe, Ag ও Zn ধাতুগুলিকে সক্রিয়তার ক্রমানুসারে সাজাও।

(i) CuSO4 + Fe → FeSO4 + Cu
(ii) 2AgNO3 + Cu → Cu(NO3)2 + 2Ag
(iii) FeSO4 + Zn → ZnSO4 + Fe

অধিক সক্রিয় কোনো ধাতু তুলনামূলক কম সক্রিয় ধাতুর লবণের দ্রবণ থেকে সংশ্লিষ্ট ধাতুটিকে প্রতিস্থাপিত করে।

  1. বিক্রিয়া অনুসারে, Fe -এর সক্রিয়তা Cu অপেক্ষা বেশি।
  2. বিক্রিয়া অনুসারে, Cu -এর সক্রিয়তা Ag অপেক্ষা বেশি।
  3. বিক্রিয়া অনুসারে Zn -এর সক্রিয়তা Fe অপেক্ষা বেশি।

সুতরাং, সক্রিয়তার ক্রম – Zn > Fe > Cu > Ag।

কপার সালফেটের জলীয় দ্রবণে লোহার পেরেক ডুবিয়ে রাখলে তার ওপর লালচে বাদামি বর্ণের আস্তরণ পড়ে কেন?

সক্রিয়তা সারিতে অপেক্ষাকৃত ওপরের দিকে অবস্থিত কোনো ধাতু নীচে থাকা কোনো ধাতুর লবণের জলীয় দ্রবণ থেকে সংশ্লিষ্ট ধাতুটিকে প্রতিস্থাপিত করে অধঃক্ষিপ্ত করতে পারে। যেহেতু ধাতুর সক্রিয়তা সারিতে আয়রন, কপারের ওপরে অবস্থিত, তাই কপার সালফেটের জলীয় দ্রবণ থেকে এটি কপারকে প্রতিস্থাপিত করে অধঃক্ষিপ্ত করে। বিক্রিয়াটি লোহার, পেরেকের পৃষ্ঠতলে ঘটে বলে লোহার পেরেকের ওপরেই প্রতিস্থাপিত কপার জমা হয় ও পেরেকের ওপর লালচে বাদামি বর্ণের আস্তরণ সৃষ্টি হয়।

Fe + CuSO4 → FeSO4 + Cu↓ (লাল)

কপার সালফেটের জলীয় দ্রবণে লোহার পেরেক ডুবিয়ে রাখলে তার ওপর লালচে বাদামি বর্ণের আস্তরণ পড়ে কেন?

কপার সালফেটের জলীয় দ্রবণে জিংকের টুকরো ফেললে কী ঘটবে?

ধাতুর সক্রিয়তা সারিতে জিংক, কপারের উপরে অবস্থিত। তাই কপার সালফেটের জলীয় দ্রবণে জিংকের টুকরো ফেললে জিংক, কপার সালফেটের জলীয় দ্রবণ থেকে কপারকে প্রতিস্থাপিত বা অধঃক্ষিপ্ত করবে। অধঃক্ষিপ্ত কপার, জিংকের টুকরোর পৃষ্ঠতলে জমা হবে। এর ফলে জিংকের টুকরোর ওপর লালচে বাদামি ছোপ দেখা যাবে।

Zn + CuSO4 → ZnSO4 + Cu↓ (লাল)

কার্বন-বিজারণ পদ্ধতি-তে ধাতু নিষ্কাশন বলতে কী বোঝ?

বিশেষ চুল্লিতে (মারুৎচুল্লি) ধাতব অক্সাইডকে (আকরিকটি অক্সাইড না হলে তাকে অক্সাইডে পরিণত করে) উচ্চ উষ্ণতায় কার্বন দ্বারা বিজারিত করে ধাতুতে পরিণত করার পদ্ধতিকে ‘কার্বন-বিজারণ’ বলে। প্রক্রিয়াটিতে বিজারক হিসেবে কোক চূর্ণ (কার্বন) ব্যবহার করা হয়। এছাড়া কার্বনের অসম্পূর্ণ দহনে উৎপন্ন CO বিজারকের কাজ করে।

কার্বন-বিজারণ পদ্ধতিতে অ্যালুমিনিয়াম ধাতু নিষ্কাশন করা যায় না কেন?

ধাতুর সক্রিয়তা সারিতে অ্যালুমিনিয়াম ওপরের দিকে অবস্থিত অর্থাৎ এটি তীব্র তড়িৎ-ধনাত্মক ও খুবই সক্রিয় ধাতু। যেসব ধাতুর অক্সিজেনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রবণতা কার্বনের তুলনায় কম, কেবলমাত্র সেইসব ধাতুগুলিকেই কার্বন-বিজারণ পদ্ধতিতে নিষ্কাশন করা যায়। Al -এর অক্সিজেনের সাথে যুক্ত হওয়ার প্রবণতা কার্বনের তুলনায় বেশি এবং অ্যালুমিনিয়ামের অক্সাইড যৌগ (Al2O3) বেশ স্থায়ী। তাই কার্বন-বিজারণ দ্বারা Al -ধাতু নিষ্কাশন করা যায় না। গলিত অ্যালুমিনার (Al2O3) তড়িদ্‌বিশ্লেষণ দ্বারা Al -ধাতু নিষ্কাশন করা হয়।

সক্রিয়তা সারিতে মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত ধাতুগুলিকে (যেমন – Fe, Zn ইত্যাদি) কোন্ পদ্ধতিতে নিষ্কাশন করা যাবে? যুক্তিসহ লেখো।

সক্রিয়তা সারিতে মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত ধাতুগুলি অপেক্ষাকৃত কম সক্রিয়। এদের অক্সাইডগুলি অপেক্ষাকৃত কম স্থায়ী এবং এই ধাতুগুলির অক্সিজেনের সাথে যুক্ত হওয়ার প্রবণতা কার্বনের তুলনায় কম। তাই এইসব ধাতুর অক্সাইডকে কার্বন দ্বারা উচ্চ উষ্ণতায় বিজারিত করে ধাতুগুলিকে নিষ্কাশন করা হয়।

উদাহরণ – ZnO + C(কোক) → Zn + CO

সক্রিয়তা সারিতে নীচের দিকে অবস্থিত ধাতুগুলিকে প্রকৃতিতে অনেকসময় মুক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় কেন?

সক্রিয়তা সারিতে নীচের দিকে অবস্থিত ধাতুগুলির (Hg, Ag, Au) রাসায়নিক সক্রিয়তা খুব কম হয়। এরা O2, জলীয় বাষ্প, CO2 ইত্যাদি দ্বারা আক্রান্ত হয় না। তাই এদের মুক্ত অবস্থায় প্রকৃতির মধ্যে পাওয়া যায়।

ধাতুর ক্ষয় বলতে কী বোঝ?

খোলা বায়ুতে দীর্ঘদিন রেখে দিলে বায়ুর অক্সিজেন, জলীয় বাষ্প প্রভৃতির প্রভাবে এবং অন্যান্য ভৌত ও রাসায়নিক কারণে ধাতু ও ধাতুনির্মিত বস্তুগুলি আক্রান্ত হয় এবং রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে অন্য পদার্থে পরিণত হয়ে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। এই ঘটনাকে ‘ধাতুর ক্ষয়’ বলা হয়।

বিশুদ্ধ ধাতু অপেক্ষা অবিশুদ্ধ ধাতু সহজেই জলবায়ু দ্বারা আক্রান্ত হয় কেন?

অবিশুদ্ধ ধাতুকে দীর্ঘদিন আর্দ্র বাতাসে ফেলে রাখলে ধাতুটি এবং ধাতুতে উপস্থিত অশুদ্ধি তড়িদ্দ্বাররূপে কাজ করে ছোটো ছোটো তড়িৎকোশ উৎপন্ন করে। ফলে অবিশুদ্ধ ধাতু সহজেই অক্সিজেন, জলীয় বাষ্প প্রভৃতি দ্বারা আক্রান্ত হয়। বিশুদ্ধ ধাতুতে এরূপ তড়িৎকোশ সৃষ্টি না হওয়ায় তা জলবায়ু দ্বারা আক্রান্ত হয় না।

অ্যানোডাইজিং (Anodising) পদ্ধতি কাকে বলে?

Al, Mg ইত্যাদি ধাতু বা ধাতু-সংকর নির্মিত বস্তুকে জলবায়ুর প্রকোপ, রাসায়নিক পদার্থের আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য ওদের ওপর তড়িদ্‌বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে ধাতব অক্সাইডের পাতলা আস্তরণ বা প্রলেপ দেওয়া হয়। এই পদ্ধতিকে অ্যানোডাইজিং বলে। এক্ষেত্রে যে বস্তুর অ্যানোডাইজিং করা হবে তাকে অ্যানোডরূপে ব্যবহার করে অ্যানোডে জায়মান অক্সিজেন মুক্ত করে ধাতুটিকে জারিত করে অক্সাইড আবরণটি সৃষ্টি করা হয়।

ক্যালোরাইজিং (Calorising) কাকে বলে?

কপার, আয়রন, ব্রোঞ্জ, স্টিল ইত্যাদি ধাতু বা ধাতু-সংকর দ্বারা নির্মিত বস্তুর ওপর এই পদ্ধতিতে অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইডের (Al2O3) প্রলেপ দেওয়া হয়। যে দ্রব্যের ওপর প্রলেপ দেওয়া হবে সেটিকে Al ও Al2O3 চূর্ণের মিশ্রণে ঢেকে প্রায় 1000°C উষ্ণতায় H2 -গ্যাসপ্রবাহে 5-6 ঘণ্টা উত্তপ্ত করা হয়। এর ফলে বস্তুটির ওপর Al2O3 -এর একটি পাতলা আস্তরণ পড়ে যা ধাতব-বস্তুকে জলবায়ু ও রাসায়নিক পদার্থের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে ও ধাতব-বস্তুর তাপসহনশীলতা বৃদ্ধি পায়।

লোহায় ‘মরচে পড়া’ (rusting) কাকে বলে? মরচে পড়ার ফলে লোহার জিনিস ক্ষয়প্রাপ্ত হয় কেন?

লোহা বা লৌহজাত দ্রব্যকে আর্দ্র বায়ুতে কিছুদিন খোলা অবস্থায় রেখে দিলে, লোহার ওপর লালচে বাদামি রঙের সোদক ফেরিক অক্সাইড (Fe2O3⋅xH2O) -এর একটি আস্তরণ পড়ে, একেই লোহায় ‘মরচে পড়া’ বলে।

উৎপন্ন মরচের আয়তন, লোহার আয়তন অপেক্ষা বেশি। তাই মরচে পড়া অংশটি শিথিল হয়ে খসে পড়ে। এর ফলে লোহা ধীরে ধীরে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।

লোহায় 'মরচে পড়া' (rusting) কাকে বলে? মরচে পড়ার ফলে লোহার জিনিস ক্ষয়প্রাপ্ত হয় কেন?

মরচে পড়ার প্রয়োজনীয় শর্তগুলি কী কী?

লোহার ওপর মরচে পড়ার প্রয়োজনীয় শর্তগুলি হল –

  • বায়ুর অক্সিজেনের উপস্থিতি,
  • বায়ুতে জলীয় বাষ্পের উপস্থিতি।

যেহেতু আর্দ্র বায়ুতে অক্সিজেন ও জলীয় বাষ্প উভয়েই উপস্থিত থাকে তাই লোহার জিনিসকে আর্দ্র বায়ুর সংস্পর্শে রাখলে ধীরে ধীরে তার ওপর মরচে উৎপন্ন হয়।

লোহায় মরচে পড়ার নির্ণায়ক কারণগুলি কী কী?

লোহায় মরচে পড়ার নির্ণায়ক কারণগুলি হল –

1. লোহার মধ্যে অশুদ্ধিরূপে লোহা অপেক্ষা কম তড়িৎ-ধনাত্মক ধাতব পদার্থ উপস্থিত থাকলে লোহায় মরচে পড়া ত্বরান্বিত হয়।

2. বায়ুতে বিভিন্ন গ্যাসীয় পদার্থের উপস্থিতি (যেমন – CO2, SO2, SO3, NO, NO2 ইত্যাদি) মরচে পড়ার হার বৃদ্ধি করে।

3. জলের মধ্যে ক্লোরাইড \(\left(Cl^-\right)\) বা সালফেট \(\left(SO_4^{2-}\right)\) আয়নের উপস্থিতি মরচে গঠনের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।

লোহায় মরচে পড়াকে ‘মৃদু দহন প্রক্রিয়া’ বলে কেন?

বায়ুর অক্সিজেন ও জলীয় বাষ্পের উপস্থিতিতে লোহা ধীরে ধীরে সোদক ফেরিক অক্সাইড (Fe2O3⋅xH2O) বা মরচে-তে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়ায় সামান্য তাপের উদ্ভব হয়। তাই এই প্রক্রিয়াকে ‘মৃদু দহন’ বলা হয়।

সমুদ্রের তলায় তেলবাহী লোহার পাইপে দ্রুত মরচে পড়ে কেন?

সমুদ্রের জলে দ্রবীভূত অক্সিজেন এবং প্রচুর পরিমাণে ক্লোরাইড (Cl) আয়ন (NaCl হিসেবে দ্রবীভূত) উপস্থিত থাকে। ক্লোরাইড আয়নের উপস্থিতি লোহায় মরচে পড়াকে ত্বরান্বিত করে। তাই সমুদ্রের তলায় তেলবাহী লোহার পাইপে দ্রুত মরচে পড়ে।

গ্যালভানাইজেশন কাকে বলে?

লোহার দ্রব্যের ওপর জিংক ধাতুর পাতলা প্রলেপ দিয়ে লোহাকে আবহাওয়ার প্রভাবজনিত ক্ষয় থেকে রক্ষা করা অর্থাৎ লোহার ওপরে মরচে পড়াকে রোধ করার পদ্ধতিকে গ্যালভানাইজেশন বা জিংক লেপন বলে। লোহার দ্রব্যের ওপর জিংকের এরূপ প্রলেপ দেওয়া থাকলে তাকে গ্যালভানাইজ্ড আয়রন বলে।

শেরারডাইজেশন পদ্ধতি কাকে বলে?

ছোটো ছোটো লোহার দ্রব্যকে জিংক-ধূলির (Zn + ZnO) সঙ্গে রেখে বা লোহার দ্রব্যের ওপর জিংক-ধূলি মাখিয়ে আবদ্ধ চুল্লির মধ্যে উত্তপ্ত করলে, লোহার দ্রব্যগুলির ওপর জিংকের প্রলেপ পড়ে যায়। এই প্রক্রিয়াকে শেরারডাইজেশন বলে।

কী কী পদ্ধতিতে গ্যালভানাইজেশন করা হয়?

গ্যালভানাইজেশন করার পদ্ধতিগুলি হল –

  • লোহার তৈরি বস্তুর পৃষ্ঠতলের ওপর গলিত জিংক স্প্রে করে,
  • লোহার তৈরি জিনিসকে গলিত জিংকের মধ্যে ডুবিয়ে,
  • লোহার বস্তুকে জিংক-ধূলি (Zn + ZnO) সহ ঘূর্ণায়মান চুল্লিতে 300°-400°C উষ্ণতায় বেশ কিছুক্ষণ উত্তপ্ত করে,
  • তড়িদ্‌বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে লোহাকে ক্যাথোড, জিংক দণ্ডকে অ্যানোড এবং জিংক লবণের দ্রবণকে তড়িদ্‌বিশ্লেষ্যরূপে ব্যবহার করে লোহার জিনিসের উপর জিংকের প্রলেপন দ্বারা গ্যালভানাইজেশন সম্পন্ন করা হয়।

লোহার মরচে রোধ করার জন্য জিংক লেপন বা গ্যালভানাইজেশন করা হয় কেন?

লোহার মরচে রোধ করার জন্য জিংকের প্রলেপ দেওয়ার কারণ – তড়িৎ-রাসায়নিক শ্রেণিতে জিংকের অবস্থান আয়রনের ওপরে। সুতরাং আয়রন অপেক্ষা জিংক তড়িৎ-ধনাত্মক অর্থাৎ, জিংকের জারিত হওয়ার প্রবণতা আয়রন অপেক্ষা বেশি। তাই জিংক ও আয়রন একত্রে থাকলে বায়ুর অক্সিজেন বা জলীয় বাষ্পের আক্রমণে আয়রনের আগেই জিংক জারিত হয়। ফলে জিংকের উপস্থিতিতে আয়রন জারণের হাত থেকে রক্ষা পায়। তাই লোহায় মরচে পড়া রোধ করার জন্য জিংক লেপন বা গ্যালভানাইজেশন করা হয়।

জিংক, লোহার তুলনায় বেশি তড়িৎ-ধনাত্মক, তাই লোহার তুলনায় জিংকে দ্রুত আবহাওয়াজনিত ক্ষয় হওয়া উচিত। কিন্তু এরূপ ঘটে না, বরং লোহার জিনিসকে মরচে পড়া থেকে রক্ষা করতে তার ওপর জিংকের প্রলেপ দেওয়া হয় – এই ঘটনাটিকে কীভাবে ব্যাখ্যা করবে?

খোলা বাতাসের সংস্পর্শে রেখে দিলে বায়ুর O2, CO2 ও জলীয় বাষ্পের প্রভাবে জিংকের উপর বেসিক জিংক কার্বনেট [Zn(OH)2⋅ZnCO3] -এর আস্তরণ পড়ে।

এই অদ্রাব্য আস্তরণ জিংককে বায়ুর সংস্পর্শে আসতে দেয় না। এর ফলে জিংক আর ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না। তাই লোহায় মরচে পড়া নিবারণ করতে তার ওপর জিংকের প্রলেপ দেওয়া হয়।

লোহার তৈরি রান্নার কড়াইকে মরচে পড়া থেকে রক্ষা করতে তার ওপর জিংকের প্রলেপ দেওয়া যুক্তিযুক্ত হবে কি?

জিংকের গলনাঙ্ক (420°C) বিশুদ্ধ, লোহার গলনাঙ্ক (1525°C) অপেক্ষা অনেক কম। উচ্চ তাপ প্রয়োগ করা হলে জিংক বাষ্পীভূত হতে পারে, 250°C উষ্ণতায় জিংক ভঙ্গুর হয়ে যায়। তাই রান্নার কড়াইকে মরচে পড়া থেকে রক্ষা করতে জিংকের প্রলেপ দেওয়া যুক্তিযুক্ত নয়।

খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষণে জিংক প্রলিপ্ত পাত্রের পরিবর্তে টিনপ্রলিপ্ত পাত্র ব্যবহার করা হয় কেন?

টিন অপেক্ষা জিংক মরচে প্রতিরোধে অধিক কার্যকারী হলেও খাদ্যদ্রব্যে উপস্থিত আম্লিক পদার্থের সাথে জিংক বিক্রিয়া করে বিষাক্ত যৌগ উৎপন্ন করে। টিনের এরূপ কোনো বিক্রিয়া নেই। তাই খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষণে টিনপ্রলিপ্ত পাত্র ব্যবহার করা হয়।

অ্যালুমিনিয়ামকে ‘আত্মরক্ষায় সক্ষম’ (self protecting) ধাতু বলা হয় কেন?

অ্যালুমিনিয়াম ধাতুর তৈরি জিনিসকে আর্দ্র বায়ুতে রাখলে ওর ওপর অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড (Al2O3) -এর একটি সূক্ষ্ম অপরিবাহী আস্তরণ সৃষ্টি হয়, ফলে এর ধাতব ঔজ্জ্বল্য নষ্ট হয়ে যায়। অক্সাইডের এই আস্তরণ জলে অদ্রাব্য ও ধাতুটিকে পরবর্তী আবহাওয়াজনিত জারণক্রিয়া থেকে রক্ষা করে ধাতুটির ক্ষয় রোধ করে। তাই অ্যালুমিনিয়ামকে ‘আত্মরক্ষায় সক্ষম’ ধাতু বলা হয়।

কপার নির্মিত বস্তুকে অনেকদিন খোলা বাতাসে রেখে দিলে তার ওপর সবুজ বর্ণের আস্তরণ পড়তে দেখা যায় কেন?

আর্দ্র বায়ুতে দীর্ঘকাল রেখে দিলে কপারের ওপর কপার অক্সাইড (CuO) -এর আস্তরণ সৃষ্টি হয়। শিল্পাঞ্চলের বায়ুতে H2S -এর উপস্থিতির জন্য কালো বর্ণের CuS -এর আস্তরণও গঠিত হতে পারে। এই আস্তরণ ধীরে ধীরে জারিত হয়ে সবুজ বর্ণের বেসিক কপার সালফেট [CuSO4⋅3Cu(OH)2] উৎপন্ন করে। আবার, অনেকক্ষেত্রে বায়ুর O2, CO2 ও জলীয় বাষ্পের প্রভাবে কপারের ওপর সবুজ বর্ণের বেসিক কপার কার্বনেট [CuCO3⋅Cu(OH)2] -এর স্তরও গঠিত হয়। এইসব রাসায়নিক পরিবর্তনের জন্যই খোলা বাতাসে রাখা কপার নির্মিত বস্তুর উপর সবুজ বর্ণের আস্তরণ পড়তে দেখা যায়।

কপার নির্মিত বস্তুকে অনেকদিন খোলা বাতাসে রেখে দিলে তার ওপর সবুজ বর্ণের আস্তরণ পড়তে দেখা যায় কেন?

তামার তৈরি পুজোর বাসনপত্র পরিষ্কার করতে লেবু বা তেঁতুল ব্যবহার করা হয়। এর সম্ভাব্য কারণ কী হতে পারে বলে তোমার মনে হয়?

বায়ুর CO2, O2 ও জলীয় বাষ্পের প্রভাবে তামার তৈরি বাসনপত্রের ওপর সবুজ বর্ণের বেসিক কপার কার্বনেটের [CuCO3⋅Cu(OH)2] আস্তরণ পড়ে। লেবু বা তেঁতুলে জৈব অ্যাসিড থাকে। এই অ্যাসিডগুলি বেসিক কপার কার্বনেটের সাথে বিক্রিয়া করে এই সবুজ দাগগুলিকে অপসারিত করে। এর ফলে তামার বাসনপত্র পুনরায় দাগ মুক্ত হয়।

সোনার গহনায় অনেক সময় সবুজ ছোপ ধরতে দেখা যায় কেন?

সোনার কাঠিন্য বা দৃঢ়তা বৃদ্ধি করার জন্য বিশুদ্ধ সোনার সাথে খাদ হিসেবে তামা মেশানো হয়। আর্দ্র বায়ুতে দীর্ঘদিন রেখে দিলে তামা বায়ুর বিভিন্ন উপাদানের সাথে বিক্রিয়া করে সবুজ বর্ণের বেসিক কপার সালফেট [CuSO4⋅3Cu(OH))2] বা বেসিক কপার কার্বনেট [CuCO3⋅Cu(OH)2] গঠন করে। তাই তামার খাদযুক্ত সোনার গহনায় অনেক সময় সবুজ ছোপ ধরতে দেখা যায়।

বিশুদ্ধ সোনার সাথে রুপো বা তামা খাদ হিসেবে মেশানো হলে কি হবে?

সোনা নরম ধাতু, বিশুদ্ধ সোনার গহনা সহজে বেঁকে যেতে বা ভেঙ্গে যেতে পারে। বিশুদ্ধ সোনার সাথে রুপো বা তামা খাদ হিসেবে মেশানো হলে সোনার কাঠিন্য বৃদ্ধি পায় ও সোনা অলংকার প্রস্তুত করার উপযোগী হয়।

অ্যালুমিনিয়াম পাতে মোড়া আচার বা চাটনি খাওয়া উচিত নয় কেন?

আচার বা চাটনি জাতীয় খাবারে ভিনিগার মেশানো হয়। ভিনিগারের মুখ্য উপাদান অ্যাসিটিক অ্যাসিড (CH3COOH) নামক একটি জৈব অ্যাসিড। অ্যাসিটিক অ্যাসিড অ্যালুমিনিয়াম পাত্রের সঙ্গে বিক্রিয়া করে Al -ঘটিত লবণ উৎপন্ন করে, যা বিষাক্ত। এর ফলে Al -পাতে মোড়া আচার বা চাটনি খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করলে শরীরে বিষক্রিয়া সৃষ্টি হয়। তাই অ্যালুমিনিয়াম পাতে মোড়া চাটনি বা আচার খাওয়া উচিত নয়।

Class 10 Physical Science – Notes for All Chapters

1. পরিবেশের জন্য ভাবনাবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
2. গ্যাসের আচরণবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত ও দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
গাণিতিক উদহারণ
3. রাসায়নিক গণনাবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
গাণিতিক উদহারণ
4. তাপের ঘটনাসমূহবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত ও দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
গাণিতিক উদাহরণ
5. আলোবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত ও দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
গাণিতিক উদাহরণ
সক্রিয়তামূলক প্রশ্নোত্তর
6. চলতড়িৎবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত ও দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
গাণিতিক উদাহরণ
সক্রিয়তামূলক প্রশ্নোত্তর
7. পরমাণুর নিউক্লিয়াসবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত ও দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
সক্রিয়তামূলক প্রশ্নোত্তর
8. পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ – পর্যায়-সারণি এবং মৌলদের ধর্মের পর্যাবৃত্ততাবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
9. পদার্থের ভৌত রাসায়নিক ধর্মসমূহ – আয়নীয় ও সমযোজী বন্ধনবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
সক্রিয়তামূলক প্রশ্নোত্তর
10. পদার্থের ভৌত রাসায়নিক ধর্মসমূহ – তড়িৎপ্রবাহ ও রাসায়নিক বিক্রিয়াবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
সক্রিয়তামূলক প্রশ্নোত্তর
11. পদার্থের ভৌত রাসায়নিক ধর্মসমূহ – পরীক্ষাগার ও রাসায়নিক শিল্পে অজৈব রসায়নবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
সক্রিয়তামূলক প্রশ্নোত্তর
12. পদার্থের ভৌত রাসায়নিক ধর্মসমূহ – ধাতুবিদ্যাবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
সক্রিয়তামূলক প্রশ্নোত্তর
13. পদার্থের ভৌত রাসায়নিক ধর্মসমূহ – জৈব রসায়নবিষয়সংক্ষেপ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
সক্রিয়তামূলক প্রশ্নোত্তর

আমরা আমাদের আর্টিকেলে দশম শ্রেণীর ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায়ের ‘পদার্থের ভৌত রাসায়নিক ধর্মসমূহ‘ থেকে ‘ধাতুবিদ্যা’ এর কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো দশম শ্রেণীর ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য বা চাকরির পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি দশম শ্রেণীর পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায় দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে, আপনারা আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাছাড়া নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Share via:

মন্তব্য করুন